নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার কথা - ১৬

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৫৩

"আমার কথা - ১৫" এখানে পড়া যাবেঃ আমার কথা - ১৫

ভাইস প্রিন্সিপাল জনাব এম এ ওয়াহাবঃ
আমাদের সময় এমসিসি’র ভাইস প্রিন্সিপাল ছিলেন জনাব এম এ ওয়াহাব। তিনি ইংরেজী সাহিত্যে অনার্স মাস্টার্স করেছিলেন। তবে অন্যান্য কারিশমাটিক স্যারদের তুলনায় তাকে বেশ ম্লান মনে হতো। তাকে যতদিন কলেজে পেয়েছিলাম, ততদিন তার কোন উজ্জ্বল বা উল্লেখযোগ্য কর্মকান্ড আমরা প্রত্যক্ষ করিনি। তিনি ভালো ইংরেজী জানতেন, তবে তা ছিল নিতান্তই বুকিশ। মাঝে মাঝে তিনি আমাদের দুই একটা ইংরেজী ক্লাস নিতেন, ওগুলো খুব বোরিং মনে হতো। আমার ব্যাচের হয়তো কারো কারো মনে থাকতে পারে, তিনি একদিন ক্লাসে এসে আমাদেরকে একটা সাইক্লোস্টাইল করা কাগজ ধরিয়ে দিয়েছিলেন। তাতে একটা বড় কবিতা লেখা ছিলো, যার নাম “There is a log in the middle of the sea”। তিনি সুর করে কবিতাটা পড়ছিলেন আর আমাদেরকে তাঁর সাথে কন্ঠ মিলাতে বলছিলেন। আমাদের তা করতে ভালো না লাগলেও আমরা গলা মিলাচ্ছিলাম। তিনি মৃদুভাষী ছিলেন, পোষাকে আশাকেও বিশেষ কেতাদুরস্ত ছিলেন না। তাঁকে দেখে আমাদের মনে হতো, তিনি প্রিন্সিপালকে খুব ভয় পেতেন। তাঁর আচরণ অনেকটা মোসাহেবী ধরণের ছিলো। এ্যসেম্বলীতে তিনি মাঝে মাঝে প্রিন্সিপালের অনুপস্থিতিতে বক্তৃতা দিতেন, তবে সেগুলো মোটেই চিত্তাকর্ষক হতোনা।

এ্যডজুট্যান্টঃ
এমসিসিতে আমরা প্রথম এ্যডজুট্যান্ট হিসেবে পাই ক্যাপ্টেন জিয়াউদ্দিনকে। তিনি খুব নম্র ভদ্র মেজাজের ছিলেন এবং দেখতে অনেকটা নাদুস নুদুস টাইপের ছিলেন। খুব সম্ভবতঃ তিনি এডুকেশন কোরের ছিলেন। তার ওয়ার্ডস অব কমান্ড চিকণকন্ঠে বের হতো, তাই ততটা ইম্প্রেসিভ ছিলোনা। তবে ঠান্ডা মেজাজের কারণে তিনি ক্যাডেটদের কাছে মোটামুটি জনপ্রিয় ছিলেন। তাকে আমরা বেশীদিন পাইনি। কিন্তু তিনি চলে যাবার পর আমরা যাকে পেয়েছিলাম, তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন গরম কাকে বলে। তার নাম ছিলো ক্যাপ্টেন এম আনোয়ার হোসেন। তিনি আর্টিলারী কোরের ছিলেন। তখন থেকে প্রায় ১৭ বছর পর সেনাসদরে আমার তাঁর সাথে স্টাফ অফিসার গ্রেড-২ (কো অর্ড) হিসেবে চাকুরী করার সৌভাগ্য হয়। কিন্তু ততদিনে তাঁর সম্বন্ধে আমার মনে সেই ছোটবেলায় যে ইমাজ গড়ে উঠেছিলো, তার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। তখন তিনি একজন মেজর জেনারেল। এর পর পরই তিনি মালয়েশিয়ায় আমাদের হাই কমিশনার হিসেবে বদলী হন। সেখান থেকে তিনি ফেডারেল রিপাবলিক অব জার্মানীতেও বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হয়েছিলেন।

