নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পরের বাড়ির পিঠা খাইতে বড়ই মিঠা ।

কিরকুট

আমি মানুষ, আমি বাঙালি। আমার মানবিকতা, আমার সংস্কৃতির উপর আঘাত হানতে চাওয়া, ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাওয়া প্রাণী মাত্রই আমার কাছে পিশাচ। আমার দেশের উপর আঘাত হানতে চাওয়া প্রাণীদের পালনকারী, প্রশ্রয়দানকারী মাত্রই আমার কাছে পিশাচ, রাক্ষস। হোক সে যে কোনো সাম্প্রদায়িক কিংবা ঢেঁড়স চাষ পরামর্শক।

কিরকুট › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুসলিম বিশ্বের ইমামঃ ইমাম হাসানের মৃত্যু রহস্য।

২৩ শে মে, ২০২৫ দুপুর ১২:২৪






ইমাম হাসান ইবনে আলী (আ.)-এর মৃত্যু একটি ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও বিতর্কিত বিষয়। ইসলামের ইতিহাসে তাঁকে প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর বড় নাতি, এবং শিয়া মুসলমানদের দ্বিতীয় ইমাম হিসেবে গণ্য করা হয়। তাঁর মৃত্যু বিষক্রিয়াজনিত ছিল বলে প্রাচীন ও আধুনিক বহু সূত্রে উল্লেখ রয়েছে, যদিও প্রকৃত সত্য আজও নিশ্চিতভাবে বলা কঠিন। নিচে এই রহস্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

১. ইমাম হাসানের জীবন ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

ইমাম হাসান (আ.) ছিলেন চতুর্থ খলিফা ইমাম আলী (আ.)-এর বড় ছেলে এবং নবী মুহাম্মদ (সা.) ও ফাতিমা (আ.)-এর প্রথম নাতি। তিনি অত্যন্ত জ্ঞানী, উদার ও ধৈর্যশীল হিসেবে খ্যাত ছিলেন।

৬৬১ খ্রিস্টাব্দে তাঁর পিতা ইমাম আলি (আ.) শহীদ হলে তিনি মুসলিম বিশ্বের খলিফা হন। তবে খুব অল্প সময় পর রাজনৈতিক চাপে তিনি মু'আবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ানের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করেন এবং খিলাফত ছেড়ে দেন। এই চুক্তির অন্যতম শর্ত ছিল মু'আবিয়ার মৃত্যুর পর খিলাফত আবার হাসানের হাতে ফিরে আসবে। কিন্তু মু'আবিয়া এই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে নিজের পুত্র ইয়াজিদকে উত্তরসূরি ঘোষণা করেন।




২. হত্যার রহস্য: বিষক্রিয়া ও ষড়যন্ত্র

২.১ ঐতিহাসিক সূত্রে কী আছে?

শিয়া মুসলমানদের মতে এবং বহু ঐতিহাসিক সূত্র অনুযায়ী, ইমাম হাসান (আ.)-কে বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করা হয়। যাঁকে সন্দেহ করা হয়, তিনি হলেন তাঁর এক স্ত্রী জা'দা বিনতে আশআথ, যিনি মু'আবিয়ার প্ররোচনায় এই কাজ করেন।

মু'আবিয়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, যদি জা'দা ইমাম হাসানকে বিষ দেন এবং তাঁকে হত্যা করেন, তাহলে তিনি তাঁর পুত্র ইয়াজিদের সঙ্গে জা'দার বিয়ে দিবেন এবং বিপুল অর্থ প্রদান করবেন।

জা'দা ইমাম হাসানকে খাবারে বিষ মিশিয়ে দেন। বিষক্রিয়ার ফলে তিনি কয়েক দিন ভীষণ কষ্ট পেয়ে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে চলে যান।

২.২ আধুনিক গবেষণা কী বলছে?

২০১৬ সালে প্রকাশিত একটি ফরেনসিক গবেষণায় বলা হয়েছে যে, ইমাম হাসানকে "ক্যালোমেল" (mercury(I) chloride) নামক একধরনের বিষ খাওয়ানো হয়েছিল। এই বিষ তৎকালীন বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যে পাওয়া যেত এবং এটি লিভার ও অন্ত্র মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারত।



৩. মৃত্যুর পর কী হয়েছিল?

