নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মনে গাঁথা শৈশবের কিছু স্থায়ী স্মৃতিকথা – প্রথম পর্ব

২৯ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১২:০৪

জন্মক্ষণঃ
চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ সিজিএস কলোনিতে কোন এক শীতের বিকেলে অগ্রহায়ণের শেষ দিনটিতে আমার জন্ম হয়েছিল সায়াহ্নের প্রাক্কালে । পৃথিবীর বুকে আমার আসার সেই সময়টা ছিল পাখিদের নীড়ে ফেরার সময়। ছোটবেলা থেকে আজ অবধি আমার এ সময়টাকে খুব ভালো লাগে। সুযোগ পেলেই এ সময়টাতে একটু থেমে নীড়ে ফেরা পাখিদের কলকাকলি শুনি। বাসার কাছেই বড় বড় কিছু গাছ আছে। সুযোগ পেলেই ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে পাখিদের ঘরে ফেরা দেখি। সম্প্রতি হাকালুকি হাওড়ের একটি জায়গায় অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে সহস্র পাখির সুশৃঙ্খল সারি বেঁধে উড়ে এসে যার যার নির্দিষ্ট বৃক্ষশাখায় বসে পড়ার দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম। তাদের কলকাকলিতে এলাকাটি কিছুক্ষণ মুখরিত ছিল। ঠিক মাগরিবের আযানের আগে আগে সব পাখি নিশ্চুপ হয়ে যায়। প্রার্থনার জন্য সময়টা মনে হয় খুবই তাৎপর্যময়, তাই এতদুদ্দেশ্যে মানুষ ও প্রকৃতি সময়টাকে যেন ভাগ করে নেয়!

খুব ছোট বয়সের কিছু কিছু স্মৃতিঃ
অবসর জীবনে বোধকরি মানুষের শৈশবের স্মৃতিকথা বেশি করে মনে পড়ে। নব্বই বছর বয়স্কা স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্ত আমার মা’কেও দেখেছি নিত্যদিনের কোন কথা উনি স্মরণ করতে পারতেন না, কিন্তু শৈশবের কথা উঠলে তিনি গড় গড় করে স্মৃতিকথা বলে যেতে পারতেন। আমারও খুব ছোট বয়সের কিছু কিছু স্মৃতিকথা মনে যেন স্থায়ী ভাবে গেঁথে আছে। যেমন আইউব খানের প্রথম মার্শাল ল’ জারির সময় সবার মনে একটা আতঙ্ক নেমে আসার কথা মনে আছে, সে আতঙ্ক থেকে পথে ঘাটে চারিদিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ধুম পড়ে গিয়েছিল। ১৯৫৮ কি ৫৯ সালে চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক স্কাউট জাম্বরী অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তখন আমি স্কাউট সম্বন্ধে কোন কিছু জানতাম না, কিন্তু বাসার অদূরে জাম্বরী মাঠ প্রস্তুতির তোড়জোড়ের কথা মনে আছে। সারাদিন ধরে রোলার, গ্রেডার আর ক্যাটারপিলার ঘর ঘর শব্দ করে মাটি সমান করা ও শক্ত করার কাজ করতো। ওসব যন্ত্রদানব থেকে থেকে ঘন ঘন উদগীরিত কালো ধোঁয়া আর পোড়া মবিল ও ডিজেল এর গন্ধ যেন আজও আমার নাকে লেগে আছে।

আমার ছোট বোনের জন্মঃ
আমাদের সাত ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ভাইটা ছাড়া আমাদের সবার জন্ম ঘরেই হয়েছিল। তখন সরকারি হাসপাতাল স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে স্বল্প প্রশিক্ষিত মিডওয়াইফরা (ধাত্রী) ঘরে এসে শিশুজন্মের এ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করে দিতেন, প্রতিবেশি অভিজ্ঞ রমণীরা সাথে থেকে সহায়তা করতেন। এক আষঢ়স্য রাতের শেষ প্রহরে প্রবল বর্ষণের মাঝে আমার ছোট বোনের জন্ম হয়েছিল। থেকে থেকে শোঁ শোঁ আওয়াজ করে দমকা হাওয়া বইছিল। ওর জন্মের পরপরই বৃষ্টির শব্দের মাঝেও ফজরের আযান শোনা গিয়েছিল। আমাদের প্রতিবেশি সিদ্দিক চাচী (আব্বার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু’র স্ত্রী) সেই প্রলয়ের রাতে আমার বোনের জন্মের সময় সারারাত মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে থেকে সহায়তা করেছিলেন। সেই চাচীর সাথে শেষ দেখা হয়েছিল ১৯৬৬-৬৭ সালের দিকে। তখন আমরা ঢাকার শহীদবাগে থাকতাম। চাচী আমার আম্মার চেয়ে বয়সে বড় ছিলেন, তাই আম্মাকে তিনি ছোট বোনের মত স্নেহ করতেন এবং ভালোবাসতেন। রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও, বহুদিন পর পর হলেও আম্মার সাথে দেখা করার জন্য আমরা যেখানেই থাকি, চাচা-চাচী সপরিবারে আমাদের বাসায় আসতেন। আমার জন্মের সময়ও চাচী আম্মার পাশে ছিলেন বলে আম্মার মুখে শুনেছি, তাই বুঝি আমাকেও তিনি বিশেষ স্নেহ করতেন। দেখা হলেই আমার মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করতেন। আজ এতদিন পরেও চাচীর মুখটা আমার মনে ভাসে। বকের মত সাদা (ফর্সা) রঙের সেই চাচীর ওষ্ঠ সবসময় পান-চুনের রসে লাল হয়ে থাকতো, মুখ দিয়ে জর্দার খুশবু ছড়াতো। ১৯৯৭-৯৮ সালের দিকে অনেক কষ্টে খিলগাঁওয়ে অবস্থিত সেই চাচা-চাচীর বাসার সন্ধান পেয়ে, চাচীর সাথে দেখা করানোর উদ্দেশ্যে আম্মাকে নিয়ে সেখানে গিয়েছিলাম। গিয়ে তাদের মেজ ছেলের (তপন ভাই) কাছে শুনি, চাচী ও চাচা বহু বছর আগেই প্রয়াত হয়েছেন। এ কথা শুনে আম্মা খুব মন খারাপ করেছিলেন।

