নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জুয়েল তাজিম

জুয়েল তাজিম

অলস হবেন, তো হতাশা পাবেন। শুরু করুন,শেষ হবেই। সামনে এগোতে থাকুন, পথ কমবেই।

জুয়েল তাজিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

দিনলিপি

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৪

১০১ জ্বর মানে মোটামুটি ভালই জ্বর গতকাল সেটা খুব ভাল করেই বুঝলাম। অতিরিক্ত গরম সহ্য করে বায়িং প্রতিনিধি সহ কয়েকটা কারখানা ঘুরে বাসায় ফিরছিলাম । জ্বর বলে একটু আগেই ছুটি পেয়ে গেলুম তখন বিকেল তিনটে বা সাড়ে তিনটে মনে হয় । এয়ারপোর্ট পর্যন্ত যাওয়ার ধৈর্য ও শক্তি কোনটাই ছিল না। ঠাণ্ডা গাড়ী থেকে নেমে বায়ার প্রতিনিধিদের বিদেয় দিয়ে আমি রিক্সার যাত্রী হলুম!!
চট্টগ্রামে উন্নয়নের জোয়ারের কারনে পুরু চট্টগ্রামেই জ্যাম !! ভ্যাপসা একটা গরম পড়ছে । খুব আইসক্রীম খেতে ইচ্ছে করলো হঠাত । কিন্তু নেমে গিয়ে কিনে আনতে ক্লান্ত লাগছিল ।

ঠিক এই সময়টায় বাচ্চাটির দিকে নজর পড়ল । আমার ইশালের চেয়ে বছর খানেক বড় হবে । দেখতে অবিকল পুতুল । বাবা-মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে আইসক্রীম খাচ্ছে । বাবা-মায়ের খাওয়া শেষ, ছেলের জন্য অপেক্ষা । কোথাও যাবেন বোধহয় তাঁরা, মা তা...ড়াতাড়ি আইসক্রীম শেষ করার জন্য বলছেন ছেলেকে । একটু খানি বাকি ছিল, মায়ের অনুরোধে সেটুকু ছুঁড়ে মারলো ছেলেটি ।

পাশে দাঁড়ানো বাবা আর রিক্সার আরোহী আমি – একসাথে হেসে উঠলাম মায়াভরা ছেলেটির ঠোঁট উল্টানো দেখে । মুখের হাসি মুখেই ঝুলে থাকলো আমাদের । রিক্সার পেছন থেকে বিদ্যুত বেগে ছোট একটি মেয়ে এসে আইসক্রীমের বাকি অংশ তুলে খাওয়া শুরু করলো!
পুতুলের মতো ছেলেটি সমবয়সী একটি মেয়েকে ফেলে দেয়া আইসক্রীম কুড়িয়ে খেতে দেখে খুব অবাক হয়েছে বলে মনে হলো । প্রবল বিস্ময় নিয়ে ছেলেটি রাস্তায় দাঁড়ানো মেয়েটির আইসক্রীম খাওয়া দেখছে । জীবনের কঠিন বাস্তবতার একটি উত্কৃষ্ট প্রমান এভাবে, এখ...ন দেখতে হবে– ঘুনাক্ষরেও ভাবি নি ।

ঘটনাটি এখানেই শেষ হওয়া খুব স্বাভাবিক ছিল । আনন্দের বিষয়, শেষ হলো না ঘটনা ।
ছোট ছেলের পাশে দাঁড়ানো হতভম্ব বাবা নিমেষে ছুটে গেলেন দোকানে । মিনিট তিনেক পরে ঠিক সেরকম একটি আইসক্রীম কিনে নিয়ে এসে নিজের ছেলের হাতে তুলে দিলেন । না, খেতে নয় । তখনও চেটে-পুটে খাওয়া রাস্তায় দাঁড়ানো মেয়েটির হাতে তুলে দেয়ার জন্য!
আমি অন্যদিকে মুখ ফেরালাম । অতি তুচ্ছ কারণে ইদানিং চোখ জ্বালা করে। পর মুহুর্তেই মন ভীষণ রকম ভালো হয়ে গেল । রিক্সা ততক্ষণে একটু সামনে গেছে । আমি ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালাম ।

এরকম অনাকাংখিত মমতার জন্য প্রস্তুত ছিল না মেয়েটি । বাঁ হাতে কুড়িয়ে নেয়া আইসক্রীমটি আর ডান হাতে নতুন পাওয়া আইসক্রীমটি ধরে বিস্ময় নিয়ে পরিবারটিকে চলে যেতে দেখছে সে!

সমাজ বদলাচ্ছে, বদলে যাচ্ছে দেশ । একটু একটু করে হলেও বদলাচ্ছে । এও কি কম প্রাপ্তি আমাদের!
পারব আমরা, সত্যি একদিন পাল্টে দেব এই দেশটাকে আমরা, ইনশাআল্লাহ ।

কারণ– আমরাই বাংলাদেশ!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



যাক, ৪৬ বছরে ১ম বার একজন বাংগালী বাবার গল্প শুলাম।

২| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:৪৮

সমুদ্রচারী বলেছেন: ভালো মানুষেরা আছে বলেই পৃথিবীটা এখনো টিকে আছে।
ভালো লাগলো পড়ে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.