নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার কথা - ১৮

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:২৬

আমার কথা - ১৭ পড়তে হলে এখানে ক্লিক করুন

এমসিসি’র তৃতীয় (আমাদের দেখা দ্বিতীয়) প্রিন্সিপাল উইং কমান্ডার সুলেমান হায়দার কীয়ানিঃ

১৯৬৯ সালের শেষের দিকে কর্ণেল আনসারী আমাদের কলেজে চাকুরী শেষ করে পাকিস্তানে ফিরে যান। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ (আরসিসি) এর তৎকালীন অধ্যক্ষ উইং কমান্ডার সুলেমান হায়দার কীয়ানি। আমাদের পাড়ার একজন সিনিয়র ভাই তখন আরসিসিতে পড়তেন। কলেজ ছুটির সময়ে আমরা কখনো কখনো একত্র হয়ে গল্পগুজব করতাম। তার মুখে তাদের কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ উইং কমান্ডার সুলেমান হায়দার কীয়ানি এর স্মার্টনেস সম্পর্কে অনেক কাহিনী উপাখ্যান শুনেছিলাম। ছুটির সময় তিনিই আমাকে প্রথম জানিয়েছিলেন যে তাদের প্রিন্সিপাল আমাদের কলেজে বদলী হয়েছেন। তাঁর মত একজন ভালো ও জনপ্রিয় প্রিন্সিপালকে হারিয়ে আরসিসি’র ক্যাডেটরা দুঃখবোধ করছিলো বলে মনে হলো। ছুটি শেষে কলেজে ফিরে শুনি তথ্যটি সঠিক। কিছুদিনের মধ্যেই নতুন প্রিন্সিপাল আমাদের মাঝে সশরীরে আবির্ভূত হলেন। তাঁর দেহাবয়ব প্রথম দর্শনেই ইমপ্রেস করার মত ছিলো। স্লিম, লম্বা গড়নের, ব্যাকব্রাশ করা আধাপাকা চুল। সদা সর্বদা স্মিতহাসি, স্মার্ট, পরিপাটি পরিচ্ছদ পরিহিত থাকতেন। প্রথম যেদিন তিনি মুখ খুললেন, আমি সত্যিই একেবারে থ’ বনে গিয়েছিলাম! মানুষ এত সুন্দর উচ্চারণে ইংরেজী ভাষায় কথা বলে কিভাবে, যে ভাষা তার নিজ মাতৃভাষা নয়? তিনি ইংরেজী ফনেটিক্সে প্রশিক্ষিত ছিলেন হয়তো বা, নইলে তাঁর কথা একেবারে বিদেশীদের কথার মত শোনাতো কী করে? ইংরেজী think শব্দটির উচ্চারণ যে ঠিক থিঙ্ক নয়, বরং অনেকটা সিঙ্ক এর কাছাকাছি, সেটা তাঁর কাছেই প্রথম শিখেছিলাম। যদিও সেটা ঐ শেখা পর্যন্তই সীমিত, আমার মুখ দিয়ে কস্মিনকালেও ও ধরণের উচ্চারণ বেড়োয়নি, আর বেড়োবেও না। আমার ব্যাচমেট জামালউদ্দিন খুব তাড়াতাড়ি তাঁর এ নিখুঁত উচ্চারণগুলো রপ্ত করে ফেলেছিলো এবং সে মাঝে মাঝে ঐরকম উচ্চারণে আমাদের সাথেও কথা বলতো।

প্রিন্সিপাল কীয়ানি খুবই চটপটে স্বভাবের একজন ডায়নামিক লোক ছিলেন। সবকিছুতেই তাঁর প্রেজেন্টেশন গুলো বেশ পরিচ্ছন্ন ছিলো। তিনি রেডী উইটের অধিকারী ছিলেন, আপাদমস্তক একজন কৌতুকপ্রিয় মানুষ। তিনি কাজের লোক ছিলেন, কাজপাগল লোকদেরকে তাঁর আশেপাশে রাখতেন। তিনি এসেই প্রথম প্যারেন্টস’ ডে তে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ করেছিলেন একজন উচ্চপদস্থ পিএএফ অফিসারকে। সম্ভবতঃ তিনি তখন ঢাকার বেস কমান্ডার ছিলেন, অথবা পাকিস্তানের বিমান সদর থেকে আগত কোন মাননীয় অতিথি। তাঁর নামধাম আজ কিছু মনে নেই, তবে এটুকু মনে আছে যে তিনি প্যারেড রিভিউ এর পরে এক চমৎকার বক্তৃতা দিয়েছিলেন। বক্তৃতার শেষে তিনি আমাদের সকলের জন্য জীবনে যেন “many soft landings” পেতে পারি, সেটা উইশ করেছিলেন। তখনই প্রথম জেনেছিলাম, কাউকে ঝঞ্ঝাহীন, বিপদমুক্ত জীবন উইশ করতে হলে এয়ারফোর্সের পরিভাষায় “soft landings” উইশ করা হয়ে থাকে।

