নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের কাশ্মীর ভ্রমণ- ৮: ক্ষণিকের দেখা, তবু মনে গাঁথা

২৯ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৩:০৭

কেবল্ কারে করে ফিরে আসার সময় নীচে তাকিয়ে দেখলাম, একটা জরাজীর্ণ মাসজিদ যা এতদিনে বরফে ঢাকা ছিল, বরফ সরে যাবার পরে তা আবার মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে। টিন ও মাটির দেয়াল ঘেরা এ মাসজিদটিকে ছোটবেলায় গ্রামে গঞ্জে হাটে বাজারে যে রকম জীর্ণ মাসজিদ দেখতে পেতাম, আমার কাছে অনেকটা সেরকমই দেখতে মনে হলো। প্রতি বছর এটা বরফের নীচে ছয় মাস ঢাকা পড়ে থাকে, আবার বরফ গলে গেলে মাথা বের করে আবির্ভূত হয়। মনে হলো, কেবল্ কার দেখতে ও চড়তে আসা ট্যুরিস্ট এবং সেখানে কর্মরত ব্যক্তিদের জন্যই এ মাসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল।

সকালে গুলমার্গের উদ্দেশ্যে বের হবার আগে আমরা হোটেল থেকে একেবারেই চেক-আউট করে বের হয়েছিলাম, কারণ সেদিনের রাত্রিতে আমাদের জন্য ডাল লেইকে ভাসমান একটা বোট হাউসে থাকার ব্যবস্থা নির্ধারিত ছিল। সন্ধ্যের কিছু আগে আমাদের গাড়ী ডাল লেইকের সাত নম্বর ঘাটে এসে থামলো। শাফি লেইকের অপর পাড়ের দিকে আঙুল তুলে দেখিয়ে বললো, ‘ঐ বোট হাউসটিতে আপনারা আজ রাতে থাকবেন। ইন শা আল্লাহ, আগামীকাল সকালে আমি ঠিক এখান থেকে আপনাদেরকে নিয়ে প্যাহেলগামের উদ্দেশ্যে রওনা হবো’। এই বলে ও কাকে যেন ফোন করলো। একটু পরেই দেখি, একটি বোট আমাদের ঘাটের দিকে এগিয়ে আসছে। শাফি এবং সেই বোটের মাঝি মিলে আমাদের লাগেজগুলো বোটে তুলে ফেললো। তারপর শাফি আমাদের থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেল, আমরা বোটে উঠে জলে ভাসতে ভাসতে যেন সারাদিনের ক্লান্তির কথা বেমালুম ভুলে গেলাম, যদিও সে জার্নিটুকু ছিল শুধু লেইকের এপাড় থেকে ওপাড়। শুধু ওপাড়ে গিয়ে আমাদের জন্য নির্দ্দিষ্ট বোটহাউসে আমাদের লাগেজগুলো নামিয়ে মাঝি আবারো এক ঘন্টার জন্য লেইকে আমাদেরকে ঘোরাবে, এমন ব্যবস্থাই আগে থেকে করা ছিল। এই ঘোরাঘুরির নামটা “শিকারা”। আমাদের ফ্রেশ হয়ে ওঠার জন্য যতটুকু সময়ের প্রয়োজন, বোটহাউসে ঠিক ততটুকু সময় থেকে আমাদেরকে তাড়াতাড়ি বের হবার জন্য মাঝি উপদেশ দিল, কারণ তখন সূর্যাস্ত আসন্ন।