ক্যাপ্টেন আনোয়ার প্রথম রাতেই বিড়াল মেরেছিলেন। প্রথম আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজের দিন যখন কলেজ ক্যাপ্টেন তার কাছে প্যারেড স্টেট হ্যান্ড ওভার করছিলেন, তখন এ্যটেনশন অবস্থায় কোন একজন ক্যাডেট একটু নড়াচড়া করে উঠলে তিনি জলদ গম্ভীর কন্ঠে হুংকার ছেড়েছিলেন, “ডোন্ট মুভ ইওর ব্লাডি বলস!” তাঁর গলা ছিলো খুব ভারী আর ভাষা খুব কমান্ডিং। তাঁর মুখে কথায় কথায় স্ল্যাং এর খই ফুটতো। আমরা যারা বাংলা মিডিয়াম থেকে এমসিসিতে গিয়েছিলাম, তারা প্রথম প্রথম ওসব অনেক কিছু বুঝতে না পারলেও অচিরেই তার কল্যাণে আমাদের স্ল্যাং এর ভান্ডারও খুব সমৃদ্ধ হয়ে উঠলো। সতীর্থদের সাথে আলাপে সালাপে আমরাও রাতারাতি বেশীরভাগ শব্দের সাথে ব্লাডি কথাটা যোগ করতে শুরু করলাম। ওনার কিছু কিছু স্ল্যাং বেশ ন্যাস্টি ছিল, তাই সেগুলো আর এখানে উল্লেখ করলাম না। কিছুদিনের মধ্যেই বুঝে নিয়েছিলাম, ওটাই ছিলো সামরিক কথোপকথনের স্বীকৃ্ত কালচার।

ক্যাপ্টেন আনোয়ার দেখতে শুনতে আর আচার আচরণে বেশ রাফ এ্যান্ড টাফ ছিলেন। তিনি আসার পর কলেজের ওস্তাদরাও বেশ নড়েচড়ে উঠেছিলেন, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীরাও মকরামি বাদ দিয়ে সোজা হতে শুরু করেছিলো। বাঙালী এ্যাডজুট্যান্ট হয়েও তাঁকে মাঝে মাঝে স্বয়ং পাকিস্তানী প্রিন্সিপালের সাথে পাঙ্গা নিতে দেখে আমরাও বেশ উৎফুল্ল হ’তাম। তাঁর সময়েই প্রথম গোটা কলেজের গ্রুপ ছবি তোলা হয়েছিলো। সোহরাওয়ার্দী হাউসের সামনের বিরাট গাছটার নীচে আমরা সমবেত হয়েছিলাম। তাঁর এরেঞ্জমেন্ট সম্পর্কে প্রিন্সিপাল আনসারী এসে কি যেন একটা নেতিবাচক মন্তব্য করেছিলেন, যা আমার এখন ঠিক মনে নেই। তবে তিনি প্রায় তিনশ’ ক্যাডেট এবং সকল শিক্ষকদের সামনে এর একটা যুতসই জবাব দিয়ে প্রিন্সিপালকে চুপ করিয়ে দিয়েছিলেন। এটা আমরা খুব উপভোগ করেছিলাম। ফটোগ্রাফার একজন মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ট্রাইপডের উপর রাখা তার ক্যামেরার লেন্সটাকে একটা লাল কিংবা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখেছিলেন। ক্লিক করার আগে তিনি একটা ফানি ভয়েসে হুঁশিয়ারী দিতেন, “গেট রেডী প্লীজ!” এর পর থেকে বহুদিন ধরে “গেট রেডী প্লীজ!” কথাটা আমাদের মুখে মুখে ঘুরতো।