১৯৬০ সালের সাইক্লোনঃ
চট্টগ্রামে ১৯৬০ সালের অক্টোবরে এক প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝর বয়ে যায়। ঝড়ের সময় দেখেছিলাম, মিজাইলের মত উড়ন্ত টিনগুলো শোঁ শোঁ শব্দ করে উড়ে যাচ্ছে এবং গাছের ডালপালায় বাধাপ্রাপ্ত হয়ে মাটিতে আছড়ে পড়ছে। ঝড়ের প্রকোপে একটা জাহাজও ফৌজদারহাটের ডাঙায় এসে আছড়ে পড়ে। সে সময় একটা উড়োজাহাজেরও যেন কি হয়েছিল তা স্পষ্ট মনে নেই, কিন্তু বেশ কয়েকদিন সে উড়োজাহাজটি অচল অবস্থায় আটকে ছিল। আমার এটুকু মনে আছে যে উৎসুক দর্শনার্থীদেরকে উড়োজাহাজের অভ্যন্তরে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছিল এবং এক বিকেলে আমরা কয়েকটি প্রতিবেশি পরিবার পতেঙ্গায় গিয়ে উড়োজাহাজের ভেতরটা দেখে এসেছিলাম। সেটাই ছিল আমার প্রথম কোন উড়জাহাজের অভ্যন্তরে প্রবেশের ঘটনা। আর কিছু নয়, ছোট ছোট জানালাগুলো দেখে খুব অবাক হয়েছিলাম।

দই ওয়ালাঃ
চট্টগ্রামে থাকা অবস্থায় আমি কোন স্কুলে ভর্তি হই নি, তবে বাসায় পড়াশুনার হাতেখড়ি হয়েছিল। সকাল দশটা নাগাদ বড় ভাইবোনেরা যে যার মত স্কুলে এবং আব্বা অফিসে চলে গেলে বাসায় শুধু আম্মা আর আমি থাকতাম। আম্মা সে সময়টাতে একটু শুয়ে বসে বিশ্রাম নিতেন। কখনো হয়তো চোখদুটোও তার একটু বুঁজে আসতো। প্রতিদিন সময় করে এগারটা বারটার দিকে এক শীর্ণকায় দই ওয়ালা বাসার কাছে এসে দই বিক্রীর জন্য হাঁক দিত। শরীরের তুলনায় তার হাঁকডাক অধিকতর ওজনদার ছিল। এতে আম্মার নিদ্রাভঙ্গ হতো। অনেক সময় তিনি দই কিনতেন এবং আমরা দুজনে বসে তা খেতাম।

উড়ন্ত চিলের পতনঃ
সে সময়ে আমাদের বাসায় বেশ একটা খোলা প্রাঙ্গণ ছিল। সেখানে আব্বা মুরগি পালার জন্য একটা মাঝারি সাইজের ঘর বানিয়েছিলেন। সেই ঘরে অনেক মোরগ-মুরগি থাকতো এবং মুরগিগুলো পালা করে ডিম পাড়তো বলে আমাদের ঘরে সব সময় অনেক ডিম মজুদ থাকতো। একটার পর একটা মুরগি বাচ্চা ফোটাতো। একদিন বিকেলে একটা চিল হঠাৎ কোথা থেকে যেন উড়ে এসে ছোঁ মেরে মুরগির একটি বাচ্চা নিয়ে উড়ে যায়। সেই বাচ্চাটির জন্য আমার ভীষণ মায়া হচ্ছিল। বাচ্চাটি বেশ একটু বড়সড়ই ছিল। সাধারণতঃ এত বড় বাচ্চাকে কাক চিল নিয়ে যেতে পারে না। আমি তখন বিকেলে বাগানে পানি দিচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখতে পেলাম, ঘাতক চিলটি বাগানের উপর ঘুরপাক খাচ্ছে। একটু পরেই সেটা ধপাস করে পড়ে গেল। তার জন্য খাদ্যবস্তুটি একটু বেশিই বড় হয়ে গিয়েছিল। ফলে গলায় আটকে চিলটি শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা পড়ে। সেই প্রথম একটি চিলকে হাতে ধরে দেখেছিলাম। তার দেহ তখনও গরম ছিল।