বোটে যখন উঠলাম, তখন সূর্যটা ডুবু ডুবু। মাঝি তাড়াতাড়ি আমাদেরকে নিয়ে বের হয়ে পড়লো। বোটে উঠে বুঝলাম, আমাদের অন্ততঃ আরো আধ ঘন্টা আগে রওনা হওয়া উচিত ছিল। বোটে ওঠা থেকেই কোথা থেকে যেন আরেকটা বোট এসে আমাদেরটার সাথে ঘেঁষে ঘেঁষে বাইতে থাকলো। সেই বোটের মাঝি আমাদেরকে অনুরোধ করলো, আমরা যেন তার ‘ফিশ বারবিকিউ’ টার একটু স্বাদ পরখ করে দেখি। আমরা প্রথমে না না করলেও, তার উপর্যুপরি অনুরোধে রাজী হ’লাম। ধীরে বহমান বোটে সেদিনের সেই সন্ধ্যায় তার সেই ‘ফিশ বারবিকিউ’ টা টেস্ট না করলে আমরা বিরাট মিস করতাম। খুবই সুস্বাদু এবং মুখরোচক ছিল সেটা। এক প্লেট করে খেয়ে আবারো সেটা খেতে ইচ্ছে হলো। কিন্তু ততক্ষণে চারিদিকে খোঁজাখুজি করেও সেই মাঝির আর দেখা পেলামনা। পরে অবশ্য আরও কিছু ভেন্ডার পাশে ভিড়েছিল, কিন্তু তাদের সামগ্রীর প্রতি আমাদের কোন আগ্রহ ছিলনা। এরই মধ্যে আমাদের মাঝিকে ক্বিবলার দিক সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করাতে সে বুঝতে পারলো, আমরা বোটে বসেই মাগরিবের নামায পড়তে চাচ্ছি। সে সাথে সাথে নৌকোটিকে ক্বিবলামুখী করে স্থির করে রাখলো এবং আমাদেরকে নামায শুরু করতে বললো। আমরা তিনজন সেই সন্ধ্যায় বোটে বসেই মাগরিবের নামায পড়ে নিলাম। আমাদের নৌকোটাকে স্থির হতে দেখে আশে পাশের কিছু মাঝি ভাবলো, আমাদের নৌকোয় বোধহয় কিছু সমস্যা হয়েছে। ওরা কাছে এসে আমাদের মাঝিকে সমস্যার কথা জিজ্ঞেস করাতে মাঝি তাদেরকে জানালো যে আমরা নামায পড়ছি। একথা শুনে ওরা চলে গেল।

সেদিনের সন্ধ্যায় ডাল লেইকে আমরা যে ঘন্টাখানিক সময় নৌকোয় কাটিয়েছিলাম, তা স্মরণ করতে এখনো আমার খুব ভাল লাগে। হ্রদের বুকে অত্যন্ত ধীর গতিতে ভাসমান আমরা, কখনো ঝলমলে আলোকোজ্জ্বল ভাসমান বিপণী বিতান অতিক্রম করছি, কখনো আবছা আলোয় হাস্যোজ্জ্বল অন্য অতিথিভরা নৌকো আমাদেরটাকে অতিক্রম করছে, আবার কখনো বেশ অন্ধকারের মধ্য দিয়েই জলজ গাছ গাছড়ার ভেতর দিয়ে আমাদের নৌকো অতিক্রম করার সময় শুনতে পাচ্ছিলাম সতর্ক পাখিদের ডানা ঝাপটানোর শব্দ। মাঝে মাঝে আমাদের দেশের ডাহুক, পানকৌড়ির ডাকের মতও শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম। আর বিরহী ব্যাঙের ডাক তো ছিলই। আমি একা বাসায় মাঝে মাঝে গলা ছেড়ে গান গাই। কেউ সামনে আসলে গান বন্ধ হয়ে যায়। স্ত্রীর সামনে মাঝে মাঝে গানের সুর ভাঁজলেও, ছেলেদের সামনে কখনো গান গাই না। এটা আমাদের একটা জিনেটিক দোষ। ছোটবেলায় আমার আপাতঃ কঠোর আব্বা একদিন হঠাৎ করে আমার কাছে একটি গান শুনতে চাইলে নিদারুণ লজ্জায় মরে যাচ্ছিলাম! আমার ছোট ছেলেও খুব সুন্দর গান গায়, গীটার বাজায়। আমি ও আমার স্ত্রী যখন আমেরিকা সফরে যাই, তখনই জীবনে প্রথম সে আমাদের কাছে একটি গীটার আনার জন্য অনুরোধ করেছিল। এর আগে সে কোনদিন কোন কিছুর জন্য অনুরোধ বা আব্দার করেনি। মাঝে মাঝে মধ্যরাতে আমি ওর গলা ছেড়ে গাওয়া গান শুনতে পাই। আমি কখনো কখনো চুপি চুপি ওর দরজার আড়ালে গিয়ে শুনি। ও টের পেলে সাথে সাথেই গান বন্ধ হয়ে যায়। এটাই আমাদের সেই জিনেটিক দোষ! কিন্তু সেদিনের সেই সন্ধ্যায় আমি সেই দোষকে অতিক্রম করতে পেরেছিলাম। মনের আনন্দে কয়েকটা গান, যতটুকু জানি, গেয়ে ফেলেছিলামঃ আমায় ভাসাইলি রে, আমায় ডুবাইলি রে; মাঝি বাইয়া যাও রে.... ইত্যাদি। হয়তো আমার ছেলে আমার গলায় সেসব গান শুনে সেদিন অনেকটা অবাকই হয়েছিল।

