নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভাবতে না শেখালে ভাবনা আসবে না, প্রকাশ ক্ষমতাও ধীরে ধীরে কমে যাবে

১৯ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৪

আমার ছেলেরা সবাই বড় হয়ে গেছে। আমার বাসায় এখন আর কোন স্কুল কলেজগামী ছাত্র ছাত্রী নেই। তাই এখনকার স্কুল কলেজগুলোতে কী পড়ানো হচ্ছে, সে ব্যাপারে আমার সম্যক ধারণা নেই। তবে অনুমান করতে পারি, কর্পোরেট জগতের চাহিদা মেটাতে গিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পাঠ্যসূচীকে কাস্টমাইজ করা হচ্ছে। যার ফলে মুক্ত ভাবনার বিকাশ ঘটছে না। বেশ কিছুদিন এমন একটা কাজে জড়িত ছিলাম, যেখানে ছাত্র ছাত্রীদের সাক্ষাৎকার নিতে হতো। সেখানে দেখেছি তাদের চিন্তার সীমাবদ্ধতা। অবশ্য ব্যতিক্রম তো ছিলই। সে ব্যতিক্রমের কথা বলছি না। মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদেরকেও দেখেছি, তাদের মনের ভাব লিখিত ভাষায় প্রকাশ করতে গিয়ে স্ট্রাগল করতে। শুদ্ধভাবে মৌখিক ভাষায়ও প্রকাশ করার সীমাবদ্ধতা চোখে পড়েছে। তাদের আরেকটা বড় দুর্বলতা যা আমি লক্ষ্য করেছি সেটা হচ্ছে মুখে মুখে সামান্য যোগ বিয়োগ করতেও ব্যর্থতা। ২০+২৫+৩০ = কত? - এর উত্তর বের করতেও একজন ছাত্র বারবার পকেটে হাত ঢুকাচ্ছিল সেলফোন বের করে ক্যালকুলেটরের সাহায্য নিতে। নিষেধ করাতে সে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়।

আমাদের সময় বেশীরভাগ প্রশ্নের উত্তর দিতে হতো একটু ব্যাখ্যামূলক। সেখানে নিজের চিন্তা বা ধারণাকে যুক্তির সাথে উপস্থাপন করতে পারলে ভাল নম্বর পাওয়া যেত। ভাল নম্বর মানে ৭০% এর মত। ৮০% পেলে খুব ভাল। ভাল ছাত্রদের তখন পাঠ্যপুস্তক পড়া ছাড়াও লাইব্রেরীতে গিয়ে ভাল ভাল লেখকদের বই পড়ে নোট করে আনতে হতো। অনেক লেখকের লেখা পড়ে একটা ধারণা নিয়ে, প্রয়োজনে তাদের লেখা থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে নিজের নোট বানাতে হতো। পরীক্ষক সে নোট পড়েই বুঝতে পারতেন যে ছাত্র বা ছাত্রীটা বেশ কষ্ট করে নোট বানিয়ে উত্তর প্রস্তুত করেছে। তাই তিনি নম্বর দিতে কার্পণ্য করতেন না। এখনকার শিক্ষকেরা করেন সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন, চানও ছকে বাঁধা সংক্ষিপ্ত উত্তর। বেশী লম্বা উত্তর পড়ার সময়ই বা তাদের কই? তাদেরকেও তো দিনের একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ সময় সংসার কর্ম ছাড়াও ফেইসবুকিং, ইন্টারনেট, ইত্যাদিতে ব্যয় করতে হয়। আমার নিকটাত্মীয়দের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষক/প্রভাষক আছেন। তাদেরকে যখন অমনযোগের সাথে পরীক্ষার খাতা মার্কিং করতে দেখি, অবাক হয়ে যাই। প্রশ্ন করলে ওরা বলে ওপর থেকে নিষেধ আছে, কাউকে খুব বেশী কম নম্বর দেয়া যাবেনা। একটু কিছু লিখলেই নম্বর দিতে হবে। তাই এত কষ্ট করবো কেন?

এর পরে এলো অবজেক্টিভ টাইপ প্রশ্নপত্র । আরো পরে আরো সংক্ষেপিত প্রশ্ন পদ্ধতি- এমসিকিউ টাইপ। এতে করে ছাত্রদের চিন্তাশক্তি কমতে থাকলো। অনুমান নির্ভর উত্তর দেয়ার প্রবণতা বেড়ে গেল। গণ টোকাটুকির প্রবণতাও বেড়ে গেল, যা ভুল উত্তরের জন্য মাইনাস সিস্টেম চালু করেও ঠেকানো গেল না। গোল্ডেন প্লাস পাওয়া ছেলেরাও কোন একটা সমস্যাকে ব্যাখ্যা করে নিজের ভাষায় শুদ্ধ করে না বাংলায় না ইংরেজীতে প্রকাশ করতে পারে, আগে যেটা সাধারণ প্রথম বিভাগে পাশ করা ছাত্র ছাত্রীরাও বেশ স্বচ্ছন্দে পারতো। এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে থাকলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে। ভিত যদি শক্ত না হয়, আগা শক্ত হবে কিভাবে? ধীরে ধীরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে বের হয়ে আসা ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যেও ভাব প্রকাশের অক্ষমতার এ সমস্যাটা প্রকটভাবে দেখা দিতে থাকলো।

আমার মনে হয়, আমাদের আবার essay type পরীক্ষা পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়া উচিত। আবার স্কুলগুলোতে মানসাংক পদ্ধতি শেখানো উচিত, যার সাহায্যে ক্যালকুলেটর ছাড়াও ছাত্র ছাত্রীরা সহজ সহজ যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ মুখে মুখে করা শিখতে ও চর্চা করতে পারবে। Descriptive রচনা লিখতে না দিয়ে Imaginative বিষয়ের উপর রচনা লিখতে দেয়া উচিত, যেসব বিষয় কোন রচনা বইয়ে বা নোট বইয়ে পাওয়া যাবেনা। যেমন, ‘বাংলাদেশের ঋতু বৈচিত্র’ এর পরিবর্তে ‘এমন দিনে তারে বলা যায়’ এর উপর লিখতে বলা হোক। ছেলেমেয়েরা ভাবতে শিখুক, মনের ভাব শুদ্ধভাবে প্রকাশ করতে শিখুক। বড় হয়ে যত বড় ডাক্তার, ইঞ্জিনীয়ার বা বিজ্ঞানীই হোক না কেন, সেখানেও তাকে শুদ্ধভাবে তার চর্চিত বিষয়টাকে প্রকাশ ও উপস্থাপন করা শিখতে হবে।


ঢাকা
১৯ জুলাই ২০১৮
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

মন্তব্য ৫২ টি রেটিং +১৯/-০

মন্তব্য (৫২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৫১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:


বাংলাদেশে এখন মেধা যাচাইয়ের সহজ উপায় হলো- ভুল হলেও অনর্গল ইংরেজিতে কথা বলতে পারা। এসএসসি, এইচএসসিতে গোল্ডেন এ+ পাওয়া। নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া। অনার্স ও মাস্টার্সে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হওয়া। বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া। পেশা হিসাবে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও ব্যারিস্টার ইত্যাদি থাকা। নামের সাথে পিএইচডি থাকলে তো কথাই নেই। আপনি এই ক্যাটাগরির বাইরে হলে আর যাই হোক সমাজের চোখে মেধাবী নয়।

আসলেই কী তাই?

