নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মিজান আহামেদ

কালের সময়

সকলে ভালো থাকুন

কালের সময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্যার আইজ্যাক নিউটন পৃথিবীর সেরা মানবগুলোর ভেতরে অন্যতম একজন ।

১২ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৯


স্যার আইজ্যাক নিউটনের জন্ম হয় ১৬৪৩সালের জানুয়ারি ৪ তারিখে এবং তার মৃত্যু হয় ১৭২৭ সালের ৩১ শে মার্চ । তিনি একজন প্রখ্যাত ইংরেজ পদার্থবিজ্ঞানী ও গণিতবিদ এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানী, প্রাকৃতিক দার্শনিক এবং আলকেমিস্টও । অনেকের মত অনুযায়ী নিউটন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সবচেয়ে প্রভাবশালী একজন বিজ্ঞানী । তিনি ১৬৮৭ সালে তার বিশ্ব নন্দিত গ্রন্থ ফিলসফিয়া ন্যাচারালিস প্রিন্সিপিয়া ম্যাথামেটিকা প্রকাশ করেন যাতে তিনি সর্বজনীন মহাকর্ষ ও গতির তিনটি সূত্র বিধৃত করেছিলেন । সেই সূত্রে এবং মৌল নীতিগুলোই চিরায়ত বলবিজ্ঞানের ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে । আর তার গবেষণার ফলে উদ্ভূত এই চিরায়ত বলবিজ্ঞান পরবর্তী তিন শতক জুড়ে বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার জগতে একক আধিপত্য করেছে । তিনিই প্রথম দেখিয়েছিলেন পৃথিবী ও মহাবিশ্বের সকল বস্তু একই প্রাকৃতিক নিয়মের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে । কেপলারের গ্রহীয় গতির সূত্রের সাথে নিজের মহাকর্ষ তত্ত্বের সমন্বয় ঘটিয়ে তিনি এর সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতেও সমর্থ হয়েছিলেন । তার গবেষণার ফলেই সৌরকেন্দ্রিক বিশ্বের ধারণার পেছনে সামান্যতম সন্দেহও দূরীভূত হয় বৈজ্ঞানিক বিপ্লব ত্বরান্বিতও হয়েছিল ।


তিনি বলবিজ্ঞানের ভিত্তিভূমি রচনা করেছেন । রৈখিক এবং কৌণিক ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্রের মাধ্যমে তিনি এই ভিত্তি রচনা করেছিলেন । আলোকবিজ্ঞানের কথায় আসলে তার হাতে তৈরি প্রতিফলন দূরবীক্ষণ যন্ত্রের কথাও এসে যায় । একই সাথে তিনি আলোর বর্ণের উপরএকটি তত্ত্ব দাড়করান যা একটি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তিনি নিশ্চিত করেছিলেন । পর্যবেক্ষণটি ছিল ত্রিভুজাকার প্রিজমের মধ্য দিয়ে যাওয়া আলোর বিক্ষেপনের উপর যার মাধ্যমে দৃশ্যমান বর্ণালীর সৃষ্টি হয়েছিল । শব্দের দ্রুতি এবং শীতলীকরণ প্রক্রিয়া বিষয়েও তিনি গবেষণা পরিচালনা করেন যা থেকে নিউটনের শীতলীকরণ সূত্র এসেছে ।
গণিতের জগতেও নিউটনের জুড়ির শেষ নেই । নিউটন এবং লাইবনিজ যৌথভাবে ক্যালকুলাস নামে গণিতের একটি নতুন শাখার পত্তন ঘটিয়েছিলেন । এই নতুন শাখাটিই আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের জগতে বিপ্লব সাধনে মুখ্য ভূমিকা রেখেছিলো । তাছাড়া নিউটন সাধারণীকৃত দ্বিপদী উপপাদ্য প্রদর্শন করেছিলেন । একটি ফাংশনের শূন্যগুলোর আপাতকরণের জন্য তথাকথিত নিউটনের পদ্ধতি আবিষ্কার করেন এবং পাওয়ার সিরিজের অধ্যয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখেন । ২০০৫ সালে রয়েল সোসাইটি বিজ্ঞানের ইতিহাসে কার প্রভাব সবচেয়ে বেশী এই প্রশ্ন নিয়ে একটি ভোটাভুটির আয়োজন করেন । ভোটের ফলাফলে দেখা যায় এক্ষেত্রে নিউটন আইনস্টাইনের চেয়েও অধিক প্রভাবশালী ।