ভাসতে ভাসতে একসময় আমরা “রয়্যাল কাশ্মীর” নামে একটি ঝলমলে ভাসমান দোকান অতিক্রম করছিলাম। আমার স্ত্রী মাঝিকে সেই দোকানটার পাশে নৌকো থামাতে বললো। আমাকেও নামতে বললো, কিন্তু আমি সেই অনুপম সন্ধ্যার নৈসর্গিক দৃশ্য ছেড়ে বিপণী বিতানে প্রবেশ করতে নিমরাজী ছিলাম। অগত্যা সে আমার ছেলেকে নিয়েই ভেতরে গেল। আমি নৌকোয় বসে বসেই সেলফোন দিয়ে ছবি তুলতে থাকলাম, ভিডিও চিত্রও ধারণ করলাম কয়েকটা, আর থেকে থেকে গলা ছেড়ে এক আধটা গান গাইতে থাকলাম। মানুষের মনে আনন্দ থাকলে বোধহয় কন্ঠে এমনি এমনিই গান চলে আসে। আমাদের নৌকোটা “রয়্যাল কাশ্মীর” এর সামনে নোঙর করানোর পুরস্কার হিসেবে দোকান মালিকের পক্ষ থেকে আমাকে এবং মাঝিকে এক কাপ গরম চা অফার করা হলো। আমি ধন্যবাদ জানিয়ে ফিরিয়ে দিলাম, মাঝি চা খেতে খেতে আমার গান শুনতে লাগলো। কাশ্মীরি মাঝিটা সে গানের কী বুঝলো কে জানে, একটা গান শুনে সে বলে উঠলো, "স্যার, ইয়ে গানা বাহুত আচ্ছা হ্যায়"। একটু পরেই দেখলাম, আমার স্ত্রী খুব খুশী মনে বের হয়ে আসছে। হাতে একটা ব্যাগ। জিজ্ঞেস করলাম, ‘কী কিনলা?’ সে ব্যাগ থেকে বের করে দেখালো, আমাদের সবার ছোট্টমনি, নাতনি আনায়ার জন্য একটা ড্রেস। সেটা দেখে আমার খুশীটা মনে হয় ওরটাকেও অতিক্রম করে গেল! এভাবে জলে ভাসতে ভাসতে খুব দ্রুতই আমাদের দেড়টা ঘন্টা কেটে গেল। আমরা বোট হাউসে ফিরে এলাম।

