নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।
"স্যার, আচ্ছা সে জানা"
কতজনকে সে বলেছে এ কথা, তা তারও অজানা।
কুসুম নামের যে কুসুমটি দেখেছিলাম, সত্যি অনন্যা!
মলিন মুখে কৃত্রিম হাসির রেখাটানা যেন এক ফুলকন্যা।
ফুলবাড়ী রিসোর্ট, নামটা যেন দেশী দেশী মনে হয়,
পাহাড় কন্যা অন্নপূর্ণার অতি কাছে, তবে দেশী নয়।
উঠেছিলাম এক বিষন্ন বিকেলে, নিরিবিলি নিভৃতে,
দম্পতি মোরা মাত্র দু'জোড়া একটু ঘুরে বেড়াতে।
ভিনবয়সী আরো পর্যটক ছিল, তবে ভীড় তেমনটা নয়,
ঘুরেছিলাম চারিপাশে, হাতে ছিলো বেশ কিছুটা সময়।
ছবি তুলেছিলাম এখানে ওখানে, জলাশয়ে পা ডুবিয়ে,
কিছুটা ক্লান্ত হয়ে ফিরে এসেছিলাম, চায়ের তৃষ্ণা নিয়ে।
পুরো রেস্তোঁরাটি খালি ছিল, কুসুমরা ছিল এক কোণে,
চায়ের কথা বলাতেই, দলেবলে খুশী হলো মনে মনে।
ফাঁকে ফাঁকে কিছু আলাপও হলো, পিতা স্বর্গবাসী,
দুঃখিনী মায়ের সংসারে তার ছিলনা তো কোন হাসি।
বিধবা মায়ের গোটা সংসারে নেই কোন রোজগার,
নিজের আয়েই চালাচ্ছে নিজেকে, আর পুরো পরিবার।
পড়াশুনা তাই এগোয়নি বেশী, তবে দুঃখী নয় তা নিয়ে,
ভাইবোন গুলো পড়ছে তো বেশ, তার রোজগার দিয়ে।
মাত্র দু'দিন ছিলেম সেখানে, মাত্র কবারই বা দেখা,
কোন যে মায়ায় বাঁধলো আমায়, শুনায়ে তার কথা।
বলেছিল সে আসার আগের রাতে, ডিনারের শেষে,
"স্যার, আচ্ছা সে জানা", এটুকুই, একটু মলিন হেসে।
মাথাটি দুলিয়ে চোখ দুটো তুলে হালকা আকুতি মেখে,
মধুর চারটি শব্দ দিয়েই, গেল বিষাদের ছায়া রেখে।
হয়তো সেকথা বলেছে অযথা, নেহাত শেখানো বুলি,
কানে বাজে তবু, ভুলি নাতো কভু, কুসুমের স্মৃতিগুলি।
ঢাকা
২০ মার্চ ২০১৩।
ঘটনার স্থানঃ ফুলবাড়ী রিসোর্ট, নেপাল।
কালঃ ২৫-২৭ এপ্রিল, ২০১২
(ইতোপূর্বে প্রকাশিত)
০৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ, রুদ্র জাহেদ।
২| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৬
জুন বলেছেন: পথে প্রান্তরে ঘুরে ফিরে বেড়াতে এমন কত কুসুমদের সাথে দেখা হয়, আলাপ হয়, আর তারা যে আমাদের মনের গভীরে সুগভীর দাগ কেটে যায় আনমনে তা তারা নিজেরাও জানে না কখনো।
আপনার এই অভিজ্ঞতাটি কবিতায় সুন্দর প্রকাশ অনেক ভালোলাগলো।
'আচ্ছা সে জানা ' কত আন্তরিক, আপনার যাত্রা পথের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত এক কুসুম কলি।
+
চড়ুই পাখির কবিতাটি আরেকবার পড়লাম খায়রুল আহসান। আপনার অনুভূতির এক সুন্দর প্রকাশ। সহজ সরল এবং সাবলীল ইংরাজীতে লেখা কবিতায় চড়ুই পাখিটির হৃদস্পন্দন ঠিকই শোনা গেছে।
আমার বাসায়ও অনেকবার এমন হয়েছে তখন শুধু ভয় লেগেছে যে ফ্যানের বাড়িতে না মরে যায় এত সুন্দর প্রানীটি।
অসংখ্য ধন্যবাদ শেয়ারের জন্য কবিতাটি।
০৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৫৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: তারা যে আমাদের মনের গভীরে সুগভীর দাগ কেটে যায় আনমনে তা তারা নিজেরাও জানে না কখনো
- হ্যাঁ, একদম ঠিক কথা। তবে মানুষের মনটা ভাটায় পানি সরে যাওয়া ভেজা বেলাভূমির মতো। হাল্কা পাখিদের হাঁটাহাঁটিতেও সেখানে আঁকিবুকি দাগ পড়ে রয়। কুসুমদেরটাও পড়ে, কতজ্ঞ কবি মনে।
'আচ্ছা সে জানা ' কত আন্তরিক, আপনার যাত্রা পথের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত এক কুসুম কলি।
- সেজন্যই তো বললাম উপরের কথাটা।
আমার চড়ুই কাহিনীটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এতটা কাব্যিক প্রশংসায় যারপরনাই উৎফুল্ল!
পাখি আমার একটা প্রিয় বিষয়, আমার বহু কবিতার অনুষঙ্গ। এখানেও সময়ান্তরে তার দু'চারটে প্রকাশের আশা রাখি। পাখি আর মানুষের প্রেম প্রকাশে অনেক মিল রয়েছে। সেরকম একটা বিষয় নিয়ে আমার আরেকটি কবিতাঃ
Of Birds And Men
৩| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৫১
শামছুল ইসলাম বলেছেন: পুরো কবিতাটা চমৎকার।
শেষটা আরও আকুতিভরাঃ
//মাথাটি দুলিয়ে চোখ দুটো তুলে হালকা আকুতি মেখে,
মধুর চারটি শব্দ দিয়েই, গেল বিষাদের ছায়া রেখে।
হয়তো সেকথা বলেছে অযথা, নেহাত শেখানো বুলি,
কানে বাজে তবু, ভুলি নাতো কভু, কুসুমের স্মৃতিগুলি।//
ভাল থাকুন। সবসময়।
০৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩০
খায়রুল আহসান বলেছেন: কবিতার প্রশংসায় অনুপ্রাণিত হ'লাম। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, শামছুল ইসলাম।
দু'দিনের পরিচয়, তবু স্মৃতি হয়ে রয়।
৪| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২২
আহমেদ জী এস বলেছেন: খায়রুল আহসান ,
"আচ্ছা সে জানা"
ছোট্ট একটি বাক্য । হোক অযথা বলা , না হয় হোল-ই বা নেহাত শেখানো বুলি; কিন্তু তার ভেতরে যে আন্তরিকতার, ভালোবাসার সফেন সমুদ্দুর দোলা দিয়ে যায় সে দোলা ক'জনার মনতীরে ঢেউ হয়ে আছড়ে পড়ে ? কে জানে !!!!!!!!!
ভালো লাগা অনেক ।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৫৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: কিন্তু তার ভেতরে যে আন্তরিকতার, ভালোবাসার সফেন সমুদ্দুর দোলা দিয়ে যায় সে দোলা ক'জনার মনতীরে ঢেউ হয়ে আছড়ে পড়ে ? কে জানে !!!!!!!!!
আমার তো পড়েছিলো, আহমেদ জী এস। আর সে কারণেই তো এ কবিতা।
মন্তব্যে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা!
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৫৯
রুদ্র জাহেদ বলেছেন: ভুলা যায় না!