গড নোজ এভ্রিথিং, ম্যান ইজ মর্টাল স্যারঃ
আমাদের একজন ব্যাচমেট ছিলো যে প্রথম থেকেই তার বাচালতা ও অবিবেচক এর মত কথাবার্তার জন্য একটা কালো চতুষ্পদ প্রাণীর নামে টাইটেল পেয়েছিলো। সে একবার পিটিতে অনুপস্থিত থাকার কারণে ধরা খেয়েছিলো। এ্যাডজুট্যান্ট ক্যাপ্টেন আনোয়ার তাকে টী ব্রেক এর সময় (আমাদের সময় মিল্ক ব্রেক বিকেলে হতো)তাঁর অফিসে দেখা করতে বললেন। নির্দিষ্ট সময়ে সে হাজির হলো। তার পরিণতির কথা ভেবে আমরা সবাই বেশ চিন্তিত হয়ে উঠছিলাম। কিছুক্ষণ পর সে ঘর্মাক্ত অবয়বে বের হয়ে এলে আমরা তার সাথে কি কি কথোপকথন হয়েছে তা জানতে চাইলাম। সে বললো যে সে তার নিজস্ব ইংরেজী স্টাইলে এ্যাডজুট্যান্টকে তার পরিস্থিতির কথা বোঝাতে চেয়েছিলো কিন্তু তবুও তিনি সেটা না বুঝে তাকে তিন দিনের এক্সট্রা ড্রিল দিয়েছিলেন। এই শাস্তি পাবার পর সে মনের দুঃখে এ্যাডজুট্যান্টকে বলে এসেছিলো, “গড নোজ এভ্রিথিং, ম্যান ইজ মর্টাল স্যার”! অর্থাৎ, তিনি না মানলেও আল্লাহ জানেন যে সত্যি সত্যি তার জ্বর এসেছিলো। আর সব মানুষকেই একদিন মরতে হবে, তখন সবাইকেই আল্লাহ’র সম্মুখীন হতে হবে। অবিশ্বাস্য হলেও আমরা তার এই সাহসী উচ্চারণকে বিশ্বাস করেছিলাম, কারণ পাগলে কিনা বলে! উল্লেখ্য যে আমাদের সেই বন্ধুটি ময়মনসিংহের সানকি পাড়া এলাকায় একজন উঠতি নায়ক হিসেবে তখন পরিচিতি পেতে শুরু করেছিলো।

এ্যাডজুট্যান্ট এর বিয়েঃ
আমাদের কলেজের এ্যাডজুট্যান্ট থাকা অবস্থাতেই ক্যাপ্টেন আনোয়ার ১৯৬৯-৭০ সালের দিকে বিয়ে করেছিলেন। তাঁর স্ত্রী ডঃ সুলতানা একজন উচ্চশিক্ষিতা বিদুষী মহিলা ছিলেন। তিনি বহুদিন ঢাকার সেভ দ্য চিলড্রেন ফান্ড এ কর্মরত ছিলেন। এ্যাডজুট্যান্ট এর বিয়ে হলে ক্যাডেটদের কি? তাই এ নিয়ে আমাদের কোন মাথাব্যথা ছিলোনা। কিন্তু একদিন বিকেলে যখন দেখলাম যে কলেজ থেকে বাসভর্তি বরযাত্রী নিয়ে একটা দল ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেলো, তখন অন্ততঃ ঐ রাতের জন্য আমরা একটা অপ্রত্যাশিত কিন্তু ক্ষণস্থায়ী ফ্রীডম অনুভব করেছিলাম। ঢিলেঢালা ভাবে প্রেপ টাইম শেষ করে আমরা পিলো ফাইটসহ নানা কিসিমের দুষ্টুমিতে নিমগ্ন হয়েছিলাম।
হোয়েন দ্য ক্যাট ইজ এওয়ে, দ্য মাইস প্লে এরাউন্ড!