টাইফয়েডঃ
চট্টগ্রামে থাকাকালীন আমি একবার মারাত্মক টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত হয়েছিলাম। তখনকার দিনে আমাদের কারও জ্বর হলে আব্বা আম্মার প্রথম কাজ হতো ভাত বন্ধ করে দেয়া। ভাতের বদলে আটার রুটি কিংবা পাউরুটি খেতে দিত। আর সাথে চলতো ‘রবিন্সন্স বার্লী’। বার্লী মোটেই খেতে ইচ্ছে হতো না, তাই আম্মা মাঝে মাঝে নিজেদের গাছের কাগজি লেবুর রস মিশ্রিত করে দিতেন। তখন খেতে ভালো লাগতো। আরেকটা অখাদ্য খেতে হতো, সেটা হচ্ছে দুধে মেশানো সাগুদানা। এই সবগুলো নিয়মই তখন ঘরে ঘরে প্রচলিত ছিল। সেবারে টাইফয়েড আমাকে অনেক ভুগিয়েছিল। একটানা তিন সপ্তাহ জ্বর ছাড়েনি, ফলে আমাকে ভাতও খেতে দেয় নি। পরে ডাক্তারের পরামর্শে আম্মা নিজ হাতে বানানো চিকেন স্যুপ খেতে দিতেন। ঘরে পোষা বাচ্চা মুরগি জবাই করে সে স্যুপ বানানো হতো। প্রথম প্রথম সেটা খেতে খুব ভালো লাগতো, পরে তাতেও অরুচি এসেছিল।

নাকের ভেতর ন্যাপথিলিন বলঃ
একদিন দুপুরে আম্মা শাড়ি গোছাচ্ছিলেন। শাড়ির ভাঁজ থেকে একটা ন্যাপথিলিন বল মাটিতে পড়ে গেলে আমি সেটা আম্মার অলক্ষ্যে কুড়িয়ে নেই। ন্যাপথিলিনের গন্ধ আমার খুব ভালো লাগতো। আমি একটু দূরে গিয়ে সেটা নাকের কাছে নিয়ে শুঁকতে থাকি। এক অসতর্ক মুহূর্তে সেটা নাসারন্ধ্রে প্রবেশ করে। আমি সেটাকে যতই বের করার চেষ্টা করতে থাকি, ততই সেটা ভেতরে প্রবেশ করতে থাকে। একসময় অস্বস্তি লাগা শুরু হলো। উপায়ন্তর না দেখে আম্মার কাছে দৌড়ে গেলাম। প্রথমে বকা ঝকা, পরে কান্নাকাটি শুরু হলো। এক অপরাধবোধ আমাকে গ্রাস করতে শুরু করলো। অবশেষে অনতিবিলম্বে ডাক্তারের কাছে নেয়ার পর শেষরক্ষা হয়েছিল।

ওলকচুর আচারঃ
আম্মা সাধারণতঃ মরশুমের সময় আম, জলপাই আর বড়ই এর আচার বানাতেন। একবার তিনি তার এক প্রতিবেশির (চট্টগ্রামের স্থানীয়) পরামর্শে ওলকচুর আচার বানালেন, যা এর আগে কখনো দেখিওনি, খাইও নি। সেই আচার অত্যন্ত মুখরোচক হয়েছিল। সেই আচারের ঝাঁঝটা আমি এই গল্প লেখার সময়ও নাকে অনুভব করছি। ঢাকা থেকে আমাদের কিছু আত্মীয় (বেবী ফুফু, হেনা ফুফু) বেড়াতে এসে সেই আচার খেয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন এবং সাথে কিছুটা নিয়েও গিয়েছিলেন।

জন্মদিনের কেকঃ
আমরা মধ্যবিত্ত পরিবার ছিলাম, এখনকার মত উৎসব করে জন্মদিন কখনোই পালন করতাম না। তবে আম্মা ঠিকই মনে রাখতেন, কোনদিন কার জন্মদিন। যেদিন যার জন্মদিন, সেদিন মূলতঃ তার জন্য আম্মা একটা কেক বানাতে চেষ্টা করতেন, যদিও সেটা সবসময় সম্ভব হতো না। তবে সেই কেকটা এখনকার কেকের মত ছিল না। ডিম (ঘরের মুরগি’র) ফেটে এবং ময়দা মিশিয়ে একটা টিফিন ক্যারিয়ারের বাটিতে বসিয়ে কয়লা বা কাঠের আগুনের তাপে আম্মা সেটা বানাতেন। যখন বানাতেন, তখন সাড়া ঘরে সুঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়তো আর আমি কিছুক্ষণ পর পর এসে দেখে যেতাম। আমাদের মুখে সেটাই অমৃতের মত লাগতো। যার জন্মদিনে এ সামান্য আয়োজনটুকু হতো, সেও খুব খুশি হতো, অন্যরাও।


মোয়াজ্জেম ভাই এর স্প্রিন্টঃ
আমাদের বড় ভাই এর একজন বন্ধু ছিলেন, তার নাম ছিল মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঞা। ওনারা কিশোরগঞ্জের লোক ছিলেন। ওনাদের স্কুলে একবার বাৎসরিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান দেখতে গিয়েছিলাম। সেখানে মোয়াজ্জেম ভাই ১০০ মিটার স্প্রিন্টে অংশ নিয়েছিলেন। ঝড়ের বেগে দৌড়ে কোঁকড়া চুলের মোয়াজ্জেম ভাই প্রথম পুরস্কারটি ছিনিয়ে নিয়েছিলেন। তার সেই দৌড়ের দৃশ্যটি এখনও চোখে ভাসে। পরবর্তীতে পড়াশুনা শেষ করার পর মোয়াজ্জেম ভাই ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানায় চাকুরি লাভ করে সেখানে চলে যান। বড়ভাইয়ের সাথে তিনি নিয়মিত পত্র যোগাযোগ রক্ষা করতেন। তিনি চিঠিগুলো ইংরেজীতে লিখতেন। লেখার স্টাইল এবং ভাষা বেশ উন্নত ছিল। মাঝে মাঝে বড়ভাই শুধু আমাকে ইংরেজী শেখানোর উদ্দেশ্যে তার চিঠিগুলো পড়তে দিতেন। আমি তখন উচ্চশ্রেণীর স্কুল ছাত্র। তার চিঠিগুলো পড়ে তার প্রতি আমার বেশ সমীহ জাগতো। ২০০০ সালে আমি নিজে যখন চাকুরিরত অবস্থায় সিলেটে বদলি হ’লাম, তখন বড়ভাইয়ের থেকে সামান্য কিছু ক্লু নিয়ে মোয়াজ্জেম ভাইকে খুঁজে বের করি। তিনি আমার পরিচয় পেয়ে অভিভূত হন এবং আমাকে অনুরোধ করেন, বড়ভাই এবং আম্মাকে যেন ঢাকা থেকে ডেকে নিয়ে তার বাসায় একদিন দাওয়াত খেতে যাই। আমি তার সে অনুরোধ রক্ষা করেছিলাম এবং এতদিন পর এমন একটি চমৎকার মিলনমেলার আয়োজন করার জন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিলাম। পরে একদিন ওনারাও নিমন্ত্রণে আমার বাসায় এসেছিলেন। আজ বড়ভাই এবং আম্মা, উভয়েই প্রয়াত। আমি সিলেট থেকে চলে আসার এবং একই সাথে মোয়াজ্জেম ভাই অবসরে যাওয়ার পর তার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। জানিনা, আজ তিনি কোথায় আছেন, কেমন আছেন।