ইমাম হাসানের ইচ্ছা ছিল তাঁকে তাঁর দাদা নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর পাশে দাফন করা হোক। কিন্তু মু'আবিয়ার প্ররোচনায় এবং মদিনার শাসকদের বাধায় সে ইচ্ছা পূরণ হয়নি।

তাঁর ভাই ইমাম হুসাইন (আ.) ও পরিবারবর্গ তাঁকে জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে দাফন করেন।




৪. বিতর্ক ও মতভেদ

সুন্নি মতামত:

সুন্নি ঐতিহাসিকদের একাংশ বিষক্রিয়ায় মৃত্যুর বিষয়টি মানেন, কিন্তু তাঁরা সাধারণত মু'আবিয়াকে এর জন্য দায়ী করেন না। অনেকেই বলেন, এটি ছিল পারিবারিক ষড়যন্ত্র।

শিয়া মতামত:

শিয়া মত অনুযায়ী এটি ছিল সুস্পষ্ট রাজনৈতিক হত্যা। মু'আবিয়া এই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী এবং এর মাধ্যমে তিনি ইয়াজিদের পথ পরিষ্কার করেন।




উপসংহার

ইমাম হাসান (আ.)-এর মৃত্যু ইসলামের ইতিহাসে একটি দুঃখজনক ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। রাজনীতির ছলচাতুরি, ক্ষমতার লোভ এবং প্রতারণার শিকার হয়ে তিনি শহীদ হন। যদিও সময়ের ব্যবধানে এই হত্যার প্রমাণ বিলীন হয়ে গেছে, তবে তাঁর মৃত্যু আজও মুসলিম বিশ্বে শোক ও অনুশোচনার প্রতীক।




মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৬

ফেনিক্স বলেছেন:



২০১৬ সালে ফরসেনিক পরীক্ষা কারা করেছে? কবর থেকে উনার কি পাওয়া গিয়েছিলো? কবর থেকে কি কিছু তোলা হয়েছিলো?

২| ২৩ শে মে, ২০২৫ রাত ৯:৫২

কিরকুট বলেছেন: ২০১৬ সালে প্রকাশিত একটি ফরেনসিক গবেষণা নিবন্ধ, যার শিরোনাম: “A forensic hypothesis for the mystery of al-Hasan’s death in the 7th century: Mercury(I) chloride intoxication”। এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে Medicine, Science and the Law জার্নালে এবং এটি রচয়িতা Nicole Burke, Mitchell Golas, Cyrus L. Raafat, এবং Aliyar Mousavi কর্তৃক সম্পাদিত।

গবেষণায় প্রাচীন আরবি উৎস ও ঐতিহাসিক বিবরণ বিশ্লেষণ করে ইমাম হাসান (আ.)-এর মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ হিসেবে ক্যালোমেল (mercury(I) chloride বা Hg₂Cl₂) নামক বিষের প্রয়োগের ধারণা উপস্থাপন করা হয়েছে। এই বিষটি তৎকালীন বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যে সহজলভ্য ছিল এবং এটি লিভার ও কিডনির মারাত্মক ক্ষতি করতে সক্ষম। গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইমাম হাসান (আ.)-এর মৃত্যুর সময় তাঁর শরীরের রঙ সবুজাভ হয়ে যায় এবং তিনি রক্ত বমি করতেন—যা ক্যালোমেল বিষক্রিয়ার লক্ষণ হতে পারে।

এই গবেষণাটি সম্পূর্ণ পড়তে চাইলে আপনি নিম্নলিখিত লিঙ্কে পাবেন:

https://journals.sagepub.com/doi/10.1177/0025802415601456



উল্লেখ্য, এই গবেষণাটি একটি ফরেনসিক অনুমানভিত্তিক বিশ্লেষণ, যা ঐতিহাসিক তথ্য ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভিত্তিতে একটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা প্রদান করে।

৩| ২৪ শে মে, ২০২৫ রাত ১:১৯

ফেনিক্স বলেছেন:




আপনি ভুয়া ফরসেনিক'এর কথা উল্লেখ করেছেন; দেখছেন, যা বুঝেন না, সেটা লিখতে গেলে কি সমস্যা হয়?

৪| ২৪ শে মে, ২০২৫ সকাল ১০:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: বিনোদন মূলক পোষ্ট।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.