নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আগের পর্ব-
Click This Link
যানজট ও ঢাকার ওপর চাপ হ্রাস
যানজট যে হারে বাড়ছে তাতে ঢাকা প্রায় অকার্যকর শহরের কাতারে চলে যাবার দশা হয়েছে। সেটা আরো বাড়ছে ঢাকায় বসবাসের জন্য আসতে থাকা মানুষের অন্তহীন স্রোতের কারণে। তাই যানজট হ্রাসের স্বার্থে ঢাকায় মানুষের আগমন যুক্তিসঙ্গত পর্যায়ে নামিয়ে আনতে হবে। প্রশাসনিক রাজধানীর পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সব কিছুরই কেন্দ্র ঢাকা। এটাই ঢাকার ওপর ক্রমাগত জনচাপ বাড়ার কারণ।
সে জন্য উন্নত আর উন্নয়নশীল অনেক দেশ প্রশাসনিক রাজধানী আগের শহর থেকে সরিয়ে ফেলেছে। সে সাথে বাণিজ্যিক কেন্দ্রও রাজধানী থেকে সরিয়ে ফেলেছে। মালয়েশিয়া তাদের প্রশাসনিক রাজধানী কুয়ালা লামপুর থেকে ২৫ কিমি দূরের পুত্রাজায়ায়, মিয়ানমার তাদের রাজধানী ইয়াংগুন থেকে প্রায় দু'শ কিমি দূরের নেই পি দো নামক জায়গায় সরিয়ে ফেলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের কাছে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি রাজধানী ছাড়া আর কোন কারণেই দরকারী মনে হবে না। রাজধানী থেকে বহু দূরের শহর নিউ ইয়র্ক হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক কেন্দ্র। চীন রাজধানী বেইজিং থেকে অনেক দূরের শহর সাংহাইকে রাণিজ্যের কেন্দ্রে পরিণত করেছে। ভারতের বাণিজ্যিক কেন্দ্র মুম্বাই, হায়দরাবাদ, ব্যাঙ্গালুরু প্রভৃতি দূরের শহরে। জার্মানীর বাণিজ্যকেন্দ্র রাজধানী বার্লিন থেকে দূরের ফ্রাঙ্কফুট শহরে।
লেখাপড়ার ব্যাপারেও বেশিরভাগ দেশ রাজধানীর বাইরে শিক্ষা কেন্দ্র গড়ে তুলেছে। আমেরিকার বিশ্বখ্যাত সব বিশ্ববিদ্যালয়ই রাজধানী থেকে বহু দূরের বিভিন্ন শহরে।
ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডাও একই কাজ করেছে।
চিকিৎসা সেবাও সবাই বিকেন্দ্রীকরণ করেছে। ভারতে আমরা যখন চিকিৎসার জন্য যাই তখন নয়াদিল্লী যাই না, চেন্নাই বা ভেলোরে যাই। থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতাল ব্যাংকক থেকে কিছু দূরেই আছে।
আমাদের খবর এখনো আগের মতোই। ষাটের দশকে তখনকার পাকিস্তানের সামরিক শাসক আইউব খান পাকিস্তানের রাজধানী রাওয়ালপিন্ডি থেকে নতুন গড়ে তোলা শহর ইসলামাবাদে সরিয়ে নেন। এখন যেটা আমাদের শেরে বাংলা নগর সেটার নাম ছিলো আইউব নগর। আসাদ গেটের নাম ছিলো আইউব গেট। এখানেই প্রশাসনিক কেন্দ্র সরিয়ে নেবার কথা ছিলো। সেভাবেই সেখানে সংসদ ভবন, হাসপাতাল আর সচিবালয় সরিয়ে নেবার উদ্যোগ নেয়া হয়। সেই কাজ আজো হলো না। একবার শোনো গেলো সচিবালয় চলে যাবে পূর্বাচলে। এখন সেটাও শুনিনা। বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে যাবে বলে অনেকবার শুনেছি। তারও কোন আভাস মিলছে না। হাইকোট পর্যন্ত চেষ্টা করে এখন পর্যন্ত হাজারীবাগের ট্যানারী সরাতে পারেনি। তাই ঢাকার কপালে যা জোটার তা-ই জুটছে।
তবে আশার কিছু আলো ফুটতে শুরু করেছে। সরকারীভাবে পুরনো সব জেলায় বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় চালু হয়ে গেছে। বাকিগুলোও শেষ পর্যায়ে। ফলে ঢাকার বাইরে মানসম্পন্ন শিক্ষার সুযোগ বাড়তে শুরু করেছে। এখন যদি নামকরা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কিছু ক্যাম্পাস ঢাকার বাইরে কিছু বড়ো শহরেও খুলতে শুরু করে তাহলে শিক্ষার কারণে ঢাকার ওপর চাপ কমতে শুরু করবে।