চলবে.....


ঢাকা
২৮ মার্চ ২০২৩
শব্দ সংখ্যাঃ ১৪৭৬

মন্তব্য ৪২ টি রেটিং +১৪/-০

মন্তব্য (৪২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ২:২১

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


পড়ে ভালো লাগলো আপনার জীবনকাহিনী। আপনি মনে হয় পাখি প্রেমী?

২৯ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ২:৩৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ।
পাখি ভালো লাগে নিঃসন্দেহে।

২| ২৯ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ২:৫৫

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: তন্ময় হয়ে পড়লাম, ছোট ছোট কিন্তু হৃদয়স্পর্শী স্মৃতিকথন। যে কোন স্মৃতিচারন মূলক লেখাই আমার খুব পছন্দের; তার সাথে যদি আপনার মত প্রাণচাঞ্চল্যময় লেখণী হয় তাহলে তো কথাই নেই।

পাখিদের ফেরাটা ২০২০ সালে করোনাকালীন সময়ে আমিও খেয়াল করেছি, প্রতিদিন সন্ধ্যার আগে আগে ঝাঁক বেঁধে উত্তরের নীলক্ষেত ঢাকা ভার্সিটি এলাকা হতে বিশাল এক শালিকের দল আমার বাসার ছাদের উপর দিয়ে বুড়িগঙ্গা হয়ে কেরানীগঞ্জ এর দিকে উড়ে যেতে।

আপনার সেই প্রতিবেশী চাচীর মত আমার জীবনেও এক প্রতিবেশী চাচী পেয়েছিলাম শৈশবে, মাঝে মাঝে মনে পড়ে উনার কথা। তবে আপনার আম্মাকে নিয়ে উনাদের খোঁজ করে দেখা কর‍্তে গিয়ে মৃত্যু সংবাদ শোনাটা সত্যি খুব বেদনাদায়ক ছিলো।

আচার, কেক আর দইওয়ালার অংশ অনেক নস্টালজিক করে দিলো।

সিরিজটি ভালো হবে খুব, সময় করে এসে পড়ে যাবো।

ভালো থাকুন সবসময়, প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ।

২৯ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ১১:২০

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার মনযোগ, প্লাস এবং চমৎকার, মনছোঁয়া মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
পাখিদের নীড়ে ফেরা সংক্রান্ত আপনার অভিজ্ঞতাটা শেয়ার করায় প্রীত হ'লাম।
আচার, কেক আর দইওয়ালার অংশটুকু ভেবেছিলাম শুধু আমার জন্যেই ইউনিক।
শেষে উল্লেখিত আপনার প্রশংসাটুকু আমার দায়িত্ব অনেক বাড়িয়ে দিল। জানিনা, পরের পর্বগুলো আপনার এবং অন্যান্যদের কাছে কতটুকু ভালো লাগবে। তবে নিঃসন্দেহে এ মন্তব্যটা প্রেরণা হয়ে থাকবে।

৩| ২৯ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৩:০৪

রানার ব্লগ বলেছেন: শৈশব সবসময় মধুর !!

৩০ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ১১:২৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: ঠিক।

৪| ২৯ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৩:০৮

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
আপনি দারুণ স্মৃতি রচনা করেন। মন দিয়ে পড়ি।

৩০ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। মন্তব্যে প্রীত হ'লাম।
রমজানের শুভেচ্ছা জানবেন।

৫| ২৯ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৪:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: দারুন একটা ধারাবাহিক শুরু করেছেন।
আত্মজীবনী পড়তে আমার খুব ভালো লাগে।

৩০ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ১১:০৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ। সাথে থাকুন।

৬| ২৯ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৫:২১

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
মেলা পুরানো কথা!!
ওলকচুর আচার এই জিনিসের কথা এই প্রথম শুনলাম।

৩১ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ১২:০১

খায়রুল আহসান বলেছেন: জ্বী, পুরনো ত বটেই। ছয় দশকের পুরনো।

৭| ২৯ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ৮:৫৯

জগতারন বলেছেন:
পড়লাম,
আমার খুব ভালো লাগলো।
জ্বনাব খায়রুল আহসান, আপনি ভালো থাকুন কামনা করি।
আপনার এ পর্বের সাথে আছি।
অপেক্ষায় র'লাম পরের পর্বের জন্য।

৩১ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:৫০

খায়রুল আহসান বলেছেন: পরের পর্বের জন্য আপনার আগ্রহ আমাকে অনুপ্রাণিত করলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, পোস্ট পড়ে আপনার ভালো লাগার কথাটি এখানে জানিয়ে যাবার জন্যে।
মন্তব্য এবং শুভকামনায় প্রীত ও প্রাণিত। শুভেচ্ছা জানবেন।

