নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।
এইতো, গত জুনেই তো তোমার ওখান থেকে ঘুরে এলাম,
তুমি হয়তো প্রপাতের ওপারে ছিলে, আমি এপারে ছিলাম।
হয়তো তোমার সাথে দেখা হয়েছিল, হয়তো বা হয় নাই,
মাথার উপর ঘুরঘুর করছিল তোমার সঙ্গী সাথীরা সবাই।
নিভৃতে আলাপও করেছিল কেউ কেউ। তবে তোমার মত
এমন নিঃসঙ্গ কাউকেও দেখিনি, এতটা উদাসী, আনত!
চিকণ দুটি পায়ে ভর করে তুমি স্থবির দাঁড়িয়ে আছো,
সবাই উড়ে বেড়াচ্ছে, অথচ তুমি দাঁড়িয়ে কি ভাবছো?
পেছনে রংধনুর রঙীন রেখা, পানিতেও তার প্রতিফলন,
তোমার সামনে আজ যেন হায়, শুধুই বিবর্ণ জীবন!
তোমার পদতলে যে এবড়ো-থেবড়ো সুকঠিন শিলাদন্ড,
সে কি তোমারই প্রতীক? যেন এক টুকরো জীবনখন্ড?
ধূসর কুহেলিকাকে তুমি পেছনে রেখেছো, রঙধনুর পাশে,
স্বচ্ছতার পানে তুমি তাকিয়ে রয়েছো, স্বচ্ছ সাথীর আশে।
তোমাকে এভাবে দাঁড়ানো দেখতে মনে হাহাকার বাজে,
সঙ্গী বিহনে দাঁড়িয়ে বিজনে এমন বেদনাবিধুর সাজে!
পাখি তোমার পাখা মেলে দাও, দাঁড়িয়ে থেকোনা এভাবে,
হয়তো তুমি সাথী পেয়ে যাবে ঐ অনন্ত আকাশ মাঝে।
পাদটীকাঃ এই কবিতাটার ব্যাপারে কিছুটা ব্যক্তিগত কথা বলা যায়। বছর কয়েক আগে আমার এক বন্ধু মারা যান। তার মৃত্যুর পরে অপর এক বন্ধু সহমর্মিতা নিয়ে এগিয়ে আসেন। নিজ ছেলের সাথে মৃত বন্ধুর একমাত্র মেয়ের বিয়ে দিয়ে সবাইকে কানাডা পাঠিয়ে দেন। বন্ধুপত্নীও এখন তাদের সাথেই কানাডা প্রবাসী, তবে মানসিকভাবে নিঃসঙ্গ। তিনি কাল সকালে তার ফেইসবুক পেজে এ ছবিটা পোস্ট করেন। ছবিটি নায়াগ্রা ফলসে তোলা।
বন্ধুপত্নী ছবিটিতে কোন শিরোনাম বা মন্তব্য দেন নি। নায়াগ্রা ফলসে হাজার হাজার উড়ন্ত পাখির মাঝে এরকম একটি নিঃসঙ্গ, উদাস ও স্থবির পাখিকে দেখে আমার কেন যেন মনে হলো, এটা যেন তারই জীবনের এক মূর্ত প্রতীক। পেছনে ফেলে আসা রঙিন দিনগুলো যা আজ ক্রমক্ষয়িষ্ণু ঝাপসা হয়ে যাওয়া অতীত, বেমানান একাকীত্ব, সামনে মেয়ের জীবনের উজ্জ্বল কিন্তু নিজের অনিশ্চিত ভবিষৎ, তার জীবনের ইত্যকার বৃত্তান্তগুলো যেন এ ছবিতে মূর্ত। এ ধরনের এক অনুভূতি থেকেই আমার এ কবিতাটি লেখা।
পাঠকদের অনুধাবনের সুবিধার্থে সেই নিঃসঙ্গ পাখীর ছবিটা এখানে আপলোড করলাম।
ঢাকা
৩১ অক্টোবর ২০১৩
২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৮:২৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: প্রীত হ'লাম। শুভেচ্ছা জানবেন।
২| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৮:৫৪
Tas DE Sun বলেছেন: ভাল লাগল
২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৪২
খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:২৬
রুদ্র জাহেদ বলেছেন: ভালো লাগা জানালুম
২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ, প্রীত হ'লাম।
৪| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:৫৫
আহমেদ জী এস বলেছেন: খায়রুল আহসান ,
খুব টাচি , এই কবিতা লেখার প্রেক্ষাপটটি ।
আপনার উপলব্ধি জীবনকে নিরীক্ষন করার স্বভাবজাত ।
আসলে সব মানুষই মনে হয় হাযারো মানুষের ভীড়েও কম-বেশী নিঃসঙ্গ , একাকী !
