নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।
ডাঃ মোঃ আনিসুর রহমান, দেশের প্রখ্যাত এনডক্রিনোলজিস্ট। বারডেম হাসপাতালে চাকুরী করতেন, দীর্ঘদিন ধরে প্র্যাকটিস করেন ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালে। মাঝে মাঝে সপ্তাহান্তে ছুটির দুই দিন সিলেটেও প্র্যাকটিসের জন্য বসেন তার ভক্ত রোগীদের আহ্বানে। মাস ছয়েক আগে চাকুরী থেকে অবসর নিয়েছেন। আমার বাল্যবন্ধু, ১৯৬৭-৭৩ সালে মোমেনশাহী ক্যাডেট কলেজে এক সাথে পড়াশুনা করেছি, একই হাউসে ছিলাম। সেইসব দিনগুলো থেকেই তাকে দেখেছি, ক্যাডেট কলেজের কঠোর নিয়ম শৃঙ্খলা তার পছন্দের ছিলনা। না পারতে যতটুকু পালন করা দরকার, সেটুকুই সে করতো। পড়াশুনা খুব কম করতো। ওটুকু দিয়েই তার চলতো, কারণ সে ভীষণ মেধাবী ছিল। খেলাধূলায় যে খুব পারদর্শী ছিল তা নয়, তবে সব ধরণের খেলাধুলায় আগ্রহী ছিল এবং বিশ্বমানের খেলাধুলা সম্পর্কে সবসময় আপডেটেড থাকতো। সাহিত্যানুরাগী ছিল সেই ছোটবেলা থেকেই। লেখালেখিও টুকটাক করতো, তবে পড়তো প্রচুর। একবার আমরা দশম শ্রেণীতে থাকা অবস্থায় আমাদের আরেক বন্ধু হামিদুল ইসলামের (প্রকৌশলী) লেখা একটা নাটক মঞ্চস্থ করেছিলাম। “চরিত্রহীন” নামের সেই নাটকে আনিস নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেছিল (যদিও নাটকের শিরোনামের সাথে তার ব্যক্তিজীবনের কোন মিল ছিলনা)। ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হবার পর সে তার লাইফস্টাইল পরিবর্তন করে নেয়। তখন দেশ সদ্যস্বাধীন, সেও স্বাধীন। প্রকৌশলী পিতার বড় ছেলে, তার উপর মেধাবী। তাই পরিবার থেকেও তেমন একটা কড়া শাসন ছিলনা। মেডিকেলের পড়াশুনার তীব্র চাপ সত্বেও সে কিছুটা বোহেমিয়ান স্টাইলে জীবন যাপন শুরু করে। মাথা ভর্তি বাবরী চুল রাখে, দাড়ি গোঁফকেও স্বাধীনতা দিয়ে দেয়, যা ক্যাডেট কলেজে থাকতে সে কল্পনাও করতে পারতোনা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে ডাক্তারী পাশ করে সে লিবিয়া চলে যায়। সেখানে থাকা অবস্থায় তার পরিবারে এক দুঃসহ বিষাদ নেমে আসে। তার একমাত্র ভাই মুন্না হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যায়, আজ পর্যন্ত তার কোন সন্ধান পাওয়া যায় নাই। মুন্নাও মোমেনশাহী ক্যাডেট কলেজে পড়েছে, সম্ভবতঃ নবম কিংবা দশম ব্যাচে। মুন্নার অন্তর্ধানে তার শোকাতুর মায়ের কান্না তাকে অস্থির করে তোলে। সে মায়ের ডাকে ত্বরিত দেশে ফিরে আসে এবং সেই থেকে সপরিবারে তার মা বাবার সাথেই তাদের মগবাজারের বাসায় থাকছে। আজকের দিনে একান্নবর্তী পরিবার হিসেবে সাফল্যের সাথে বসবাস করার জন্য ওর সাথে সাথে এলী ভাবীর প্রতিও আমার শ্রদ্ধার অন্ত নেই। আর এখনকার পরিস্থিতিতে