৮| ৩০ শে মার্চ, ২০২৩ ভোর ৫:২০

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



জন্মক্ষন, ছোট বয়সের স্মৃতি কথা , ছোটবোনের জন্ম কথা ,১৯৬০ সনের প্রলয়ংকরী সাইক্লোন , দই ওয়ালার কথা ,
টাইফয়েড ও নাকের ভিতর ন্যপথলের বলের বিরম্বনার কথামালা , ওলকচুর আচার , মায়র হাতে তৈরী জন্মদিনের
কেক কাহিনী ও বড়ভাই এর বন্ধু মোজাফ্ফর সাহেবকে নিয়ে স্মৃতি কথা সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন , বেশ সুখপাঠ্য
হয়েছে ।

পোষ্টে থাকা উড়ন্ত চিলের পতন কাহিনী পাঠে আমার বাল্যকালের একটি স্মৃতি কথা মনে পড়ে যায়।সময়টা ষাটের
দশক । সে সময়কার ঢাকার শেষ পুর্ব প্রান্ত বাসাবো এলাকায় আমার বড় কাকা থাকতেন । সেখানে যেতে হলে
কমলাপুরের পীড় জঙ্গীর মাজার ( সে সময় ঢাকার ফুলবাড়ীয়া রেল স্টেশন হতে বাস , রিক্সা বা ঘোড়ার গাড়ি
ঢাকার পুর্ব প্রান্তের সীমানা পীড় জঙ্গী মাঝার পর্যন্ত যেতো) হতে বর্তমানের পুরা শাহজাহানপুর এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত
একটি বড় কাঠাল বাগানের ভিতর দিয়ে সরু পায়ে চলার পথ মারিয়ে বাসাবো যেতে হতো । বাসাবো বলতে গেলে
তখন ছিল অনেকটাই পাড়া গায়ের মত । বর্তমান বাসাবো থানার পাশে ছিল কাকার বাসা। সেথান হতে মাত্র মিনিট
খানেক পথ পেরোলেই শুরু হত মাদারটেক/মেরাদিয়া বিল । বর্থাকালে পানি করত থৈ থৈ সাথে ঘন কচুরী পানা ।

একদিন পড়ন্ত বিকালে সেই বিলের/ঝিলের পাড়ে দাড়িয়ে ছিলাম । হঠাত বেশ দুরে মাদারটেক বিলের বুকে কচুরী
পানার উপরে বেশ বড় একটি পাখীর দাপাদাপী ও পাখার ঝাপটানি দেখতে পেলাম । কাছেই থাকা সমবয়সি ছেলেরা
ও অন্য মানুষজন বলতে ছিল এটা নাকি একটি বড় সারস পাখী, ঘন কচুরী পানার মধ্যে আটকে গেছে বা শিকাড়ির
গোপন ফাদে পরেছে । অনেকক্ষন ধরে পাখীটি দাপাদাপি করতেছিল । মনে বড় কৌতুহল হল গিয়ে দেখি এত বড়
পাখীটা আসলে কি আর তার বিপদটাই বা কি।বিলের পাড় ধরে কিছুটা হেটে কিছুটা সাতরিয়ে পাখীটার কাছে গিয়ে
দেখি সেটা প্রায় মরনাপন্ন । তবে চিনতে পারলাম না এটা আসলেই সারস পাখী না অন্য কোন পাখী ।

যাহোক, ভাবলাম এসেই যখন পরেছি তখন একে ধরে নিয়ে গিয়ে সেবা যন্ত করে আবার ছেড়ে দিব বিলের মধ্যে।
অনেক কষ্টে পাখী টিকে ধরে বিলের পাড়ে নিয়ে আসলাম । পাখীটিকে দেখে সেখানে থাকা বয়স্করা বললেন এটা
সারস পাখী নয় এটা একটি গয়ার বা সাপগলা পাখী ।

এ পাখী নাকি ক্ষিপ্র গতিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে শিকার করতে পারে । এদের প্রিয় খাবার মাছ, সাপ ও ব্যাঙ। পানির
মধ্যে সাঁতার কাটার সময় এদের লম্বা গলা ও মাথা এমন ভাবে রাখে, যা দেখতে আনেক সাপের মতো লাগে।
তাই এদেরকে সাপ পাখি বা সাপগলা পাখি নামে ডাকা হয় । পাখীটি অনেকটা ভয়ঙ্কর দর্শন হলেও এটা নাকি
তেড়ে এসে আক্রমণ করে না। মানব বসতি আছে এমন এলাকার কাছাকাছি বসবাস করে।
গুগল খুঁজে পাখীটির একটি ছবি এখানে সংযোজন করে গেলাম ।

যাহোক, ধৃত পাখীটির পা, গা ও পাখা বিলের লতাপাতা ও শেওলায় জড়িয়ে যাওয়ায় পাখীটি উড়তে না পেড়ে
ছটফট করেছিল । তার গা হতে লতাপাতার বেড়াজাল মুক্ত করে তাকে আবার বিলের মধ্যে ছেড়ে দিতেই পাখা
মেলে উড়াল দিয়েছিল।পাখিটিকে বিপদমুক্ত করতে পেরে যে আনন্দ সুখ পেয়েছিলাম তা আজো ভুলতে পারিনি।
আপনার উড়ন্ত চিলের কাহিনী পাঠে সেটি আবার নতুন করে মনে পড়ল ।