শুভেচ্ছান্তে ।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:১৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার সুবিবেচিত মন্তব্যটির জন্য ধন্যবাদ।
মন্তব্যে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।
"আসলে সব মানুষই মনে হয় হাযারো মানুষের ভীড়েও কম-বেশী নিঃসঙ্গ , একাকী !" - এ ব্যাপারে আমার একটি কবিতা আছে, "নিঃসঙ্গ এক ফুল"। যেখানে বলেছি-
"সেই ছবিটি অনেকেরই মনের মাঝে,
ভেসে ওঠে, নির্জনতায় সকাল সাঁঝে।
প্রতীক হয়ে ওঠে তাদের, একা যারা,
ভীড় ভাট্টার মাঝেও একা, বাক্যহারা।"
আশাকরি পড়ে দেখবেন।
৫| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৩০
মানবী বলেছেন: বাস্তবের নিঃসঙ্গ পাখিটার কষ্ট যেভাবে অনুভব করেছেন তা ভালো লাগলো।
এটা অত্যন্ত দূর্ভাগ্য, আমাদের দেশে বৈধব্যের পর তাঁদের পূনর্বিবাহের কথা সহজে ভাবা হয়না, বিশেষ করে যদি তাঁরা সন্তানের জননী হয়ে থাকেন। অথচ একজন মানুষের পাশে সার্বক্ষণিক সঙ্গীর সত্যিকারের প্রয়োজন পৌঢ়ত্ব আর বার্ধক্যে সবচেয়ে বেশী।
সুন্দর কবিতার জন্য অনেক ধন্যবাদ খায়রুল আহসান।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: কবিতার প্রশংসায় প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।
আপনি ঠিকই বলেছেন। প্রৌঢ়ত্বে আর বার্ধক্যেই একজন মানুষের সঙ্গীর প্রয়োজনটা বেশী দেখা দেয়। বিশেষ করে বিধবা জননীদের। সন্তানদের সাথে সবসময় সব কথা শেয়ার করা যায় না। একজন নিবিড় সঙ্গীর সাথে যতটা যায়।
তবুও, মা মেয়ে মিলে যতটা আপন হয়ে যেতে পারে, বাবা ছেলে বা বাবা মেয়ে মিলে তা হওয়া যায়না। বেশীরভাগ স্ত্রীহারা বাবাই হয়তো বিয়ে করে ফেলেন। যারা তা করতে পারেননা, তাদের দুঃখ কষ্টটা এবং ত্যাগটা অনেক সময় সমাজে unappreciated থেকে যায়।
৬| ৩১ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১:১৩
সন্ধ্যা রাতের ঝিঁঝিঁ বলেছেন: কবিতাটা খুবই হৃদয়স্পর্শী। আমার খুব খারাপ লাগছে।
হয়তো তুমি সাথি পেয়ে যাবে আকাশ মাঝে বার্ধক্যে সেটা আর কতটা সম্ভব।
মা মেয়ের সম্পর্কে ও আজকাল যোজন যোজন দূরত্ব থেকে যায়। দিন শেষে এক একেকটা মানুষ কি ভীষণ একা।
আপনার উপলব্ধি আমাকে মুগ্ধ করে, ভালো থাকবেন।
৩১ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৯:০০
খায়রুল আহসান বলেছেন: হয়তো তুমি সাথি পেয়ে যাবে ঐ অনন্ত আকাশ মাঝে - এটা শুধু একটা আশাই ছিল না, কবিতা লেখার সময় এটা একটা প্রার্থনাও ছিল। তবে এখন জীবনের উপলব্ধিও (পারসেপশন) অনেক বদলে যাচ্ছে। সাথীহীন জীবন ভীষণ একাকীত্বের হলেও, অনেকে অনুপযুক্ত সাথীর সাথে জীবনকে বিলীন করে দেয়ার চাইতে একাকীত্ব নিয়েই বেঁচে থাকতে চান। আপনি যেমনটি বলেছেন, "মা মেয়ের সম্পর্কে ও আজকাল যোজন যোজন দূরত্ব থেকে যায়" - এটাও এখন একটা নতুন প্রবণতা (ট্রেন্ড)। আগে মা-মেয়ে সাধারণতঃ আমৃত্যু একাত্মা থেকে যেত!
দিন শেষে এক একেকটা মানুষ কি ভীষণ একা - এটাই নিয়তির অমোঘ বাস্তবতা! এসেছি একেলা, চলে যাব একেলা, মাঝখানে শুধু মায়ার বাঁধনে কেটে যায় কিছু বেলা!
পুরনো পোস্টে মন্তব্য করায় প্রীত হ'লাম। কবিতা পাঠ এবং কবিতার বিষয় নিয়ে ভাবনার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
ভাল থাকুন, শুভকামনা....
৭| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:০৭
সোহানী বলেছেন: একাকিত্বকে হয়তোবা উপভোগ করা শিখতে । কারন কার জীবনটা কখন শূণ্য হয়ে পড়বে কেউই জানে না। অথবা আপনার চারপাশে হাসিমুখে ঘুরে বেড়ানো মানুষগুলো ভীতরে ভীতরে যে ভীষন একা তা হয়তো।
কষ্টের কবিতায় ভালোলাগা।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৪৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: পুরনো একটি পোস্টে এসে সুন্দর মন্তব্য করে গেলেন, প্লাস দিয়ে অনুপ্রাণিত করে গেলেন, এজন্য অশেষ ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৮:২৭
নাবিক সিনবাদ বলেছেন: ধন্যবাদ, ভালো লাগলো।