ফিরে এসে দেখি বোট হাউসে মানযুর আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। সে আমাদের ভালমন্দ জিজ্ঞেস করে আমাদেরকে পরের দিনের প্যাহেলগাম সফর সম্পর্কে ব্রীফিং দিল। আর তার পরের দিন আমাদের প্যাহেলগাম থেকে সরাসরি শ্রীনগর বিমান বন্দরে ফিরে দিল্লী হয়ে কোলকাতাগামী ফ্লাইট ধরার কথা। হয়তো ওর সাথে আর দেখা হবেনা, এমনটা ভেবে আমি ওকে ওর পাওনা টাকা-পয়সা পরোপুরি মিটিয়ে দিলাম। পাওনা বুঝে নিয়ে সে রাতে মানযুর চলে যাবার পর আমি আমাদের বোট হাউসের পরিচারককে ডেকে ডিনার লাগাতে বললাম। ওর নাম জিজ্ঞেস করাতে ও বললো, ‘ফররোখ আহমদ’। আমাদের দেশে যেটাকে আমরা ‘ফারুক আহমেদ’ ডাকি। লক্ষ্য করেছিলাম, মানযুরও ওকে ‘ফররোখ আহমদ’ই সম্বোধন করেছিল। ফররোখকে আগেই বলে রেখেছিলাম আমাদের তরকারিতে একটু ঝাল কম দিতে। ডিনারের সময় সে বারে বারে আমাদের কাছে এসে আমাদের অভিব্যক্তি দেখে বুঝতে চেষ্টা করছিল, ওর রান্না আমাদের জন্য উপাদেয় হয়েছে কিনা। শেষ পর্যন্ত থাকতে না পেরে এক সময় জিজ্ঞেসই করে বসলো। আমরা ওর রান্নার প্রশংসা করলাম। এটা শুনে সে খুশীতে গদগদ হয়ে জানালো, আগামী পাঁচ দিনের জন্য আমরাই ওর শেষ অতিথি। কারণ, ‘বাহুত তাকলিফ সে পাঁচ দিন কা ছুট্টি মিলা’! জিজ্ঞেস করলাম, বাড়ী কোথায়? সে জানালো, ‘গুলমার্গ’, যাঁহাসে আপ আজ ঘুমকে আয়া’। পরেরদিন সকালে নাস্তায় আমরা কে কী খেতে চাই, ও জিজ্ঞেস করে সবকিছু নোট করে নিল। বিদায় নেয়ার আগে সে আমাদেরকে সেই রাতের নিবাস “নিউ চেরী রাইপ” বোটহাউসের ওয়াই ফাই এর ‘পাসওয়ার্ড’ টা দিয়ে গেল। আমরা আমাদের ক্লান্ত অবসন্ন দেহ বিছানায় এলিয়ে দিয়ে আন্তর্জালিক বিচরণ করতে করতে কিছুক্ষণের মধ্যেই সবাই ঘুমিয়ে পড়লাম।

চলবে...

ঢাকা
২০/২৯ মে ২০১৯


কয়েকটি বোট হাউস


প্রস্তুতি - ফিশ বারবিকিউ


প্রস্তুতি - ফিশ বারবিকিউ


ডিসপোজেবল প্লেটে পরিবেশিত প্রস্তুতকৃত ফিশ বারবিকিউ


আরেকজন ভেন্ডার


পাটাতনের নীচে চাপা পড়ছে জলের শোভা, একগুচ্ছ জলজ ফুল


বলুন তো, এসব গাছপালা কি পাহাড়ের উপত্যকায়, নাকি সমতল ভূমিতে?


"কখনো আবছা আলোয় হাস্যোজ্জ্বল অন্য অতিথিভরা নৌকো আমাদেরটাকে অতিক্রম করছে"


"ভাসতে ভাসতে একসময় আমরা “রয়্যাল কাশ্মীর” নামে একটি ঝলমলে ভাসমান দোকান অতিক্রম করছিলাম"।


মাগরিবের ওয়াক্ত হয়ে গেলে মাঝি নৌকো স্থির করে রেখে আমাদেরকে নামায পড়ে নিতে বললো।

মন্তব্য ৩১ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (৩১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি গান গাইতে পারেন, এটা অনেক বড় ব্যাপার।
হ্রদের পানির অবস্হা কি রকম, হ্রদটি আনুমানিক কত বড়?

আপনার কাশ্মীরে অবস্হান কালে, ছেলেমেয়েদের স্কুলে, কলেজে যেতে দেখেছেন?

