![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আন্তঃদেশীয় রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ইস্যু সৃষ্টি করার কোন সুযোগ নেই ৷
যারাই করবে তারা নির্বোধ এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অবশ্যই ক্ষতিকর ৷
রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা ৷
এটা চতুরতা সাথে বাংলাদেশের উপর চাপিয়ে দেওয়া একটা সমস্যা এর সাথে যুক্ত হয়েছে আঞ্চলিক ও বিশ্ব পরাশক্তির পরোক্ষ ভূ-রাজনৈতিক অভিলাষ ৷
রোহিঙ্গা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের কিছু করার নেই এটাই বাস্তবতা ৷ হ্যাঁ, প্রাণ বাঁচাতে ছুটে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া, খাদ্য দেয়া, চিকিৎসা দেওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি মানবিক সহায়তা এসব আমরা বাংলাদেশীরা করতে পারি ৷ যা বাংলাদেশ ইতিমধ্যে করছে ৷
আমরা রাষ্ট্রকে এটাও বলতে পারিনা যে, মায়ানমারে আক্রমন করো বা যুদ্ধ করো!!! অনেকেই দেখি মায়ানমারের বিরুদ্ধে পারে তো নিজেই যুদ্ধ ঘোষণা দিয়ে দিচ্ছে!!!
যুদ্ধটা আমরা কেন করবো এবং কার বিরুদ্ধে করবো?
হ্যাঁ বাংলাদেশ আক্রান্ত ! সাথে এটাও বুঝতে হবে শত্রুপক্ষের উদ্দেশ্যে কি? তার শক্তিমত্তা কতটুকু? আমাদের লাভ কি বা ক্ষতি কি?
দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের আকাশসীমায় উত্তর কোরিয়া হরহামেশাই পরীক্ষামূলকভাবে আন্তঃমহাদেশীয় পাল্লার মিসাইল ছুড়ে মারছে!!
কই দক্ষিণ কোরিয়া-জাপান কি যুদ্ধে জড়িয়েছে? রাষ্ট্রীয় ভাবে প্রেসনোট দিয়ে শুধু প্রতিবাদই করেছে ৷ আমেরিকার মতো সামরিক শক্তি পিছনে থাকার পরেও জাপান-দঃ কোরিয়ার অবস্থান এমন! বলবেন- উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক বোমার ভয়েই ওরা যুদ্ধে জড়ায় না! হ্যাঁ একদম সত্যি কথা ৷ পাগলেও নিজের ভালোটা বুঝে ৷ পারমণবিক বোমার যন্ত্রণা কেমন পৃথিবীতে জাপানের চেয়ে আর কেউ জানে না ৷
মিয়ানমারের হেলিকপ্টার কর্তৃক বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘনে যারা বিরাট কিছু বলে ভাবছেন তাদের জন্য জাপানকেই নজির হিসেবে দিচ্ছি ৷
আন্তর্জাতিক সমর আইনকানুন মোতাবেক কোন দেশের আকাশসীমার ৫ কি.মি এর মধ্যে যদি অন্যকোন দেশের সামরিক যুদ্ধ বিমান বা হেলিকপ্টার অনুপ্রবেশ করে তবে সংশ্লিষ্ট দেশ শূটডাউন করতে পারবে না, তবে তার ফাইটার বিমান নিয়ে ধাওয়া করতে পারবে ৷ শূটডাউন তখনই করা যাবে যখন অনুপ্রবেশকারী ফাইটার বিমান বা হেলিকপ্টার ৫ কি.মি. আন্তর্জাতিক সীমা অতিক্রম করবে ৷ এখন কথা হল মিয়ানমারের ড্রোন ও হেলিকপ্টার ১ কি.মি এর মধ্যে ছিল! তাই শূটডাউন করা যায় না ৷ এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের করণীয় ছিল আমাদের ফাইটার বিমান পাঠিয়ে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার ও ড্রোনকে তাড়া করে করে মিয়ানমারের আকাশসীমায় অনুপ্রবেশ করে ফেরত আসা!! কাজটা এইমূহুর্তে খুবই বিপদজনক ও আত্মঘাতীও হতে পারতো! এইক্ষেত্রে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আইন মানলেও মিয়ানমার মানত কিনা সন্দেহ হয়৷ ইতিমধ্যে মিয়ানমার আগ্রাসী মনোভাব দেখাচ্ছে ৷ তারা বাংলাদেশের সাথে আগ বাড়িয়ে যুদ্ধ জড়াতে চায়! যুদ্ধ হলে মিয়ানমারের ষোলআনা লাভ আর চরম ক্ষতি বাংলাদেশেরই হবে ৷
মিয়ানমারের পক্ষে আছে চীন-রাশিয়া-উত্তর কোরিয়া-ইসরাঈল-ভারত - পাকিস্তান ইত্যাদি দেশের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সামরিক ও রাজনৈতিক সমর্থন ৷
এইমূহুর্তে নৌবাহিনী ছাড়া বাংলাদেশের অন্যসব সামরিক বাহিনীগুলো মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর চেয়ে (জনবল-যুদ্ধযান-ফাইটার বিমান ) অনেক পিছিয়ে আছে ৷ আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক কোন পরাশক্তিও নেই বাংলাদেশের পাশে ৷ তুরস্ক-ইরান ফাঁকাবুলি মারছে যুদ্ধ বেধে গেলে ওদের পাওয়া যাবে কিনা যথেষ্ট সন্দেহ আছে ৷ আর পাওয়া গেলেও বাংলাদেশের জন্য তা সুখকর হবে না! চীন তখন প্রকাশ্যে মিয়ানমারের পক্ষে সামরিক অবস্থান নিবে ৷
সবচেয়ে বড় কথা মিয়ানমারের সাথে এককভাবে যুদ্ধ করার মত সক্ষমতা বাংলাদেশের এইমূহুর্তে নেই ৷
মারার আগেই যে মরতে হবে! কারণ বাংলাদেশের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেই বললেই চলে ৷
বাংলাদেশের মতো একটি ঘণ বসতিপূর্ণ দেশে বিমান হামলা বা মিসাইল হামলা হলে চিত্রটা কেমন ভয়ংকর হবে???