শিক্ষা এবং প্রকৃত শিক্ষার মধ্যে যেমন পার্থক্য আছে; ঠিক তেমনি মেধাবী ও প্রকৃত মেধাবী শব্দের মধ্যেও গুণগত পার্থক্য আছে। এ পার্থক্য আমরা অনেকেই বুঝি না, আবার বুঝলেও মেনে নেই না।

এজন্য আমরা বুঝে অথবা না বুঝে বাচ্ছাদেরকে শিশুকাল থেকে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ঠেলে দেই। বাসা-বাড়িতে বাচ্ছাদের সাথে ইংরেজিতে কথা বলি! যারা ছোট বয়স থেকে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ার সুযোগ পাইনি তারা বড় হয়ে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশুনা করি। এসব পড়াশুনার উদ্দেশ্য যতটুকু না জ্ঞান অর্জন করা তার চেয়ে অনেক অগ্রাধিকার থাকে ভাল ইংরেজি বলতে পারা। দেশে ভাল চাকরি পেতে ভাল ইংরেজি জানাদের কদর কম ইংরেজি জানাদের চেয়ে বহুগুনে বেশি। যদিও বেশিরভাগ কাজে ইংরেজি জানাটা আবশ্যিক নয়।

সম্প্রতি টিভিতে একটি বিজ্ঞাপনে দেখলাম, এক শিল্পপতি তার কারখানার জন্য একটি স্থান পছন্দ করতে গেছেন; স্থানটি তার শিল্প প্রতিষ্ঠান করার উপযোগী। কিন্তু তারপরও তিনি চিন্তিত হয়ে পড়েছেন, কারণ এখানে তিনি স্মার্ট ম্যানেজার পাবেন না এই ভেবে। তখন বিজ্ঞাপনটিতে দেখা যায়, হঠাৎ সুন্দর পোশাক পরা এক নারীর ইংরেজি ভাষায় কথা বলতে বলতে উপস্থিতি। ব্যাস, শিল্পপতির চিন্তা দূর হয়ে গেল, তিনি স্মার্ট এবং শিক্ষিতা ম্যানেজার পেয়ে গেলেন!

দুই-একটি শব্দ ইংরেজিতে বলতে পারাটা কি স্মার্ট বা শিক্ষিতের পরিচয় বহন করে?

..........মেধাবীও!

শুধুমাত্র একটি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করার ভাবনা থেকে পড়াশুনা করলে তা কোন অবস্থাতে প্রকৃত শিক্ষা বলা যাবে না। আর যা প্রকৃত শিক্ষা নয়, তা দিয়ে মেধার বিকাশ ঘটে না। শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য জ্ঞান অর্জন করা, ভাষা শিক্ষা নয়।

শিক্ষা মানসম্মত কিনা তা ভিন্ন বিষয়, তবে শিক্ষার মান যাচাইয়ে ইংরেজি ভাষা জানাটা একমাত্র সুচক হতে পারে না। বাংলায় লিখে যদি উদেশ্যটা পূরণ হয়, তাহলে তা ইংরেজিতে লিখতে হবে কেন? আমি ইংরেজি শিক্ষার বিরোধিতা করছি না। দেশের শিক্ষার মান উন্নয়নে ইংরেজি ভাষা শেখার প্রয়োজন আছে, তবে এটা ঠিক না ইংরেজি ভাষা না জানলে শিক্ষিত না। আমাদের দেশে উচ্চ শিক্ষা স্তরে শিক্ষার মাধ্যম হলো ইংরেজি ভাষা। ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে উচ্চ স্তরের শিক্ষাটা এদেশের শিক্ষার্থীরা কতটুকু হৃদয়াঙ্গম করতে পারছে তা দেখার বিষয়।

..........ভাবনার বিষয়!

প্রতি বছর বাংলাদেশে হাজার হাজার ছেলেমেয়ে গোল্ডেন এ+ ও এ+ পায়। তাহলে কী বলবো বাকিদের চেয়ে এরা অনেক বেশী মেধাবী?

..........জানে ও বুঝে?

না, আমি তা মনে করি না। যে ছেলেটি শুধুমাত্র গোল্ডেন এ+ পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট একটি সিলেবাস দিনের পর দিন মুখস্ত করে গেল শুধুমাত্র পরীক্ষায় ভাল ফলাফলের আশায় তার একমাত্র ধ্যান-জ্ঞান থাকে ভাল রেজাল্ট, ভাল শিক্ষা অর্জন করা নয়। শিক্ষার উদ্দেশ্য নয় দিনের পর দিন শুধু নির্দিষ্ট সিলেবাস তোতাপাখির মতো মুখস্ত করে পরীক্ষার খাতায় লেখা। প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো যা পড়েছে তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করা, নিজের মত করে জানা। এতে ছাত্রদের স্বাধীন সত্তার বিকাশ ঘটে।

কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য ছাত্ররা এ+ এর চিপায় পড়ে ভোর থেকে মাঝরাত পর্যন্ত শুধু একাডেমিক বই নিয়েই ব্যস্ত থাকে। তারা এত প্রেসারে থাকে যে, অন্য বিষয় নিয়ে ভাবনার সময়টা পর্যন্ত পায় না।

আমি মনে করি যে ছেলে-মেয়েটি কোনদিন কোন প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে যায়নি, এক্সক্লুসিভ সিলেবাস পড়েনি। একাডেমিক বই পড়াকে ধ্যানজ্ঞান না করে অপাঠ্য বই পড়ে, সামাজিক কাজে সম্পৃক্ত রাখে, ডিবেট করে, গল্প/কবিতা লেখে ও পড়ে, খেলাধূলা করে, টিভিতে পছন্দের টিমের খেলা মন ভরে উপভোগ করে সে পরীক্ষায় 'বি-গ্রেড' পেলেও প্রকৃত মেধাবী।

পরীক্ষায় এ+ পাওয়ার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে তাদের বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান অর্জন করা। জানার আগ্রহ সৃষ্টি হওয়া। শেখার জন্য কৌতুহলী হওয়া। উন্নত দেশগুলোতে এভাবেই ছাত্র ছাত্রীদের মোটিভেট করা হয়। তারা পড়ালেখার জন্য ছাত্রদের উপর কোন চাপ প্রয়োগ করে না। ফলে ছেলেমেয়েরা আনন্দের সাথে শিক্ষা নেয়, জ্ঞান অর্জন করে। সিলেবাসের বাইরে গিয়ে নতুন নতুন জিনিস জানার চেষ্টা করে। তাদের সিলেবাসটাও আমাদের চেয়ে অনেক ছোট।

চাপিয়ে দিয়ে জোর করে হয়তো এ+ পাওয়ানো যায়। কিন্তু প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করতে হয় আনন্দের সাথে নিজের ইচ্ছায়। চাপিয়ে দেওয়া শিক্ষা ছেলেমেয়েদের ক্রিয়েটিভ আইডিয়াগুলো নষ্ট করে দেয়। এজন্য উন্নত দেশগুলোর তুলনায় আমাদের ছেলেমেয়েরা অনেক বেশি পড়াশুনা করলেও তাদের মতো গবেষক, সাইন্টিস্ট আর দার্শনিক হতে পারেনা। তারা রেজাল্ট দেখেনা, দেখে ক্রিয়েটিভিটি। আমরা বাচ্চাদের ক্রিয়েটিভ মাইন্ডকে ধ্বংস করে প্রাধান্য দেই ভাল রেজাল্ট আর ভাল চাকরিকে।