তিনি যেভাবে দিনের বেলায় কখনো স্বামীর শয্যাপাশে থাকছেন, কখনো ক্লান্ত হয়ে ওয়েটিং রুমে ফিরে এসে কন্যাদেরকে আঁকড়ে ধরে সাহস দিচ্ছেন, আবার রাতের বেলায় গৃহে ফিরে বৃ্দ্ধ শ্বশুর শাশুড়ির দেখভাল করছেন, তাদেরকে তাদের পুত্র সম্পর্কে কখনো সত্য কখনো মিথ্যে খবর দিয়ে প্রবোধ দিচ্ছেন, আবার সবকিছুর মাঝে নিজেকেও সামলে রাখছেন, এসব দেখে সত্যিই তার প্রতি আমার মনে অসীম সমবেদনা আর গভীর শ্রদ্ধাবোধ জাগে।
চার পাঁচদিন আগে সুদূর আমেরিকার ফ্লোরিডা থেকে আমাদের এক ব্যাচমেট গ্রুপ মেইলে একটা ছোট্ট দুঃসংবাদ দিলো, আনিস গুরুতর অসুস্থ, বারডেম হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আছে। আধঘন্টার মধ্যে আরো দুই একজন আপডেট দিলো, আনিসের সাথে কথা হয়েছে। সে কিডনীর অসুখে ভুগছে, এখন অপেক্ষাকৃত ভাল আছে। তাকে খুব নিরুদবিগ্ন মনে হয়েছে, মনোবল উচ্চ মনে হয়েছে। এরপর থেকে এরকমের আরো কয়েকটা মেইল আসতেই থাকলো, আমিও সেগুলো পড়ে পড়ে নিজেকে আপডেট করছিলাম আর আনিসের কথা ভাবছিলাম। সে একজন অত্যন্ত উচ্চমানের ডাক্তার, তার নিজস্ব লাইনে বলা যায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী। আমার কয়েকজন আত্মীয় স্বজনেরও সে চিকিৎসা করেছিলো। সবাই উপকৃ্ত হয়েছিল। আমার মত এরকম আরো অনেক বন্ধু বান্ধব, অগ্রজ অনুজ এবং তাদের বাবা মা, ভাইবোন এবং আত্মীয় স্বজনের সে চিকিৎসা করতো, করেছিলো। যে একবার তার কাছে যেত, তাকে সাধারণতঃ আর অন্য ডাক্তারের কাছে যেতে হতো না। আর হলেও, কার কাছে যেতে হবে তা সে নিজেই বিচক্ষণতার সাথে বাৎলে দিত।
আমরা ঢাকায় ওর এতগুলো ব্যাচমেট থাকি, তাদের কেউই খবরটা জানলোনা কিংবা জানালোনা, জানালো আমেরিকা প্রবাসী বন্ধু মনসুর। ব্যাপারটা ভেবে একটু খারাপই লাগছিলো। মেইলে যারা তার সাথে আলাপ করে আপডেট দিয়েছে, তাদের সবাই প্রবাসী, আমেরিকা কানাডা থেকে ফোন করে করে খবর নিয়েছে। আর আমরা ঢাকায় সবাই চুপ করে বসে আছি! ঢাকা থেকে কর্নেল নজরুল (অবঃ) প্রথম ওর সাথে কথা বলে মেইলে আপডেট দিয়েছে। তাড়াতাড়ি ওকে ফোন করলাম। ফোন করার আগে প্রখর সেন্স অভ হিউমারের অধিকারী এই ডাক্তার বন্ধুকে বলার জন্য মনে মনে একটা জোকও ঠিক করে রাখলাম। কিন্তু ফোন ধরলেন বন্ধুপত্নী এলী ভাবী। তাকে সরাসরি বললাম, হাসপাতালে শয্যাশায়ী রোগীদের সাথে টেলিফোনে কথা বলা সমীচীন নয় তা আমি জানি, তবে আমার আগে কয়েকজন প্রবাস থেকে ওর সাথে কথা বলেছে এবং তারা এও জানিয়েছে যে আনিস চাচ্ছে যে তার বন্ধুরা তার সাথে কথা বলুক। সেজন্যই আমিও তার সাথে কথা বলার জন্য উদগ্রীব। ভাবী একটু নিম্নস্বরে জানালেন, ওকে এইমাত্র সিসিইউ এ নিয়ে যাওয়া হয়েছে, এখন আর তার সাথে কথা বলার সুযোগ নেই!
