নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খালিদ আলম

খালিদ আলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

জানুন কুরবানী সম্পর্কে ( কি? কিসের এবং কিভাবে ?)

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৩

কুরবানী শব্দরে র্অথ হচ্ছ,নিকটর্বতী হওয়া বা সান্নধ্যি লাভ করা। সুরা আল কাওসারে বলা হয়েছে ‘ফাছাল্লি লিরাববিকা ওয়ানহার' র্অথাৎ অতএব, (হে নবী!) আপনার ‘রব'-এর স্মরণে সালাত আদায় করুণ ও তাঁর সন্তুষ্টরি জন্যে কুরবানী করুণ'। এখানে ‘নাহার' বলতে কুরবানী বোঝানো হয়েছে। আসলে ‘নাহার' শব্দে আভধিানকি র্অথ হচ্ছে নহর, বিশেষ নিয়মে , জবাই বা হত্যা করা কিংবা বস্তুকে জবাই বা ত্যাগ করা।

কুরবানী সর্ম্পকে আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ হচ্ছে ‘‘নিশ্চয় (হে নবী!) আমি আপনাকে (নিয়ামত র্পূণ) কাওসার দান করেছি। অতএব, আপনি আপনার ‘রব' এর সন্তুষ্টির জন্যে সালাত কায়মে করুণ ও তাঁর নামে কুরবানী করুন’’(সুরা আল কাওসার-১০৮/১-২)।

রাসূল (স) বলছেনে, ‘যে ব্যক্তি সক্ষমতা থাকা সত্ত্বওে কুরবানী করবে না সে যনে ঈদগাহরে কাছেও না আসে (আহমদ ও ইবনে মাযাহ)।
হযরত আয়শো (রা) থেকে বর্ণীত, রাসূল (স) বলছেনে, কুরবানীর দিনে মানবসন্তানের কোন আমলই আল্লাহ তায়ালার নিকট তত প্রিয় নয়, যত প্রিয় কুরবানী করা। কুরবানীর পশুর শিং, পশম ও ক্ষুর কিয়ামতের দিন (মানুষরে নকে আমলনামায়) এনে দেয়া হবে । কুরবানীর পশুর রক্ত মাটিরতে পড়ার আগেই তা আল্লাহর দরবারে পৌঁছে যায়। সুতরাং তোমরা আনন্দচতত্তে কুরবানী করো’’ (তিরমীযি)।

কুরবানী সচ্ছল সকল মুসলমানরে ওপর ওয়াজিব। কুরবানীর গোস্তরে ওপর আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতবিশেীর, গরীব-মসিকনিরে ও মুসাফরিরে হক আছে। খয়োল রাখতে হবে সমাজরে কোন একজন ব্যক্তি যেনো কুরবানীর গোস্ত থেকে বঞ্চতি না হয়। কুরবানীর চামড়া শুধু মাত্র যাকাতের হকদারদেরই প্রাপ্য। অনকেইে আবার কুরবানীর পশুতে আকিকার জন্যে এক ভাগ বা দুই ভাগ রাখনে। এতে আকিকা সহীহ হবে না। আককিার জন্যে ছেলে হলে দু'টি ভেড়া বা বকরী আর মেয়ে হলে একটি ভেড়া বা বকরী নির্ধারতি করতে হবে। আর মনে রাখতে হবে কুরবানীর সাথে আককিার কোন সর্ম্পক নইে। কুরবানী ঈদ-উল আজহার গুরুত্বর্পূণ উপাদান ও ধনীর জন্যে এটা আনন্দরে আর গরীবরে জন্যে স্বস্বির।

অনেকের ধারণা কুরবানী কেবলমাত্র ১০ জিলহজ্জেই করা যায়। এটা সম্পূর্ণ সঠিক নয়। আপনি চাইলে ১১ বা ১২ তারিখেও করতে পারবেন। কিন্তু ১০ তারিখে করাটাই সর্বোত্তম।

