![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষ, আমি বাঙালি। আমার মানবিকতা, আমার সংস্কৃতির উপর আঘাত হানতে চাওয়া, ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাওয়া প্রাণী মাত্রই আমার কাছে পিশাচ। আমার দেশের উপর আঘাত হানতে চাওয়া প্রাণীদের পালনকারী, প্রশ্রয়দানকারী মাত্রই আমার কাছে পিশাচ, রাক্ষস। হোক সে যে কোনো সাম্প্রদায়িক কিংবা ঢেঁড়স চাষ পরামর্শক।
মৃত্যুর পরের জীবন, রুহের অবস্থা, কবরের জীবন — এই বিষয়গুলোতে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। বিশেষ করে আমাদের সমাজে একটি কথা খুব প্রচলিত হয়ে গেছে,
মৃত্যুর পরে ভাই-বোনেরা আর একে অপরকে চিনতে পারবে না, দেখা-সাক্ষাৎ হবে না।
এই বক্তব্য অনেক সময় কথিত হাদিস, লোককথা বা সংস্কৃতির বিভ্রান্ত ধারণা থেকে এসেছে। কিন্তু কোরআন, সহীহ হাদিস এবং ইসলামি স্কলারদের বর্ণনায় এই কথার সত্যতা নেই। বরং, ইসলামি দলিল-প্রমাণ থেকে স্পষ্ট হয় যে, মুমিন রুহরা মৃত্যুর পরে একে অপরকে চিনতে পারে, দেখা হয়, এমনকি খবরও নেয়।
সহীহ হাদিসের ভিত্তি
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ الأرواح جنود مجندة، فما تعارف منها ائتلف، وما تناكر منها اختل
"রুহসমূহ এক প্রকার সেনাদল। যারা পারস্পরিক পরিচিত, তারা একত্রিত হয়। আর যারা অপরিচিত, তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।"
সহীহ বুখারি: ৩১৫৮, সহীহ মুসলিম: ২৬৩৮
এই হাদিসের ব্যাখ্যায় ইসলামি স্কলাররা বলেন, দুনিয়াতে যেসব রুহদের মধ্যে সৌহার্দ্য ও পরিচয় ছিল, তারা মৃত্যুর পরে কবরের জগতে একত্রিত হয়।
ইবনে কায়্যিম (রহ.)-এর বক্তব্য
ইবনে কায়্যিম (রহ.) তার প্রসিদ্ধ গ্রন্থ 'আর-রুহ'-এ লিখেছেনঃ মৃত রুহরা একত্রিত হয়, একে অপরকে চিনতে পারে এবং খবর নেয়। নেককারদের রুহ একত্রিত হয়ে আনন্দ পায়।
সূত্র: ইবনে কায়্যিম, 'আর-রুহ', পৃষ্ঠা ১৭-১৯
এখানে বোঝা যায়, মুমিন ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজনের রুহ একত্রিত হয়ে পারস্পরিক অবস্থা জানতে পারে।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেনঃ তাদের অন্তর থেকে বিদ্বেষ তুলে দেব, তারা ভাইয়ের মতো জান্নাতে মুখোমুখি বসে থাকবে।
সূরা হিজর: ৪৭
তাফসীরকারগণ বলেন, দুনিয়াতে যারা ঈমান নিয়ে মারা যাবে, তারা পরকালে জান্নাতে ভাই-বোনের মতো মিলিত হবে। রুহের জগতেও মুমিনদের মধ্যে এধরনের সৌহার্দ্য দেখা যায়।
সাহাবি ইবনে আব্বাস (রা.)-এর বর্ণনা
ইবনে আব্বাস (রা.) বলেনঃ যখন কেউ মারা যায়, তার আত্মীয়-স্বজনের রুহ তার সাথে সাক্ষাৎ করে এবং জিজ্ঞেস করে, দুনিয়ায় আমাদের পরিচিত অমুক ব্যক্তি কেমন আছে? মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, তাবারানি
ভ্রান্তি ও জাল হাদিস সম্পর্কে সতর্কতা
আমাদের সমাজে কিছু দুর্বল ও জাল হাদিস চালু আছে, যেমন:
"মৃত্যুর পর আত্মীয়স্বজনের রুহ একে অপরকে চিনবে না।"
"মৃতরা ৭ দিনে পরিবারের কাছে ফিরে দেখে যায়।"
এ ধরনের বক্তব্যের কোনো সহীহ দলিল নেই। বরং এগুলো ভিত্তিহীন লোককথা।
মুমিন বনাম পাপীর রুহের অবস্থা
মুমিনদের রুহ একত্রিত হওয়ার কথা যেমন হাদিসে এসেছে, পাপীদের রুহ নিয়ে স্পষ্ট হয়েছে যে,
ফাসিক ও কাফেরের রুহকে নিচু স্তরের জায়গায় পাঠানো হয়, তারা সেখানে বন্দী থাকে। সূরা মুত্তাফিফীন: আয়াত ৮-৯
তাদের রুহ বিচ্ছিন্ন, তাই দেখা-সাক্ষাত বা মিলনের সুযোগ কম।
মৃত্যুর পরে মুমিন ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজনদের রুহ একত্রিত হতে পারে, একে অপরকে চিনতে পারে।
কবরের জগত ও রুহের জীবন দুনিয়ার মতো নয়, বরং রুহানিয়াতের বিষয়।
দুনিয়ার ভাই-বোন সম্পর্ক পরকালে টিকিয়ে রাখতে চাইলে ঈমান ও নেক আমল অপরিহার্য।
বিভ্রান্তি এড়াতে সবসময় কোরআন-সুন্নাহ ও সহীহ হাদিসকেই ভিত্তি করতে হবে।
মৃত্যুর পর সম্পর্ক টিকে থাকে ঈমানের উপর। তাই এই দুনিয়ায় ভাই-বোনদের মাঝে ইসলামি আদর্শ, পরকালীন জীবন ও নেক আমলের চর্চা বজায় রাখাই হবে প্রকৃত বুদ্ধিমানের কাজ।
রেফারেন্স তালিকা
১. সহীহ বুখারি: ৩১৫৮
২. সহীহ মুসলিম: ২৬৩৮
৩. ইবনে কায়্যিম, 'আর-রুহ', পৃষ্ঠা ১৭-১৯
৪. মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা
৫. সূরা হিজর: আয়াত ৪৭
৬. সূরা মুত্তাফিফীন: আয়াত ৮-৯
২| ১৮ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১১:৩৯
কামাল১৮ বলেছেন: স্ত্রীর সাথেও দেখা হয়।মেলামেশা করা যায়।তবে ইহকালের মতো মঝা নাই।
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:৩১
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: পড়লাম ।