নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জুয়েল তাজিম

জুয়েল তাজিম

অলস হবেন, তো হতাশা পাবেন। শুরু করুন,শেষ হবেই। সামনে এগোতে থাকুন, পথ কমবেই।

জুয়েল তাজিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

মৃত্যু ভাবনা

০৩ রা জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৭



মানুষ জীবন ধারণের জন্য যতটুকু দরকার সবসময় তার চেয়ে বেশীই প্রয়োজন অনুভব করে এবং এই ভাবনা থেকে হিতাহিত জ্ঞান ভুলে যা খুশি তাই করে বেড়ায়। ন্যায় অন্যায় ভুলে নিজের খুশি মত দিনাতিপাত করে এবং নিজের চাওয়া পাওয়াকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে অন্যের সুবিধা অসুবিধা ভুলে যায়। ধন দৌলত কামাই করে, যশ খ্যাতি বাড়ায়, পতিপত্তি বাড়ায় আর ভুলে যায় অখেরাতকে। অতচ দুনিয়া হচ্ছে দু’দিনের ব্যাবসা! সারাজীবন লাভের ধান্দায় থাকতে থাকতে ইহকালীন মূলধন যোগাড় করতে করতে ভুলে যায় পরকাল এবং ভুলে যায় তার সময়কাল। একসময় বুঝতে পারে তার সময় ফুরিয়ে এসেছে, ত্যাগ করতে হবে মায়ার জীবন এবং মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে হবে তখন হঠাত করে এক সময় মনের মাঝে হিতাহিত জ্ঞান জেগে উঠে, জীবনের খেরোপাতার হিসেব মেলানো যায় না, তখন কি বা করার থাকে ?? শুধু অনুশোচনা যাগে, কি করেছিলাম, যা করেছিলাম অন্যায় করেছিলাম, না করলেই বেশি ভাল হত, কেন করেছিলাম?? অতচ এই অনুশোচনা যদি যখন সময় সুযোগ ছিল তখন একবার ভাবনায় আসত তাহলে হয়ত তার কাছ থেকে সমাজ এতটা ক্ষতিগ্রস্ত হতনা। তাই সময় থাকতেই মৃত্যু ভাবনা আসা উচিৎ এবং পরকালীন জীবনের কথা ভেবে হিতাহিত জ্ঞান রেখে কাজ করা উচিৎ ।

জীবনের সময়টুকুই একজন মানুষের ইহকালীন মূলধন। যদি তা আখেরাতের কল্যাণের ক্ষেত্রে কাজে লাগানো হয় তবেই ব্যবসা সফল হবে। আর যদি তা বিনষ্ট করা হয় গুনাহ ও পাপাচারে এবং এ অবস্থায় আল্লাহর সাথে বান্দার সাক্ষাত হয় তাহলে সে হবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত। তাই বুদ্ধিমান সে-ই, যে নিজের হিসাব নেয়, আল্লাহ তার কাছ থেকে হিসাব নেওয়ার আগে এবং গুনাহ ও পাপাচার থেকে দূরে থাকে তা তাকে ধ্বংসের পথে নেওয়ার আগেই।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, ‘ঈমানদার ব্যক্তি গুনাহকে এমন মনে করে, যেন সে কোনো পাহাড়ের নিচে বসে আছে। আর যে কোনো মুহূর্তে পাহাড়টি তার উপর ধ্বসে পড়তে পারে।’-সহীহ বুখারী

