নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মায়ের সাথে ঈদ শেষে বিষণ্ণ মনে ঘরে ফেরার কড়চা... (১)

০১ লা আগস্ট, ২০২১ সকাল ১১:০১


বিষণ্ণ পথ, বিষণ্ণ পথিক.... (আলস্যভরে আসন থেকে না উঠে পথের ছবি তুলতে গিয়ে এদের মাথাগুলো এড়ানো গেল না!)

এর পরের পর্বের লিঙ্কঃ মায়ের সাথে ঈদ শেষে বিষণ্ণ মনে ঘরে ফেরার কড়চা... (২)

এবারের ঈদুল আযহা কাটালাম ছোটভাই উৎপলের বাসায়, রংপুরে। আমাকে কাছে পেয়ে ওরা সবাই উৎফুল্ল ছিল, আমিও ছিলাম। গিয়েছিলাম মূলতঃ অসুস্থ মা’কে কয়েকদিনের জন্য দেখে আসতে, ঈদুল আযহা’র পাঁচ সপ্তাহ আগে, স্ত্রী-পুত্রকে ঢাকায় রেখে। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর আম্মার সাথে থেকে যেতে ইচ্ছে হচ্ছিল, ফেরার দিনক্ষণ ঠিক করতে মন সায় দিচ্ছিল না। এর মধ্যে দ্রুত কিছু ঘটনা ঘটে যাচ্ছিল। করোনার মারণ ছোবল মারাত্মক আকার ধারণ করছিল বিধায় সরকারও ‘কঠোর লকডাউন’, ‘শাটডাউন’ ইত্যাদি রক্ষণাত্মক অস্ত্র প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। এ সবের মধ্যে ঘরে ফেরার ফিরতি ভ্রমণের আয়োজন করতে মন মোটেই সায় দিচ্ছিল না। উৎপলও খুব জোর করে বলছিল, “এবারের ঈদটা আমাদের সাথেই করে যান”। আমার পরিবারের সবাই তাতে সমর্থনও দিল। আমিও খুশি হয়ে রংপুরে ঈদ করার সিদ্ধান্ত নিলাম, যদিও জানি আমার ঘরে ফেরাটা এখন নেহায়েৎ প্রয়োজন, কারণ এই এক মাসে নানা টুকটাক কাজ জমে গেছে, যা সামলানো জরুরি।

রংপুরে এবারে মোট এক মাস এক সপ্তাহ ছিলাম। যেদিন ঢাকা থেকে রংপুরে যাচ্ছিলাম, সেদিন বগুড়ার মাঝিরা সেবানিবাস অতিক্রম করার সময় হালিমা-শফিকের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। ওরা দু’জন ছিল আমাদের সংসার শুরু করার পর প্রথম গৃহকর্মী বা ‘ডমেস্টিক এইড’। ১৯৮৭ সালে আমি প্রবাসে যাবার আগে ওদের বিয়ে দিয়ে গিয়েছিলাম এবং শফিকের জন্য ঢাকায় একটি ছোটখাট চাকুরির ব্যবস্থা করে গিয়েছিলাম। সেই থেকে ওরা বেশ সুখেই তাদের ঘর-সংসার করে যাচ্ছিল বলে আমি প্রবাসে বসে খবর পাচ্ছিলাম। ওদের এই ছোট সংসারের ছোট ছোট সুখের কথা জেনে আমি প্রসন্ন বোধ করতাম। দেশে ফিরে আসার পর শফিক আমাকে অনুরোধ করেছিল তাকে ঢাকা থেকে বগুড়া বা রংপুরে যেন বদলি’র ব্যবস্থা করি। তখন রংপুরে কোন ভ্যাকান্সি ছিল না, তবে বগুড়ায় বদলির অনুরোধটি রক্ষা করতে আমাকে মোটেই বেগ পেতে হয়নি। কারণ, সবাই চায় প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ঢাকায় বদলি হতে, আর সে চাচ্ছিল ঢাকা ছেড়ে বগুড়ায় বদলি হতে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলার পর খুব দ্রুতই শফিকের বগুড়ায় বদলি’র আদেশ আসে। সেই তখন থেকেই ওরা ওদের যাবতীয় সঞ্চয় সংগ্রহ করে এবং বাকিটা শফিক অফিসের জিপি ফান্ড থেকে ঋণ গ্রহণ করে বগুড়ায় একটা তিন কক্ষের ‘মাটির বাড়ি’ ক্রয় করে সেখানেই থিতু হয়।