আমরা গরু দেখে দেখে বড় হয়েছি তারপরও গাইড বই পড়ে গরুর রচনা মুখস্ত করি। একটা ছাত্রকে যদি বলা হত তুমি যেভাবে গরু দেখেছ সেভাবে গরুর বর্ণনা কর তাহলে তার মধ্যে চিন্তাশক্তির বিকাশ ঘটত। গরু নিয়ে ভাবত। অন্যের লেখা গরুর বর্ণনা কষ্ট করে মুখস্ত করতে হত না। আর এটাই ছাত্রদের থিংকার বানায়, গবেষক হওয়ার পথ প্রসারিত করে। এজন্য নোট বইয়ের বিরূদ্ধে আমার কঠোর অবস্থান। অন্যের লেখা পড়ে ভাবটা নিজের মধ্যে ধারণ করা যায় না। এজন্য গাইড বই মুখস্ত করতে হয়। মুখস্ত করা শিক্ষা হচ্ছে তলা বিহীন ঝুড়ি।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়াটি আরো পাগলাটে। এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েই ছেলমেয়েরা ভর্তি যুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার জন্য শুরু করে কোচিং সেন্টারগুলোতে দৌড়-ঝাঁপ। আমি এমনও ছাত্র দেখেছি এইচএসসি পরীক্ষা যেদিন শেষ হয়েছে সেদিন সারা রাত বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি গাইড পড়েছে! এটা কী ছাত্রদের অসুস্থ মানসিকতার লক্ষণ নয়? আর অসুস্থ মানসিকতা আসে অসুস্থ প্রতিযোগিতার জন্য। যার ফলে তার মধ্যে এক ধরণের অস্তিরতা বিরাজ করে। বাধ্য হয়ে পাঠ্য বই-গাইড আবার পড়ে। এতে আর যাই হোক মেধার বিকাশ হয় না।

অথচ এ সময়টাতে ছেলেমেয়েরা আনন্দ ফুর্তি করার কথা, পাঠ্য বই থেকে দূরে থাকার কথা, পছন্দর অপাঠ্য বইগুলো পড়ার কথা। কারণ পাঠ্য বইগুলো সে পড়েছে পরীক্ষায় ভাল ফলাফলের আশায়। অনেক ছাত্র আছে শুধু পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য বাধ্য হয়ে এমন একটি বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করে যে বিষয়ে তার কোন আগ্রহ নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্টদের কদর বরাবরই অনেক বেশি। অথচ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে ছেলেটি একই বিষয়ে অনেক বেশি পড়াশুনা করে ভাল ফলফল করলো তাকে আমরা সেভাবে মূল্যায়ন করি না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সিলেবাসটা অনেক বড়। এজন্য তাদেরকে বিষয়ের গভীরে গিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের চেয়ে অনেক বেশি পড়তে হয়। জানতে হয়। তারপরও ভাল ফলাফল হয় না। চাকরির ইন্টারভিউতে সব সময় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা অগ্রাধিকার পায় এতে তার বিষয়ভিত্তি জ্ঞান কম থাকলেও কোন সমস্যা নেই।

বাংলাদেশে নামকরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়াকেই অনেকে বড় যোগ্যতা মনে করেন, পরবর্তীতে লেখাপড়ায় তেমন মনযোগী না হলেও চলে।

বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া মানে সোনার হরিন হাতে পাওয়া। যে প্রক্রিয়ায় পরীক্ষাটি হয়, এতে কী প্রকৃত মেধার বিকাশ ঘটে? ছাত্ররা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে যতটুকু পরিশ্রম করে তারচেয়ে বেশী পরিশ্রম করে বিসিএস গাইড আর বিসিএস পরীক্ষা কোচিং নিয়ে। বিসিএস কোচিং দেশের সেরা বিদ্যাপীট! স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করে যদি বিসিএস কোচিং করে মেধা যাচাই করতে হয় তাহলে উচ্চশিক্ষার জন্য এতো এতো বিশ্ববিদ্যালয় বানানোর প্রয়োজন কী? সবচেয়ে ভাল হয় এসএসসি পাশ করে দুই বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিংয়ে ভর্তি করিয়ে দেওয়া। এতে ছাত্রদের সময়টা বাঁচলো, সরকারেরও উচ্চশিক্ষায় হাজার হাজার কোটি টাকা খরছ সাশ্রয় হবে।

কিছুদিন আগে পত্রিকায় দেখলাম যিনি বিসিএস পরীক্ষায় ফার্স্ট হয়েছেন তিনি নাকি অনার্স ফ্যাইন্যাল পরীক্ষা দেওয়ার আগে থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কোচিং করেছেন বলেই এই সাফল্য। সব কৃতিত্ব কোচিং সেন্টারের! এই যদি হয় মেধার বিকাশের চালচিত্র তাহলে জাতির কপালে নির্ঘাত দুঃখ আছে।

B-) সহমত আপনার সাথে B-)

১৯ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:১০

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার এ সুদীর্ঘ, সুচিন্তিত মন্তব্যটির জন্য অনেক ধন্যবাদ। আমার এ লেখাটি আপনি মন দিয়ে পড়েছেন, এ জন্যেও আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আমার বড় দু'ছেলের যখন স্কুলিং শুরু হয়, তখন আমি বিদেশে ছিলাম। আমরা ওদেরকে ছোটবেলা থেকেই আমাকে 'বাবা' আর ওদের মাকে 'মা' ডাকতে শিখিয়েছি। বিদেশে যতদিন ছিলাম, কোন সমস্যা হয়নি। ওরা আমাদেরকে ওদের বন্ধুদের সামনে নির্দ্বিধায় বাবা মা ডেকেছে। কিন্তু যখন দেশে ফিরে এলাম, তখন লক্ষ্য করলাম, ওরা আমাদেরকে ঘরে বাবা মা ডাকলেও, স্কুলে ওদের বন্ধুদের কাছে যখন আমাদের পরিচয় করিয়ে দিত, তখন চুপি চুপি আমাকে 'আব্বু' আর ওর মাকে 'আম্মুু' হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিত। অর্থাৎ, পরিবেশের কারণে ওদের মাথায় ঢুকে গিয়েছিল, যারা বাবাকে আব্বু বা ড্যাডি না ডেকে বাবা ডাকে, আর মাকে আম্মু বা মাম্মি না ডেকে মা ডাকে, তারা "খ্যাত"! :)

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৩৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার তৃতীয় পোস্ট - বাংলাদেশে প্রচলিত পীর ও মাজার ব্যবসা (পর্যালোচন) - পড়ে একটা মন্তব্য রেখে এসেছিলাম।

২| ১৯ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:০২

চাঁদগাজী বলেছেন:


অংক ও বিজ্ঞানের ভয়ে ছাত্ররা "বিবিএ" পড়ছে; অংক ও বিজ্ঞান কম জানলে মানুষের লজিক্যাল ভাবনার পরিসর কমে যায়, ভাবনা প্রসারিত হয় না, imagination সংকীর্ণ হয়ে যায়, এবং ভাবনায় ভুল থাকার সম্ভাবনা প্রচুর।

Essay-type পরীক্ষা পদ্ধতি ব্যতিত অন্য পদ্ধতি তরুণদের প্রকাশ ক্ষমতাকে সীমিত করে ফেলে।
আপনি খুবই দরকারী বিষয়ের উপর মুল্যবান কথা বলেছেন।