আপনার আরো স্মৃতি কথা শুনার অপেক্ষায় থাকলাম ।

শুভেচ্ছা রইল

৩১ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ১১:৪৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: "মাদারটেক/মেরাদিয়া বিল । বর্ষা কালে পানি করত থৈ থৈ সাথে ঘন কচুরী পানা" -জ্বী, "মাদারটেক/মেরাদিয়া বিল" কমলাপুরের সন্নিকটে ছিল বলে বলে ও দুটো এলাকার নাম শুনেছি, তবে যাই নি কখনো। বেদে বেদেনীর নৌকোগুলো ভিড়তো সেখানে। সুন্দরী, গজারি ইত্যাদি প্রকারের কাঠ নিয়ে বড় বড় নৌকোও এসে ভিড়তো। তখনও রান্না বান্নার জন্য বাড়ি বাড়ি গ্যাস আসেনি, তাই সবাই এসব খড়ি/লাকরি/কাঠ দিয়ে উনুন জ্বালাতো।
"পুরা শাহজাহানপুর এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত একটি বড় কাঠাল বাগানের ভিতর দিয়ে সরু পায়ে চলার পথ মারিয়ে বাসাবো যেতে হতো" এ পথে আমিও হেঁটেছি। এ এলাকার নামটি ছিল খুব সম্ভবতঃ 'বাগিচা'
'গয়ার বা সাপগলা পাখী' টাকে আপনার এত কষ্ট করে এবং উৎসাহ নিয়ে মুক্ত করার ঘটনাটি বেশ ইন্টারেস্টিং। এই পাখিটাকে আমি গত বছর এরকম সময়ে মেলবোর্ন সফরকালে নিজ চোখে দেখেছিলাম। আমার দেখার সাথে আপনার দেয়া এ বিবরণটা হুবহু মিলে যায়ঃ "পানির মধ্যে সাঁতার কাটার সময় এদের লম্বা গলা ও মাথা এমন ভাবে রাখে, যা দেখতে আনেক সাপের মতো লাগে। তাই এদেরকে সাপ পাখি বা সাপগলা পাখি নামে ডাকা হয়"। প্রকৃতপক্ষে, আমি হঠাৎ একদিন মেলবোর্ন এর লীন্ডহার্সট নামক এলাকায় Mariott Waters নামের একটি জলাশয়ে ভাসমান এ পাখিটাকে দেখে প্রথমে একটি সাপই মনে করেছিলাম। আমি একটি ঝুলন্ত সাঁকোর উপর দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলাম, সাপটা কাছে এলে ওটার একটা ছবি তোলার জন্য। কিন্তু হঠাৎ দেখি ভাসমান সাপটা দিল এক ডুব। কিছুক্ষণ পরে যখন সেটা ভেসে উঠলো, তখন তার ঠোঁটে গাথা ছিল চকচকে একটি মাছ। দুর্ভাগ্যক্রমে সেদিন অনেক চেষ্টা করেও মাছমুখে পাখিটার কোন ছবি তুলতে পারিনি, কারণ খানিক পড়ে মাছ মুখে পাখিটা উড়াল দেয়।
আপনার মন্তব্যটা পড়ে কিছু স্মৃতি আবার মানসপটে ভেসে উঠলো। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাসঞ্জাত এমন মজার একটি মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। প্লাসে প্রাণিত।

৯| ৩০ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:৪৮

নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: আপনার শৈশব বেশ দারুণ ছিল বলা যায় , আমার অতটাও ছিল না ! আর সেই সময়ের আগ্রাবাদ কেমন ছিল তা নিয়ে কী একবার লিখবেন বিস্তারিত ! অনুরোধ রইল !

০১ লা এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ১০:২৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: সেই সময়ে আমার বয়স ছিল পাঁচ/ছয় এর মত। স্মৃতি থেকে যেটুকু লিখেছি, এর অতিরিক্ত তো এ মুহূর্তে আর কিছু মনে পড়ছে না। যদি পরে মনে পড়ে, লিখবো। এ ছাড়া ঐটুকু বয়সে মা বাবা কোথাও নিয়ে না গেলে আমার নিজ থেকে যাবার কোন উপায় ছিল না। তাই সেই সময়ের আগ্রাবাদ কেমন ছিল তা জানানো সম্ভব হচ্ছে না বলে দুঃখিত। শুধু এটুকু মনে আছে, বাসার অদূরে একটি খাল ছিল। সেখানে জোয়ার-ভাটার সময় পানির লেভেল ওঠানামা করতো।

১০| ৩০ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ১১:৪৯

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
আলাদা আলাদা অনেকগুলো স্মৃতি তুলে ধরেছেন। ভাললাগলো। আহা! জীবন বুঝি এমনই একদিন যারা পাশাপাশি ছিল আজ তারা কে কোথায় কিছুই জানা যায়না। +++

০১ লা এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ২:৫৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: "আহা! জীবন বুঝি এমনই একদিন যারা পাশাপাশি ছিল আজ তারা কে কোথায় কিছুই জানা যায়না" - জ্বী, এরই নাম জীবন! :(
মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

১১| ৩০ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ২:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম। কে কি মন্তব্য করেছেন সেটা জানতে।

০১ লা এপ্রিল, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫১

খায়রুল আহসান বলেছেন: আরেকবার আসার জন্য ধন্যবাদ।

১২| ৩০ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৪:২৬

জটিল ভাই বলেছেন:
অসাধারণ স্মৃতিচারণ। এই হচ্ছে শৈশবের মায়া আর পিছু ফেরার টান।
সুস্থ্য থাকুন দোয়া করি।

০১ লা এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১০:৪২

খায়রুল আহসান বলেছেন: দোয়া এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ। স্মৃতিচারণের প্রশংসায় প্রাণিত হলাম।