বছর দশেক আগে একবার সপরিবারে সড়কপথে রংপুরে গিয়েছিলাম। রংপুর থেকে ফেরার পথে সেদিনও ওদের কথা মনে পড়ে যাওয়াতে বগুড়ার কাছাকাছি এসে ওদেরকে ফোন দিয়েছিলাম। আমাদের অবস্থানের কথা জানতে পেরে শফিক কথা না বাড়িয়ে একটা ল্যান্ডমার্কের কথা উল্লেখ করে বলেছিল, ‘স্যার আপনি ঐ জায়গায় এসে একটু থামবেন, আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকবো শুধু আপনাদেরকে একটু দেখার জন্য’। তাই হলো, শফিকের সাথে দেখা হলো, কিন্তু ও ছাড়ার পাত্র নয়। বললো, ‘স্যার, শুধু দশ মিনিটের জন্য একটু আমাদের বাসায় চলেন, আমাদের নতুন বাড়িটা একটু দেখে যান’। তখন প্রায় দুপুর হয়ে গিয়েছিল বিধায় আমরা একটু ইতস্ততঃ করছিলাম। কিন্তু ও যখন বললো, ‘স্যার আপনারা যদি এখান থেকে আমাদের বাড়ি না গিয়ে ঢাকা ফিরে যান, তাহলে হালিমা কিন্তু অনেক কান্নাকাটি করবে’। ওর এ কথাটা শুনে আর না করতে পারলাম না। ওদের গৃহে প্রবেশ করতেই হালিমা সালাম করে আমার স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিল। আমি বুঝলাম, সে কান্নাটা ছিল আনন্দের কান্না, আমাদেরকে পেয়ে ও ভীষণ উচ্ছ্বসিত ও আনন্দিত হয়েছিল, আমরাও ওকে এবং ওর সুখের সংসার দেখে খুবই সন্তুষ্ট হয়েছিলাম। আমরা যদি না আসতাম, তাহলেও শফিকের কথা অনুযায়ী হালিমা হয়তো সত্য সত্যই কাঁদতো, কিন্তু সে কান্নাটি হতো বেদনার, আর এ কান্নাটি আনন্দের। যাহোক, দশ মিনিট গড়িয়ে ঘন্টা পার হলো, তবুও ওরা ছাড়তে চাইছিল না। আসার সময় হালিমা তড়িঘড়ি করে একটা ব্যাগ ভরে তার গাছের কাঁচা ও পাকা মিলিয়ে বেশ কিছু পেঁপে, পেয়ারা, লেবু ইত্যাদি শফিকের হাতে দিয়ে বললো গাড়ীতে তুলে দিতে। ঢাকায় ফিরে পরদিন ওর পাকা পেঁপে একটা খেয়ে দেখলাম খুবই মিষ্টি স্বাদ। এমন চমৎকার পাকা পেঁপের স্বাদ আমি ঢাকায় কেনা পেঁপেতে কখনো পাইনি।