সন্ধ্যায় সস্ত্রীক ছুটে গেলাম বারডেম এর সিসিইউ এ, ফোর্থ ফ্লোরে। ৮ নং শয্যায় অচেতন আনিস তখন নিদ্রামগ্ন। বুকে মুখে লাগান সব যন্ত্রপাতি, রেখাঙ্কিত হয়ে উঠে আসছিল তার শরীরের সব খবরাখবর। ঘন ঘন শ্বাস নিচ্ছিল, শ্বাসের সাথে সাথে তার সযত্নে লালিত পেটটা ওঠানামা করছিলো। বেশীক্ষণ এ অবস্থায় ওর পাশে দাঁড়াতে পারলাম না। এক ফ্লোর নীচে ওয়েটিং রুমে এসে এলী ভাবী আর ওর দুই কন্যার সাথে আলাপ আলোচনা করলাম, ওদের চিন্তা ভাবনার কথা জানতে চাইলাম। ডাক্তার ওদেরকে জানিয়েছেন, এ অবস্থায় রোগীকে বিদেশে পাঠানো সম্ভব নয়। দেশের ভেতরে যথাসম্ভব সর্বোত্তম চিকিৎসা সে পাচ্ছে। সকালের দিকে একটা মাইল্ড হার্ট এটাক হয়ে গেছে। ওর হার্টের চিকিৎসা করছেন ওর দীর্ঘদিনের অন্তরঙ্গ বন্ধু ও সতীর্থ ডাঃ মাকসুম, যিনি বারডেম এর হৃদরোগ বিভাগের প্রধান। লাংস এবং কিডনীর চিকিৎসাও করছেন স্বনামধন্য বিশেষজ্ঞগণ। ওর ব্যাপারে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তারা সার্বক্ষনিক নজর রাখছেন ওর উপর। ওয়েটিং রুমে আমাদের আরও কয়েকজন বন্ধু এবং বন্ধুপত্নীদের সাথে দেখা হলো। সবাই ভাবী আর তাদের দুই কন্যার সাথে কথা বলে তাদেরকে সাহস ও সান্ত্বনা যোগাচ্ছেন। ওর সঠিক চিকিৎসাই চলছে, এ ব্যাপারে মোটামুটি আশ্বস্ত হয়ে আমরা হাসপাতাল ত্যাগ করলাম।
গতকাল রাতে আবার ওকে দেখতে গিয়েছিলাম, সস্ত্রীক। ভাবী জানালেন, ওর অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছিল, কিন্তু বিকেল থেকে তার জ্বর দেখা দিয়েছে। ভাবীর সাথে কথা বলতে বলতেই আমার অন্য এক ডাক্তার বন্ধু যিনি নিজেও একজন কিডনী বিশেষজ্ঞ, আমাকে টেলিফোন করে তার অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলো। জ্বরের কথাটা শুনে তাকে উদ্বিগ্ন মনে হলো। ভেন্টিলেটর খোলা হয়েছিল কিনা জানতে চাইলো। আমি ভাবীকে জিজ্ঞাসা করে তাকে জানালাম, না। সে বন্ধুর জন্য দোয়া করতে বললো। আমরা কিছুটা শঙ্কা নিয়ে হাসপাতাল থেকে ফিরে এলাম। ফেরার পথে স্থপতি কাজী আরিফের ফোন পেলাম, সে আনিসের অবস্থা জানতে উদগ্রীব। আনিস অসুস্থ হয়ে হাসপাতলে ভর্তি হবার দুই দিন আগেও ওর সাথে আরিফের কথা হয়েছিলো বলে জানালো। আমি তাকে যতটুকু জানি, জানালাম। শুনে সে মন খারাপ করলো।
আনিস সত্যিকার অর্থে একজন গ্লোব ট্রটার (বিশ্ব পরিব্রাজক)। একটু সময় সুযোগ পেলেই সে বিদেশ দৌড়িয়েছে। সে একজন সৌখীন চিত্রগ্রাহকও বটে। আমরা তাকে আমাদের ব্যাচের অফিসিয়াল ফটোগ্রাফার হিসেবে ডেকে থাকি। শিল্পকলা ও সাহিত্যানুরাগী এই পরিব্রাজক যখনই বিশ্বের কোন দেশে বেড়াতে গেছে, তখনই সেখানকার দর্শনীয় স্থানগুলোর ছবি তুলে সে পোস্ট দিয়েছে। সে সব দেশের ইতিহাস, স্থাপত্য, শিল্প ও সাহিত্য সম্বন্ধীয় বিখ্যাত