ঢাকার বাইরের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলোর দিকে নজর আরেকটু বাড়ালে চিকিৎসা খাতেও চাপ কিছু কমতে থাকবে। বেসরকারি নামী হাসপাতালগুলো যদি ঢাকার বাইরে শাখা খোলে সেটারও প্রভাব হবে ইতিবাচক। মেডিনোভা বরিশালে তাদের ডায়াগনেস্টিক সেন্টারের শাখা খুলেছে। এটা অবশ্যই ইতিবাচক উদ্যোগ।
ঢাকার বাইরে শিল্পস্থাপন শুরু হয়েছে। ফলে কর্মসংস্থানের জন্য ঢাকামুখি জনস্রোত কিছুটা হলেও কমতে থাকবে।
ঢাকামুখী জনস্রোত যদি কমে তাহলে ঢাকার রাস্তায় চলাচলকারী মানুষও কমতে শুরু করবে। মানুষ কমলে যানবাহন কমবে, যানজট কমবে। এটা একটা চক্র।
যানজট কমানোর জন্য প্রস্তাবিত মেট্রোরেল বড়ো ধরণের ইতিবাচক প্রভাব রাখবে। এর পাশিাপশি কিছু উদ্যোগ কম খরচে, দ্রুত সুফল দিতে পারবে বলে আমি মনে করি। ঢাকা মহানগরে যতগুলো লেভেল ক্রসিং আছে সেখানে যদি গাড়ির জন্য ছোট ছোট ওভার ব্রিজ করা যায় (বনানীর মতো বিশাল কিছুর দরকার মনে করি না) তাহলে একদিকে রেল চলাচলের কারণে যে সব যানবাহনকে দিনের মধ্যে অনেক বার রেললাইনের কাছে ভীড় করে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় সেটার দরকার হবে না। এর কারণে বাড়তি যানজটও সৃষ্টি হবে না। রেলগেটগুলো উঠে গেলে রেলেরও লোকবল কম লাগবে। এর পাশাপাশি জয়দেবপুর, টঙ্গি, নরসিংদী, নারায়নগঞ্জ এমনকি ময়মনসিংহ বা বি.বাড়ীয়া থেকেও সকাল থেকে শুরু করে সরারাদিন আধঘন্টা পরপর কমিউটার ট্রেন চালু করা যায়, তাহলে অনেক চাকরিজীবী ঢাকার বাইরে পরিবার রেখে বা নিজ বাড়িতে পরিবার রেখে ঢাকায় অফিস, ব্যবসার কাজ সেরে বিকেলে বা রাতে ফিরে যেতে পারবেন। তাতেও ঢাকার ওপর চাপ কমে যাবে। রাস্তায় যানজট সহনীয় মাত্রায় নেমে আসবে। লোকজন দরকারমতো এয়ারপোর্ট, ক্যান্টমমেন্ট, বনানী, তেজগাঁও স্টেশনে নেমে নিজ কাজে যেতে পারবেন। পুরো সময় তাঁদেরকে রাস্তা দখল করে চলতে হবে না।
এ বিকল্পটি নিয়ে কেউ কি ভাববেন ?
১১ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৫৭
এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: সহমত। এটা সব চেয়ে কার্যকর সমাধান। আমি বলছি অন্তবর্তী ব্যবস্থা হিসাবে যা করা যায় তার কথা।
২| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:০৯
সোহানী বলেছেন: সহমত চমৎকার সমপযোগী লিখার জন্য।
আপনার প্রতিটি পয়েন্টই গ্রহনযোগ্য। এ ঢাকা শহর আর বসবাসের যোগ্য নয় কিছুতেই। স্রোতের মতো মানুষ আসছে প্রতিদিন ঢাকায়... আর সমস্যা দিন দিন বাড়ছেই শুধু....
আমার মতে বিকেন্দ্রীকরন একটা বড় সমাধান হতে পারে। যেমন আপনি বলেছে, সচিবালয় ঢাকার বাইরে স্থানান্তরের কথা। ভেবে দেখুন এটি হলে কম করে প্রতিদিন ১০,০০০ মানুষের ঢাকা আসা বন্ধ হবে। এভাবে অন্যান্য হেড অফিস ঢাকার বাইরে স্থানান্তর হলে লক্ষাধিক লোকের প্রতিদিন যাতায়াত বন্ধ হবে... সাথে কোটি লোক ঢাকার বাইরে বসবাসে বাধ্য হবে। সেই সাথে গার্মেন্টস্.... কোর্ট.... ট্যানারি স্থানান্তর হলে ঢাকাই একটি পর্যটন নগরী হবে... কি ভুল বললাম !!!!
