![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হঠাৎ করেই পাল্টে গেছে লোকটা ৷ গত কয়েকদিন ধরেই কেমন যেন একটু ধীর স্থির হয়ে গেছেন রহমান সাহেব ৷ আর সবার চোখে তেমন ধরা না পড়লেও রহমান সাহেবের স্ত্রী
ঠিকই লক্ষ করেছেন ব্যপারটা ৷
যে লোকটা বাসায় বাইরে সব জায়গতেই হৈ হুল্লোড় আর ছেলে মানুষী করত ঠিক সেই লোকটাই যেন দু'চার দিনে একদম বুড়ো মানুষ হয়ে গেছে ! এমন আচরন অবশ্য আরো দেখেছে মিসেস রহমান,কিন্তু এবার একটু বেশিই গম্ভীর মনে হচ্ছে তাকে ৷ এই গতবারও যখন একটা গল্প লিখা নিয়ে অনেক চিন্তিত ছিল তখনও এতটা গম্ভীর মনে হয় নি ৷
-
আজও গত কয়েকদিনের রুটিন অনুযায়ী পার্কে হাটার সময়,অফিসে কাজের সময়,বিকেলে বাজার করে বাসায় ফেরার সময় কোন রকম কথা না বলে চারপাশে লক্ষ রেখেছেন রহমান সাহেব ৷ কিন্তু গল্প লিখার মত কোন রকমের কোন প্লটই তার মাথায় আসে নি ৷
টুকটাক লেখালেখির অভ্যেস আছে তার,তবে একেবারেই সখের বশে ৷ এই টুকিটাকি লেখালিখর মূল প্লট বা ধারনাগুলো তিনি তার আশেপাশের পরিবেশ থেকে নিতেই পছন্দ করেন ৷ আর একারনেই তিনি গল্প লেখার দু-তিন দিন আগে থেকে চারপাশটা গভীরভাবে লক্ষ রাখেন ৷
অন্যান্য সময় অবশ্য তার বাসার গেটের সামনে কেউ ময়লা ফেললেও তা দেখবার প্রয়োজন মনে করেন না তিনি ৷ কিন্তু নতুন গল্পের প্লটের জন্য চারপাশটা লক্ষ রাখা খুবই জরূরী ! আর তা করতে গিয়েই বাসার গেটের সামনে ময়লা ভর্তি একটি ডাস্টবিন দেখতে
পেলেন তিনি ৷ ফলে মেজাজটাও বিগড়ে গেল, বাসায় পৌছে সময়মত চা না পেয়ে তো রিতিমত লঙ্কা কান্ড বাঁধিয়ে দিলেন.!
আসলে তারই বা কি দোষ,গত এক সপ্তাহেও নতুন কোন গল্পের প্লট মাথায় না আসায় কেমন যেন মাথাটা বিগড়ে যাচ্ছে তার ৷ এসব ভাবতে ভাবতেই বাসার সবার কাছে সরি বলে ছাঁদে গিয়ে চেয়ারে বসে আকাশ দেখতে দেখতে আবার ভাবতে বসলেন....
কি নিয়ে লিখবেন? দেশের বর্তমান সময় নিয়ে,না যত সব যুব অবক্ষয় নিয়ে,না পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হওয়া নিয়ে,না কোন এক মর্মান্তিক দূর্ঘটনা নিয়ে!?
অবশ্য এসব দূর্ঘটনা নিয়ে লিখতে গেলে চোখের সামনে কোন দূর্ঘটনা ঘটতে দেখা চাই ৷ যেমন গতবার মিছিলে গুলি লেগে একটি বাচ্চার গুলি লেগে মারা যেতে দেখেছিলেন তিনি৷ আর তার উপরে লেখা তার সমালোচনামূলক কলামটি বেশ সমাদৃতও হয়েছিল লেখক মহলে ঠিক তেমনই একটা প্লট চাই এবারকার গল্পটার জন্যে......
-
রাত দেড়টা বাজতে যাচ্ছে অথচ লোকটার কোন খোজ নাই! খাবার শেষে সেই যে ছাদে গেল আর আসার নাম নেই.! এদিকে সন্ধ্যাবেলায় রাগারাগি করেছে বলে ছোট ছেলেটাও কান্নাকাটি করতে করতে না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়েছে ৷ লোকটা কি যে এত মজা পায় এসব লেখালেখি করে!
মিসেস রহমান তার এ লেখালেখির বিষয়টা মোটেও পছন্দ করেন না ৷ আসলে লেখালেখি পছন্দ করেন না বললে ভূল হবে ৷ কারন সেই ছোট্টবেলা থেকেই তো তিনি কোন গল্পের বই পেলেই গোগ্রাসে গিলতে শুরু করতেন। এমন কি তিনি মিসেস রহমানও হয়েছেন রহমান সাহেবের লেখার প্রেমে পড়ে..!!