২০ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:৫৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: "অংক ও বিজ্ঞান কম জানলে মানুষের লজিক্যাল ভাবনার পরিসর কমে যায়, ভাবনা প্রসারিত হয় না, imagination সংকীর্ণ হয়ে যায়, এবং ভাবনায় ভুল থাকার সম্ভাবনা প্রচুর" - আপনার এ কথার সাথে আমি পুরোপুরি একমত। মুখস্থ বিদ্যা আমাদেরকে লজিকাল থিঙ্কিং থেকে বিমুখ রাখে, যার ফলে আমরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগি।
যে ছেলেটা "বিবিএ" পড়ছে, সে যদি ভাব প্রকাশের অক্ষমতার জন্য তার প্রোডাক্টকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে না পারে, তাহলে তার কোম্পানী নিশ্চয়ই ফেল মারবে। সুতরাং সঠিক ভাষায় সঠিকভাবে বক্তব্য লিখিত ও মৌখিক, উভয়ভাবে প্রকাশ ক্ষমতার উপর জোর দিতে হবে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হ'লাম।
শুভকামনা---

৩| ১৯ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:০৫

মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: অনেক দিন পরে একটা চলমান ভাইরাস ইফেক্টেড সিস্টেমের মূল নিয়ে কথা বললেন।

২০ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:১০

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক দিন পরে একটা চলমান ভাইরাস ইফেক্টেড সিস্টেমের মূল নিয়ে কথা বললেন - অনেক ধন্যবাদ, আপনার এ মন্তব্যের জন্যে। এ নিয়ে যাদের ভাবার কথা, তারা কিছুটা ভাবলেই এবং কিছু কাজ করে দেখালেই হয়। একবার সংস্কার শুরু হলে বাকীটা এমনিতেই মোমেন্টাম পাবে।

৪| ১৯ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: আপনাদের সময়েই খুব ভালো ছিল।
এখন মান একদম কমে গেছে।
বরাবরের মতো ভালো সুন্দর লিখেছেন।

২১ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:১৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। প্রীত হ'লাম।

৫| ১৯ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৪

কাইকর বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন।+++

২১ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:০৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। প্রশংসায় এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত হ'লাম।

৬| ১৯ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সৃজনশিলতার মূল পাঠ মাঠৈই মারা গেছে- শিক্ষকদের না বোঝার কারণে!

অনেক শিক্ষকের সাথে আলঅপে তারা অকপটা অপারগতার কথা বলতেন।
হুট করে চাপিয়ে দিয়ে লাখ লাখ শিক্ষার্থীর বারোটা বাজানো শেষ!
সৃজনশীল পাঠৈ যেকানে পাঠৈর আরো গভীরে গিয়ে মৌলিক ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবার কথা
সেখানে হ-য-ব-র-ল করে বরং তা ভয়ানক নিম্নমূখি হয়ে ধ্বসে পরিণত হয়েছে।

আপনার শেষ দাবীর সাথে শতভাগ সহমত।
সময় থাকতে কার্যকরি উদ্যোগ হয়তো জাতিকে ভবিষ্যত মেধাহীনতার হাত থৈকে বাঁচাতে পারবে।
ভাবনায় ভাললাগা প্রিয় সিনিয়র :)

+++

২১ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৩০

খায়রুল আহসান বলেছেন: সাম্প্রতিক কালে শিক্ষা ও ব্যাঙ্কিং, এ দুটো সেক্টরকে যেভাবে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে ব্যাপক দুর্নীতির মাধ্যমে, তেমনটি আর কোন সেক্টরে হয় নাই। এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে অর্ধ শতাব্দী লেগে যাবে। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর কথা হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পাচ্ছেনা। প্রতিরোধ দূরে থাক, কেউ এ ব্যাপারে প্রতিবাদও করছে না।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। প্লাসে অনুপ্রাণিত হ'লাম।

৭| ১৯ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫১

সুমন কর বলেছেন: ভালো বলেছেন। সহমত।

আমি আগের মতো নম্বর পদ্ধতির পক্ষে। যেখানে একটি নম্বরও বিশাল ব্যবধান গড়ে দিত। সহজ একটি উদাহরণ দেই, আগে জ্যামিতি'তে কোন চিহ্ন ভুল দিলে পাঁচে শূন্য দেয়া হতো। আর এখন পাঁচে, পাঁচ দেয়া হয় !! তারমানে এখন নম্বর তোলা এবং পাশ করা সহজ।

২১ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৫০

খায়রুল আহসান বলেছেন: তারমানে এখন নম্বর তোলা এবং পাশ করা সহজ - হ্যাঁ, খুবই সহজ। আর ফেল করাটা খুবই কঠিন।
মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা...

৮| ১৯ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১০

সোহানী বলেছেন: হাঁ আপনি যা উপলব্ধি করছেন সেটাই এখন বাস্তবতা। শিক্ষাকে কম্প্রোমাইজ অার এডজাস্ট করতে করতে পুরোপুরি কর্পোরেট করে ফেলেছি। আসল শিক্ষা নেই, আছে খোলস। কিন্তু কে শুনে কার কথা।

ভালোলাগলো প্রিয় লেখক।

বি:দ্র: কাওসার ভাই এর দীর্ঘ মন্তব্য দেখে ভালো লাগছে যে উনি হারিয়ে যাননি। আর মন্তব্যে সহমত।

২১ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৮:৪২

খায়রুল আহসান বলেছেন: আসল শিক্ষা নেই, আছে খোলস - একটা জাতির অধঃপতনের জন্য এটা একটা পারফেক্ট রেসিপি!
আশাকরি, কাওসার ভাই এর উদ্দেশ্যে করা আপনার মন্তব্যটা উনি দেখেছেন/দেখবেন।
মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা...

৯| ১৯ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:২১

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আবার এটাও তো সত্য যে, আমাদের মত এমন মুখস্থ বিদ্যা ও এত বিষয় উন্নত দেশগুলোতে নেই। তাই যুগোপযোগী সিলেবাস অনুসরণ করে একটা মান সম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা প্রনয়ণ সময়ের দাবী। তবে অবশ্যই বিষয় আরো কমাতে হবে...

২১ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:৩৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: যুগোপযোগী সিলেবাস অনুসরণ করে একটা মান সম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা প্রনয়ণ সময়ের দাবী - জ্বী, অবশ্যই এটা সময়ের দাবী। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

১০| ১৯ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:২২

নাজিম সৌরভ বলেছেন: শিক্ষা যে সমস্যার মুখে পড়ে রয়েছে তা তো আমরা সবাই কম বেশি বুঝতে পারি। কিন্তু সমাধানটা আসে না কেন? পাকিস্তান আমলে একজন লোক ম্যাট্রিক পাস করতে পারলে ইংরেজি এবং গণিতে বেশ দক্ষ হয়ে যেতো, বিশেষ করে ইংরেজিতে এক্সপার্ট হওয়া যেন কোন ব্যপারই ছিল না। এখন মাস্টার্স পাস করা লোকদের দেখুন, ইংরেজিতে উনারা এতোই দুর্বল থাকেন যে কারণে অনেকে চাকরীর প্রস্তুতি নিতে গিয়ে ইংরেজি প্রাইভেট পড়েন।

২২ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:৫২

খায়রুল আহসান বলেছেন: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি বেড়ে যাওয়াতে শিক্ষকের মানেরও অবনতি হয়েছে। আর কোটা সিস্টেমের কারণে সরকারী অন্যান্য বিভাগের ন্যায় শিক্ষা বিভাগেও অপেক্ষাকৃত কম মেধাবী শিক্ষক পাওয়া যাচ্ছে। অন্যান্য আরও অনেক কারণের মধ্যে এসব কারণও দূর করতে হবে।