প্রিন্সিপাল কীয়ানি এমসিসিতে পদার্পণ করার সাথে সাথে চারিদিকে সাজ সাজ রব পড়ে গেলো। কলেজ একাডেমিক ব্লকের সামনে একটা উঁচু গোলচক্কর ছিলো। তিনি ওটাকে ভেঙ্গে সমান করে একটা মনোরম বাগান বানানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিলেন, কিন্তু তার আগেই বদলী হয়ে যাবার কারণে তিনি সেটা শেষ করে যেতে পারেন নাই। পরবর্তীতে বাঙালী প্রিন্সিপাল উইং কমান্ডার এ কে এম বদিউর রহমানের আমলে বাকী কাজটুকু শেষ করা হয়। তাঁর সময়েই আরো বেশ কয়েকটা নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিলো, যেমন কলেজ মাসজিদ আর ২৫ মিটার ফায়ারিং রেঞ্জ, যদিও রেঞ্জটা কোনদিন ব্যবহৃত হয়েছিলো বলে শুনিনি। তাঁর সময়েই প্রথম কলেজের অবস্ট্যাকল কোর্সটাও নির্মিত হয়। আগে আমাদের হাউসগুলোতে কোন ফ্লাইপ্রুফ নেটিং ছিলোনা। তিনি এসে সব হাউসের বারান্দা ও দরজা জানালাগুলোকে ফ্লাইপ্রুফ নেটিং করেছিলেন। আমাদের বেডগুলো আগে ছিলো কাঠের ফ্রেমের উপর ‘টেপ নেওয়ার’ এর ফিতে দিয়ে তৈরী, তার উপর একটা পাতলা তোষক থাকতো। তিনি এসে বেডগুলোকে উন্নত করলেন। ফিতের পরিবর্তে কাঠ লাগলো, পাতলা তোষকের জায়গায় মোটা জাজিম এলো। পাতলা সাদা বেডশীটের বদলে স্ট্রাইপড শীট দেয়া হলো, সাথে হাউস কালারের সাথে মিলিয়ে মোটা গুলটেক্সের বেড কভার। সাধারণ মানের পিটি সু এর বদলে দেয়া হলো উন্নত মানের বাটার পিটি সু, সাথে উন্নত মানের মোজা। খুব দ্রুত এ ধরণের উন্নয়নে সকলের মনোবল খুব চাঙ্গা হয়ে উঠতে থাকলো এবং কলেজটা অনেকটা অফিসার্স মেস এর ন্যায় একটা উন্নত মানের আবাসিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়ে গেল। এসব উন্নয়নের কারণে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেন শিক্ষক, ছাত্র, স্টাফ, বেয়ারা, বাবুর্চি সবার চলনে বলনে একটা সপ্রতিভ ভাব লক্ষ্য করা গেলো। ঘানিটানা জীবনেও যে কৌতুক ও হাস্যরস একটা অপরিহার্য উপাদানে পরিণত হতে পারে, তা অনেকেই প্রথমবারের মত উপলব্ধি করলো। সেনাবাহিনীর রাফ এন্ড টাফ কিন্তু আটপৌরে জীবন প্রণালীর তুলনায় এয়ারফোর্সের শৈল্পিক ও পরিশীলিত মনোভঙ্গী আমার মত লোকের আনাড়ি চোখকেও এড়াতে পারে নাই। আমি ক্রমেই মুগ্ধ হতে থাকলাম।