দেখা গেলো- আপনি আপনার পরিবার নিয়ে খেতে বসেছেন বা শান্তিতে ঘুমিয়ে আছেন! কিংবা কর্মব্যস্থ নগরী, ছোট ছোট বাচ্চারা স্কুলে ক্লাশ রুমে বসে মনোযোগ সহকারে পড়ালেখা করছে! ঠিক তখনই একটা বোমারু বিমান অথবা মিসাইল এসে ধুমম করে এসে পড়লো!!! কি? চিত্রটা কল্পনা করতে পারছেন???
এই বোমারু বিমান বা মিসাইল আকাশেই ধ্বংস করার মতো সক্ষমতা আমাদের নেই ৷
হ্যাঁ স্বল্পপাল্লার একটা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আছে ৷ FN 90 নামক আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার রেঞ্জ মাত্র ৩৫ কি.মি.!!!
আর মিয়ানমার শুধু লোকালয়ে মারবে না ৷ আমাদের অর্থনীতির প্রাণভোমরা চট্টগ্রাম নৌবন্দর সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় আক্রমণ করে বিধ্বস্ত করবে!!
মিয়ানমারের উপরও যে আমরা আক্রমণ বা পাল্টা আক্রমণ করতে পারবো না তা বলছি না কিন্তু !
বলছি ক্ষতি যতটুকু করতে পারবো তার চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হব! অনুন্নত ও অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে থাকা মিয়ানমারের খুব বেশি ক্ষতি হবে না ৷ চট্টগ্রাম নৌবন্দর এই অঞ্চলের জন্য যতটা না এখন গুরুত্বপূর্ন, যখন রাখাইনে গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হবে তখন চট্টগ্রাম নৌবন্দর এতটা গুরুত্ববহন করবে কিনা অথবা মিয়ানমার যে তার অর্থনৈতিক উন্নতির বাধা হিসেবে বাংলাদেশকে ভাবছে না তাইবা কে জানে!!?
চীন-রাশিয়া-ভারত এর বিনিয়োগকারিগণ মিয়ানমারে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে! বাংলাদেশী বিনিয়োগকারিগণও ছুটছেন সস্তা শ্রম ও সহজ বিনিয়োগ এবং বিশাল মুনাফার আশায় ৷
আমি ভাবছি আমাদের গার্মেন্টস শিল্পের কথা নিয়ে ৷ মিয়ানমার গার্মেন্টস শিল্পে যে বাংলাদেশের আয়ে ভাগ বসাবে এটা মানতে হবে ৷
বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের র-ম্যাটেরিয়েল ৭০% চীন থেকে নৌপথে আসে!
ভাবুন চীনামদদপুষ্ট মিয়ানমারের সাথে যুদ্ধ করবেন? চীন যদি বাংলাদেশের উপর একটা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাই জারি করে তাহলে কি হবে?? বাংলাদেশে থাকা বিদেশী বিনিয়োগকারীরা এদেশ ছেড়ে সোজা মিয়ানমারের দিকে দৌড়াবে এবং ওখানে চীনের ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোডের সুবিধা তো আছেই ৷ মিয়ানমার ভালো ভাবেই হিসাবনিকেশ কসে রোহিঙ্গা খেদাও এবং বাংলাদেশের বিরোধী আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরাশক্তির একটা বলয় তৈরী করেছে ৷ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এক কথায় মিয়ানমার প্রস্তুত !!
এখানেই শেষ নয় পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থিতিশীলতার একটা ব্যাপার তো রয়েছেই!!
এত রোহিঙ্গা নিধন যজ্ঞের পরও মিয়ানমারের সেনাপ্রধান তার দেশের মানুষদের প্রতি রোহিঙ্গা বিরোধী জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে!
তখন আমরা কি করছি???
অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়ে দল-মতে ভাগ হচ্ছি!!
রোহিঙ্গা ইস্যু এটা আন্তঃরাষ্ট্রীয় ইস্যু ৷ এখানে বাংলাদেশের জনগণের কিছু করার নেই ৷
হ্যাঁ জণগন জাতীয় ঐক্য করে সরকারকে শক্তি ও সাহস দিতে পারে ৷ যাতে বাংলাদেশ সরকার একটি সর্বাত্মক কূটনৈতিক যুদ্ধ চালাতে বাধ্য হয় ৷ রাশিয়া -চীন কেন আমাদের মার্কিন বলয়বেষ্টিত হতে দিবে? রাশিয়া আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু, ৭১ পরবর্তী চীনও শত্রু নয় বরং অর্থনৈতিক মিত্র! তাদেরকে যথাযথভাবে বুঝিয়ে এবং তাদের আস্থা অর্জন করেই রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পক্ষে সমর্থন আদায় করতে হবে ৷ রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার ফিরিয়ে নিবে এটাই বাংলাদেশের দাবি থাকবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ৷
এর বাহিরে ভাবা বা বলার মতো বক্তব্য ও অবস্থান আমাদের বর্তমানে নেই ৷
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:০৫
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: আপনার যুক্তি ভালো কিন্তু আমাদের সরকার বলে সবাই তাদেরকে সাপোর্ট করে এবং কুটনৈতিক অবস্থান খুবই ভালো তাহলে কেন আমরা কোন দেশকেই সাথে পাচ্ছিনা?
ভালো থাকুন নিরন্তর। ধন্যবাদ।