১০ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:৩৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার প্রথম পোস্ট ইন্ডিয়ানা জোনস এবং ‘অসভ্য’ ভারতীয়রা পড়ে আসলাম। আলোচনাটা ভাল লেগেছে।

১১| ২০ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:১০

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ভাল লিখেছেন। আসলে আমাদের শিক্ষামন্ত্রী ভেবেই পাচ্ছেন না আমাদের পরীক্ষাপদ্ধতি কেমন হওয়া উচিত। বারবার পরিবতন সত্ত্বেও তাই কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না৷ তবে এটা ঠিক, চাপ বাড়িয়ে দেয় কিংবা শুধুই বইমুখী কুরে রাকহে এমন শিক্ষার কোন দরকার নেই।
আপনাদের আমলের ভাল ছাত্ররা অনেক বইমুখী ছিল সন্দেহ নেই। তারা পরিশ্রমও করত খুব, তাও মানি৷ কিন্তু আপনার প্রজন্ম কী দিল আমাদের দেশকে? একটা দূর্নীতিতে ভরা দেশ আমরা পেয়েছি। তারা যদি খুব ভাল কোন উদাহরণ দেখাতে পারত আমাদের, তাহলে মানা যেত সে শিক্ষাপদ্ধতি অসাধারণ ছিল৷ যেহেতু পারেনি, তাই মনে করা যায়, তাদের শিক্ষায় গলদ ছিল। নাহলে এমন হত না

২২ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:৫৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: চাপ বাড়িয়ে দেয় কিংবা শুধুই বইমুখী কুরে রাকহে এমন শিক্ষার কোন দরকার নেই - আপনার এ কথাটার সাথে আমি একমত। শিক্ষার কাজ হলো অজানা জ্ঞান আহরণের জন্য মনের মধ্যে আগ্রহ ও আকাঙ্খার সৃষ্টি করা।
আপনাদের আমলের ভাল ছাত্ররা অনেক বইমুখী ছিল সন্দেহ নেই - তবে, এ কথাটার সাথে দ্বিমত প্রকাশ করছি। আমাদের সময়ে ভাল ছাত্ররা বই পড়তো ঠিকই, তবে অনেক খেলাধুলাও করতো। তখন পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায় অনেক খেলার মাঠ ছিল। আমরা যতটা খেলাধুলার সুযোগ পেয়েছি, এখনকার শিশুরা/বালকেরা তার তুলনায় কিছুই পায় না। পাড়ায় পাড়ায় খেলাধুলার প্রতিযোগিতা হতো, স্কুলে স্কুলে হতো। দুর্ভাগ্যক্রমে, আমাদের দেশ থেকে এখন খেলার মাঠ হারিয়ে যাচ্ছে।
একটা দূর্নীতিতে ভরা দেশ পাওয়ার পেছনে শিক্ষার অভাবের চেয়ে নৈতিকতার অবক্ষয়ই বেশী দায়ী। সেটা আশাকরি, আপনিও বেশ ভাল করেই বুঝেন। কারণ দেখা গেছে, এ দেশে বড় বড় অনেক শিক্ষিত ব্যক্তি বড় বড় দুর্নীতি করেছে। গলদটা তাদের শিক্ষার চেয়ে নৈ্তিক মূল্যবোধে বেশী।

১২| ২০ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:১২

জাহিদ অনিক বলেছেন:

শিক্ষার্থীদের আর দোষ দিয়ে কি লাভ ! ওদেরও তো মাথার উপরে পাহাড় সমান চাপ। এক-একটা স্কুল যেন সিলেবাস শেষ করার দৌড়ে নামে। সারাদিন সকাল থেকে স্কুল-কোচিং-টিউশন এসব করে করে ওরাও আর সময় পায় না নিজের মেধাকে নিজের অত করে ঝালিয়ে দিতে।

তবে অভিভাবকদেরও কিছুটা ঘাটতি আছে আমি বলব। আজকালকার ক্লাস সিক্সের একটা ছেলের হাতে মেয়ের হাতে স্মার্টফোন তুলে দেয়ার মত বোকামি আর হয় না। বাচ্চারা তাদের পিতা-মাতার কথা শুনতেই চায় না। তারা মনে মনে বাবা-মা'ই তাদের একমাত্র শত্রু।

২২ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:১৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: শিক্ষার্থীদের আর দোষ দিয়ে কি লাভ - আমি শিক্ষার্থীদেরকে কোন দোষ দেই নি, জাহিদ অনিক। আমি বলেছি সিস্টেমের গলদের কথা।
তবে অভিভাবকদেরও কিছুটা ঘাটতি আছে আমি বলব - তা তো অবশ্যই আছে। আমি একবার ঈদের সময় গ্রামের বাড়ীতে গিয়ে দেখলাম, অর্থাভাবে এক গরীব আত্মীয়ের মেধাবী মেয়ের পড়াশুনা বন্ধ হবার যোগাড়। তার বাবা মা ফরম ফিল আপ করার টাকা যোগাড় করতে পারছে না। আমি তার ফরম ফিল আপ করার টাকাটা দিয়ে কথা দিয়ে আসি যে ভাল ফল অর্জন করার জন্য প্রাইভেট কোচিং এর জন্য যে টাকা লাগবে, সেটাও আমি দেব। ফিরে এসে সময়মত বেশ ভাল একটা এমাউন্ট পাঠাই, কিন্তু পরে জানতে পারি যে ঐ টাকাটা দিয়ে ওরা মেয়েকে একটা স্মার্ট ফোন কিনে দিয়েছিল। আর এর ফলে যা হবার, তা ঐ মেয়ের রেজাল্টে প্রতিফলিত হয়েছিল।

১৩| ২০ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ২:৪৬

করুণাধারা বলেছেন:
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় যে পরিবর্তন চলে এসেছে তা নিয়ে পোস্টে আলোচনা করেছেন। যে বিষয়ে আলোকপাত করেছেন তা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার একটা গলদ- এটা এখনকার ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ক্ষতিকর, এ নিয়ে বিশদ আলোচনা হতে পারত, যেসব ব্লগারদের সন্তানরা এখন স্কুল কলেজে পড়ছে তারা তাদের ভাবনাটা শেয়ার করতে পারতেন, কিন্তু জানিনা কেন তেমন কোন আলোচনা হলো না!!! হয়তো সন্তানদের শিক্ষাদান বলতে আমরা কেবল স্কুল- কলেজে এবং বিভিন্ন কোচিং এ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সময় কাটানো বুঝি, হয়তো এ নিয়ে আর কোন ভাবনার দরকার আছে বলে মনে করি না!!