এবারে রংপুরে পৌঁছানোর পর আমি ওদের কুশল জানতে চেয়ে শফিককে ফোন করি। ফোনটা হালিমা ধরেছিল এবং আমি রংপুরে এসেছি শুনে সে আবার আব্দার করে বসলো ফেরার পথে যেন একবার ওদেরকে দেখে যাই। একে একে আমাদের পরিবারের সবার নাম ধরে ধরে কুশল জিজ্ঞাসা করে নিয়ে সে পুনরায় তার আব্দারের পুনরাবৃত্তি করলো। অনেক বলেও আমাকে রাজী করাতে না পেরে সে পরদিন আবার শফিককে দিয়ে ফোন করিয়েছিল। এর পর ওরা আরও কয়েকদিন ফোন করে আন্মার কুশল জিজ্ঞাসা করেছিলো। শফিক একজন অত্যন্ত সাদাসিধে (আমরা হেয় করে যাকে ‘হাবাগোবা’ বলি) মানুষ। আমলে ও আচরণে সে একজন পুরোদস্তুর ধার্মিক মানুষ। তার নিরঙ্কুশ সততাকে আমি শ্রদ্ধা করি। একদিন কথা শেষ করে আমি ওকে আমার এবং আমার পরিবারের জন্য দোয়া করতে বলি। আমার কথা শুনে সে বললো, ‘স্যার, আপনার জন্যে, আম্মার (আমার স্ত্রীর) জন্যে এবং ভাইয়াদের জন্য আমি সবসময় প্রতি নামাজান্তে দোয়া করি’। তার পরের কথাটা আমার মনে গাঁথা রয়ে গেছে, কারণ, তখন ঘূর্ণাক্ষরে বুঝতে না পারলেও, শেষ পর্যন্ত সে কথাটাই হয়েছিল আমাকে বলা ওর শেষ কথা। সে বলেছিল, “স্যার, আপনি আমার জন্য যা করেছেন, তার ঋণ কি কখনো শোধ করা সম্ভব”?

এর পরে কয়েকদিন ওরা নিশ্চুপ ছিল। আমিও অসুস্থ আম্মাকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম বলে ওদের নীরবতাকে লক্ষ্য করিনি। হঠাৎ একদিন রাত সাড়ে এগারটায় শফিকের ফোন থেকে রিং আসায় আমি অবাক হই এবং মনে কু-ডাক শুনতে পাই। শফিকের মেয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে জানালো, ‘বাবার খুব কাশি হচ্ছে, প্রচন্ড শ্বাসকষ্টের জন্য হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। ওরা বাবাকে আইসিইউ তে নিয়ে গেছে, আমাদেরকে দেখতে দেয় নাই’। আইসিইউ তে শফিক তিনটে দিনও পার করতে পারেনি। করোনার ছোবলে তিন দিন পুরো হবার কয়েক ঘন্টা আগেই সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে পরলোকের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল। শফিকের এক ছেলে, এক মেয়ে- উভয়কে বিয়ে দিয়েছে এবং উভয়ের ঘরে একটি করে শিশু সন্তান রয়েছে। ওরা যখন ঢাকায় ছিল, ছেলেটিকে আমি ব্যক্তিগতভাবে কোচিং করে মোটামুটি একটা ভাল স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছিলাম। সে ছেলেটি আজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন গর্বিত সৈনিক। লকডাউনের মাঝে চরম বিড়ম্বনা ও প্রতিকূলতা কাটিয়ে সে কোনমতে শফিকের মৃত্যুর দিন সকালে খোলাহাটি থেকে বগুড়ায় এসে পৌঁছেছিল, আর শফিক মারা যায় সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পর। হালিমাকে জিজ্ঞেস করলাম, “মাত্র সাত-আট দিন আগেই তোদের দু’জনের সাথে কথা বললাম, তখন তো তোরা দু’জনেই ভাল ছিলি। এখন তুইও অনেক কাশছিস, আর শফিক তো চলেই গেল। কী এমন ঘটেছিল এর মধ্যে”? সে বললো, লকডাউন শুরু হবার আগের রাতে শফিক অস্থির হয়ে বাজারে গিয়েছিল এবং সেখান থেকে অনেক সওদা (প্রায় পাঁচ হাজার টাকার, যা ওদের জন্যে অবশ্যই অনেক) নিয়ে এসেছিল। সে কাঁদতে কাঁদতে বললো, এ বাজারের একটা কিছুও সে মুখে দিয়ে যেতে পারলো না! গত বছর আমার আপন ভাগ্নে মাহমুদ মনোয়ার স্বয়ং একজন চিকিৎসক হয়েও করোনাক্রান্ত হয়ে মাত্র ৪৬ বৎসর বয়সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মাত্র তিন দিনের মাথায় ইন্তেকাল করেছিল। করোনাক্রান্ত রোগীদের মধ্যে অনেকেই ভাগ্যবান হয়ে থাকেন, তারা ঘরে বসেই সুষ্ঠু চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হন। অনেকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন, আর অনেক অভাগা ব্যক্তি হাসপাতাল থেকে দ্রুত প্রস্থান করেন, তবে বাড়ির উদ্দেশ্যে নয়, অনন্তলোকের পানে। এটাই জীবনের বহুমাত্রিকতা!