১৩| ৩০ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ১০:৩৭

বিষাদ সময় বলেছেন: অবসর জীবনে বোধকরি মানুষের শৈশবের স্মৃতিকথা বেশি করে মনে পড়ে। নব্বই বছর বয়স্কা স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্ত আমার মা’কেও দেখেছি নিত্যদিনের কোন কথা উনি স্মরণ করতে পারতেন না, কিন্তু শৈশবের কথা উঠলে তিনি গড় গড় করে স্মৃতিকথা বলে যেতে পারতেন।

নতুন করে বলার কিছু নাই, আপনার লেখা সব সময়ই প্রশংসনীয়। উপরোক্ত লেখাটুকু পড়ে আমার মায়ের কথা মনে পড়লো। কিছুদিন আগে তিনি ৮৬ বছর বয়সে পরম করুণাময়ের কাছে চলে গেলেন।
ভালো থাকবেন।

০২ রা এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ১০:২৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: গতবছর প্রায় এই সময়ে (২৫ মে) আমার মা ৯২ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে অনন্তলোকের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। আপনার মন্তব্যটা পড়ে সে কথাটাই প্রথমে মনে ভেসে উঠলো। উভয় মায়ের জন্য প্রার্থনা, দয়াময় আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাত নসীব করুন!
পোস্ট থেকে উদ্ধৃতির জন্য ধন্যবাদ। আপনার মন্তব্যটা মন ছুঁয়ে গেছে।

১৪| ৩১ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১২:০১

করুণাধারা বলেছেন: স্মৃতি সততই সুখের হয়, ভালো লাগলো আপনার স্মৃতিচারণ।

কেক বানানোর ঘটনা পড়ে মনে হলো, আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারে এভাবেই মায়েরা কেক বানাতেন। সে সময় বেকিং পাউডার এত সহজলভ্য ছিল না, তাই বদলে ব্যবহার করা হতো খাবার সোডা বা বেকিং সোডা। আর টিফিন ক্যারিয়ারের বাটি বসানো হতো বড় কড়াইয়ে রাখা বালুর মধ্যে, ঢাকনির উপরে অবশ্য কয়লা রাখা হতো।

আপনার লেখা পড়তে পড়তে সেই কেকের স্বাদ গন্ধ মনে পড়লো...

০২ রা এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১২:১৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: "সে সময় বেকিং পাউডার এত সহজলভ্য ছিল না, তাই বদলে ব্যবহার করা হতো খাবার সোডা বা বেকিং সোডা" - জ্বী, আম্মা মনে হয় সেটাই ব্যবহার করতেন।

"আর টিফিন ক্যারিয়ারের বাটি বসানো হতো বড় কড়াইয়ে রাখা বালুর মধ্যে, ঢাকনির উপরে অবশ্য কয়লা রাখা হতো" - আম্মাও ঠিক এটাই করতেন।

মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ। স্মৃতিচারণ ভালো লেগেছে জেনে প্রীত হ'লাম।

১৫| ০১ লা এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১২:০২

আহমেদ জী এস বলেছেন: খায়রুল আহসান,




যে জাতকের জন্ম পাখিদের নীড়ে ফেরার সময়, সে তো ঘরের টানেই প্রতিনিয়ত ফিরে আসবে ঘরে! তাই আপনার সব লেখাতেই "জীবনঘর" এর টানটা বেশ বোঝা যায়। এই স্মৃতি কথাও পুরোনো ঘরে ফেরারই কথাকলি........

০২ রা এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:৫৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: খুব সুন্দর একটা কাব্যিক মন্তব্য। মন্তব্যে অভিভূত, প্লাসে প্রাণিত।
অশেষ ধন্যবাদ, আহমেদ জী এস

১৬| ০১ লা এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১২:২৩

শায়মা বলেছেন: ভাইয়া তুমিও তো দেখছি স্মৃতির চর্চা করো।

অমন করে কেক বানাতে আমিও দেখেছি।

তুমি দেখছি ছোটবেলায় এক রকমের অমল ছিলে। দইওয়ালার কথা তাই এখনও মনে আছে তোমার। :)

০২ রা এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ২:৩৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: স্মৃতির চর্চা তো আমি সব সময়ই করি। তাইতো আমার অনেক লেখায় স্মৃতিকথা ঘুরে ফিরেই আসে, এসেছে।
রবি ঠাকুরের 'ডাকঘর' এর সেই অমল? ঠিক, ঠিক। বড় হয়ে যখন গল্পটা পড়েছিলাম, তখন আমারও সেই দইওয়ালা'র কথা পড়ে আমার দেখা দইওয়ালার কথা মনে পড়েছিল।

সুন্দর মন্তব্য, অশেষ ধন্যবাদ। প্লাসে প্রাণিত।

১৭| ০১ লা এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ৮:২৪

সোহানী বলেছেন: আপনার স্মৃতিকথা পড়তে পড়তে নিজের ঘটনা একটার পর একটা চোখের সামনে ভাসতে শুরু করেছে। অদ্ভুততো....

আমরাও সে শাস্তি ভোগ করতাম অসুখ হলে। বার্লি সাগুদানা........... উফস্ সে বিস্বাদ খাওয়া। আর পাউরুটি দুধে ভিজিয়ে খাওয়াতো বললেন না।

ওলকচুর আচার কখনই শুনিনি...... কিভাবে???

আম্মু বেক করতো না, তবে কেক কেনা হতো সাথে পায়েস, কলা সহ বেশ কিছু আইটেম দিয়ে ছোটখাট জন্মদিন পার্টি হতো......