মানুষের সব স্বপ্ন ও আশা তার ভবিষ্যতকে ঘিরে। মানুষ তার ছোট কর্মমুখর, ব্যস্ত জীবনের অবসানের দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত নয়। পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি মানুষের চিন্তা-চেতনায় মৃত্যুর ভয় রয়েছে। কারও সেটা প্রকটভাবে, কারও সেটা প্রচ্ছন্নভাবে। মৃত্যু ভয় বা আতঙ্ককে দেখা হয় সবচেয়ে স্পষ্ট আতঙ্ক হিসেবে। বিপদ যত বড় আকারেই হোক না কেন মৃত্যুভয় থেকে সেটা কোনোভাবেই বড় নয়। একটি প্রাণী হিসেবেও তাই মৃত্যু বা পূর্ণক্ষয় মানুষকে আতঙ্কগ্রস্ত করে তোলে। মৃত্যুর ভয় কতটা প্রকট সেটার ওপর নির্ভর করেই মানুষ তার ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবে। স্বপ্ন বাস্তবায়নের পেছনে ও নিজের ওপর আস্থা-আত্দবিশ্বাসও নির্ভর করে মৃত্যুভয় কতটা রয়েছে। মনের ভেতরে মৃত্যুভয় যতটা প্রকট হয় মানুষ ততই বাস্তবের পৃথিবীর সম্পর্কে নিস্পৃহ হতে থাকে। প্রতিটি মানুষই বেঁচে থাকতে চায়। তার বর্তমান সাজায়, সুখের সরঞ্জাম যোগাড় করে। তাই যখনই সে ভাবতে থাকে এসবই তাকে হারাতে হবে এবং মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়া মানেই এসব থেকে পরিপূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া তখনই আতঙ্কগ্রস্ত ও হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। মানুষের সবচেয়ে তীব্র আতঙ্ক হিসেবে মৃত্যুই প্রথম।

পক্ষান্তরে অনেক মানুষ এমনও আছে, যারা বেপরোয়াভাবে পাপাচারে লিপ্ত থাকে। সে চিন্তাই করে না, কার অবাধ্যতায় সে লিপ্ত! একপর্যায়ে তার শেষ সময়টি এসে যায় এবং তার মৃত্যু হয়-আল্লাহ হেফাযত করুন-অশুভ মৃত্যু!
হযরত আনাস ইবনে মালিক রা. বলেন, তোমরা এমন অনেক কাজে লিপ্ত হও, যা তোমাদের দৃষ্টিতে চুলের চেয়ে তুচ্ছ। অথচ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে এগুলোকেই আমরা সংহারক কর্ম বলে গণ্য করতাম।-সহীহ বুখারী ১১/২৮৩

স্বয়ং আল্লাহ তাআলা সুন্দর মৃত্যুর জন্য সতর্ক করেছেন। তিনি ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে যথার্থভাবে ভয় কর এবং তোমরা আত্মসমর্পণকারী না হয়ে কোনো অবস্থায়ই মৃত্যুবরণ করো না।-সূরা আল ইমরান (৩) : ১০২

যখন মৃত্যু নিকটবর্তী হয় তখন আল্লাহর রহমতের আশাই অধিক হওয়া উচিত এবং আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের আগ্রহই প্রবল হওয়া উচিত। কারণ যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে সাক্ষাতে আগ্রহী হয় আল্লাহও তার সাক্ষাতে আগ্রহী হন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের প্রত্যেকে যেন শুধু এ অবস্থায়ই মৃত্যুবরণ করে যে, সে আল্লাহর প্রতি সুধারণা পোষণ করে।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২৮৭৭

তবে অনেক মূর্খ মুসলমান আল্লাহ তাআলার রহমত ও মাগফিরাতের অর্থ ভুল বোঝে এবং বেপরোয়াভাবে গুনাহয় লিপ্ত হয়; বরং তারা আল্লাহ তাআলার রহমত ও মাগফিরাতের গুণ সম্পর্কে জানাকেই অবিরাম গুনাহয় লিপ্ত থাকার কারণ হিসেবে গ্রহণ করে। এটা স্পষ্ট ভ্রান্তি, যা মানুষকে বিপথগামী করে এবং তাকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে যায়। কেননা, আল্লাহ তাআলা যেমন গাফুর ও রহীম তেমনি তিনি শাদীদুল ইকাব ও কঠিন শাস্তিদাতাও। কুরআন মজীদের অনেক জায়গায় আল্লাহ এ বিষয়ে সাবধান করেছেন। তিনি ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) আমার বান্দাদেরকে বলে দাও, আমি পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আর আমার শাস্তি-সে অতি মর্মন্তুদ শাস্তি!-সূরা হিজর (১৫) : ৪৯-৫০


মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১:০০

সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

শুভেচ্ছা জানবেন।

২| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: বেশ কিছু আগে আমি নিজে আমার মৃত্যু ভাবনা নিয়ে একটা প্রবন্ধ লিখেছি।

আমার চেয়ে আপনি সুন্দর করে লিখেছেন। ধন্যবাদ।

৩| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:২৯

সুমন কর বলেছেন: ভালো লিখেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.