![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষ, আমি বাঙালি। আমার মানবিকতা, আমার সংস্কৃতির উপর আঘাত হানতে চাওয়া, ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাওয়া প্রাণী মাত্রই আমার কাছে পিশাচ। আমার দেশের উপর আঘাত হানতে চাওয়া প্রাণীদের পালনকারী, প্রশ্রয়দানকারী মাত্রই আমার কাছে পিশাচ, রাক্ষস। হোক সে যে কোনো সাম্প্রদায়িক কিংবা ঢেঁড়স চাষ পরামর্শক।
বাংলার ইতিহাসে মুসলিম, হিন্দু, ইংরেজ এবং আর্মেনীয় ব্যবসায়ীদের উপস্থিতি নিয়ে বহু আলোচনা হলেও, একটি স্বল্পপরিচিত গোষ্ঠী — ইহুদি বণিকরা — প্রায় নজরের বাইরে থেকে গেছে। ১৮শ শতকে যখন উপনিবেশিক প্রভাব, বাণিজ্যিক প্রসার এবং নবাবি শাসনের টানাপোড়েন চলছিল, সেই সময় বাংলার বাণিজ্যজগতে কিছু ইহুদি বণিকের আবির্ভাব ঘটেছিল। এরা বেশিরভাগই এসেছিলেন বাগদাদ, বসরা কিংবা সিরিয়ার ইহুদি বংশ থেকে, এবং কলকাতা ও তার আশপাশের অঞ্চলে স্থায়ী হন।
আগমনের পটভূমি
১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধের পর, বাংলায় ব্রিটিশ আধিপত্য বৃদ্ধি পায়। এই নতুন শাসন কাঠামো ইউরোপ এবং পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন জনগোষ্ঠীকে আকৃষ্ট করে। এর মধ্যেই আসে ইহুদি বণিকেরা, যাদের অনেকে ছিলেন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত বাণিজ্য উদ্যোগের অংশীদার। তাঁরা মূলত আলিপুর, চিটপুর ও কলকাতা শহরে বসবাস শুরু করেন।
ব্যবসা ও প্রভাব
ইহুদি বণিকরা বাংলার বাণিজ্যে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে সক্রিয় ছিলেন:
রত্ন ও বস্ত্র বাণিজ্য: পশ্চিম এশিয়া থেকে রত্ন এবং রেশম আমদানি করে তা বাংলার বাজারে ছড়িয়ে দিতেন।
নৌপথ বাণিজ্য: হুগলি নদীপথ ধরে কলকাতা-চন্দননগর-শ্রীরামপুরে তাঁদের নৌবহর চলাচল করত।
ইংরেজদের সঙ্গে অংশীদারিত্ব: ইহুদি বণিকরা অনেক সময় ইংরেজ বণিকদের অনুবাদক, মধ্যস্থতাকারী বা অংশীদার হিসেবেও কাজ করতেন।
বিশেষ করে ডেভিড ইজাক এবং মোশে রাহামিম নামের দুই বণিক ছিলেন যাঁরা কলকাতায় ইহুদি সম্প্রদায়ের ভিত্তি গড়ে তোলেন বলে জানা যায়।
সমাজ ও সংস্কৃতি
ইহুদি বণিকদের প্রভাবে কলকাতায় গড়ে ওঠে প্রথম ইহুদি উপাসনালয় (Synagogue) — Neveh Shalom ১৮৫৬ সালে, যদিও তার পূর্বে ঘরোয়া উপাসনার চল ছিল। তাঁরা নিজেদের ভাষা ও রীতিনীতি ধরে রেখেও স্থানীয় সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেন।
তবে সংখ্যায় তাঁরা কখনোই বিশাল ছিলেন না। ইহুদি পরিবারগুলো ছোট ছিল, এবং অনেকেই পরবর্তীকালে বোম্বে, লন্ডন বা জেরুজালেমে চলে যান।
ইতিহাসে অনুল্লেখিত এক অধ্যায়
বাংলার ইতিহাসের মূলধারায় ইহুদি বণিকদের কথা খুব কমই আলোচিত হয়। এর কারণ হতে পারে তাঁদের ছোট পরিসরের বসবাস, ভাষাগত ও ধর্মীয় ভিন্নতা, এবং পরে চলে যাওয়ার ধারা। তবে তাঁদের অবদান অস্বীকার করা যায় না — তাঁরা ছিলেন বাংলার বাণিজ্যিক বৈচিত্র্যের এক নিঃশব্দ বাহক।
আঠারো শতকের বাংলায় ইহুদি বণিকদের উপস্থিতি ইতিহাসের এক মূল্যবান অথচ অবহেলিত অধ্যায়। তাঁদের কথা মনে রাখা মানে বাংলার বহুজাতিক, বহু-ধর্মীয় এবং বহুবর্ণ বাণিজ্য-ঐতিহ্যকে সম্পূর্ণরূপে বোঝা। আজ যখন আমরা বৈচিত্র্যের কথা বলি, তখন এই ইহুদি বণিকদের স্মরণ করাই যথার্থ।
১০ ই জুলাই, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৩
কিরকুট বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ !
আপনাকে নতুন কিছু জানাতে পেরে আনন্দিত হলাম ।
২| ১০ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ১০:১৯
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: ইহুদিরা বাণিজ্যে ঝানু, কুটনীতিতে পটু। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো এরা প্রচন্ড বিশ্বাসঘাতক।
১০ ই জুলাই, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৪
কিরকুট বলেছেন: মজার ব্যাপার শোনেন , ইহুদীরা বিশ্বাস করে মুসলিমরা বিশ্বাসঘাতক ।
৩| ১০ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ১১:০৪
জুল ভার্ন বলেছেন: গুড পোস্ট।
১০ ই জুলাই, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৪
কিরকুট বলেছেন: মাঝে মাঝে আমি ভালই পোস্ট শেয়ার করি ।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১২:১৫
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আমি এদের বিষয়ে আপনার থেকে জানলাম।