সব ছবি শেয়ার করেছে ফেইসবুকের পাতায়। দেড় মাস আগেও নেপালের কাঠমুন্ডুতে অনুষ্ঠিত, বাংলাদেশ দূতাবাস এবং MECA কর্তৃক আয়োজিত চিত্র প্রদর্শনীতে সে বড় মেয়েকে নিয়ে উপস্থিত থেকেছে। ওর ছেলেমেয়েরাও ওর মতই খুব মেধাবী। বড় মেয়ে ডাক্তার, ছোট মেয়ে বুয়েট থেকে স্থাপত্যবিদ্যায় পড়াশোনা করে এখন ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছে। একমাত্র ছেলে তড়িৎ প্রকৌশলী, কানাডার ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শেষ করে এখন সেখানেই কর্মরত। আনিসের বাবা সড়ক ও জনপথ বিভাগের এডিশনাল চীফ ইঞ্জিনীয়ার হি্সেবে অবসর গ্রহন করেছিলেন। ওর অশীতিপর বাবা মা আজও জীবিত আছেন এবং জীবিত থাকা অবস্থায় তাদের একমাত্র জীবিত এই পুত্রসন্তানের গুরুতর অসুস্থতায় বেদনাকাতর দিন যাপন করছেন। আমি আনিসের রোগমুক্তির জন্য সর্বান্তঃকরণে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এর কাছে দোয়া করছি, এবং আপনাদের কাছেও দোয়াপ্রার্থী।
ঢাকা
১৫ মে ২০১৬
পুনশ্চঃ এই লেখাটা আমি প্রথমে ফেইসবুকে প্রকাশ করেছিলাম, পরে MECA group mail এ। প্রকাশ হবার পর থেকে প্রচুর সাড়া পেয়েছি পাঠকদের কাছ থেকে। অনেকে প্রতিদিন আপডেট চেয়েছেন, অনেকে আর্থিক সাহায্য লাগবে কিনা, তা নাম গোপন রাখার অনুরোধ করে জানতে চেয়েছেন। তবে আমি সবচেয়ে অভিভূত হয়েছি ক্যাডেট কলেজে আমাদের দুই ব্যাচ এবং সেনাবাহিনীতে এক কোর্স জ্যেষ্ঠ্য, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক যাকে ‘মুক্তিযুদ্ধের চলমান বিশ্বকোষ’ নামে অনেকে ডেকে থাকেন, জেসিসি’র সেই মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়া (অবঃ) এর গভীর সমব্যথী এবং সংবেদনশীল মনের পরিচয় পেয়ে। তিনি নিজেই অসুস্থ অবস্থায় সিএমএইচে শয্যাশায়ী থেকে আমার এই লেখাটা পড়ে মন্তব্য করেন, “আহসান, তোমার লেখাটা পড়লে যেকোন কঠিন হৃদয়ও আর্দ্র হতে বাধ্য। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলআমীনের কাছে আনিসের সুস্থতা ভিক্ষা চাইছি”। উল্লেখ্য যে তাঁর দৃষ্টিশক্তি একচোখে পুরোপুরি, অন্য চোখে প্রায় বিলোপের পথে। এই ক্ষীয়মান দৃষ্টিশক্তি নিয়েই তিনি হাসপাতাল শয্যায় শুয়ে বসে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখা লিখে চলেছেন এবং মাঝে মাঝে ফেইসবুকেও তা সেলফোনের মাধ্যমে পোস্ট দেন। এ ছাড়া তিনি কারো কোন লেখা ভালো লাগলে সেখানে অনেক কষ্ট করে মন্তব্যও করেন। এর পরেও তিনি দু’দিন অন্তর অন্তর ফোন করে আনিসের ব্যাপারে আমার কাছে আপডেট জানতে চেয়েছেন এবং প্রতিবারেই কথা বলার সময় আবেগে অভিভূত হয়েছেন। গতরাতে অনেক শ্বাসকষ্ট নিয়েও তিনি আমাকে ফোন করে ওর অবস্থা জানতে চান। তিনি