ভাবতে না শিখলে ভাবনা আসবেনা, প্রকাশ ক্ষমতাও ধীরে ধীরে কমে যাবে - শিরোনাম খুব উপযোগী হয়েছে।  এখনকার শিক্ষা ব্যবস্থা এমন যে, ছাত্রদের ভাবতে শেখানো দূরের কথা তারা যেন ভাবতে না পারে, তাই শেখানো হয়, একেবারে শিক্ষা শুরু থেকেই। আমার প্রথম সন্তান ঢাকার একটা নামী বাংলা মাধ্যম স্কুলে পড়ত, নিজের পড়াটা সে নিজেই করতে পারত। চতুর্থ শ্রেণীতে তার পাঠ্যসূচিতে ইংরেজিতে  বাক্য রচনা ছিল। পরীক্ষার খাতায় দেখলাম সে দশটা বাক্য রচনা ঠিকমতো করেছে, কোথাও কোনো ভুল নেই, কিন্তু শিক্ষক তাকে দশে পাঁচ দিয়েছেন। কারণ জানতে গেলাম। শিক্ষক বললেন এই ধরনের সহজ sentence তাদের স্কুলের মানের সাথে যায় না, তাই কঠিন বাক্য রচনা করতে হবে। এই কঠিন ইংরেজি শেখার জন্য ওর সহপাঠীরা সবাই কোচিং করতে যেত। আমি ওকে কোচিংয়ে  দিলাম না কিন্তু ওকে পড়ানো শুরু করলাম, অন্যভাবে বললে  পড়াশুনা নিয়ে ওর ভাবনা আমিই ভাবতে শুরু করলাম। ফলাফল এই হল, একটা রচনা লিখতে গেলেও ও নিজের ওপর ভরসা করতে পারত না,  ভাবতে না শেখায় তার প্রকাশ ক্ষমতাও ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছিল। অবশ্য আমি ব্যাপারটা সময়মত বুঝতে পেরে শিক্ষায় তার এই পরনির্ভরশীলতার ইতি ঘটাতে পেরেছিলাম। দ্বিতীয় সন্তানের শিক্ষার ভার আমি  পুরোপুরি তার উপর ছেড়ে দিয়েছিলাম, শুধু দরকার হলে সাহায্য করতাম। এখন দেখছি আমার দুই সন্তান একই রকম রেজাল্ট করেছে, একই শিক্ষায়তনে পড়েছে, কিন্তু দ্বিতীয়জন নিজেকে ভালোভাবে প্রকাশ করতে পারে দেখে সে অনেক কিছুতে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পেরেছে।

  কর্পোরেট জগতের চাহিদা মেটাতে গিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পাঠ্যসূচিকে কাস্টমাইজ করা হচ্ছে - একটিমাত্র বাক্যে আপনি এখনকার শিক্ষা ব্যবস্থা বর্ণনা করে ফেলেছেন। আমাদের দেশে যখন সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতি চালু করার কথা হচ্ছিল, তখন ডক্টর মুহম্মদ জাফর ইকবাল একটি দীর্ঘ প্রবন্ধ লিখেন- যাতে তিনি বলেছিলেন সৃজনশীল পদ্ধতি চালুর আগে শিক্ষকদের যথাযথ প্রশিক্ষণের প্রয়োজন, কেবল শহরের শিক্ষক নয় গ্রামের শিক্ষকদেরও এই প্রশিক্ষণ দিতে হবে। সেই প্রবন্ধ পড়ে তৎকালীন সরকার প্রধান আলোচনার আয়োজন করেন, আলোচনায় দেখা গেল শিক্ষা ব্যবস্থার সেই অবস্থায় সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতি চালু একেবারেই অনুকূল নয়। সিদ্ধান্ত হলো যথাযথ প্রশিক্ষণের পরে এই পদ্ধতি চালু হবে। কিন্তু এই অবস্থায় আপত্তি আসলো কর্পোরেট জগত থেকে-   পুস্তক প্রকাশক সমিতি জানালেন তারা সৃজনশীল পদ্ধতির বই ছাপিয়ে ফেলেছেন, এখন এই পদ্ধতি চালু না হলে তাদের কোটি কোটি টাকা ক্ষতি হবে। তাই সৃজনশীল পদ্ধতি চালু হল।

আপনার সন্তানেরা এখন ছাত্র না হলেও আশা করি আপনি জানেন অপরিকল্পিতভাবে সৃজনশীল পদ্ধতি চালুর ফল কি হয়েছে। একে সৃজনশীল পদ্ধতি না বলে সৃজনশীলতা ধ্বংসের পদ্ধতি বলাই ভালো। এই পদ্ধতিতে রচনামূলক প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে নির্দিষ্ট ফরমেট মেনে, দেড় পৃষ্ঠার মধ্যে। এর জন্য লাইব্রেরীতে গিয়ে নতুন কিছু শেখার কোন দরকার হয় না।

এখন মানসাংক করা দূরে থাক ছাত্ররা নামতা পর্যন্ত শেখে না। GRE তে যে অংক করা লাগে তা মানসাংক । অ আ না শিখলে যেমন বড় বড় বই পড়া যাবে না, তেমনি মানসাংক না জানলে গণিতের জগতে, বিজ্ঞানের জগতে পা ফেলা যাবে না। এই জিনিসটা আমাদের দেশের শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানেন না।

 শিক্ষা নিয়ে আপনার  ভাবনার সাথে আমার ভাবনা অনেকটাই মিলে যায়। শেষ অনুচ্ছেদে আপনি যা বলেছেন, আমিও চাই শিক্ষা এমনটাই হোক। জানিনা হবে কিনা। যদি না হয় তবে এক প্রজন্ম পরেই আমাদের দেশ অশিক্ষার অন্ধকারে ডুবে যাবে।

২২ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: কিন্তু জানিনা কেন তেমন কোন আলোচনা হলো না - সবাই যার যার পরিমন্ডলে ব্যস্ত।
শিরোনাম খুব উপযোগী হয়েছে - অনেক ধন্যবাদ। শিরোনাম পড়েই যেন বক্তব্য কিছুটা বোঝা যায়, আমি চেষ্টা করে থাকি সে রকম শিরোনাম দিতে। আপনার মন্তব্যে তাই আশ্বস্ত হ'লাম।
এখনকার শিক্ষা ব্যবস্থা এমন যে, ছাত্রদের ভাবতে শেখানো দূরের কথা তারা যেন ভাবতে না পারে, তাই শেখানো হয়, একেবারে শিক্ষা শুরু থেকেই - এটা একটা বড় পার্থক্য, সুশিক্ষার সুব্যবস্থা থেকে।
কিন্তু দ্বিতীয়জন নিজেকে ভালোভাবে প্রকাশ করতে পারে দেখে সে অনেক কিছুতে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পেরেছে - এই প্রকাশ ক্ষমতার গুরুত্ব সম্পর্কেই আমি বোঝাতে চেয়েছি।
পুস্তক প্রকাশকদের ক্ষতি এড়াতে গিয়ে সৃজনশীল পদ্ধতিটাকে লেজে গোবরে করে ফেলা হয়েছে।
মানসাংক না জানলে গণিতের জগতে, বিজ্ঞানের জগতে পা ফেলা যাবে না - একদম ঠিক কথা, কিন্তু আমরা এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টাকে পারিবারিকভাবে না হলেও সামাজিকভাবে অবহেলা করেছি।
আমার এ লেখাটা পড়তে এবং তার উপর মন্তব্য করতে গিয়ে আপনি যে সময় ব্যয় করেছেন, তার জন্য বড়ই কৃতজ্ঞ বোধ করছি।
বরাবরের মত প্লাস দিয়ে প্রেরণা যুগিয়ে যাবার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
শুভকামনা রইলো।


১৪| ২০ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:২৪

কথাকথিকেথিকথন বলেছেন:




কেইস স্টাডি নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা করা উচিত। একটা কেইস স্টাডি সলব করতে লাগবে সাত সাবজেক্ট! নির্দিষ্ট কোন উত্তর থাকবে না। ভাল থেকে ভাল সব উত্তর বেরিয়ে আসবে। শিক্ষার্থীদের ভাবতে হবে প্রচুর, ঘাটতে হবে প্রচুর, জানবে বেশি, কঠিন এবং কমপ্লেক্স ইস্যুগুলো সহজাত ভাবেই শিখবে এবং মনে থাকবে এবং প্রয়োগ করতে পারবে।


আপনার গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা বেশ ভাল লাগলো।

২২ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, আমার এ লেখাটি পড়ে সুচিন্তিত মন্তব্যের মাধ্যমে আলোচনায় অংশগ্রহণ করার জন্যে। মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।
ভাল থাকুন, শুভকামনা....

