নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জুয়েল তাজিম

জুয়েল তাজিম

অলস হবেন, তো হতাশা পাবেন। শুরু করুন,শেষ হবেই। সামনে এগোতে থাকুন, পথ কমবেই।

জুয়েল তাজিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

শঙ্খচিল ছবি নিয়ে কিছু কথা

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:১৪




টিভি থেকে দুরে আছি! তার পরেও শঙ্খচিল ছবি নিয়ে কিছু কথা।

পনেরো সেপ্টেম্বর দু’হাজার সতের বেলা এগারোটা থেকে শঙ্খ চিল ছবিটা দেখলাম। আগে দেখার সুযোগ ছিল, কিন্তু সময় হয় নি।ছবির মূল প্রতিপাদ্য হলোঃ

এক: বিএসএফকে মানবিকতার বরপুত্র হিসাবে দেখানো এবং বাংলাদেশের মানুষের কাছে গ্রহনযোগ্যতা প্রদান করার প্রয়াস।

দুই: বাংলাদেশের মুসলমানের প্রকৃত সুহৃদ বাংলাদেশের হিন্দু এবং পশ্চিম বাংলার হিন্দুরা।

তিন: বাংলাদেশের মুসলমানের শত্রু পশ্চিম বাংলার মুসলমান।

চার: ভারতকে বাংলাদেশের ত্রাণকর্তা হিসাবে তুলেধরা।

এবারের শঙ্খ চিল ছবির ব্যবচ্ছেদ করলে যা দাঁড়ায় মুনতাসির চৌধুরি বাদল স্কুল শিক্ষক। স্ত্রী লায়লা চৌধুরি এবং অসুস্থ কন্যা রুপসা চৌধুরিকে নিয়ে তাদের সংসার। রুপসার সাথে ভারতের রাজস্থানের বিএসএফ সৈনিকের চরম হৃদ্যতা।

রুপসা বিএসএফ সৈনিককে তার মায়ের হাতের তৈরী নারকেলের লাড্ডু উপহার দেয়। বিএসএফ সৈনিক রুপসাকে দেয় কয়েকটা রঙ্গিন বেলুন । একসময় দেখাযায় বাদল মাষ্টার তার বাবা/ দাদার কিছু চিঠি খুঁজে পায়। বাদল জানতে পারে দেশ ভাগের পুর্বে ভারতের পশ্চিম বাংলায় বাদলের বাব দাদারা অবস্থাপন্ন মানুষ ছিলেন। দেশ ভাগের পরে প্রথমে পুর্বপাকিস্তান এবং পরে বাংলাদেশে বাদলদের অবস্থার অবনতি হয়েছে। রাগে দুঃখে বাদল তার বাপ দাদার চিঠিগুলো নদীর পানিতে ফেলে দেয়।

কি চমৎকার ভাবে অখন্ড ভারতের বিষ ঢেলে দেয়া হলো!

বাদলের অসুস্থ ময়ে রুপসার অবস্থার অবনতি হলে সময় কম এমন খোঁড়া অজুহাত দেখিয়ে রুপসাকে সাতক্ষিরা থেকে খুলনার ভালো হাসপাতালে নেওয়া হলোনা। বাদলের প্রতিবেশী এক হিন্দু কাকা বাদলকে পরামর্শ দিলো রুপসাকে পশ্চিম বাংলার হাসপাতালে নিতে। কাকা বললেন ওখানে তার এক জ্ঞাতি আছেন যিনি সব ব্যবস্থা করবেন।

কাকা তার জ্ঞাতির সাথে মোবাইলে কথা বলে মাঝনদীতে ইঞ্জিন বোট আনালেন। বিজিবিকে দিয়ে বিএসএফের সাথে মিলাপ করে বাদল তার স্ত্রী এবং অসুস্থ কন্যা, বাংলাদেশী কাকা এবং ভারতের বিএসএফ ও পশ্চিম বাংলার তার কাকার জ্ঞাতির বদান্যতায় কোনো সরকারি অনুমোদন ছাড়া সীমান্ত নদী পাড়ি দিয়ে পশ্চিম বাংলায় গিয়ে এক অখ্যাত জেলা হাসপাতালে রুপসা ভর্তি হলো।

ভর্তির সময় বাদলকে হিন্দু নাম ধারন করতে হলো। বাদলের স্ত্রী কপালে সিঁদুর এবং দুহাতে সাখা পরলো। স্কুল শিক্ষক বাদল তার অসুস্হ কন্যাকে মিথ্যা কথা শিক্ষা দিলো এই বলে যে জিজ্ঞেস করলে সে যেন বলে তাদের বাড়ি পশ্চিম বাংলায়।

বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা এখন ভারতের চেয়ে কোনো অংশে কম বলেতো আমার মনে হয় না। তো সাতক্ষিরা থেকে বাদল মাষ্টারের অসুস্থ ময়েকে খুলনা আনা গেলোনা এটা গাঁজাখুরি ছাড়া আর কি হতে পারে?

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধ ভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পশ্চিম বাংলার এক জেলা হাসপাতালে ভর্তির জন্য বাদলকে তার স্ত্রীকে হিন্দু সাজানো হলো কপালে সিঁদুর এবং হাতে সাখা পরলো এটা কিসের আলামত?