বলেন, “আমি নিজেই একজন মজলুম, কেননা আমি অনেক কষ্টে আছি। শুনেছি, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মজলুমের প্রার্থনা কবুল করেন। তাই আমি প্রতিনিয়ত আনিসের জন্য তাঁর কাছে প্রাণভিক্ষা চাইছি”। শবে বরাতের পবিত্র রাতে করা তাঁর এই দোয়া যেন আল্লাহতায়ালা কবুল করেন! উল্লেখ্য, তাঁকে নিয়েও আমি ফেইসবুকে একটা পোস্ট লিখেছিলাম। পরে সুযোগ হলে সেটা এখানেও দিতে পারি।
সকলের অবগতির জন্য এখানে জানাচ্ছি, আপনাদের সবার দোয়ায় এবং ডাক্তারদের আপ্রাণ প্রচেষ্টায় আনিস মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছে। তার ভেন্টিলেটর খুলে নেয়া হয়েছে। সিসিইউ থেকে সে কেবিনে ফিরে এসেছে, কেবিন নং ৫০৫, ইব্রাহীম কার্ডিয়াক সেন্টার। সে মানুষ চিনতে পারছে এবং কথাও বলছে সবার সাথে, স্বভাবসুলভ হাসি ঠাট্টাও করছে বলে জানা গেছে। কিন্তু প্রধান কার্ডিওলজিস্ট এর নির্দেশে একমাত্র তার পরিবারের সদস্যগাণ ছাড়া অন্যান্য সব ভিজিটরদের সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তার কিডনী ও ফুসফুসের আরো চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে। আগামীকাল থেকে হয়তো ওগুলোর দিকে বিশেষ নজর দেয়া হবে, এতদিন অগ্রগণ্য ছিলো তার হার্টের চিকিৎসা। আরো তিন দিন পরে, যদি সবকিছু এভাবেই ঠিকভাবে এগুতে থাকে, তবে ইন শা আল্লাহ আগামী ২৬ মে তারিখে আনিস হাসপাতাল ত্যাগ করে তার নিজ গৃহে ফিরে যাবে।
ঢাকা
২৩ মে ২০১৬
বন্ধু আনিস, পেশায় ডাক্তার, প্যাশনে সৌখীন চিত্রগ্রাহক। ২০১৩ সালে Grand Canyon দেখতে গিয়ে এ ছবিটি তুলেছিলো।
My friend Anisur Rahman, physician by profession and photographer by passion, took this picture while on a visit to the Grand canyon, USA in 2013.
Picture taken at Stockholm, Sweden, in September 2015.
২০১৫ এর অক্টোবরে তোলা ওর নিজের সেলফী।
He said, it was selfie time and so he took his own picture. This was in October 2015.
Dr. Anisur Rahman and myself holding my maiden publication, a poetry book titled "গোধূলীর স্বপ্নছায়া" (Shades Of Twilight Dreams) at a publication ceremony organized by Cadet College Club on 21 February 2016, International Mother Language Day.
Dr. Anisur Rahman and myself holding my book of autobiographical memoirs titled "জীবনের জার্নাল" (Life's Journal) at a publication ceremony organized by Cadet College Club on 21 February 2016, International Mother Language Day.
Picture taken at Sarangkot, Nepal in March, 2016.
১৫ ই মে, ২০১৬ রাত ৮:২২
খায়রুল আহসান বলেছেন: জ্বী। আপনি চিনেন নাকি তাকে?