২৯ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৪:১০

খায়রুল আহসান বলেছেন: প্রথম মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আপনি গান গাইতে পারেন, এটা অনেক বড় ব্যাপার - গান গাইতে পারি মানে, শুধুই আমার জন্য। আর তেমন কোন শ্রোতা পেলে, যে খারাপ হলেও খারাপ বলে তিরস্কার করবেনা, তার জন্যও। :)
যেখানে বোট হাউসগুলো অবস্থিত, সেখানে পানি একটু একটু করে অপরিষ্কার হচ্ছে বলে মনে হলো। একটু দূরে গেলেই পরিষ্কার।
ডাল লেইকের দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে সাত কিলোমিটার, প্রস্থ সাড়ে তিন কিলোমিটার। এর সারফেইস এরিয়া ১৮-২২ স্কয়ার কিলোমিটার।
আপনার কাশ্মীরে অবস্হান কালে, ছেলেমেয়েদের স্কুলে, কলেজে যেতে দেখেছেন? - না, দেখিনি। স্কুলগুলো মনে হয় তখন বন্ধ ছিল।

২| ২৯ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৪:০১

মেঘ প্রিয় বালক বলেছেন: আপনার লিখনিতে মনে হলো কাশ্মীর থেকে ঘুরে এলাম। কাশ্মীরিরা কি খাবারে অনেক ঝাল প্রিয় নাকি?? নামকিন চা আর রিসতা গোস্ততাবা খেয়েছিলেন? নাকি মিস করে আসছেন?

২৯ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৪:২১

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমাদের এখন খাবারের বয়স নেই। যদিও একদা ভালই ভোজন রসিক ছিলাম, এখন সহজপাচ্য খাবারই আমাদের পছন্দের মেন্যু।
রিসতা গোস্ততাবা নামটা মনে হয় শুনেছিলাম সেখানে। নামকিন চা এর কথা শুনিনি। তবে আগেই বলেছি, খাবার দাবারের ব্যাপারে আমাদের আগ্রহটা একটু কম ছিল। তাই ওদের culinary speciality সম্বন্ধে মন্তব্য করার মত যথাযোগ্য ব্যক্তি আমরা নই, এ কথাটি বিনয়ের সাথেই বলতে চাই।
কাশ্মীরিরা ঝাল বেশী খায়, এ কথা বলবো না। আমরাই স্বাভাবিকের চেয়ে ঝাল কম খাই, এ কথা বলতেই পারি।

৩| ২৯ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৪:১৪

করুণাধারা বলেছেন: চমৎকার বর্ণনা- পড়াটা আনন্দময় হলো।

একটা জিনিস ঠিক বুঝতে পারলাম না, ফিস বারবিকিউর তিনটা ছবি আছে, একজন ভেন্ডারের ছবিও আছে, কিন্তু পোস্টে কোথাও ফিস বারবিকিউ এর উল্লেখ দেখলাম না। আপনারা কি শিকারায় ভ্রমণরত অবস্থায় বারবিকিউ খেয়ে ছিলেন?

পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

০৩ রা জুলাই, ২০১৯ রাত ৮:১৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে আমার ভুলটা ঠিকই ধরা পড়েছে।

২৯ জুন ২১০৯ তারিখের বিকেলে আপনার মন্তব্যটা পড়েই আবার পোস্টে চোখ বুলালাম। আমার নিজেরও একটু সন্দেহ হচ্ছিল। পোস্টটাকে একটু ছোট ছোট মনে হচ্ছিল। লেখাটা আমার মূল লেখা থেকে কপি এন্ড পেইস্ট করে ব্লগে পোস্ট করার সময় কিভাবে যেন একটা পুরো অনুচ্ছেদ হাওয়া হয়ে যায়। তাড়াতাড়ি পোস্টটাকে সম্পাদনা করে বাদ পড়া অনুচ্ছেদটা জুড়ে দিলাম। তারপরে আপনার মন্তব্যের অন্যান্য প্রসঙ্গের উত্তর লিখে যেই না ক্লিক করবো, অমনি বিদ্যুৎ চলে গেল, সেই সাথে ওয়াইফাই সংযোগও। বিদ্যুৎ ফিরে এলে আবার যখন সামুর রুদ্ধ দুয়ারে করাঘাত করলাম, দেখলাম সামু নিরুত্তর। আগে তো একটা বাণী দেখাতো- "দিস ওয়েব পেইজ ইজ ব্লকড!" এবারে কোন বাণীও দেখাচ্ছেনা। ভাবলাম, আবার হয়তো কয়েকদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে, ততদিন পর্যন্ত অন্য কিছুতে মনোনিবেশ করি।