প্রিন্সিপাল কীয়ানি আসার পর কলেজে আরেকটা উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসলো। সেটা সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে। তিনি বেশ কিছু ক্লাব করে দিয়েছিলেন, যেমন ডিবেটিং ক্লাব, ড্রামা ক্লাব, ফটোগ্রাফী ক্লাব, হিচ হাইকিং ক্লাব ইত্যাদি। আন্তঃ হাউস ক্রস কান্ট্রি দৌড় প্রতিযোগিতাও তাঁর সময়েই প্রথম চালু হয়। তিনি আসার পর কলেজে বেশী করে নাটক মঞ্চস্থ হতে শুরু করে। তিনি কিছু নতুন নতুন প্রতিযোগিতার প্রচলন করেন, যার কথা আমরা আগে কখনো শুনিনি। যেমন আন্তঃ হাউস স্পেলিং বী (Spelling Bee) প্রতিযোগিতা, বাংলা ও ইংরেজীতে উপস্থিত বক্তৃতা (Extempore Speech) প্রতিযোগিতা, ইত্যাদি। এছাড়া তাঁর আরেকটা গুণ আমাকে খুব আকৃষ্ট করতো, সেটা হচ্ছে তাঁর সময়ানুবর্তিতা। কলেজে কখনো কোন অনুষ্ঠান প্রিন্সিপালের বিলম্বে উপস্থিতির কারণে দেরীতে শুরু হয়নি। তাঁর আমলেই প্রথম দেখেছিলাম, কোন অনুষ্ঠানের সময়সূচী একেবারে মিনিটের কাঁটা ধরে প্রণয়ন করা হতো। উদাহরণ স্বরূপঃ অভ্যাগত অতিথিদের আসন গ্রহণঃ ১১ টা ৫৩ মিনিটে। আমাদের কলেজ থেকে মাত্র ৫ মাইল দূরে মির্জাপুরে অবস্থিত “ভারতেশ্বরী হোমস” নামে আমাদেরটার মতই আবাসিক এক নারীশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিলো। সেখানকার শীর্ষ ব্যক্তি হিসেবে অধিষ্ঠিত ছিলেন প্রিন্সিপাল কীয়ানির মতই একজন স্মার্ট, প্রথিতযশা, চল্লিশোর্ধ্ব অবিবাহিতা (তখনো পর্যন্ত) নারী, তাঁর নাম মিস জয়া পতী। তিনি একজন অত্যন্ত বিদুষী ও মহিয়সী নারী ছিলেন। এছাড়া তাঁর বংশগত পরিচয়, তিনি ছিলেন কুমুদীনি হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা (আর পি সাহা নামে অধিক পরিচিত) এর সুযোগ্যা কন্যা। প্রিন্সিপাল কীয়ানি তাঁর সাথে যোগাযোগ করে এই দুই প্রতিষ্ঠানের মাঝে এক সেতুবন্ধন গড়ে দিলেন। শুরু হলো দুই প্রতিষ্ঠানের মাঝে সাংস্কৃতিক যোগাযোগ, সেই সাথে হয়তোবা কারো কারো মাঝে ব্যক্তিগত পর্যায়ে আত্মিক যোগাযোগও বটে। আমরা তাদের নাটক দেখতে গেলাম, তারাও একবার আমাদের এখানে এলো। ক্যাডেট কলেজের পরিবেশটা দিনে দিনে বেশ উপভোগ্য হয়ে উঠতে লাগলো। সেই সাথে ক্যাডেটদের মনোবলও বেশ চাঙ্গা হতে শুরু করলো। অবশ্য সিনিয়র ক্লাসের ভাইদের, বিশেষ করে তৎকালীন স্মার্ট কলেজ ক্যাপ্টেন শফিক চৌধুরী ভাইয়ের এবং ব্যাচেলর এ্যডজুট্যান্ট ক্যাপ্টেন কাইয়ুম মালিক এর মনোবল চাঙ্গা হবার আরেকটা কারণ ছিলো, সেকথা নাহয় আরেকদিন বলা যাবে!

চলবে….

(ইতোপূর্বে প্রকাশিত)

ঢাকা
০৭ অগাস্ট ২০১৫
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৫৩

প্রামানিক বলেছেন: এপর্বও পড়া হলো। পরের পর্বের আশায় রইলাম। ধন্যবাদ খায়রুল ভাই।

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:২৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: পর্ব গুলো পড়ে যাবার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ, প্রামানিক।

২| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৫৮

ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: বক্তৃতার শেষে তিনি আমাদের সকলের জন্য জীবনে যেন “many soft landings” পেতে পারি, সেটা উইশ করেছিলেন। তখনই প্রথম জেনেছিলাম, কাউকে ঝঞ্ঝাহীন, বিপদমুক্ত জীবন উইশ করতে হলে এয়ারফোর্সের পরিভাষায় “soft landings” উইশ করা হয়ে থাকে।

আমিও এখন আপনার লেখা পড়েই এটা জানলাম।
আজকের পর্ব পড়তেও ভাল লেগেছে।

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:২৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ, ফেরদৌসা রুহী। ভালো লেগেছে জেনে খুশী হ'লাম।