শফিকের মৃত্যুর দু’দিন আগে আমার কলেজ-মেট সায়েদ আলি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। গত সাতই জুলাই আমার আপন ফুফাতো বোনের ছেলে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে করোনাক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মাত্র কয়েকদিন চিকিৎসাধীন থেকে খুব দ্রুতই এ পৃথিবী ছেড়ে চলে যায়, সে কথা “স্মৃতির জোয়ারে ভাসা-৩” পর্বে উল্লেখ করেছিলাম। গত ১৫ই জুলাই তারিখে আমার বন্ধু মুস্তাফিজুর রহমানের বড় ছেলে মাশুকুর রহমানও মাত্র ৩৭ বৎসর বয়সে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৫ দিনের মত চিকিৎসাধীন থেকে পরলোকের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এরা সবাই ছিল আমার অতি পরিচিত বিশেষ জন/নিকটাত্মীয়। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে এতগুলো নিকটজন এ পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিয়ে চলে গেল, এ কারণে এবারে ঈদের দিনে মনটা ভীষণ ভারাক্রান্ত ছিল। এ ছাড়া মায়ের অসুস্থতা তো আছেই!

এ ভারাক্রান্ত অবস্থায় ঢাকা ফিরে আসার যাত্রা পরিকল্পনা করতে মোটেও ইচ্ছে হচ্ছিল না। পুনর্বার ‘লকডাউন’ ২৩ জুলাই থেকে কার্যকর হবে, না ২৭ জুলাই থেকে, এ নিয়েও মিডিয়াগুলোর খবরে একটা অনিশ্চয়তা ছিল। ঈদের পরদিন লাঞ্চের পর আমার একজন সহকারীকে বাস টার্মিনালে পাঠিয়ে দুটো টিকেট ক্রয়ের জন্য চেষ্টা করতে বললাম। সে সেখান থেকে জানালো, সন্ধ্যার আগে আর কোন বাস যাবে না বলে কাউন্টার থেকে বলা হচ্ছে, তবে এর মাঝেও যাত্রী পুরা হলে একটা দুটা করে বাস ছেড়ে যাচ্ছে। কেউ নিশ্চিত করে কোন সিদ্ধান্তের কথা বলছে না। এ কথা শুনে আমি আম্মাকে সালাম করে ওনার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে দ্রুত রওনা হলাম। মাত্র বিশ মিনিটের মাথায় টার্মিনালে পৌঁছে দেখি, এনা পরিবহনের একটা এসি বাস কেবল যাত্রা শুরু করে বাস টার্মিনাল থেকে রাস্তায় ওঠার জন্য নাক বের করে অপেক্ষা করছে। সুপারভাইজার কে জিজ্ঞাসা করলাম, দুটো সীট হবে কিনা। উনি প্রথমে বললেন, একটা হবে, তবে ভাড়া বেশি দিতে হবে। একটা সীট নিতে আমি অনিচ্ছা প্রকাশ করায় খানিক পরে উনি বললেন, দুটোই হবে, ‘তবে একটা ফাস্টে অপরটা লাস্টে’ (আসন সারির)। ভাগ্য আমার প্রতি সুপ্রসন্ন ছিল বলেই হয়তো এ যাত্রায় অপ্রত্যাশিতভাবে আমি দুটো সীট পেয়ে গেলাম। আমি ও আমার সহকারী ত্বরিত বাসে উঠে আসন গ্রহণ করলাম।

চলবে..... (পরের পর্বে সমাপ্য)