উল্‌সথর্প ম্যানরে নিউটনের বাড়ি
অবস্থিত । নিউটনের যখন জন্ম হয় তখন ইংল্যান্ডে সমসাময়িককালের আধুনিকতম প্যাপাল বর্ষপঞ্জির ব্যবহার শুরু করা হয়নি । সে জন্য তার জন্ম তারিখ নিবন্ধন করা হয়েছিল ১৬৪২ সালের ক্রিসমাস দিবস হিসেবে । তিনি তার পিতা আইজাকের মৃত্যুর তিন মাস পর জন্ম গ্রহণ করেন । তার বাবা গ্রামের একজন সাধারণ কৃষক ছিলেন । জন্মের সময় নিউটনের আকার আকৃতি ছিল অনেক ছোট । তার মা হানাহ্‌ এইসকফ প্রায়ই বলতেন ছোট্টবেলার সেই নিউটনকে অনায়াসে একটি কোয়ার্ট মগের ভিতর ঢুকিয়ে দেয়া যেতো । তিন বছর বয়সে তার মা আরেকটি বিয়ে করেন এবং নতুন স্বামী রেভারেন্ড বার্নাবাউস স্মিথের সাথে বসবাস শুরু করেন । এসময় নিউটন তার মায়ের সাথে থাকতেন না । নানী মার্গারি এইসকফের তত্ত্বাবধানে তিনি দিন কাটতে থাকেন । নিউটন তার সৎ বাবাকে পছন্দ করতেন না । তার মা এই লোককে বিয়ে করেছে বলে মায়ের প্রতি তার অনেক ক্ষোভও ছিল । নিউটন তার ১৯ বছর বয়স পর্যন্ত করা পাপ কাজগুলোর একটি তালিকাও প্রকাশ করেছিলেন । সেই তালিকা থেকে মায়ের প্রতি তার এই ক্ষোভের কথা জানা যায় । জনৈকা মিস স্টোরির সাথে নিউটনের বাগদান হয় কিন্তু পড়াশোনা এবং গবেষণায় খুব বেশি নিমগ্ন থাকার কারণে নিউটন বিয়ে করেননি ।

কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে নিউটনের মূর্তি
স্যার আইজাক নিউটনের জন্মস্থান লিঙ্কনশায়ারের উল্‌সথর্প ম্যানরে । ম্যানর অঞ্চলটি উলসথর্প বাই কোলস্টারওয়ার্থের মধ্যে
নিউটন প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন তার বাড়ির পাশের এক ক্ষুদ্রায়তন স্কুলে । ১২ বছর বয়সে তাকে গ্রান্থামের ব্যাকরণ স্কুলে পড়াশোনার জন্য পাঠানো হয় । সেখানে তিনি এক ঔষধ প্রস্তুতকারক এবং বিক্রেতার বাড়িতে থাকতেন । এই স্কুলে নিউটন ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বি যা থেকে তার মেধার পরিচয় পাওয়া যায় । প্রথমদিকে তার সাথে কেউ না পরলেও এক সময় আরেকটি ছেলে তার সাথে ভালো প্রতিযোগিতা করতে সমর্থ হয়েছিল । স্কুল জীবনের প্রথম থেকেই নিউটনের সবচেয়ে বেশী ঝোক ছিল বিভিন্ন ধরণের যন্ত্র তৈরির । সেই বয়সেই তিনি উইন্ডমিল ও জল ঘড়ি, ঘুড়ি এবং সান ডায়াল তৈরি করেছিলেন । তাছাড়াও তার গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণ ছিল চার চাকার একটি বাহন যাতে তিনি নিজেই আরোহী ছিলেন এবং সেই বাহনটি তিনি টেনে চালাতেন । ১৬৫৬ সালে নিউটনের সৎ বাবাও মারা যান । এরপর তার মা উলসথর্পে ফিরে এসে তাকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান । উদ্দেশ্য ছিল বাড়িতে ক্ষেত খামারের কাজ শিখিয়ে ভবিষ্যতের বন্দোবস্ত করে দেয়া । কিন্তু সত্বরই তিনি বুঝতে পারেন খামারের কাজের দিকে নিউটনের কোন মনযোগ নেই । নিউটনের চাচা ছিলেন বার্টন কগলিসের রেক্টর । এই চাচার উপদেশ শুনেই পরিবার থেকে তাকে কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে পড়াশোনার জন্য পাঠানো হয়েছিল ।