৩| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৩

শামছুল ইসলাম বলেছেন: আপনার স্মৃতি কথা পড়তে পড়তে একটা কথা খুব মনে হলো, প্রতিটা মানুষ স্বতন্ত্র গুণাবলীর অধিকারী এবং প্রত্যেকেই তার স্বতন্ত্র কাজের ধারার মাধ্যমে মানুষের হৃদয় জয় করতে পারে।

প্রিন্সিপাল কীয়ানিকে ছাত্রদের ভাল লেগেছিল তার স্মার্টনেস, ইংরেজী বাচনভঙ্গি,কর্মতৎপরতার জন্যঃ

//প্রিন্সিপাল কীয়ানি খুবই চটপটে স্বভাবের একজন ডায়নামিক লোক ছিলেন। সবকিছুতেই তাঁর প্রেজেন্টেশন গুলো বেশ পরিচ্ছন্ন ছিলো।//

আবার তার স্থলাভিষিক্ত বাঙালী প্রিন্সিপাল উইং কমান্ডার এ কে এম বদিউর রহমান বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সকলের হৃদয় জয় করে নিয়েছিলেনঃ

//এসব উন্নয়নের কারণে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেন শিক্ষক, ছাত্র, স্টাফ, বেয়ারা, বাবুর্চি সবার চলনে বলনে একটা সপ্রতিভ ভাব লক্ষ্য করা গেলো। ঘানিটানা জীবনেও যে কৌতুক ও হাস্যরস একটা অপরিহার্য উপাদানে পরিণত হতে পারে, তা অনেকেই প্রথমবারের মত উপলব্ধি করলো। সেনাবাহিনীর রাফ এন্ড টাফ কিন্তু আটপৌরে জীবন প্রণালীর তুলনায় এয়ারফোর্সের শৈল্পিক ও পরিশীলিত মনোভঙ্গী আমার মত লোকের আনাড়ি চোখকেও এড়াতে পারে নাই। আমি ক্রমেই মুগ্ধ হতে থাকলাম। //

একজন ব্যক্তির আগমনে জীবনটা কেমন বদলে যায়ঃ

//ঘানিটানা জীবনেও যে কৌতুক ও হাস্যরস একটা অপরিহার্য উপাদানে পরিণত হতে পারে, তা অনেকেই প্রথমবারের মত উপলব্ধি করলো। সেনাবাহিনীর রাফ এন্ড টাফ কিন্তু আটপৌরে জীবন প্রণালীর তুলনায় এয়ারফোর্সের শৈল্পিক ও পরিশীলিত মনোভঙ্গী আমার মত লোকের আনাড়ি চোখকেও এড়াতে পারে নাই। আমি ক্রমেই মুগ্ধ হতে থাকলাম।//

প্রিন্সিপাল কীয়ানি সময়ে বিভিন্ন নতুন কর্মকান্ডে ছাত্রদের মাঝে যে উদ্দীপনার সঞ্চার হয়েছিল, তার বিস্তারিত বর্ণনা চমৎকার হয়েছে এবং একটু রহস্যের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছেঃ

//ক্যাডেট কলেজের পরিবেশটা দিনে দিনে বেশ উপভোগ্য হয়ে উঠতে লাগলো। সেই সাথে ক্যাডেটদের মনোবলও বেশ চাঙ্গা হতে শুরু করলো। অবশ্য সিনিয়র ক্লাসের ভাইদের, বিশেষ করে তৎকালীন স্মার্ট কলেজ ক্যাপ্টেন শফিক চৌধুরী ভাইয়ের এবং ব্যাচেলর এ্যডজুট্যান্ট ক্যাপ্টেন কাইয়ুম মালিক এর মনোবল চাঙ্গা হবার আরেকটা কারণ ছিলো, সেকথা নাহয় আরেকদিন বলা যাবে! //


পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায়।

বিজয়ের শুভেচ্ছা।

ভাল থাকুন। সবসময়।

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৫৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: বরাবরের মতই সূক্ষ্ম বিশ্লেষণে মুগ্ধ হ'লাম।
প্রিন্সিপাল কীয়ানি সম্পর্কে পরের পর্বেও কিছু কথা থাকবে।
আপনাকেও বিজয়ের শুভেচ্ছা, শামছুল ইসলাম।

৪| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:০২

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: যতদূর জানি , সামরিক বাহিনীর লোকজন নীরস হয়ে থাকে ।

কিন্তু আপনার লিখার ধরণ যথেষ্ট সাহিত্যমান সমৃদ্ধ , যা দেখে আমার ধারণার পরিবর্তন হল ।
এই পর্বও ভাল লাগলো !
বিজয়ের শুভেচ্ছা নিন খায়রুল আহসান ভাই !