ঢাকা
২৪ জুলাই ২০২১
শব্দ সংখ্যাঃ ১৩৪৯

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা আগস্ট, ২০২১ সকাল ১১:৩২

হাবিব বলেছেন: সবসময় আপনার সুস্থতা কামনা করি

০১ লা আগস্ট, ২০২১ রাত ৮:২৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমার সুস্থতা কামনার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। দোয়া করি আপনিও সুস্থ থাকুন, সপরিবারে।
সুস্থতা কামনা ছাড়াও, পোস্ট সম্পর্কেও দুটো কথা কাম্য ছিল।

২| ০১ লা আগস্ট, ২০২১ সকাল ১১:৫০

ইন্দ্রনীলা বলেছেন: মৃত্যু অবশ্যসম্ভাবী একটি বিষয়।

কিন্তু কোনো কোনো মৃত্যু মেনে নেওয়া কঠিন।

০১ লা আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:৫৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: মৃত্যু অবশ্যসম্ভাবী জেনেও কেউ এটাকে কামনা করে না, সবাই চায় যতদিন পর্যন্ত বাঁচা যায়, বেঁচে থাকতে। যদিও মৃত্যুর কোন টাইম টেবিল নেই, নেই কোন সিরিয়াল, তবুও বার্ধক্যে পৌঁছানোর আগে কারো মৃত্যু হয়েছে শুনলে আমাদের মন বেশি খারাপ হয়।

লেখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ। পোস্টে প্রথম প্লাসটি আপনি দিয়েছেন, এ জন্যেও।

৩| ০১ লা আগস্ট, ২০২১ সকাল ১১:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: এক মাস দশ দিন অনেক লম্বা সময়। অনেকদিন ছিলেন।

বাস কি চলছে? এনা বাস?

০২ রা আগস্ট, ২০২১ রাত ১২:২৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: মোট ৩৭ দিন ছিলাম, এক মাস দশ দিন নয়।
আমি যেদিন এসেছিলাম, সেদিন রাতের পর থেকে আর কোন বাস চলে নাই। এখনো বোধকরি চলছে না, কারন 'লকডাউন' এখনো উঠে নাই।

৪| ০১ লা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:০৮

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আপনার সকল কাছের মৃতদের আত্বার মাগফেরাত কামনা করছি।

০২ রা আগস্ট, ২০২১ সকাল ৯:২৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনার দোয়া এবং শুভকামনার জন্য। মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত হ'লাম।

৫| ০১ লা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:৩৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সত্যিই তাই
এক নিরানন্দ সময়েই করছি বসবাস..
ইচ্ছের ডানা কাটা শব সব অভিলাষ
কবে হবে মুক্তি ? কে দেবে আশ্বাস?

০২ রা আগস্ট, ২০২১ সকাল ১০:১৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: "সত্যিই তাই
এক নিরানন্দ সময়েই করছি বসবাস..
ইচ্ছের ডানা কাটা শব সব অভিলাষ
কবে হবে মুক্তি ? কে দেবে আশ্বাস?" - বিদ্যমান সময়ের বাস্তব প্রতিফলন। চমৎকার লিখেছেন।

মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা!

৬| ০১ লা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:০১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: করোনাতে কত মানুষ মারা যাচ্ছে। আমরা কয়জনের খবর রাখি। আপনার পরিচিত অনেকের কথা লিখেছেন। আমার গ্রামে আমি জানি অন্তত ৮/ ১০ জন করনায় মারা গেছে। জানি না এরকম আরও অনেকে আছে। আল্লাহর রহমতে আমার কোন আত্মীয় এখনও মারা যায় নাই। আল্লাহর কাছে মাফ চাই এই ব্যাপারে।

আমার মনে হয় ব্লগে যদি সবাই তাদের পরিচিত মানুষের করনায় মৃত্যুর কথা শেয়ার করতো তাহলে জাতি জানতে পারতো আসলে করোনা কতটা ভয়াবহ। কারণ আমি মনে করি সামু একটা অনেক বড় প্লাটফর্ম। কাছের মানুষ না মারা যাওয়া পর্যন্ত আমাদের ভ্রূক্ষেপ হয় না।