২| ১৫ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনার বন্ধুর সুস্হতা কামনা করছি।
১৫ ই মে, ২০১৬ রাত ৮:৩৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, চাঁদগাজী। আপনিও ভালো থাকুন।
৩| ১৫ ই মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩১
সোজোন বাদিয়া বলেছেন: সর্বান্তকরণে আপনার বন্ধুর রোগমুক্তি কামনা করছি।
১৬ ই মে, ২০১৬ সকাল ১১:৪৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনাকে এই সহমর্মিতার জন্য, সোজোন বাদিয়া। শুভেচ্ছা জানবেন।
৪| ১৫ ই মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৭
মুসাফির নামা বলেছেন: আল্লাহ উনাকে সুস্থ করে তুলুক এবং সুস্থ অবস্থায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরে যাক ,এই দোয়া করি।
১৬ ই মে, ২০১৬ দুপুর ২:৩৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার এই প্রাণস্পর্শী দুয়া যেন মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কবুল করে নেন!
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ, মুসাফির নামা। আপনার প্রথম পোস্ট যে ছবিগুলো এখনো কাঁদায়!!! সামনে চলার প্রেরণার উৎস পড়ে এলাম। ভালো লাগলো।
৫| ১৫ ই মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১২
সুমন কর বলেছেন: আপনার বন্ধুর সুস্থতা কামনা করছি।
উনার কাহিনী জানাবার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
২১ শে মে, ২০১৬ রাত ১২:২১
খায়রুল আহসান বলেছেন: আমার বন্ধুর সুস্থতা কামনা কামনা করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, সুমন কর। মন্তব্যে প্রীত হয়েছি।
৬| ১৫ ই মে, ২০১৬ রাত ৯:২২
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: আল্লাহ ওনাকে সেফা দান করুন।
২১ শে মে, ২০১৬ রাত ১২:৫৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, মাহমুদুর রহমান সুজন, আপনার এই দোয়ার জন্য। শুভেচ্ছা রইলো।
৭| ১৫ ই মে, ২০১৬ রাত ৯:৩৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: খায়রুল আহসান ,
বন্ধুদের সম্পর্কে অর্থাৎ বন্ধুত্ব সম্পর্কে আপনার মনোভাব, শ্রদ্ধা ও ভরসার কথা বলে । আপনি যে হৃদয়বান তার দেখা মেলে আপনার লেখাতে ।
এ শুধু প্রশংসা নয় , বর্তমান সমাজের আচারের প্রেক্ষাপটে এ মূল্যায়ন আপনার প্রাপ্যও বটে ।
আপনার বন্ধু ও আপনার শুভ কামনায় ।
২১ শে মে, ২০১৬ সকাল ৯:৫২
খায়রুল আহসান বলেছেন: আহমেদ জী এস, অনেক ধন্যবাদ, আপনার এ উদার প্রশংসার জন্য। বলা বাহুল্য, এমন প্রশংসা পেয়ে অভিভূত হয়েছি।
শুভেচ্ছা জানবেন।
আপনার অনেক পুরনো লেখা কি কথা তাহার সাথে ... এবং তার আগেরটাতে দুটো মন্তব্য রেখে এসেছিলাম। আশাকরি, একটু সময় করে দেখে নেবেন।
৮| ১৫ ই মে, ২০১৬ রাত ৯:৩৮
চাঁদগাজী বলেছেন:
" লেখক বলেছেন: জ্বী। আপনি চিনেন নাকি তাকে? "
-হ্যাঁ, হামিদের সাথে পরিচয় আছে।
২১ শে মে, ২০১৬ সকাল ৯:৫৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: চাঁদগাজী, জেনে ভালো লাগলো। উনি একজন নিখাদ ভালো মানুষ।
৯| ১৫ ই মে, ২০১৬ রাত ১০:৩২
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আল্লাহ উনাকে সুস্থ্য করে তুলুন ।
২১ শে মে, ২০১৬ সকাল ১০:২৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার এই দুয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ, গিয়াস উদ্দিন লিটন।