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১২

খায়রুল আহসান বলেছেন: এই পর্বটাও আপনার ভাল লেগেছে জেনে খুশী হ'লাম, গিয়াস উদ্দিন লিটন।
বিশ্বের প্রায় সব সামরিক জার্নালে "হিউমার ইন ইউনিফর্ম" নামে একটা আলাদা স্পেস থাকে, এবং শুধু আজ নয়, কয়েক শতাব্দী প্রাচীন প্রথা সেটা। কাজেই এ কথাটা ঠিক নয় যে "সামরিক বাহিনীর লোকজন নীরস হয়ে থাকে"।
আপনাকেও বিজয়ের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি, গিয়াস উদ্দিন লিটন। লেখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

৫| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১৬

আরজু পনি বলেছেন:
ঘানিটানা জীবনে সুখের আমেজের ব্যবস্থা আমরা চাইলেই করতে পারি...
ছোট ছোট ভালো পরিবর্তনগুলো মানুষকে উদ্যমী করে তুলতে সহায়তা করে ।
এই অংশটা বেশ অনুপ্রেরণার ।

soft landings এর কথায় মন খারাপ হয়ে গেল...আমাদের সাথে শেষ দেখা হয়েছিল তারপর আর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট (নাম মনে করতে পারছি না) প্লেন ক্র্যাশ করে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন । ভদ্রলোকের চেহারাটা এখনও খুব মনে আছে । মারা যাওয়ার মাত্র কিছুদিন আগেই তিনি বিয়ে করেছিলেন ।
ফায়ারিং দুইবার করার সুযোগ হয়েছিল । যুগ্নভাবে হায়েস্ট স্কোরার ছিলাম একবার ।
আসলেই সেনাবাহিনীর চেয়ে বিমান বাহিনীর মধ্যে একটা এরিস্টোক্রেসি ভাব আছে এটা ভালো লাগে আমার কাছে ।
লেখায় অনেক ভালো লাগা রইল ।

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: ফায়ারিং দুইবার করার সুযোগ হয়েছিল । যুগ্নভাবে হায়েস্ট স্কোরার ছিলাম একবার -- কিসের ফায়ারিং? আপনারা কি কোন রাইফেল ক্লাবের মেম্বার ছিলেন?
আসলেই সেনাবাহিনীর চেয়ে বিমান বাহিনীর মধ্যে একটা এরিস্টোক্রেসি ভাব আছে -- লক্ষ্য করে থাকবেন হয়তো, আমি সেনাবাহিনীর অফিসার হয়েও কথাটা অকপটে স্বীকার করেছি, যদিও আমি কথাটাকে ঠিক এরিস্টোক্রেসি না বলে 'শৈল্পিক ও পরিশীলিত মনোভঙ্গী' বলেছি।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ, আরজুপনি।

৬| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:২৮

রাতুল_শাহ বলেছেন: শুরু হলো দুই প্রতিষ্ঠানের মাঝে সাংস্কৃতিক যোগাযোগ, সেই সাথে হয়তোবা কারো কারো মাঝে ব্যক্তিগত পর্যায়ে আত্মিক যোগাযোগও বটে।

:)

উনাদের মনোবল চাঙ্গা হবার গল্পটি শোনার আগ্রহ অনেকগুণ বেড়ে গেল। খুব তাড়াতাড়ি জানতে চাচ্ছি।

আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম- কিয়ানি স্যার সত্যিই অসাধারণ ছিলেন। এমন একজনকে পাওয়া আসলে সৌভাগ্যের ব্যাপার।

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২২

খায়রুল আহসান বলেছেন: খুব তাড়াতাড়ি জানতে চাচ্ছি -- পরের পর্বেই জানতে পারবেন বলে আশা রাখি।
জ্বী, আসলেই কিয়ানী স্যার একজন অসাধারণ প্রিন্সিপাল ছিলেন। এমন একজনকে পাওয়া আসলেই সৌভাগ্যের ব্যাপার।
মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ, রাতুল_শাহ।