চলবে…

ঢাকা
২৬ জুলাই ২০১৫
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

মন্তব্য ৩২ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৩২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৪৬

আরজু পনি বলেছেন: প্রথম প্যারাটা পড়ে মনে হলো কাউকে অপছন্দ করলে তাকে পরিচয় করিয়ে দেবার ভাষাটাও তেমন রসকষপূর্ণ হয়না ।
ক্যাপ্টেন আনোয়ার ক্যারেক্টারটা পছন্দ হয়েছে খুব ।

এডজুটেন্ট এর সামনে আপনার ব্যাচমেট-এর কথোপকথন এর শেষটা আর যাই হোক দারুণ সাহসিকতার...মানতেই হবে ।
মানুষের যখন আর করার কিছু থাকে না, তখন সে সৃষ্টিকর্তার কাছেই বিচার দেয় ।

শুভসকাল ।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:০৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: শুভসকাল!
আপনার তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ শক্তির প্রতিফলন ঘটেছে মন্তব্যে। লেখার সময় কিংবা কয়েকবার রিভিশনের সময়ও আপনার প্রথম কথাটা মনে উদয় হয় নি, কিন্তু আপনার মন্তব্য পড়ে মনে হলো কথাটা ঠিক। এই সমনোযোগ পাঠের প্রশংসা করি।
এডজুটেন্ট এর সামনে আপনার ব্যাচমেট-এর কথোপকথন এর শেষটা আর যাই হোক দারুণ সাহসিকতার...মানতেই হবে ।
মানুষের যখন আর করার কিছু থাকে না, তখন সে সৃষ্টিকর্তার কাছেই বিচার দেয় ।
-- অবশ্যই!
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

২| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৪২

শামছুল ইসলাম বলেছেন: একটা মজার সমাপ্তি পুরো লেখাটিকে আরও সমৃদ্ধ করেছেঃ

//হোয়েন দ্য ক্যাট ইজ এওয়ে, দ্য মাইস প্লে এরাউন্ড!//

ভাল থাকুন। সবসময়।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৪৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ, শামছুল ইসলাম, সমাপ্তি বাক্যটা উপভোগ করার জন্য।
শুভেচ্ছা রইলো।

৩| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৫১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: এ্যাডজুট্যান্ট এর কথাগুলো পড়তে ভালো লাগছিলো।
ম্যান ইজ মর্টাল প্রসঙ্গটাও ভালো লাগলো। ফানি

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:০৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ, অপর্ণা মম্ময়। মন্তব্যে প্রীত হ'লাম।
এ্যাডজুট্যান্ট এর কথাগুলো এবং 'ম্যান ইজ মর্টাল' প্রসঙ্গটা ভালো লেগেছে জেনে আমারও ভালো লাগলো।

৪| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:০১

মানবী বলেছেন: জনাব এম এ ওয়াহাব স্যারের প্রতি এতো বিরক্তির অন্য কোন রহস্য আছে কিনা বুঝতে পারছিনা :-)

"৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীরাও মকরামি বাদ দিয়ে সোজা হতে শুরু করেছিলো।"
- ৩য় ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারীরা কি মকরামি করতো!!!

দেশী তেজী এ্যাদজুটেন্ট আর পাকিস্তানি প্রিন্সিপালের বাক বিতন্ডার বর্ণনা পড়ার আগ্রহবোধ করছি যদিও এতো বছর পর তা মনে না থাকাটাই স্বাভাবিক।