১৫| ২০ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:৫১

মহসিন ৩১ বলেছেন: ইংরেজির প্রতি inclination বাস্তব। বর্তমান শিক্ষা বাবস্থায় subjective হওয়ার কারনে প্রথমেই শিক্ষারতিরা চাকরি বাকরি এসবের ধারনায় mislead হচ্ছে; ----নয় কি। পরবর্তীতে তারা যখন চাকরিও পায় না তখন ধাক্কা সামলানো এসব পরিবারের সন্তানদের; ছেলে-মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রে বেশ কঠিন বাপার হয়ে পড়ে। অনেকেই তখন বিদেশের দিকে নজর দেয়; ভাগ্য অনুসন্ধানে লেগে পড়ে। আমি তো এরকম বহু উদাহরন দিতে পারব। এটা বাদেও আর একটা বাপার হচ্ছে English Theserous-- অসংখ শব্দের সঙ্কলন; যা বাংলাতে এখনো গড়ে উঠে নাই। --- English ভাষা হচ্ছে Idiom এর উপর তৈরি কৃত। তাই সহজেই আঞ্চলিকতার শব্দগুলো Theserous এ অন্তরভুক্ত হয়ে গেছে। আর আমাদের বাংলা হচ্ছে সন্ধি এবং সমাসের উপর নির্ভর করে গরে উঠা শব্দভাণ্ডার, -----কথ্যভাষার প্রভাব বাংলা শব্দভাণ্ডারে খুব কমই সংযোজিত হবার সুযোগ আছে। যে কোন আরটিফিশীয়াল languager এর ক্ষেত্রেই এমন হয়। তবে আমাদের প্রবাদ প্রবচনের ভাণ্ডার বেশ সমৃদ্ধ। আমাদের উচিত সেসবকে যুক্তিসঙ্গত ভাবে ভাষায় আর লেখায় তুলে ধরা। তখ্ন ইংরেজি নির্ভরতা থাকবে না।

২২ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার সুচিন্তিত মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
আমার কোন লেখায় আপনি এই বুঝি প্রথম এলেন, সুস্বাগতম! মন্তব্যে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ’লাম।

১৬| ২০ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৬

ধ্রুবক আলো বলেছেন: খুব সুন্দর সময়োপযোগী পোষ্ট। অনেক ধন্যবাদ। কৃতজ্ঞতা জানবেন আমার।
ঠিক এই কথা আমি অনেককে বুঝানোর চেষ্টা করছি, কিন্তু কেউই বুঝতে রাজি নয়। সবাই এক কান দিয়ে শুনে আরেক কান দিয়ে বের করে দেয়। সবার একটাই লক্ষ্য কিভাবে এ প্লাস পাবে। এর জন্য শর্টকাট পদ্ধতি গ্রহণ করবে, যেকোনো গ্রহণ করতে উদ্ধত ।

আগের দিনের শিক্ষা পদ্ধতি বেশি ভালো ছিলো। এখনকার দিনের শিক্ষা পদ্ধতি ভালো কি মন্দ তা বলা মুশকিল। তবে শিক্ষার ব্যাপারে পৃষ্ঠপোষকতা একদম নেই। সবারই চিন্তা কোনো মতে শিক্ষা জীবন পার করা। কেউ শিখতে বা বুঝতে আগ্রহী নয়।

২২ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৮:৪১

খায়রুল আহসান বলেছেন: তবে শিক্ষার ব্যাপারে পৃষ্ঠপোষকতা একদম নেই - ঠিক বলেছেন। আগেকার দিনের বিত্তশালীরা শিক্ষার জন্য অকাতরে দান করতেন। তাদের দান করা জমিতে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। তাদের মধ্যে অনেকে নিজেরা ততটা শিক্ষিত না হলেও তারা শিক্ষার কদর বুঝতেন এবং শিক্ষার মান ধরে রাখতে গুণী এবং মেধাবীদেরকে শিক্ষা পেশায় নিয়ে আসতেন অর্থ্ সাহায্য করে হলেও।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। প্লাসে অনুপ্রাণিত।

১৭| ২১ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১:৪০

অন্তরন্তর বলেছেন: আমি মনে করি আপনার সময় বা আমাদের সময়ের শিক্ষা বা পরীক্ষা পদ্ধতি ঠিক ছিল। আমাদের সময় কেলকুলেটর ব্যাবহার করতে দিত না। এখনকার ছেলে মেয়েরা মুখে মুখে খুব সহজ একটা যোগ বিয়োগ করতে পারে না, এমনকি কোন কোচিং সেন্টার ছিল না। আমাদের এখন পুরো শিক্ষা এবং পরিক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তন করতে হবে কিন্তু সেই আশায় গুড়েবালি। খুব সুন্দর পোস্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

২৩ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: একেবারে ছোটবেলা থেকেই ক্যালকুলেটর ছাড়াই ছোট ছোট যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ ইত্যাদি করার অভ্যেস করতে হবে, তাহলেে মনের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে। আর চিন্তা করে লিখতে হয়, এমন বিষয়ের উপর লেখার অভ্যেস গড়ে তুলতে হবে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। লেখার প্রশংসায় এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত হ'লাম।
শুভকামনা---

১৮| ২২ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ২:৩২

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আমি যখন বিকম পড়তাম সে সময় এক স্যারের কাছে হিসাব বিজ্ঞান পড়তাম।স্যার আমাদের সামনেই এইএসসির খাতা দেখতেন।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য স্যার প্রতি পাঁচ মিনিটে একটি করে খাতা দেখতেন।
খুব ভাল একটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন।
কাওসার ভাইয়ের মন্তব্যও অনেক ভাল লেগেছে।

২৩ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:০৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: ১০০ নম্বরের পরীক্ষার একটি খাতা দেখতে সময় নিতেন মাত্র ৫ মিনিট, এতেই বুঝা যায় কতটা অবহেলার সাথে তিনি ছাত্র ছাত্রীদের ভাগ্য নিয়ে খেলা করতেন।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত হ'লাম।
শুভকামনা---

১৯| ২৩ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৮

সাাজ্জাাদ বলেছেন: আপনি যে বিষয় নিয়ে লিখেছেন তার ফলাফল কিন্তু অনেক গভীর।আমাদের গোঁড়া কিন্তু কেটে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।যে কোনও সময় দুমড়ে মুচড়ে পড়ে যেতে পারি আমরা।
আমি মনে করি এখনও সময় আছে।
শিক্ষিত বানানোর চেয়ে জ্ঞানী আহরন করা বেশি দরকার।

২৩ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমি মনে করি এখনও সময় আছে হ্যাঁ, সময় হয়তো এখনো আছে, কিন্তু বেড়ালের গলায় ঘন্টাটা বাঁধবে কে?
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
শুভকামনা---