০২ রা আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:৫৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: আল্লাহর রহমতে করোনার কারণে আপনার কোন আত্মীয় স্বজন মারা যায় নাই, এটা আসলেই একটা বিরাট সুসংবাদ এবং আল্লাহতা'লার একটা বিরাট মেহেরবানী।

করোনা কতটা ভয়াবহ তা জাতি তা তখনই সম্যক জানতে পারবে যদি ও যখন সরকার বিশ্বস্ততার সাথে তা সঠিক পরিসংখ্যানসহ জাতিকে জানাতে চায়।

৭| ০১ লা আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



মহামারীর মাঝে ঈদ পালনের কোন দরকার ছিলো?

০৩ রা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:১০

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনি বোধকরি আমার লেখাটি ঠিকভাবে পড়েন নি। পোস্টের কোথাও (কিংবা এর আগের স্মৃতিচারণগুলোর মধ্যেও কোথাও) বলা হয়নি যে আমি "ঈদ পালনের" জন্য গিয়েছিলাম।

আমি রংপুর গিয়েছিলাম আমার অসুস্থ মা জননীকে দেখতে, ঈদের পাঁচ সপ্তাহ আগে। তখন লকডাউনের কোন আভাস ছিল না। আমি যাবার সপ্তাহ দুয়েক পর লকডাউন জারি হয়। মাঝখানে ঈদের পশু বিক্রয়ের জন্য তা খুলে দিয়ে আবার ঈদের একদিন পর থেকে তা পুনর্বার জারি করা হয়। পুনর্বার জারির আগের রাতেই আমি কোনমতে ঢাকা ফিরে এসেছিলাম।

৮| ০১ লা আগস্ট, ২০২১ রাত ৯:১৫

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: স্যার আপনার এবারে রংপুরে থাকাটা মোটের উপর খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়ালো।একেরপর এক আপনজনদের চোখের সামনে চলে যাওয়া দেখা বা শোনা এবং তাকে মনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া নিঃসন্দেহে অত্যন্ত হৃদয়বিদারক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনার ভাগ্না আপনার বন্ধু কিম্বা সর্বশেষ সংযোজন ভাতৃপ্রতিম শফিক সাহেবের চলে যাওয়া মেনে নেওয়া খুবই কঠিন। ওনাদের মাগফিরাত কামনা করছি। আপনার আম্মার জন্য দোয়া করছি। উনি যেন সুস্থ থাকেন। দোয়া করছি আপনাদের সকলের জন্য চলমান ভয়াবহ সময়ে শরীর মনে যেন সুস্থ থাকেন। দোয়া করি গোটা বাংলাদেশ জন্য আর একটাও প্রাণ যেন এই ঘাতক রোগ না কেড়ে নেয়।উপর ওয়ালার কাছে প্রার্থনা এই অতিমারির হাত থেকে মানব জাতিকে রক্ষা করুন। আমীন।

০৩ রা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:৩৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: "আপনার এবারে রংপুরে থাকাটা মোটের উপর খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়ালো" - সব কষ্ট ভুলে যাই, যখন মনে পড়ে এ ক'টা দিন অসুস্থ মায়ের কতটা নিবিড় সান্নিধ্যে ছিলাম!

আপনার আন্তরিক দোয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা!

৯| ০২ রা আগস্ট, ২০২১ সকাল ১০:৩৭

হাবিব বলেছেন: খায়রুল আহসান ভাইয়া,





আপনার পোস্টে প্রথম মন্তব্যটা না পড়েই করেছিলাম। রাতে পড়লাম পুরোটাই। লেখার মান বিচারে ১০০ তে ১০০ দিতেই হয়। খুবই ভালো হয়েছে লেখা।

লেখার সাবজেক্ট আর আবেগ বিচারে ১০০ তে বেশি পাবার যোগ্য।

আপনার প্রতি শফিক-হালিমার কৃতজ্ঞতা মুগ্ধ করলো আমাকে। শফিকের প্রস্থানের পাশাপাশি আপনার অনেক প্রয়িজনের বিধায় অন্তরের পাশাপাশি আঁখিতেও জল আনলো।