পরেরদিন বিদ্রোহী ভৃগু "সামহোয়্যারইন ব্লগ গ্রুপ" নামে একটি ফেইসবুক গ্রুপে আমন্ত্রণ জানালেন। তার আমন্ত্রণ গ্রহণ করে দেখি, সেখানে একে একে ব্লগের অনেকেই আসছেন এবং তাদের লেখা দিচ্ছেন, সেই সাথে ব্লগটাকে একেবারে, দেশে বিদেশে সবার জন্য বন্ধ করে দেয়ার বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ, হতাশা আর ক্রোধ প্রকাশ করছেন। আমিও আমার উষ্মা প্রকাশ করলাম এই বলে- "আজ এই গ্রুপে যোগদান করে বুঝতে পারলাম, ক্ষমতাবান অপশক্তি মানুষের কন্ঠ ও কলমকে স্তব্ধ করে দেয়ার অপচেষ্টায় আপাতঃ বিজয়ী হয়েছে। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, এ বিজয় বেশীদিন স্থায়ী হবার নয়। জাগ্রত মানুষের কন্ঠ ও কলমকে কেউ চিরকাল স্তব্ধ করে রাখতে পারে না।"

আমার কথাটা আজ বিকেলেই সত্যে পরিণত হলো। ব্লগ আজ আবার উন্মুক্ত হলো, সন্ধ্যের পরে লগ-ইন করলাম।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, আমার লেখার ভুলটি ধরিয়ে দেয়ার জন্য।

০৩ রা জুলাই, ২০১৯ রাত ৮:২৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনারা কি শিকারায় ভ্রমণরত অবস্থায় বারবিকিউ খেয়ে ছিলেন? - জ্বী, ঠিক তাই। আমরা মাগরিবের নামায পড়ে উঠেই ফিশ বারবিকিউ আস্বাদন করেছিলাম। যদিও ততক্ষণে সেটা সামান্য ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল, তবুও আমাদেও কাছে সেটাকে খুবই সুস্বাদু মনে হয়েছিল।
লক্ষ্য করেছেন হয়তো, পোস্টের এখনকার তৃতীয় অনুচ্ছেদটি বাদ পড়েছিল, যেটা ব্লগ বন্ধ হয়ে যাবার কিছুক্ষণ আগে মাত্র সংযোজিত হয়েছিল। তাই তখনই হয়তো সেটা আপনার চোখে পড়েনি।

৪| ২৯ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৪:২২

নতুন নকিব বলেছেন:



যথারীতি সুন্দর। চোখ রেখে চলেছি আপনার সিরিজটিতে। মনে হচ্ছে একেকটি পর্বে সাথে ছিলাম আমরাও। আপনার এবং আপনার পরিবারের সকলের জন্য অফুরান শুভকামনা। পোস্টটিতে +++

০৩ রা জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:০৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। প্লাসে এবং মন্তব্যে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।

৫| ২৯ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৪:৩৭

শায়মা বলেছেন: ভাইয়া আমাদেরকে গান শুনাও রেকর্ড করে। :)

০৩ রা জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:৩০

খায়রুল আহসান বলেছেন: ব্যাঙের ডাক শুনেছেন? তার চেয়েও খারাপ!

৬| ২৯ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৫:০৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


হ্রদের তীরে জনবসতি চোখে পড়লো?
মানুষজনের অবস্হা দেখে, ভারতের অন্য এলাকার তুলনায় এদের অবস্হা কেমন মনে হলো?