১৭০২ সালের নিউটন গডফ্রে নেলার কর্তৃক অংকিত চিত্র।

ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবে-তে নিউটনের সমাধিস্থল
উল্‌সথর্প ফিরে এসেও নিউটন থেমে থাকেননি । সেখানে মূলত রসায়ন এবং আলোকবিজ্ঞান বিষয়ের উপর বিভিন্ন পরীক্ষণ চালিয়ে যেতে থাকেন এবং একইসাথে চলতে থাকে তার গাণিতিক অনূধ্যানের প্রকল্পসমূহ । নিউটন তার মহাকর্ষ তত্ত্ব আবিষ্কার বিষয়ক দিনপঞ্জির সূচনা চিহ্নিত করেছিলেন এই ১৬৬৬ সালকেকেই যে সালে তাকে ট্রিনিটি কলেজ ছেড়ে যেতে হয়েছিল । এ সম্বন্ধে তিনি বলেছেন

একই সালে আমি চাঁদের কক্ষপথে বিস্তৃত অভিকর্ষ নিয়ে চিন্তা করতে শুরু করি,... চাঁদকে তার নিজ কক্ষপথে ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় বল এবং পৃথিবীর পৃষ্ঠতলে বিরাজমান অভিকর্ষ বলের মধ্যে তুলনা করি এবং এই দুটি বলের মান প্রায় সমান বলে চিহ্নিত করতে সক্ষম হই।


একই সময়ে তিনি আলোকবিজ্ঞান বিষয়ে তার একটি মৌলিক পরীক্ষণের কাজ সম্পন্ন করেন। এই পরীক্ষণের মাধ্যমে তিনি সাদা আলোর গাঠনিক অংশসমূহ আবিষ্কারে সক্ষম হন। আলোকবিজ্ঞান বিষয়ে তার প্রাথমিক এই কাজ সম্বন্ধে নিউটন নিজেই মন্তব্য করেছেন:


এই সব কিছু আমি করেছিলাম মাত্র দুই বছর তথা ১৬৬৫ এবং ১৬৬৬ সনের মধ্যে, কারণ আমর জীবনের যেকোন সময়ের তুলনায় ওই সময়ে আমি বিশেষ উল্লেখযোগ্য পর্যায়ে ছিলাম যে পর্যায়ে উদ্ভাবন এবং মনকেন্দ্রিক গণিত ও দর্শন চিন্তার বিকাশ ঘটেছিল।


ছবি ও তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট । বাংলা পিডিয়া ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:১২

আমিনুর রহমান বলেছেন:



ভাই, গুগলে কি কোন তথ্য থাকে নাকি? আমিতো গুগল কে একটা সার্চ ইঞ্জিন হিসেবেই জানি !!
আর বাংলাপিডিয়া ছাড়া অন্যন্যা কি কি সাইট????
তথ্যসুত্র কিভাবে দিতে হয় তা আরজুপনি পোষ্ট ♣তথ্যসূত্র (References) লেখার সহজ পাঠ♣ পড়ে জেনে নিবেন।

১২ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১০

কালের সময় বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার বিষয়টি অবগতি বা জানানোর জন্য ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.