গরু, ছাগল, ভেড়া বা বা উটই সাধারণত কুরবানী করা হয়। একটি ভেড়া বা ছাগল একজনের কুরবানীর জন্য যথেষ্ট। কিন্তু একটি বড় পশু যেমন- গরু, উট বা মহিষের ক্ষেত্রে, একটি পশুকে সর্বোচ্চ সাত ভাগে কুরবানী দেওয়া যাবে।

কুরবানীর পশু সুস্থ্য সবল এবং নিখুঁত হওয়া বাঞ্ছনীয়। সাধারণত যে সমস্ত ত্রুটি থাকলে একটি পশু কুরবানীর অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে তা হল-
১. অন্ধ পশু, প্রায় অন্ধ পশু বা এক চোখ হারানো পশু।
২. রুগ্ন পশু, যেটি জবাই করার স্থান পর্যন্ত নিজে হেঁটে যেতে পারে না।
৩. যার নাক, কান বা লেজের এক তৃতীয়াংশ বা তার বেশি অংশ অঙ্গহানী হয়েছে।
৪. যার দাঁত নেই বা বেশিরভাগ দাঁত পড়ে গেছে।
৫. কান ছাড়া জন্মানো পশু।
৬. যার চার পায়ের একটি নেই বা একটি পা হাঁটার অযোগ্য অর্থাৎ যেটি হাঁটার সময় তিনটি পা ব্যবহার করে।
৭. রুগ্ন পশু যার অস্থিতে মজ্জা থাকার সম্ভাবনা নেই।

কুরবানীর পশুর মাথা ক্বিবলার দিকে ফিরিয়ে রাখা এবং এসময় সূরা আল আনআমের ৭৯ নং আয়াত (৬:৭৯) তিলাওয়াত করা সুন্নত। তবে কুরবানীর সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল ‘বিসমিল্লাহ, আল্লাহু আকবার’ বলা। এটি না বললে ওই পশুর গোশত খাওয়া হারাম হবে। তবে কুরবানী হয়ে যাবে। যদি কেউ অনিচ্ছাকৃতভাবে তা বলতে ভুলে যায় সেক্ষেত্রে কুরবানী ও গোশত উভয়ই হালাল হবে।
জিলহজ্জ মাসের ১ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে চুল এবং নখ অকর্তিত রেখে তা কুরবানীর পর কর্তন করা মুস্তাহাব। জবাইকৃত পশুর মাংস সকল অংশীদারদের মধ্যে অংশ অনুযায়ী সঠিকভাবে ভাগ করে দিতে হবে। কুরবানীদাতা চাইলে সমস্ত মাংস নিজে রাখতে পারে। তবে এক তৃতীয়াংশ দরিদ্রদের মাঝে এবং এক তৃতীয়াংশ আত্মীয়দের মধ্যে বন্টন করা উত্তম।

পশুর শরীরের অংশ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যাবে কিন্তু কোন অংশই বিক্রয় করা যাবে না। কসাইয়ের পাওনা কুরবানীর মাংসের মাধ্যমে পরিশোধ করা যাবে না। কেউ পশুর কোন অংশ বিক্রয় করে থাকলে প্রাপ্ত টাকা অবশ্যই যাকাত নিতে উপযুক্ত কাউকে দান করতে হবে।