০৩ রা জুলাই, ২০১৯ রাত ১০:০০

খায়রুল আহসান বলেছেন: হ্রদের তীরে জনবসতি তেমন চোখে পড়েনি। মানুষজনের অবস্হা ভারতের অন্যান্য এলাকার তুলনায় গরীব বলে মনে হলো। শিক্ষা দীক্ষায়ও কিছুটা পিছিয়ে। কিন্তু তবুও ওদেরকে হাসিখুশী দেখতে পেয়েছি।

৭| ২৯ শে জুন, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩৪

রসায়ন বলেছেন: চমৎকার

০৩ রা জুলাই, ২০১৯ রাত ১১:২২

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, অনুপ্রাণিত হ'লাম।

৮| ০৩ রা জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৪১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বাকী গুলো এখানে পোষ্ট করুন প্রিয় সিনিয়র :)

গ্রুপের গুলো

আহা কি শান্তি লাগছে , সামুতে ফিরে B-)

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৯ সকাল ৯:১৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: আচ্ছা, দিচ্ছি ধীরে ধীরে।

৯| ০৩ রা জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৬

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: : বেশ কয়েকদিন ধরে প্রবেশ করতে না পেরে আমি হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। আজকে খুব ভালো লাগছে ।আপনাকে ধন্যবাদ

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৯ সকাল ১০:৩৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার মত আরো অনেকেই হতাশ হয়েছিলেন। সামু'র রুদ্ধ দুয়ার খুলে যাওয়ায় আবার তারা উজ্জীবিত হচ্ছেন।

১০| ০৩ রা জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো লাগলো কাশ্মীর ভ্রমনের কাহিনী।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৯ সকাল ১১:৪২

খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ। আমারও ভাল লাগলো আপনার এ ভাল লাগার কথাটি জানতে পেরে।

১১| ০৩ রা জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:৫৯

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: হাঃ হাঃ হাঃ। আপনার গান গাওয়ার জেনেটিক দোষের ঘটনা পড়ে মজা পেলাম। এরকম অনেকেরই হয়। আচ্ছা, লেখার শুরুতে যে মসজিদটির কথা লিখেছেন, সেখানে কী বরফ সরে গেলে নামাজ পড়া হয়?

চলতে থাকুক। ধন্যবাদ ভাই খায়রুল আহসান।

০৫ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ৯:০৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার গান গাওয়ার জেনেটিক দোষের ঘটনা পড়ে মজা পেলাম। এরকম অনেকেরই হয়। - ধন্যবাদ, ব্যাপারটা সঠিকভাবে অনুভব করার জন্য।
লেখার শুরুতে যে মসজিদটির কথা লিখেছেন, সেখানে কী বরফ সরে গেলে নামাজ পড়া হয়? - জ্বী, আমার তাই মনে হয়। আমরা যখন গিয়েছিলাম, তখন বরফ গলে যাওয়ার পর মসজিদটা কেবল আত্মপ্রকাশ করেছে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছিল।
পাঠ ও মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

১২| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৪

নীলপরি বলেছেন: লেখা তো ভালো হয়েছেই । তবে , আপনার এই লেখাটা সামুতে পড়তে পেরে আপ্লুত হলাম । আমি একয়েকদিন শুধুই ভাবছিলাম ,আর কী লিখবো সামুতে যেমন লিখি ! লিখলে , আপনি আর কয়েকজন যেমন বিশ্লেষণ করেন সেরকম বিশ্লেষণ আর কে করবেন!
যাহোক ,খুবই ভালো লাগছে পোষ্টে কমেন্ট করতে পেরে ।

শুভকামনা

০৫ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ৯:৩২

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার কমেন্ট পড়ে মুগ্ধ হ'লাম, বরাবরের মত প্লাস পেয়ে অনুপ্রাণিত হ'লাম। অনেক, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, সামু বন্ধ থাকা সত্ত্বেও আমাদেরকে স্মরণ করার জন্য।
আপনার কবিতায় (এবং অন্য লেখায়ও) আবেগ থাকে, আবেদন থাকে- পাঠকের তাই সেগুলো পড়তে ভাল লাগে।