৭| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৭

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: কিয়ানী সাহেবের কারিশমায় কুপোকাত হয়ে গেলাম । উনার ব্যাপারে আরো জানতে চাই।
ইংরেজী think শব্দটির উচ্চারণ যে ঠিক থিঙ্ক নয়, বরং অনেকটা সিঙ্ক এর কাছাকাছি
এটা জানতাম না ।
আপনার আত্মকথা থেকে এমন অনেক কিছু জানা যায়।
সেদিন আবু জাফর শামসুদ্দিন সাহেবের ডায়েরিতে আপনি বর্ণিত গাজীপুরের বনের একটা বর্ণনা পেলাম ।/ আপনাক্বে পরে টাইপ
করে জানাবো ।
ভাল থাকবেন ।
শুভকামনা রইল ।

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:০৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: উনার ব্যাপারে আরো জানতে চাই। -- ওনার ব্যাপারে আরেকটু কিছু জানতে পারবেন এর পরের পর্বটাতে।
আপনাক্বে পরে টাইপ করে জানাবো। -- আচ্ছা, ধন্যবাদ।
লেখাটা আগ্রহ নিয়ে পড়াতে ভীষণ খুশী হ'লাম। শুভেচ্ছা জানবেন, মাহমুদ০০৭। আপনার 'ফাঁদ' গল্পটার কথা ভুলতে পারছিনা। এত সুন্দর একটা গল্প একটানে কী করে লিখলেন?

৮| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৮

দৃষ্টিসীমানা বলেছেন: ভাল লাগলো , পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম । ভাল থাকুন সব সময় ।

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ, দৃষ্টিসীমানা। লেখাটা ভালো লেগেছে জেনে প্রীত হয়েছি।

৯| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩২

মাসুদ রানা মামুন বলেছেন: ভালো লাগল

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ, মাসুদ রানা মামুন।

১০| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৪০

জুন বলেছেন: ভারতেশ্বরী হোমস ইন করার সাথে সাথেই লেখায় প্রানের উচ্ছাস দেখতে পেলাম খায়রুল আহসান । এই পর্বটি ও বেশ উপভোগ্য । সাথে থাকলাম ।
মির্জাপুর বিশেষ করে ভারতেশ্বরী হোমসের আশের পাশের জনপদের সাথে আমার একটি ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে । অনেকবার গিয়েছি , থেকেছি , শারদীয়া দুর্গা পুজা দেখার আমন্ত্রন পেয়ে গিয়েছি । মিসেস জয়াপতি ও আর পি সাহার সেই অকাল বিধবা পুত্র বধুকে দেখার সৌভাগ্যও হয়েছে ।
+

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৫৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ জুন, মন্তব্যটাতেও তো বেশ প্রাণ আছে।
মির্জাপুর বিশেষ করে ভারতেশ্বরী হোমসের আশের পাশের জনপদের সাথে আপনার যোগাযোগের কথা জানতে পেরে একটু নৈকট্য অনুভব করলাম যেন।
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

১১| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৩

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: পড়লাম । ভালো লাগলো ।

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩২

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, রূপক বিধৌত সাধু।

১২| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৩:৫৫

সোহানী বলেছেন: তাই নাকি??? উনিই প্রথম এ ধরনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন?? অসাধারন তথ্য।

জানতে ইচ্ছে করে, এ চার দেয়ালে বন্দী জীবনের মাঝে ভারতেশ্বরী হোমস্ এ ছাত্রীরা কেমন মনে দোলা দিল ছাত্রদের........হাহাহাহা। দুএকটা কি চিঠি চালানের চেস্টা করেননি? সত্যি বলছি এরকম অনেক চিঠি জীবনে পেয়েছি কিনা তাই একটু শেয়ার করলাম ;)

০৩ রা মার্চ, ২০১৯ রাত ১০:৫৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: চার দেয়ালে বন্দী জীবনের মাঝে ভারতেশ্বরী হোমস্ এ ছাত্রীরা কেমন মনে দোলা দিল ছাত্রদের - দোলা দেয়া তো শুরু হয়েছিল ভালই, তবে সেটা খুব দীর্ঘস্থায়ী হতে পারেনি। কারণ এর কিছুদিন পরেই শুরু হয়ে যায় আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ। সাতই মার্চের বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণের পরের দিনই অন্যান্য সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মত আমাদেরটাও বন্ধ হয়ে যায়। আর তা ছাড়া তখন আমাদের উপরে আরো দু'টি ক্লাস ছিল। তাই মনে দোলা লাগলেও করার কিছু ছিল না। আমরা জ্যেষ্ঠতম ক্লাস হলে হয়তো কিছুটা এডভেঞ্চারাস মুভ নেয়ার কথা ভাবা যেত। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.