এই জেলা হাসপাতালেও রুপসার চিকিৎসা হলোনা। রুপসাকে নিতে হলো কলকাতার এক বড় হাসপাতালে। ব্যবস্থা করলেন বাদলের বাংলাদেশী কাকার জ্ঞাতি। রুপসার অপারেশন হবে। টাকা লাগবে দু'লাখ। টাকার ব্যবস্থা পশ্চিম বাংলার ঐ জ্ঞাতি করবেন বাদলকে আশ্বস্ত করলেন। কিন্তু বাদল তার স্ত্রীর গয়না বিক্রির মনস্হ করলো।সহায়তা নিলো কলকাতার এক মুসলমানের। সেই মুসলমান বাদলকে এক দু’নম্বরী স্যাকরার কাছে নিয়ে গিয়ে আশি হাজার টাকায় বাদলের স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে দিলো। পরে বাদল এবং তার স্ত্রী গয়না বিক্রির আশি হাজার টাকা নিয়ে হাসপাতালের পথে আসছিলো তখন কলকাতার ঐ মুসলমান বাদলের স্ত্রীর আশি হাজার টাকার ব্যাগ ছিনতাই করতে চেষ্টা করে। বাদলের স্ত্রীর চিৎকারে কলকাতার কিছু সুহৃদ হিন্দু পথচারী ঐ মুসলমান ছিনতাইকারীকে উওম মধ্যম দিলে সে পালিয়ে যায় ।

এখানে দেখার বিষয় হলো কলকাতার যে মুসলমানের চরিত্র শঙ্খচিলে চিত্রিত করা হয়েছে সে একজন দু’নম্বরী হিন্দু স্যাকরার বন্ধু এবং মুসলমানের টাকা ছিনতাইকারী । অপর দিকে সব হিন্দু চরিত্রকে চিত্রিত করা হয়েছে মুসলমান বাদলের একান্ত সুহৃদ হিসাবে তা সে বাংলাদের কিংবা পশ্চিম বাংলার হোকনা কেন!

রুপসার অপারেশন হলো। রুপসা মারা গেলো। হাসপাতাল থেকে রুপসার লাশ গ্রহনের সময় হাসপাতালের বিধায়ক একটি সার্টিফিকেট বাদলকে দিয়ে বললো এটা শ্মশানে দেখালে আপনার কন্যার দাহতে কোনো অসুবিধা হবেনা।
একথা শুনে বাদল হ্মেপে যায়। বাদল বলে মুসলমানের মেয়ের দাহ নয় কবর হবে। একথার পরে দেখা গেল পুলিশ এলো বাদল আর তার স্ত্রীকে এরেষ্ট করতে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের অপরাধে।

এদিকে রুপসার লাশ মহানুভব বিএসএফ কফিনে পুরে বাংলাদেশের বিজিবির কাছে সীমান্ত নদীর মাঝপথে হস্তান্তর করলো। বাদল এবং বাদলের স্ত্রীকে যখন পশ্চিম বাংলার পুলিশ জীপে করে ধরে নিয়ে যাচ্ছে তখন রুপসার কন্ঠের আওয়াজ ছিলো" বাবা দেখো দেখো আমাদের বাড়ির গাছে শঙ্খচিল"। দেখা গেলো বাদলের বাড়ির গাছের মগডালে একটি শঙ্খচিল বসে আছে। ছবি এখনেই শেষ ।
শঙ্খচিল ছবিতে রুগ্ন রুপসাকে আমার মনে হয়েছে রুগ্ন বাংলাদেশ যার মৃত্যু হলো কলকাতার হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে।
ছবির অন্তর্হিত মর্মবাণী বিশ্লেষণ করলে এই মেসেজটি এই ছবি দিচ্ছে । কলকাতা থেকে আমরা ফিরে পেলাম একটা লাশ যার জীবনকে ছ্যোঁমেরে ছিনতাই করেছে শঙ্খচিল যে বসে আছে রুপসার বাড়ির গাছের মগডালে বাংলাদেশে।

প্রতিবাদ করাতে বাদল এবং তার স্ত্রীকে পুলিশী হেফাজতে নেওয়া হলো। তখন কিন্তু আমরা কোনো হিন্দু সুহৃদকে বাদল এবং তার স্ত্রীর পাশে দেখলাম না। জ্ঞানীর জন্য ইশারা যথেষ্ট। সব বলা গেলোনা।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৪৩

আহমাদ সালেহ বলেছেন: হা হা হা । বাস্‌তবিক বিশ্‌লেষণ

২| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:০০

বেনামি মানুষ বলেছেন: প্রসেনজিৎ অভিনীত?

বরাবরের মতো ই বাংলা বিরোধী।
লোকটাকে পছন্দ করতাম।
তার কথা, আচরণ, বেছে বেছে বাংলাদেশ বিরোধী ছবিগুলোতে অভিনয় করা ইত্যাদির কারণে অপছন্দ করি।

৩| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:৩১

নিয়াজ সুমন বলেছেন: এমন ছবি বর্জন করা উচিত

৪| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:৪৩

তারেক ফাহিম বলেছেন: ছবিটি দেখে আমারও খারাফ লাগলো।

৫| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:০১

দূর পাহাড়ে বলেছেন: বাংলাদেশি মূল্যবোধকে পদতলে পিষ্ট করা হয়েছে। বিশেষ করে রোগীর চিকিৎসা পশ্চিমবঙ্গের করার মতো জঘন্য কাজটা করা হয়েছে। তাতে বাংলাদেশের কিছু দালাল অভিনেতা জেনে শুনেই অভিনয় করেছে। কষ্ট এজন্যই। যৌথ প্রযোজনার ছবিগুলোতে পশ্চিমবঙ্গই তাদের স্বার্থ রেখেই সংলাপ কাহিনী বানিয়ে নিচ্ছে। আর আমরা কিছু টাকার লোভে টোপ গিলছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.