১৩| ০৫ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৪:২৯

করুণাধারা বলেছেন: পোস্টটি পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল কিছু বাকি রয়ে গেছে, সেজন্যই আপনাকে প্রশ্ন করেছিলাম। তবে আমার ছোট প্রশ্নের উত্তর এত বিস্তারিতভাবে দেওয়ায় খুব ভালো লাগলো।

সেদিন আমিও খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে ছিলাম ব্লগে ঢুকতে না পেরে। এমনিতেই সব সময় ভয় থাকে ব্লগ নিয়ে। সেদিন এবং পরবর্তী দুদিন খুব মন খারাপ ছিল, ভেবেছিলাম সামু বোধহয় চিরকালের মতো বন্ধ হয়ে গেল!! আল্লাহকে শুকরিয়া যে আবার আমরা ব্লগে ফিরতে পেরেছি... এই কদিন সরকারি হস্তক্ষেপের কারণে সামু বন্ধ ছিল, নাকি নিজস্ব কারণে বন্ধ করে রাখা হয়েছিল সেটা জানতে পারলে ভালো হতো।

সামুর উপর থেকে বদনজর কিভাবে সরিয়ে নেয়া যায় সেটা নিয়ে এখন ব্লগারদের ভাবনা চিন্তা করা দরকার বলে মনে হয়। সামু কর্তৃপক্ষের একার উপর চাপটা অনেক বেশি হয়ে যাচ্ছে।

আপনার ভ্রমণকাহিনীর পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

০৬ ই জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১:৫৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: এই কদিন সরকারি হস্তক্ষেপের কারণে সামু বন্ধ ছিল, নাকি নিজস্ব কারণে বন্ধ করে রাখা হয়েছিল সেটা জানতে পারলে ভালো হতো - এ প্রশ্নটা অনেকেরই মাথায় ঘুরছে।
সামু কর্তৃপক্ষের একার উপর চাপটা অনেক বেশি হয়ে যাচ্ছে - আপনার এ অভিমতের সাথে আমি একমত।
আপনার ভ্রমণকাহিনীর পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম - পরবর্তী পর্বটা একটু আগে পোস্ট করেছি।

১৪| ০৬ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ১১:৪৬

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: ভ্রমণ কাহিনী জমে উঠেছে ভালো লাগছে গল্প আর সাথে ভ্রমণের ছবি। কাশ্মীরের হালুয়ার রেসিপি বলে বিদেশে এমনকি বাংলাদেশেও খেয়েছি আসলেই কি কাশ্মীরে হালুয়া আছে - খেতে কেমন? পরিবার নিয়ে বেড়ানো হচ্ছে বেড়ানোর সার্থকতা। একা কোথাও গেছি আর ভালো কোনো খাবার দেখে পরিবারের কথা মনে পড়েনি এমন হয়নি।

০৬ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:০৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: মিষ্টি খাওয়া নিষেধ বলে কাশ্মীরি হালুয়ার খোঁজ করিনি, চোখেও পড়েনি। তবে কাশ্মীরি হালুয়ার প্রসিদ্ধির কথা আমিও শুনেছি।
ছেলেরা বড় হয়ে যাবার পর আমাদের সাথে বিদেশ ঘুরতে চায় না। ওদের ছুটি ছাটাও একসাথে মিলে না। এবারে অনেকটা বাধ্য হয়ে এসেছে।
মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা!!!!

১৫| ১৪ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ১০:৩৯

স্বপ্নডানা১২৩ বলেছেন: পর্ব নয় পড়েছি । ব্যস্ততায় এটা পড়ে পড়ব । ছবিগুলো দেখে গেলাম । দারুণ ।

১৭ ই জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: যতটুকু বলে গেলেন, এর জন্যই অনেক ধন্যবাদ। পড়ার পর কেমন লাগলো, তা বলে গেলে আরও খুশী হবো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.