নাহ্, আমি মনে হয় দু'একটা স্মৃতি লিখেছিলাম... আবার শুরু করতে হবে।

চলুক লিখা.........

০২ রা এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১০:৪২

খায়রুল আহসান বলেছেন: জ্বী, দুধে ভিজিয়ে পাউরুটি খাওয়ার কথাটা বাদ পড়ে গিয়েছিল। ওটাও খেতে হতো সামান্য জ্বর উঠলেই। ওলকচুর আচারটা আমিও জীবনে আর কখনো খাইনি। আম্মা বলতেন, চট্টগ্রামে এক বিশেষ ধরণের ওলকচু পাওয়া যেত। সেটাই আচারের জন্য শ্রেষ্ঠ ছিল।

নাহ্, আমি মনে হয় দু'একটা স্মৃতি লিখেছিলাম... আবার শুরু করতে হবে - জ্বী জ্বী। আবার শুরু করেন স্মৃতিকথা লিখা।

মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

১৮| ০১ লা এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৪:৩৩

অন্তরন্তর বলেছেন: শৈশবের স্মৃতিকথা সিরিজ চলতে থাকুক। খুব সাবলীল আর মনোমুগ্ধকর বর্ণনা। ড আলী সাহেবের বর্ণনার সেই মেরাদিয়া বিলে ( আমরা ছোটবেলায় ঝিল বলতাম) আব্বার সঙ্গে (রামপুরা ব্রিজের নিচে অনেক নৌকা বাঁধা থাকত) নৌকা নিয়ে জেলেদের থেকে মাছ কিনতে যেতাম। আপনার পোস্টের জন্য অনেক ছোটবেলার স্মৃতি মনে পড়ছে। নস্টালজিয়া পোস্ট অনেক ভাল লাগলো। শুভেচ্ছা রইল।

০৩ রা এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: পোস্ট পড়ে আপনারও কিছু শৈশবের স্মৃতিকথা মন্তব্যে সংযোজনের জন্য অশেষ ধন্যবাদ। পোস্টের প্রশংসায় এবং প্লাসে প্রাণিত হ'লাম।
মাহে রমজানের শুভেচ্ছা জানবেন।

১৯| ০১ লা এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১১:৩৬

নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: আম্মাকে আপনার কথা বললাম , তিনি বললেন আপনার এই ন্যাপথলিনের কথাটা রাষ্ট্র হয়েছিল নানী নাকি এই খবর শুনবার পর ন্যাপথলিন দূরে দূরে রাখতেন আমার নানার বাড়ি কিন্তু সেখানেই । যাকগে , আমার একটা প্রশ্ন আছে আপনার কী মনে আছে সিজিএস কলোনীর মসজিদের কোন পাশে আপনারা ছিলেন ?

০৩ রা এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১০:৫৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: না, আমার মনে নেই। শুধু এটুকু মনে আছে যে বাসার কাছেই একটা মাসজিদ ছিল এবং সেই মাসজিদের আযান ধ্বনি আমরা স্পষ্ট শুনতে পেতাম।
ঐ সময়ে আমাদের বাসার কাছে একটি দালানে বসবাসরত একজন ভদ্রমহিলা হঠাৎ করে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। তিনি তার স্বামীর শার্ট প্যান্ট কোট পড়ে বারান্দায় পায়চারি করতেন। তার স্বামী খুব সম্ভবতঃ একজন ডাক্তার ছিলেন। তার এ্যাপ্রোনটাও তিনি গায়ে চড়াতেন। আপনার আম্মাকে জিজ্ঞেস করে দেখবেন তো, তিনি এ ধরণের কোন কথা শুনেছিলেন কিনা।

২০| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১০:৫৯

নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: না আম্মাকে জিজ্ঞেস করে জেনেছি উনি এমনটা শোনেন নি ! আম্মা যুদ্ধের সময়ে জন্মেছেন ! নানীর কাছে আপনার এই ঘটনাটা শুনেছেন । নানী হয়তো জানতো যা বলেছেন তবে তার কাছ থেকে জানবার কোন উপায় আর নেই !!

ভালো লাগলো আপনার এই স্মৃতিগদ্য পড়ে ! শুভ কামনা রইল আগামির প্রতি !!

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ১১:৩৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: আচ্ছা, বুঝলাম।
আপনার নানীর মাগফিরাত কামনা করছি এবং আপনার পরিবারের সকলের জন্য দোয়া ও শুভকামনা।

২১| ১১ ই এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ১০:২৬

আমি সাজিদ বলেছেন: স্মৃতিকথাগুলো পড়তে বেশ ভালো লেগেছে। সে সময়ের টাইফয়েডের চিকিৎসায় খাবার দাবাড়ের কি এরেঞ্জমেন্ট করা হতো তাও জানা গেল এই সুযোগে। অনেকের মন্তব্যে তাদের স্মৃতিকথা উঠে এসেছে, বিশেষ করে এম এ আলী স্যারের মেরাদিয়া বিলে সাপগলা পাখি উদ্ধারের ঘটনাটি বেশ চমকপ্রদ। শেষে জী এস স্যারের মন্তব্যটিতেও ভালো লাগা। আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। শুভেচ্ছা।

১১ ই এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ১১:৩২

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, পোস্ট পড়ে পোস্টের বিষয়ে এবং পাঠকের মন্তব্য নিয়ে পর্যবেক্ষণমূলক মন্তব্য রেখে যাবার জন্য। মন্তব্যটি সমনোযোগ পাঠের স্বাক্ষ্য বহন করে।

মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও প্রাণিত। সুস্বাস্থ্য কামনার জন্য কৃতজ্ঞতা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.