কুরবানীর পশুর চামড়া দিয়ে ব্যবহার্য সামগ্রী তৈরি করা যাবে। কিন্তু তা বিক্রয় করলে প্রাপ্ত অর্থ বঞ্চিতদের দান করতে হবে।
আরো কিছু তথ্যঃ
১. কুরবানী করার পূর্বে পশুকে প্রচুর পানি পান করানো উচিৎ। এতে পশুর চামড়া ছাড়ানো সহজ হয়।
২. পশুর মাথা দেহ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করা অযৌক্তিক। জুগুলার ধমনীটি কাটাই যথেষ্ট।
৩. জবাই করার সময় হাতে ঘড়ি না পড়া সুবিধাজনক।
৪. ধারাল ছুরি ব্যবহার করুন। এতে কুরবানী করা সহজ হবে এবং পশুর কষ্টও কম হবে।
৫. মাংস কাটার সময় পিচ্ছিল মাংস অনেক সময় ধরতে কষ্ট হয়। এজন্য হাতে সামান্য গুঁড়া হলুদ মাখিয়ে নিন, পিচ্ছিলভাব কমে আসবে।
৬. কুরবানীর পশুর মূল্য নিয়ে অহেতুক প্রতিযোগিতায় যাবেন না। কারণ যদি আপনার উদ্দেশ্য আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা না হয় তবে আপনার কুরবানী কবুল হবে না। প্রদর্শন করাই যদি পশু কুরবানীর কারণ হয় তবে সে পশু জবাই করার কোন ফায়দাই থাকবে না।
৭. ত্রুটিপূর্ণ নিয়ত ইবাদত কবুল না হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। যদি কুরবানীর পশুর শরীকদের মধ্যে কারো নিয়ত ত্রুটিপূর্ণ বা আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা ছাড়া অন্য কিছু হয় তবে কারো কুরবানীই কবুল না হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এক্ষেত্রে সতর্ক থাকা খুবই জরুরি।
৭. কুরবানীর পশুর রক্ত মাটিতে গর্ত করে তাতে পুঁতে ফেলুন। পরিবেশ দূষণ ছাড়াও এতে অপরের অসুবিধা হতে পারে।
৮. কুরবানীর পশুর প্রতিটি লোমের জন্য আল্লাহ তাআলা আমাদের সওয়াব প্রদান করেন। তাই কুরবানীর ব্যাপারে সর্বোচ্চ সৎ এবং আন্তরিক থাকা আমাদের কর্তব্য।

কুরবানী করার সময়কার দুআ।
ইন্নি ওয়াজ জাহতু ওয়াজ হিয়া লিল্লাযি ফাতারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বা হানিফাও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকিন। ইন্না সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহইয়ায়া ওয়ামা মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন। লা শারিকা লাহু ওয়াবি যালিকা উমিরতু ওয়া আনা আওয়ালুল মুসলিমীন। আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়া লাক……….।
তার পর বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার” বলে জবেহ সম্পন্ন করবে।
জবেহ করা সম্পন্ন হলে বলবে
আল্লাহুম্মা তাকাব্বাল মিন্নি কামা তাকাব্বালতা মিন হাবিবীকা মুহাম্মাদিও ওয়া খালিলিকা ইব্রাহীমা আলাইহিমা আস্সালাতু ওয়াস সালাম।

কোরবানির গোশত যতদিন ইচ্ছা ততদিন সংরক্ষণ করে খাওয়া যাবে। ‘কোরবানির গোশত তিন দিনের বেশি সংরক্ষণ করা যাবে না বলে মুসলিম শরিফে আলি রাঃ থেকে যে হাদিস খানা বর্ণিত হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে যে রাসুলুল্লাহ সাঃ তোমাদের কে কুরবানীর গোশত তিন দিনের বেশি সময় ধরে ভক্ষণ করতে নিষেধ করেছেন এই হাদিস এর হুকুম রহিত হয়ে গেছে। কেননা অপর হাদিসে সালমা ইবনে আকওয়া রাঃ থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে যে, كُلُوا وَأَط�’عِمُوا وَادَ�‘خِرُوا তোমরা নিজেরা খাও ও অন্যকে আহার করাও এবং সংরক্ষণ কর। তাই যতদিন ইচ্ছা ততদিন সংরক্ষণ করে রাখা যায়।
বোখারী ১/২৭৩, হাদিস ৫১৪৩, মুসনাদু আহমদ ২৩/১৬৩, হাদিস ১১১১৪, মিশকাতুল মাছাবিহ ২/৯৫, হাদিস ২৭৪৪।

সূরা হজ্জ ২২:৩৭ আয়াত আল্লাহ পাক বলেন,
এগুলোর গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, কিন্তু পৌঁছে তাঁর কাছে তোমাদের মনের তাকওয়া। এমনিভাবে তিনি এগুলোকে তোমাদের বশ করে দিয়েছেন, যাতে তোমরা আল্লাহর মহত্ত্ব ঘোষণা কর এ কারণে যে, তিনি তোমাদের পথ প্রদর্শন করেছেন। সুতরাং সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১৮

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.