২০| ২৪ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:০৯

মনিরা সুলতানা বলেছেন: আমার মনে হয়, আমাদের আবার essay type পরীক্ষা পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়া উচিত। আবার স্কুলগুলোতে মানসাংক পদ্ধতি শেখানো উচিত, যার সাহায্যে ক্যালকুলেটর ছাড়াও ছাত্র ছাত্রীরা সহজ সহজ যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ মুখে মুখে করা শিখতে ও চর্চা করতে পারবে। Descriptive রচনা লিখতে না দিয়ে Imaginative বিষয়ের উপর রচনা লিখতে দেয়া উচিত, যেসব বিষয় কোন রচনা বইয়ে বা নোট বইয়ে পাওয়া যাবেনা। যেমন, ‘বাংলাদেশের ঋতু বৈচিত্র’ এর পরিবর্তে ‘এমন দিনে তারে বলা যায়’ এর উপর লিখতে বলা হোক। ছেলেমেয়েরা ভাবতে শিখুক, মনের ভাব শুদ্ধভাবে প্রকাশ করতে শিখুক। বড় হয়ে যত বড় ডাক্তার, ইঞ্জিনীয়ার বা বিজ্ঞানীই হোক না কেন, সেখানেও তাকে শুদ্ধভাবে তার চর্চিত বিষয়টাকে প্রকাশ ও উপস্থাপন করা শিখতে হবে।


খুব সুন্দর করে বলেছেন, আমার নিজের ও অনেকটাই মনে হয়, আপনার প্রস্তাবিত ধারা গুলো যুক্তিযুক্ত।

২৪ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:২২

খায়রুল আহসান বলেছেন: ভাল লাগা কথাগুলো পোস্ট থেকে উদ্ধৃতির জন্য অনেক ধন্যবাদ। মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত হ'লাম।
আপনি দেশ থেকে ঘুরে গেলেন। কেমন কাটালেন? ক'দিন ছিলেন?
শুভকামনা রইলো---

২১| ২৪ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:৪১

মনিরা সুলতানা বলেছেন: বাচ্চাদের ছুটি’র পুরো’টা সময় এবার দেশে আছি; ধন্যবাদ ভাইয়া খবর নেয়ার জন্য।
আলহামদুলিল্লাহ ভালো সময় কাটছে :) দোয়া করবেন।

২৯ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৯:৫৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: ওহ, আপনি এখনো দেশেই আছেন তাহলে? ভাল সময় কাটুক সপরিবারে, সানন্দে! আশাকরি, এই শ্রাবনে ঢাকায় এসে জলমগ্ন হয়ে পড়েন নি এবং আপনার যাতায়াত বিঘ্নিত হচ্ছেনা।
দোয়া রইলো, ভাল সময় কাটিয়ে আবার সহি সালামতে নিজ আবাসে ফিরে যান! আর অবশ্যই, এর মাঝেও কিছু কিছু লেখালেখি চলতে থাকুক, লেখার রসদ সামগ্রী এবং স্মৃতিময় ছবি সংগ্রহ হতে থাকুক!

২২| ২৯ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ২:১৮

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: খুব সুন্দর চিন্তা চেতনা কাজ করেছে পোষ্টে, নিঃসন্দেহে মহৎ উদ্দেশ্য।
আপনার জনকল্যাণকর চিন্তাভাবনা বাস্তবতা ফিরে পাক প্রত্যাশা আমারও।

২৯ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:৪৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: খুব সুন্দর চিন্তা চেতনা কাজ করেছে পোষ্টে, নিঃসন্দেহে মহৎ উদ্দেশ্য। - অনেক ধন্যবাদ। আপনার এমন চমৎকার মন্তব্যে এবং প্লাসে অনেক অনুপ্রাণিত হ'লাম।
শুভেচ্ছা জানবেন।

২৩| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:৪৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আমাদের সময়ে এস এস সিতে এমসিকিউ প্রথম শুরু হয় আনলিমিটেড ভাবে। এর আগে ছিল ৫০০ মার্কের প্রশ্ন ব্যাংক। আমি খুবই অসন্তুষ্ট ছিলাম এই এমসিকিউ নিয়ে। কারণ আমি কোনোদিন ৫০ এ ৫০ নাম্বার পাইনি। রচনামূলক যা পড়তাম, সেটার উপর ভরসা করেই এমসিকিউ পরীক্ষা দিতাম।

এখন যে সৃজনশীল পরীক্ষা শুরু হয়েছে, তার সম্পর্কে ধারণা আছে আপনার? সৃজনশীল প্রশ্ন আমার খারাপ লাগে না অবশ্য। যদিও আমি আমার ছেলেকে নিজে এখন আর পড়াই না। মাঝে মাঝে ওর প্র্যাক্টিক্যাল নোট, স্কুলের এক্সাম পেপার গুলি দেখলে প্রশ্ন নিয়ে ধারণা পাই। আমার ছেলেকেও এমসিকিউতে ভালো নাম্বার পেতে দেখি না। কিন্তু মুখে মুখে সে গুন, যোগ, বিয়োগের হিসেব গুলি দিতে পারে। আমি আমার হিসেবারে কাজে ক্যালকুলেটর খুঁজে না পেলে আমার হিসেবের কাজটা ও করে দেয় B-)

অনেকদিন পর আপনার ব্লগে এলাম। ভালো থাকবেন।

২০১৯ বইমেলায় আপনার কোনো বই আসবে ?

২০ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৮:০৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: এখন যে সৃজনশীল পরীক্ষা শুরু হয়েছে, তার সম্পর্কে ধারণা আছে আপনার - না, এ ব্যাপারে আমার মোটেই ধারণা নেই। তবে পত্র পত্রিকায় এবং বিভিন্ন ব্লগে অনেক লেখা পড়ে আমার মনে এ ধারণাটা জন্মেছে যে নতুন এই উদ্যোগটি যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে শুরু করা হয়নি, ফলে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছেনা। বিশেষ করে শিক্ষকগণ নিজেরাই পুরোপুরি প্রস্তুত ও সমন্বিত নন এই নতুন ব্যবস্থায় শিক্ষাদানের ব্যাপারে।
২০১৯ এর বইমেলায় একটা কবিতার বই প্রকাশের ইচ্ছে আছে, তবে নিশ্চিত নই। দেখা যাক...
ব্লগে পুনঃপ্রত্যাবর্তনে সুস্বাগতম! শুভকামনা---

২৪| ২১ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৯:৩৭

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: পড়লাম এবং আপনার সাথে একমত পোষণ করলাম। চিন্তাশক্তি, সৃজনশীলতা এখন যাদুঘরে।

২১ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৯:৫১

খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ। একমত পোষণ করায় অনুপ্রাণিত হ'লাম।
চিন্তাশক্তি, সৃজনশীলতা এখন যাদুঘরে। - বিদ্যমান পরিস্থিতিটা সেরকমই।

২৫| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৮

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: আপনার সাথে একমত।

আপনার বাকি পোস্টগুলোও পড়ে মন্তব্য করবো :)

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: পুরনো একটি পোস্ট খুঁজে বের করে পড়েছেন, মন্তব্য করেছেন, প্লাস দিয়েছেন এবং যাওয়ার আগে বাকি পোস্টগুলোও পড়ে মন্তব্য করার কথা বলে গেছেন, এতে অনেক অনুপ্রাণিত হ'লাম। পোস্টের বিষয়ে একমত পোষণ করায় এ ব্যাপারে উৎসাহিত হ'লাম।
ভাল থাকুন। অনেক, অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা---

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.