সুন্দর স্মৃতিচারন ভালো লেগেছে পড়ে, ধন্যবাদ খায়রুল আহসান।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:২৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ মানবী, এমন খুঁটিনাটি বিষয়ে পাঠকের আগ্রহ যেকোন লেখকের জন্যই খুবই প্রেরণাদায়ক।
জনাব এম এ ওয়াহাব স্যারের প্রতি এতো বিরক্তির অন্য কোন রহস্য আছে কিনা বুঝতে পারছিনা -- এখন বেশ বুঝতে পারছি যে আমার লেখায় জনাব এম এ ওয়াহাব স্যারের প্রতি হয়তো কিছুটা বিরক্তি বা অভক্তি প্রকাশ পেয়েছে। কেননা আপনি ছাড়াও আরো একজন পাঠক এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। যাহোক, আমার মনে আছে যে ওয়াহাব স্যারের চেহারাতেই সব সময় একটা বিরক্তির ছাপ ফুটে থাকতো। প্রিন্সিপ্যালকে দেখলে তিনি কাঁচুমাচু করতেন, এটা আমার ভাল লাগতোনা। অন্যান্য স্যারদের তুলনায় তিনি পোশাকে পরিচ্ছদে মলিন থাকতেন। তাঁর অনেকগুলো ছোট ছোট বাচ্চাকাচ্চা ছিলো, যদিও ততদিনে পরিকল্পিত পরিবার গঠনের ধারণা চালু হয়ে গিয়েছিলো (অবশ্য এটা একজন মানুষের ব্যক্তিগত চয়েস, তবুও তাঁর অন্যান্য সতীর্থগণ ওরকমের ছিলেন না)। ক্যাডেটদের প্রতি স্নেহ ভালবাসা তাঁর কোন কার্যকলাপে প্রকাশ পেতনা। এইসব আরকি, অন্য কোন 'রহস্য' ছিলনা।
৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা কাজে ফাঁকি দেওয়া বন্ধ করেছিলো, জবাবদিহিতার ভয়ে। প্রত্যেকের কাজের খতিয়ান নেয়া হতো। দোষ পেলে আইনানুগ শাস্তি দেয়া হতো। তাদের মকরামির কয়েকটি উদাহরণঃ রুমের বাতি জ্বলেনা কিংবা বেসিনের কলের পানি পড়া বন্ধ হয়না, অভিযোগ করলে 'আসছি, আসবো' বলে আসতোনা। স্টোরকীপার সময়মত তার স্টেশনারী স্টোর খুলতোনা, ফলে আমরা স্টেশনারী দ্রব্য সংগ্রহ করতে গিয়ে ফিরে আসতাম। ক্ষৌরকার, চর্মকার (নাপিত/মুচি), এরা সময়মত তাদের কর্মস্থলে হাজিরা দিতনা, কারণ তাদের তত্ত্বাবধায়ক ফাঁকি দিতেন। ইত্যাদি ইত্যাদি।
দেশী তেজী এ্যাদজুটেন্ট আর পাকিস্তানি প্রিন্সিপালের বাক বিতন্ডার বর্ণনা পড়ার আগ্রহবোধ করছি যদিও এতো বছর পর তা মনে না থাকাটাই স্বাভাবিক।-- আমি মূল লেখাতেই বলেছি যে ফটো তোলার এরেঞ্জমেন্ট সম্পর্কে প্রিন্সিপাল আনসারী তাঁর কিছু ভুল ধরতে চেয়েছিলেন, যেমন সীটিং এরেঞ্জমেন্ট কিংবা স্থান নির্বাচন ঠিক হয় নাই, বা এ ধরণের কোন মন্তব্য করেছিলেন। এ্যাডজুটেন্ট খুব ঠান্ডা মেজাজে এর একটা যুৎসই জবাব দিয়েছিলেন, যার পরে তিনি চুপ হয়ে যান।
মন্তব্যে উদ্দীপনা পেলাম, তাই আবারো ধন্যবাদ।


৫| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৬

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: পিলো ফাইট একটু বুঝিয়ে বলেন ।
ক্যাপ্টেন আনোয়ারে মজা পেলাম ।
উনার সম্পর্কে আরো জানতে পারলে ভাল লাগ বে ।
নিরন্তর শুভকামনা রইল