লেখার ধরণ, সাবজেক্ট দেখে আপনাকে খুবই আন্তরিক মনে হয়েছে প্রথম থেকেই। মন্তব্য প্রতিমন্তব্যেও আপনার জুড়ি নেই, একেবারে মাটির মানুষের মতো আপনি।

পুনরায় আপনার সুস্থতা কামনা করছি। আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো।

০৩ রা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:৪৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখার মান বিচারে আপনার উদার মূল্যায়নে অত্যন্ত প্রীত হ'লাম, হাবিব স্যার!

আপনার বাকি কথাগুলোও খুবই আন্তরিক। স্পর্শ করে গেল...

১০| ০২ রা আগস্ট, ২০২১ সকাল ১১:০১

জুন বলেছেন: আপনার লেখাটি পড়েছিলাম কিন্ত মন্তব্য করতে আর ভালো লাগেনি। আর কত করুন মৃতুর কথা শুনতে হবে আর দেখতে হবে ইয়া রাব্বুল আলামিন আমাদের জানিয়ে দাও। কেয়ামত মনে হয় সত্যিই আসন্ন। গতকাল আমার এক মামাতো ভাই মারা গেছে। কি প্রানবন্ত, অমায়িক, ভদ্রতা আর আদব কেতায় ছিল সেরা একজন। আমার থেকে কত ছোট।। ভীষণ কষ্ট হয় এসব খবর শুনলে।
আপনার এই প্রিয়জনদের কথা এর আগেও লিখেছিলেন। এখন হালিমার খবর কি? সে কি বেচে আছে? দোয়া করি আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার হায়াত দরাজ করে দিক। ভালো থাকুন, সাবধানে থাকুন। আমাদের জন্যও দোয়া করবেন।

০৩ রা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:০৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: হালিমা বেঁচে আছে। তারও কভিড হয়েছিল, কিন্তু সে অল্পের উপর দিয়ে এ যাত্রায় রক্ষা পেয়েছে। স্বামীর পেনশন এবং অন্যান্য পাওনাদি আদায়ের লক্ষ্যে সে প্রতিদিন গলদঘর্ম হয়ে ছোটাছুটি করছে। তার প্রতারিত হবার সম্ভাবনা প্রবল, কারণ তার কোন লেখাপড়া নেই। কোনমতে নামটা হয়তো স্বাক্ষর করতে পারে। দুঃখের বিষয় হলো, তার ছেলেটাও প্রতিও সে প্রসন্ন নয়।

আন্তরিক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। মন্তব্যে এবুং প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।

১১| ০২ রা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:১৫

করুণাধারা বলেছেন: লেখাটা পড়ে মন বিষণ্ন হয়ে গেল। কী ভীষণ সময় পার করছি, আদৌ কোভিডকাল অতিক্রম করতে পারবো তো। :(

আপনার বেশ কয়েকজন ঘনিষ্ঠ মানুষেকে কোভিডে হারিয়েছেন। তাদের মাগফিরাত কামনা করছি।

আপনার ভাগ্নে একবছর আগে মারা গেছেন, তাই ভ্যাকসিন নেননি সম্ভবত। বলা হয় ভ্যাকসিন নেয়া থাকলেও কোভিড হতে পারে, কিন্তু অবস্থা মারাত্মক হয় না। এই কথার সত্যতা যাচাই করার জন্য আমি কোভিডে মৃত প্রতিজনের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করি, "উনি কি ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন?" আপনাকেও প্রশ্নটা করছি, শফিক সহ অন্যরা কি ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন? উত্তর জানা থাকলে দয়া করে জানাবেন।

আপনার ঈদ নিরানন্দ হলেও আল্লাহর কাছে অনেক বরকতময় বলে মনে হয়।

০৩ রা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:৩১

খায়রুল আহসান বলেছেন: "আপনার ভাগ্নে একবছর আগে মারা গেছেন, তাই ভ্যাকসিন নেননি সম্ভবত" - ও মারা গিয়েছিল গত বছরের জুন মাসে। তখনও দেশে কোন ভ্যাক্সিন আসেনি, সম্ভবতঃ।

