নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যত মত তত পথ

কাজী মাহমুদ রুম্মান

১২৩৪৫৬

কাজী মাহমুদ রুম্মান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আগাচৌ বিতর্ক : (যে যায় লংকায় সে হয় রাবণ)

০৫ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ২:০৪


গফফার চৌধুরীর বক্তব্য নিয়ে ফেবু গরম।নানা স্বাদের স্ট্যাটাস ও মন্তব্য দেখছি সারাদিন ধরে।ভদ্রলোকের বক্তব্য আমি পুরাটা শুনিনি বা পড়েও দেখিনি।তবে চুম্বক অংশ যা নিয়ে বিতর্ক সৃস্টি হয়েছে সেটা হেড লাইন আকারে পেপারে দেখেছি ।প্রশ্ন হল এই যে ওনার কথা “আল্লাহর অধিকাংশ (গুনবাচক) নামসমূহ প্যাগানদের দেবতাদের নাম থেকে নেয়া”- এটার ভিত্তি কি ?
ভিত্তি অবশ্যই আছে একটা অার সেটা হল পশ্চিমি কিছু ঐতিহাসিক/লেখকের লেখা।পশ্চিমি কিছু গবেষক মহান রাব্বুল আলমিনের কিছু নামের সাথে সে আমলের আরবউপদ্বীপের অধিবাসী প্যাগান কিছু দেবতার নামের সাথে সাজুয্য দেখাবার চেস্টা করেছেন এবং বলতে চেয়েছেন মহানআল্লাহর এই নামগুলি আগে থেকেই অরবের জনগনের কাছে পরিচিত ছিল, মুহাম্মদ(সা) সেগুলি আল্লাহর নামের সাথে আত্মীকরণ করেছেন এবং প্যাগানগোষ্ঠীও এভাবে তাদের দেবতাদের নাম বাঁচিয়ে রাখতে চেস্টাকরেছেন।।অবশ্য মনে রাখতে হবে এর সবটাই লেখকদের নিজস্ব অনুমান মাত্র।কারন এমন দাবী তদানিন্তন আরবের কেউ বা কোন গোত্র করেছেন বলে ইতিহাসে দেখা যায় না।
আমি বেঞ্জামিন ওয়াকারের বিতর্কিত বই ফাউন্ডেশন অব ইসলাম(বাংলা অনুবাদ সা‘দ উল্লাহ, আগামী প্রকাশন-বইটি বাজেয়াপ্তকৃত,দেশের বাইরে ইংরেজীটা সহজলভ্য) থেকে কিছুটা তুলে দিলাম আগ্রহী পাঠকদের জন্য -
১। অল্লাহ - হেজাজের প্রধান দেবতা।এই দেবতার কোন মূর্তি ছিল না।আল্লাহ নামের সাথে আরববাসী আগেই পরিচিত ছিল এটা কোরআনেও বর্ণিত হয়েছে।একারনেই মুহাম্মদ((সা) এর বাবার নামছিল আব্দুল্লাহ বা আল্লাহর দাস/বান্দা।আল্লাহ শব্দের মূল(রুট/ধাতু) হচ্ছে আল বা গড।এর ভিত্তি হচ্ছে ‘এল’ সেমেটিক ভাষায় nucleus of divine name.প্রাকইসলামী আরবে এই দেবতাকে একেশ্বরবাদীতার প্রতীক বলে গন্য করত।এমনকি হিজাজে বসবাসরত ইহুদী,খৃস্টানরাও এই দেবতাকে আল্লাহ বলে শ্রদ্ধা করত।
২। ওদুদ (the loving) নামের সাথে ওয়াদ (the moon god) এর সাদৃশ্য আছে।
৩। মুনিম এর সাথে সাদৃশ্য পেয়েছেন উত্তর আরবে পুজিত আলমানি(the withholder) দেবতার নামের।
৪। আল-সালাম(the peace) নামের মাঝে মিশে আছে তাইমাদের দেবতা সালস এর নাম।
৫। আল কাবী(the strong) নামের সাথে মিশে আছে কাউস বা কাইস দেবতা যে ছিল আল-মানাতের সাথী।
৬। আল-আজিজ(the mighty) অপরিবর্তিত অবস্থায়ই আছে,যেটা উত্তর আরবের দেবতা আজিজের নাম।
আবার কোরআনের কিছু সুরার নামের সাথেও মিশেআছে প্রাচীন প্যাগান দেবতাদের নাম যেমন- তারিক(সুরা-৮৬) নক্ষত্র দেবতার নাম, নসর(সুরা-১১০) হিমারীয়দের দেবতার নাম, শামস(সুরা-৯১) মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক পুজিত সৌর দেবীর নাম।

পাঠক, নামের এরকম সাদৃশ্য যেকোন ভাষাতেই খুঁজলে পাওয়া সম্ভব।তবে এটা দ্বরা কখনোই প্রমান হয়না যে, এই নামগুলি ওখান থেকেই ধার করা হয়েছে।এটা নেহায়েতই গবেষকের (!)উর্বর মস্তিক প্রসুত অনুমান।এর ঐতিহাসিক সত্যতা প্রশ্নবিদ্ধ।অবশ্য এধরনের একশ্রেনীর পাশ্চাত্য গবেষকদের এরকম ইসলাম অবমাননা ইতিহাসে নতুন কিছু নয়।
আরেকটি কথা বলতে চাই, সহীহ হাদিসে এসেছে মহান রাব্বুল আলামিনের এক কম একশ নাম আছে।হাদিসটি এখানেই শেষ(হাদিসটি সুনানে তিরমিজিতে আছে)।তবে এর সাথে নিরানব্বই নামের যে তালিকা দেয়া আছে ওটা কিন্তু রাসুল(সা) কর্তৃক বর্ণিত নয়,মানে ওটা মূল হাদিসের অংশ নয়।ওটা ইমাম তিরমিজির নিজস্ব ইসতেহাদকৃত তৈরী তালিকা মাত্র।কোরআন-সহীহ হাদিস ভিত্তিক আল্লাহ সুবহানওয়াহু তায়ালার নাম অনেক গ্রন্থেই আছে আবার কিছু নাম এমনও আছে যেগুলি সরাসরি কুরআন বা সহীহ হাদিসে পাওয়া যায় না।সবগুলিই মুসলিম সমাজে প্রচলিত।এটা নিয়ে তেমন বিতর্ক নেই কারন আল্লাহর বানী-“মহান আল্লাহর আছে উতকৃস্ট নামাবলী(আসমাউল হুসনা),তোমরা সে নামেই আল্লাহকে ডাক।”এক্ষেত্রে একজন মুসলিমের কর্তব্য হলো এমন সুন্দর নামে ডাকা যেগুলি দ্বারা শিরক প্রকাশ না পায়।যেমন-গড,খুদা.. ইত্যাদি শব্দের লিংগান্তর আছে আবার কোন কোনটির ভিন্ন অর্থেও ব্যবহৃত হয়।।
সবশেষে বলব,আব্দুল গফফার সাহের(ওনার নিজের নামও আল্লাহর একটি গুনবাচক নামের সাথে জড়িত) যে কথা বলেছেন, সেটা ওনার বহুদিন বিদেশে /পাশ্চাত্যদেশে থাকার ফলেই বলেছেন।কারন উনি পাশ্চাত্যকে নির্মোহ ভাবে অন্ধঅনুকরণ করতে ভালবাসেন, ইসলামকে নয়।আল্লাহ আমাদের সবাইকে সত্য জানার ও মানার তৌফিক দান করুন।আমিন।।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.