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৫৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: 'পিলো ফাইট' আর কিছুই নয়, কিশোর বয়সের অস্থিরতাজনিত 'কিছু একটা করে' আনন্দ লাভের প্রয়াস মাত্র। নিজের বালিশটা দিয়ে অপরের মাথায় বারি মারার একটা দুষ্টুমি। এতে বালিষ ছিঁড়ে তুলো বের হয়ে গেলে আবার নিজেই ঘুমোবার আগে তা সেলাই করে নেয়া সাধ্যমত। সেলাই ঠিকমত না করতে পারলে সাপ্তাহিক পরিদর্শনের আগে বালিশটাকে কোথাও লুকিয়ে রেখে অন্য কিছু দিয়ে প্রক্সি দেওয়া। সেদিন রাতে এ্যডজুট্যান্ট, হাউস মাস্টার, হাউস টিউটর সবাই বিয়ের নেমন্তন্ন খেতে যাওয়াতে একটা সীমিত সময়ের জন্য অবাধ স্বাধীনতা পেয়েছিলাম।
আমার লেখার বিষয়ে এই আগ্রহটুকু প্রকাশের জন্য অনেক ধন্যবাদ, মাহমুদ০০৭।

৬| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৯

দৃষ্টিসীমানা বলেছেন: আপনার লেখা এবং সবার মন্তব্যগুলোও পড়লাম । পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় ...

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমার লেখা এবং সবার মন্তব্যগুলোও পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ, দৃষ্টিসীমানা। পরেরটা পাবেন পরশুদিন, ইন শা আল্লাহ।

৭| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৫

ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: এই শাস্তি পাবার পর সে মনের দুঃখে এ্যাডজুট্যান্টকে বলে এসেছিলো, “গড নোজ এভ্রিথিং, ম্যান ইজ মর্টাল স্যার”! অর্থাৎ, তিনি না মানলেও আল্লাহ জানেন যে সত্যি সত্যি তার জ্বর এসেছিলো। আর সব মানুষকেই একদিন মরতে হবে, তখন সবাইকেই আল্লাহ’র সম্মুখীন হতে হবে। অবিশ্বাস্য হলেও আমরা তার এই সাহসী উচ্চারণকে বিশ্বাস করেছিলাম, কারণ পাগলে কিনা বলে! উল্লেখ্য যে আমাদের সেই বন্ধুটি ময়মনসিংহের সানকি পাড়া এলাকায় একজন উঠতি নায়ক হিসেবে তখন পরিচিতি পেতে শুরু করেছিলো।

ভাল লেগেছে কথাগুলো।

এই পর্বটা ও মজা নিয়ে পড়লাম

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ, ফেরদৌসা রুহী। উদ্ধৃতি ও মন্তব্যে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।

৮| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:০২

রাতুল_শাহ বলেছেন: আপনার কথা প্রথম পর্ব থেকে পড়ে আসতে হবে।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: তা বেশ ত! সময় করে ঝটপট পড়ে ফেলুন। এটা পড়লেন, এটা কেমন লাগলো, তা তো বলে গেলেন না।
মন্তব্যে আশান্বিত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম। ধন্যবাদ, রাতুল_শাহ।

৯| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৪৮

প্রামানিক বলেছেন: পড়ে ভাল লাগল। ধন্যবাদ খায়রুল ভাই।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৭:৪৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ, প্রামানিক। মন্তব্যে প্রীত হ'লাম।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা!

১০| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৪

রাতুল_শাহ বলেছেন: আমার এক বন্ধু কমান্ডো ট্রেনিং দিচ্ছিলো, ঐ সময়টাতে তাকে মোবাইল করি, তারপর সে কথায় কথায় স্ল্যাং এর ব্যবহার। আমি তো পুরা অবাক।
কিন্তুু ক্যাম্পাসে থাকার সময় সে খুবই ভদ্র ছেলে ছিলো।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:১২

খায়রুল আহসান বলেছেন: কমান্ডো ট্রেনিং এর সময় মেজাজ মর্জি বোধহয় ওরকমেরই হয়ে থাকে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, রাতুল_শাহ।

১১| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৩৮

মৌ রি ল তা বলেছেন: পরীক্ষার ভয়াবহ রাত্রিতে এই পার্ট পরে কি বলব বুঝতে পারছি না !! গড নোজ এভ্রিথিং, ম্যান ইজ মর্টাল স্যার !! হাসতে হাসতে সব টেনসান নাই হয়ে গেল ! অসংখ্য ধন্যবাদ এই পার্টটার জন্য !! খুব ভাল্লাগছে !!!