১১ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:২১
এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: সহমত। আপনি ঠিকই বলেছেন। ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
৩| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৬
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: পোষ্ট এর অনেক বিষয় এর সাথে আমি সহমত। কিন্তু আমি আরও কিছু নিজের পর্যবেক্ষন নিয়ে ফিরে আসব রাতে।
১১ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৩০
এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: অপেক্ষায় থাকলাম আপনার আইডিয়ার জন্য।
৪| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৩২
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: মায়ানমারের নতুন রাজধানী ( সম্পূর্ণ নব গঠিত , সোজা কথায় একেবারে বন জঙ্গল পরিষ্কার করে বানানো ) Naypyidaw এর মতো না হলে আমার মনে হয় না আদৌ আমাদের প্রেক্ষাপটে কোন স্থায়ী সমাধানে আমরা পৌঁছাতে পারবো । এখন যতই পরিকল্পনা / রিমডেলিং করি , সেটা অবশ্যই অত্যান্ত ব্যায়বহুল ও স্থায়ী সমাধানে আসবে বলে মনে করি না । অবশ্য এটা আমার ব্যাক্তিগত মতামত ।
Naypyidaw একটা রাস্তা টপ গিয়ারে দেখেছিলাম যতদূর মনে পরে , ২০ লেইন এর !!! আমি অবাক হয়েছিলাম তাদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা দেখে । আপনি একটা বিমান অনায়াসে ল্যান্ড করিয়ে নিতে পারবেন সেখানে ।
ভালো থাকবেন
১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:০৫
এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: আপনার সুচিন্তিত মতামতের জন্য ধন্যবাদ। মিয়ানমার বা মালয়েশিয়া অনেক পরের কথা মাথায় রেখে এটা করেছে। স্থায়ী সমাধানের জন্য আমারেদরকেও এ পন্থাই অবলম্বন করতে হবে। আমি যে কথা বলেছে সেটা অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা এবং শহর হিসাবে ঢাকাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য দরকারী।
আপনিও ভালো থাকবেন।
৫| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৪০
অন্ধবিন্দু বলেছেন:
কামাল,
ভাবনার বিষয়বস্তু লেখাগুলোর শিরোনাম হওয়াটা উচিত ছিলো। এতে করে আরও অধিক পাঠক আপনার ভাবনায় যোগ দিতে পারতো বলে মনে করছি।
হা ! বিকল্পটি বেশ কিন্তু। মাথায় রইলো। ধন্যবাদ।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:০৯
এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। শিরোনাম নিয়ে আপনার ভাবনা ভালো লাগলো। যদি কখনো এগুলো নিয়ে বই করার সুযোগ আসে তখন না হয় এ শিরোনামটা ব্যবহার করা যাবে। এটা হলে লিঙ্ক দেবার দরকারও হবে না।
৬| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:২৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: এ.টি.এম.মোস্তফা কামা
ভাল একটি প্রসংগের অবতারনা করেছেন ।
একটি মাত্র শব্দে সমাধানটি মনে হয় এই - বিকেন্দ্রীকরন ।
সব মন্ত্রনালয় , বেশ কিছু উচ্চতর শিক্ষা ও বিচারিক প্রতিষ্ঠান দেশের বিভিন্ন বিভাগ বা জেলায় সরিয়ে নিলেই কেবল মাত্র ঢাকাকে বাঁচানো সম্ভব ।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:১৩
এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: অন্যান্য দেশ যে সুফলটা ভোগ করছে তার মূলেই কিন্তু বিকেন্দ্রীকরণ। আমাদের সামগ্রিক মানসিকতা এখনো বিকেন্দ্রীকরনের অনুকূল বলে মনে হচ্ছে না। সে কারণেই বিকল্পটা মাথায় এসেছে। বিকেন্দ্রীকরণের জন্য জনমতের চাপ তৈরি না হলে সেটা হবে বলে মনে হয় না। আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৭
প্লেবয় বলেছেন: আমাদের দরকার একটা নতুন রাজধানী। এর বাইরে আর কোন সত্যিকারের সমাধান চোখে পড়ছে না।