কিন্তু তিনি লোকটার গল্পের নতুন কোন প্লটের জন্য চোখের সামনে কোন অন্যায়, নির্যাতন, দুর্ঘটনা ঘটতে দেখেও নির্বিকারে সহ্য করে যাওয়ার অভ্যাসটাকে সহ্য করতে পারেন না ৷ এসব নিয়ে রহমান সাহেবের সাথে কথা বলতে চাইলেও বলতে পারেন নি তিনি ৷ যে বাস্তববাদী লেখকের লেখার প্রেমে পড়ে তার মিসেস হয়েছেন সে লেখাকে তিনি কিভাবে বন্ধ করতে বলবেন !? এসব ভাবতে ভাবতেই তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন
-
পরদিন খুব সকালে ঘুম ভেঙ্গে গেল রহমান সাহেবের অনেকগুলো মানুষের চিৎকার চেচামেচিতে ৷ যদিও খুব রাত করে ঘুমানোয় অপরিপূর্ন ঘুম ভাঙ্গােনার জন্য বিরক্ত হওয়ার কথা ছিল তার ৷ কিন্তু হয়তো নতুন গল্পের কোন অসাধারন প্লট পেতে যাচ্ছেন বলে সবাইকে কাঁচা ঘুমভাঙ্গানোর অপরাধ ক্ষমা করে দিয়ে পড়িমড়ি করে ছুটলেন ঘটনা কি দেখতে ৷
ঘটনা স্থলে পৌছেই তিনি বুঝলেন যে আজ তার জীবনের অন্যতম সেরা একটি গল্পের প্লট পেতে যাচ্ছেন ৷ তাই ভিড় ঠেলে ভিতরের দিকে আগাতে লাগলেন এবং ভিতরে পৌছে তিনি তার জীবনের সবচেয়ে বাস্তববাদী,সবচেয়ে অসাধারন গল্পের প্লটটা পেয়ে গেলেন !!
-
কিনতু তিনি তার জীবনের সেরা প্লটটিকে গল্পে রূপ দিতে পারেন নি ৷ কিভাবে পারবেন ? সেই ঘটনা যে তার জীবনে ধ্রুবকের মত সত্য ৷ নিজের ছেলের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা কোন বাবাই বা গল্পের আকারে দেখতে চান ? কোন বাবার অন্তরই বা ক্ষতবিক্ষত হয় না এমন গল্প পড়ে,যেটা তার নিজ সন্তানের জীবনে ঘটে যাওয়া !? রহমান সাহেব এখন আর লেখালেখি করেন না ৷ নিজেকে প্রচন্ড ঘৃণা করেন সেই সাথে তার মত আর সকল লেখকদেরও....
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:২১
রা জ্য বলেছেন: ধন্যবাদ সাব্বির ভাই
২| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:২৭
রায়হানুল এফ রাজ বলেছেন: নিজেকে প্রচন্ড ঘৃণা করেন সেই সাথে তার মত আর সকল লেখকদেরও....
অন্য লেখকদের ঘৃণা করার ব্যাপারটা বুঝলাম না।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১৯
রা জ্য বলেছেন: কিন্তু তিনি লোকটার গল্পের নতুন কোন প্লটের জন্য চোখের সামনে কোন অন্যায়, নির্যাতন, দুর্ঘটনা ঘটতে দেখেও নির্বিকারে সহ্য করে যাওয়ার অভ্যাসটাকে সহ্য করতে পারেন না ৷ এখানে গল্পের চরিত্রের একটা দিক তুলে ধরে হয়েছে, তিনি সেই দিকটাকে ঘৃণার চোখে দেখেন।
৩| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:০০
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বেশ হয়েছে তো
+++++++++++
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৭
রা জ্য বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই
৪| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:২২
রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: জাস্ট একটা প্রশ্ন - শখের লেখকরা কি লেখার প্লটের জন্য পাগলের মত হয়ে যায়?
শখের লেখকদের তো লেখার জন্য খুব একটা তাড়নাও থাকে না। তাহলে প্লটের জন্য অদ্ভুত আচরণ করবে কেন?
ব্যাপারটা বেশ বেখাপ্পাই। যদি প্রফেশনাল লেখক হত তাহলেও হয়তো মানা যেত। তারপরও প্রফেশনালরা পাগলের মত না হয়ে ঠান্ডা মাথায় ভাবার চেষ্টা করে।
যদি পাগলামীটা রহমান সাহেবের একটা বাতিকের মত হত - তাহলে ব্যাপারটা স্বাভাবিকভাবেই মানা যায়।
আর, শেষ বাক্যটাকে খুব একটা ভাল লাগলো না। বাকি লেখকদের ঘৃণা করার কোন কারণ নেই। ইস্যু খুঁজে লেখকরা অতটা লেখে না। ইস্যু খুঁজে লিখায় পটু হল অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা।
গল্প হিসেবে আমি ভাল বলব লেখাটাকে। কিন্তু, যুক্তিগুলোতে লেখকদের প্রতি নেগেটিভ মনোভাব প্রকাশ পাচ্ছে।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:১০
রা জ্য বলেছেন: হ্যাঁ, পাগলামিটা রহমান সাহেবের একটা বাতিকের মন, আর যদিও উনি সখের বসেই লিখালিখিটা করেন তবে প্রফেশনালই বলা চলে, আমি দুখিঃত যে, বেপার দুটো পরিষ্কার ভাবে তুলে ধরতে পারি নি।
আর শেষ বাক্যটা শুধু সেই ধরনের লেখকদের জন্যে যারা
কিন্তু তিনি লোকটার গল্পের নতুন কোন প্লটের জন্য চোখের সামনে কোন অন্যায়, নির্যাতন, দুর্ঘটনা ঘটতে দেখেও নির্বিকারে সহ্য করে যাওয়ার অভ্যাসটাকে সহ্য করতে পারেন না টাইপের লেখক।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৫৩
মো:সাব্বির হোসাইন বলেছেন: সুন্দর হয়েছে।