আপনার অনেক পুরনো লেখা পরামর্শ চাই পড়ে সেখানে কিছু কথা রেখে এলাম।
১০| ১৬ ই মে, ২০১৬ রাত ১২:০২
রিপি বলেছেন: বন্ধুর প্রতি আপনার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা দেখে আমি আসলেই মুগ্ধ। বেচেঁ থাকুক এই বন্ধুত্ব সারাজীবন।
আল্লাহ তায়ালা আপনার বন্ধুকে তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দিন আমিন।
২১ শে মে, ২০১৬ সকাল ১১:৪৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: জগতে যে বন্ধুহীন, তার চেয়ে হতভাগা আর কেউ নেই। আমি সেদিক থেকে সৌভাগ্যবান।
আমার বন্ধুর সুস্থতা কামনা কামনা করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, রিপি।
১১| ১৬ ই মে, ২০১৬ রাত ১:০৬
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: বন্ধু সে সবসময়েরই বন্ধু।। হোক না কিশোর বা বৃদ্ধকালের।। খুজে পেলাম সেটাকে।। কামনা করি সুস্থতার।।
২১ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, সচেতনহ্যাপী, আমার এ লেখাটা পড়ে এখানে মন্তব্য রেখে যাবার জন্য।
১২| ১৬ ই মে, ২০১৬ সকাল ৯:২৫
শামছুল ইসলাম বলেছেন: আপনাদের প্রগাঢ় বন্ধুত্ব ভাললেগেছে।
আল্লাহ উনাকে দ্রুত সুস্থ করে দিন- আমীন।
ভাল থাকুন। সবসময়।
০১ লা জুন, ২০১৬ রাত ১০:১০
খায়রুল আহসান বলেছেন: আমার বন্ধুর জন্য দোয়া করার জন্য অনেক ধন্যবাদ, শামছুল ইসলাম। আপনাদের সবার দোয়ায় আমার বন্ধু সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরে গেছেন, তবে তার জীবনের উপর দিয়ে একটা বড় রকমের ধকল গেছে। এখন থেকে তার জীবনযাত্রা অনেকটা সীমিত হয়ে পড়বে।
মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা জানবেন।
১৩| ১৬ ই মে, ২০১৬ সকাল ১০:২০
কল্লোল পথিক বলেছেন: আল্লাহ তাকে দীর্ঘজীবি করুন।
০১ লা জুন, ২০১৬ রাত ১১:২৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: তিনি এ যাত্রায় রক্ষা পেয়েছেন, হয়তো আমাদের দোয়া আল্লাহতা'লা কবুল করেছেন। তিনি এখন নিজ গৃহে ফিরে গেছেন। তবে তার চিকিৎ্সা চলতে থাকবে, দীর্ঘ প্রক্রিয়ায়।
লেখাটা পড়ে মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ, কল্লোল পথিক।
১৪| ১৬ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৫:১৮
এম এস আরেফীন ভুঁইয়া বলেছেন: খুব ভাল লাগল একজন গুণীজনের সম্পর্কে জানতে পেরে, আল্লাহ্ যেন আনিস সাহেবকে আমাদের মাঝে দীর্ঘ সময় রাখেন এই কামনা করি, এই বয়সে বন্ধুর প্রতি এত ভালোবাসা মায়া দেখে আমি আবেগপ্লুত। সবাইকে ধন্যবাদ।
০৩ রা জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৪১
খায়রুল আহসান বলেছেন: উপরের মন্তব্য দুটোর উত্তরে জানিয়েছি, আপনাদের দোয়ায় আমার বন্ধু সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরে গেছেন। বন্ধুত্ব সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন খুব ভালো লাগলো। লেখাটা পড়ে মন্তব্য করার জন্য অশেষ ধন্যবাদ, এম এস আরেফীন ভুঁইয়া।
১৫| ১৭ ই মে, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৮
প্রথম কথা বলেছেন: আপনার বন্ধুর জন্য অনেক শুভ কামনা, তিনি যেন সুস্থ্য হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসেন। আমিন।
০৩ রা জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, লেখাটি পড়ার জন্য এবং আমার বন্ধুর জন্য দোয়া করার জন্য। উনি এখন সুস্থ্য হয়ে নিজ বাড়ীতে ফিরে গেছেন।