"আপনাকেও প্রশ্নটা করছি, শফিক সহ অন্যরা কি ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন? উত্তর জানা থাকলে দয়া করে জানাবেন" - না, ওর পরিবারের কাউরো ভ্যাক্সিন নেওয়া ছিল না।

আপনার ঈদ নিরানন্দ হলেও আল্লাহর কাছে অনেক বরকতময় বলে মনে হয় - অনেক ধন্যবাদ, এ কথাটার জন্য। আমিও তাই মনে করি।


১২| ০২ রা আগস্ট, ২০২১ রাত ৯:১৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: খায়রুল আহসান,




কালান্তক করোনার ছোবল মনে হয় প্রায় প্রতিটি পরিবারেই পড়েছে কম বেশী। এই ঈদের সময়কালে তারা সবাই হয়তো নিরানন্দ।
আপনার নিকটজনদের এমন প্রয়ানে সমব্যথী। সে সব পরিবারকে আল্লাহ শোক সইবার শক্তি দিন।
সৃষ্টিকর্তা আমাদের সকলকে হেফাজত করুন।

আপনি ভালো থাকুন, সাবধানে থাকুন।

০৩ রা আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:০৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: "সৃষ্টিকর্তা আমাদের সকলকে হেফাজত করুন" - আমীন!

"কালান্তক করোনার ছোবল মনে হয় প্রায় প্রতিটি পরিবারেই পড়েছে কম বেশী। এই ঈদের সময়কালে তারা সবাই হয়তো নিরানন্দ" - যারা এই গত দেড় বছরে এক বা একাধিক নিকটাত্মীয় কিংবা বন্ধু স্বজন করোনার আকস্মিক ছোবলে হারিয়েছেন, তারা নিশ্চয়ই ঈদের দিন তাদের কথা স্মরণ করে দুঃখ বোধ করেন, তাদের স্মৃতিচারণে ব্যথিত হন।

মন্তব্য এবং দোয়া ও শুভকামনার জন্য ধন্যবাদ জানবেন।

১৩| ০৩ রা আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৪:৩৭

নীল-দর্পণ বলেছেন: প্রতিদিন এত এত মৃত্যুর সংবাদ তার উপর ইদানিং অন্তঃসত্বাদের মৃত্যুর খবর বেশি পাচ্ছি! আর কত দীর্ঘ যে হবে এই মিছিল… । আল্লাহ সুস্থ রাখুন, নিরাপদে রাখুন সবাইকে।

০৩ রা আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:৫৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: "প্রতিদিন এত এত মৃত্যুর সংবাদ তার উপর ইদানিং অন্তঃসত্বাদের মৃত্যুর খবর বেশি পাচ্ছি!" - জ্বী, এই তো সেদিনই একজন কমবয়স্কা, ৩৭ সপ্তাহের প্রেগন্যান্ট তরুণীর করোনাক্রান্ত হয়ে আকস্মিকভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার খবর শুনে কিছুক্ষণ স্তম্ভিত হয়ে ছিলাম। এটাই ছিল তাদের প্রথম সন্তান। এ সন্তানকে নিয়ে গত নয়টা মাস কতই না স্বপ্ন বুনেছিলেন এ তরুণ দম্পতি একসাথে দুটো প্রাণ ঝরে গেল!

মন্তব্যে এবুং প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম। ধন্যবাদ এবং শুভকামনা----

১৪| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ সকাল ১১:১৬

মোঃমোজাম হক বলেছেন: হালিমার প্রতি আপনার মানবিক দায়িত্ববোধ দেখে অদ্ভুত রকমের ভাল লাগলো।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫১

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, লেখাটি পড়ার জন্য এবং পড়ে এখানে একটি মন্তব্য রেখে যাবার জন্য।
শুভেচ্ছা রইলো....

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.