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:১৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: পরীক্ষার পড়া রেখে আপনি এটা পড়েছেন? যাক, তবুও যে এটা পড়ে "সব টেনসান নাই হয়ে গেল" - এটুকু জেনেতো আমারও ভালোই লাগছে।
লেখাটা আগ্রহ নিয়ে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ, মৌ রি ল তা, এবং মন্তব্য করার জন্য তো বটেই। শুভেচ্ছা জানবেন।

১২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:৪৬

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার্জনের সাথে জড়িত প্রতিটি ব্যক্তি শিক্ষার্থীর জীবনে নানাভাবে প্রভাব ফেলে। আপনার লেখা পড়ে আবারও মনে পড়লো।


স্ল্যাংকে ব্যক্তিগতভাবে আমি সমর্থন করি না। আজকালকার ছেলেমেয়েরা, ক্যাডেটে না পড়লেও, অনেক স্ল্যাং ব্যবহার করে। বিশেষ করে এফ'ওয়ার্ড। কথায় কথায় এটি ব্যবহার না করলে যেন স্মার্টনেস প্রকাশ পায় না। এফ'ওয়ার্ড, শিট, হেল ইত্যাদি বলার জন্যই যেন ছেলেমেয়েরা ইংরেজি শেখে। কবে যে ওরা বুঝবে যে, এগুলো সঠিক ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক নয়। এগুলো যে বুমেরাং হয়ে তাদের সম্পর্কে খারাপ ধারণার সৃষ্টি করে, এটি কে তাদেরকে বলবে?

কিন্তু শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য, বিশেষত, সামরিক পরিবেশে যেখানে সকলেই প্রাপ্তবয়স্ক, সেখানে স্ল্যাং ব্যবহার হতে পারে হয়তো। সকল মানুষ কণ্ঠস্বরে প্রভাবিত হয় না। বিধিবিধানেও কাজ হয় না। নির্দেশের মধ্যে কিছু শব্দ থাকতেই হয়, যা তাকে প্রাকৃতিকভাবেই নাড়িয়ে দেবে। 'মকরামি' করার সুযোগ পাবে না, যেমন আপনি বললেন ;)

যেমন: অপরাধীকে ধরার পর পুশিলের দু'টি অতর্কিত থাপ্পড় খুবই দরকার। তাতে প্রতিক্রিয়া করার সম্ভাবনা যেমন কমে যায়, তেমনি সুড়সুড়ি করে আদশ পালন করতেও বাধ্য হয়। এজন্যে শৃঙ্খলা রক্ষার সময় স্ল্যাং শব্দের প্রয়োগ হয়তো আমি মেনে নিতে পারি।

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:১৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: উপরে উল্লেখিত আপনার প্রতিটি কথার সাথে শুধু একমতই না, বরং মনে হলো কথাগুলোর অন্তর্নিহিত উপলব্ধিটুকুও আমারই মন থেকে নেয়া। বিশেষ করে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া ছাত্র ছাত্রীদের বাংলিশ কথাবার্তা শুনে আমিও মাঝে মধ্যে ভীষণ পীড়িত ও বিব্রত বোধ করি। আর আজকাল তো ছোট বাচ্চাদের মুখেও বিরক্তি প্রকাশের সময় 'শীট' কথাটা শুনতে পাই।
এগুলো সঠিক ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক নয়। এগুলো যে বুমেরাং হয়ে তাদের সম্পর্কে খারাপ ধারণার সৃষ্টি করে, এটি কে তাদেরকে বলবে? -- সেটাই আমারও প্রশ্ন, মাঈনউদ্দিন মইনুল! পরিবার থেকেই প্রথমে এ কথাগুলো বলা উচিত, তারপরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
আপনার মন্তব্যের সবচেয়ে ভালো লাগার অংশটুকুঃ
কিন্তু শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য, বিশেষত, সামরিক পরিবেশে যেখানে সকলেই প্রাপ্তবয়স্ক, সেখানে স্ল্যাং ব্যবহার হতে পারে হয়তো। সকল মানুষ কণ্ঠস্বরে প্রভাবিত হয় না। বিধিবিধানেও কাজ হয় না। নির্দেশের মধ্যে কিছু শব্দ থাকতেই হয়, যা তাকে প্রাকৃতিকভাবেই নাড়িয়ে দেবে। 'মকরামি' করার সুযোগ পাবে না, যেমন আপনি বললেন -- একটি বিরল, ব্যতিক্রমী পর্যবেক্ষণ, চিন্তার গভীরতা ছাড়া যা উপলব্ধিতে আসার কথা নয়। এই অংশটুকুর জন্য বিশেষ ('টুপিখোলা', যা আগে একবার বলেছিলাম) অভিবাদন!