আপনার প্রথম লেখা সখি ভালোবাসা কারে কয় ।। প্রথম কথা।। - পড়ে সেখানে মন্তব্য করে এসেছি। আশাকরি সময় করে পড়ে দেখবেন।
১৬| ১৭ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৪
মায়াবী রূপকথা বলেছেন: সবাই ভাল থাকুক। উনিও যেন সুস্থ হয়ে যান দ্রুত
০১ লা জুন, ২০১৬ রাত ১১:৩১
খায়রুল আহসান বলেছেন: ওনার সুস্থতা কামনা করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, মায়াবী রূপকথা। উনি কিছুটা সুস্থ হয়ে এখন নিজ গৃহে ফিরে গেছেন।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
১৭| ১৭ ই মে, ২০১৬ রাত ৮:৫৩
নীলপরি বলেছেন: আপনার বন্ধুর আরোগ্য কামনা করছি ।
০৩ রা জুন, ২০১৬ রাত ৮:২৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ নীলপরি, আমার বন্ধুর আরোগ্য কামনা করার জন্য। বন্ধু এখন হাসপাতাল ত্যাগ করে নিজ গৃহে ফিরে গেছেন।
মন্তব্যে প্রীত হয়েছি।
১৮| ১৭ ই মে, ২০১৬ রাত ৯:১৮
জেন রসি বলেছেন: আপনার বন্ধু খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক এই শুভকামনা করছি।
আপনিও অনেক অনেক ভালো থাকুন।
০৩ রা জুন, ২০১৬ রাত ৯:২৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার এই দোয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা, জেন রসি। আপনিও ভালো থাকুন, সব সময়।
১৯| ১৯ শে মে, ২০১৬ সকাল ১০:০০
সিলা বলেছেন: ছোট বেলা থেকেই আমি একা থাকতে পছন্দ করি আমার কোন বন্ধু বান্ধবি নেই, ভাই বোন ও নেই। তাই মমতাটা তেমন বুঝিনা। তবে আপনার মত এমন কিছু বন্ধুদের বন্ধুত্ব দেখলে মনে হয় একটা বান্ধবি থাকলে মন্দ হতনা!!
০১ লা জুন, ২০১৬ রাত ৮:৫৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: আমাদের মাঝে অনেকেই অন্তর্মুখী, তারা একা থাকতেই বেশী পছন্দ করেন। তবে তাদেরও দুচারজন অন্ততঃ বন্ধু বান্ধবী থেকে থাকে। তাই আপনার ছোট বেলা থেকেই আমি একা থাকতে পছন্দ করি আমার কোন বন্ধু বান্ধবি নেই, ভাই বোন ও নেই। তাই মমতাটা তেমন বুঝিনা - কথাগুলো শুনে একটু খারাপই লাগলো। বন্ধুহীন, নিঃসঙ্গ জীবন সব সময়ের জন্য কাম্য নয়।
২০| ০১ লা জুন, ২০১৬ রাত ১১:৩৯
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: জীবনে বন্ধু পাওয়া যতনা সহজ তার চেয়ে বেশী কঠিন তা ধরে রাখা। এই কঠীন কাজটি করতে পেরেছেন দেখে ভাল লাগল ।
বন্ধুদের সম্পর্কে অর্থাৎ বন্ধুত্ব সম্পর্কে আপনার মনোভাব, শ্রদ্ধা আমাদেরকে ভরসার কথা শুনায় । আপনি যে হৃদয়বান তার দেখা মেলে আপনার এ অপুর্ব লিখাটিতে , বর্তমান সামাজিক আচারের প্রেক্ষাপটে এ লিখাটি একটি মুল্যবান অবদান রাখবে বলে মনে করি ।
০৩ রা জুন, ২০১৬ রাত ১০:১৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার এই অমূল্য প্রশংসা আমাকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করে গেলো। অনেক অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা, ডঃ এম এ আলী।
২১| ০৩ রা জুন, ২০১৬ রাত ১০:২৮
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: প্রতি উত্তরের জন্য অনেক ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় । ভাল থাকুন এ শুভ কামনা থাকল ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৪:৫১
চাঁদগাজী বলেছেন:
"একবার আমরা দশম শ্রেণীতে থাকা অবস্থায় আমাদের আরেক বন্ধু হামিদুল ইসলামের (প্রকৌশলী) লেখা একটা নাটক মঞ্চস্থ করেছিলাম। "
-হামিদুল ইসলাম কি সোভিয়েত থেকে পড়ালেখা করে প্রকৌশলী হয়েছিলেন?