১৩| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১২:২৮

কালীদাস বলেছেন: এডজুটেন্ট পোস্টের কাজ কি? এটা কি প্রিন্সিপালের পরিবর্তিত টাইটেল?

০১ লা মার্চ, ২০১৯ সকাল ১১:২৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: ভেরী স্যরি কালীদাস, আপনার এ মন্তব্যের উত্তর প্রায় আড়াই বছর পরে দিচ্ছি। কারণটা কী হতে পারে, আশা করি আপনি তা ভালই বুঝবেন। নোটিফিকেশনের বিভ্রাট সামু থেকে বোধকরি আর যাবেই না!
এ্যাডজুট্যান্ট এর মূল কাজ কলেজের অভ্যন্তরীণ নিয়ম শৃঙ্খলা রক্ষা করা এবং অধ্যক্ষের অনুমোদনক্রমে প্রশাসনিক নির্দে্শ প্রণয়ন এবং প্রয়োগ করা। প্রিন্সিপাল এবং ভাইস প্রিন্সিপালের পরে তার স্থান। তিনি প্রিন্সিপালের প্রশাসনিক সহায়ক, ভাইস প্রিন্সিপাল যেমন একাডেমিক সহায়ক।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, এবং দেরীতে সেই আগ্রহ প্রকাশকারী মন্তব্যের উত্তর দেয়ার জন্য আবারও দুঃখ প্রকাশ করছি।

১৪| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৩৬

সোহানী বলেছেন: পরিচয় পর্ব ভালো লাগলো................. । বেশী কিছু লিখতে পারছি না, অফিস যেতে হবে। আবার আসবো..........

০১ লা মার্চ, ২০১৯ দুপুর ১২:১৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়ার এবং মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। প্রীত হ'লাম।

১৫| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৩:৪৪

সোহানী বলেছেন: হাহাহাহাহা......... শেষ লাইটা পড়ে হাসতে হাসতে শেষ। সত্যিইতো, তখন এক দিনের স্বাধীনতা মানে বিরাট কিছু। তার উপর ক্যাডেট কলেজের মতো জায়গায়।

সবার পরিচিতি পর্ব আবারো পড়লাম। এবং মজার ব্যাপার হলো আপনার লিখা পড়তে পড়তে আমি আমার নিজের কাহিনী খুঁজতে থাকি কেন যেন!!!

০১ লা মার্চ, ২০১৯ দুপুর ২:৫৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: সবার পরিচিতি পর্ব আবারো পড়লাম - আরেকটি তথ্য এখানে জানাবার আছে। সেদিনের সেই ক্যাপ্টেন আনোয়ার গত ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ তারিখে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৭৯ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন! আল্লাহ রাব্বুল 'আ-লামীন ওনাকে ক্ষমা করে দিন এবং জান্নাত নসীব করুন! উনি বিধবা স্ত্রী এবং দুই কন্যা রেখে গেছেন।
পুনঃমন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত।

১৬| ০১ লা মার্চ, ২০১৯ রাত ১১:০৬

সোহানী বলেছেন: ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন! যেখানেই থাকুক শান্তিতে থাকুক তিনি।

০৩ রা মার্চ, ২০১৯ সকাল ১১:৫৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমীন!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.