![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বায়ুদূষণের ধোঁয়াশার আড়ালে
========================
সিডর বা আইলা যেখানে সুন্দরবনের সৌন্দর্যে বিরূপ প্রভাব ফলাতে পারেনি, রামপাল কখনো সুন্দরবনকে ধ্বংস করতে পারবে, এমনটা মনে হয় না। কয়লা পোড়ানোতে যে মাত্রায় বায়ুদূষণ হয়, তা’ তো আমাদের লোকালয়ের মধ্যে অবৈধ অনুমোদনে গড়ে ওঠা ইটভাটার মাধ্যমেই হচ্ছে। দূষিত বায়ু বাতাসে উড়ে উড়ে অস্ট্রেলিয়ার বিশাল বনাঞ্চলে চলে যায়, আর সেখানে তো স্মরণকাল থেকেই প্রাকৃতিকভাবে মাঝেমধ্যেই দাবানলে বন পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার নিয়ম রয়েছে। সেই আগুনে ক্যাঙ্গারু মরে, দলে দলে ভেড়াও মরে। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার্থে প্রকৃতির সাথে অস্ট্রেলিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতাও করা হয়। এই তো সেদিনও, সমরাস্ত্র ব্যবহার করে প্রচুর পরিমাণে ভেড়া নিধন করা হলো অস্ট্রেলিয়ায়। আমরা যদি আমাদের একটিমাত্র ক্যাপিট্যাল সিটি ঢাকার দিকে দৃষ্টি ফেরাই, দেখবো যে, দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে নিতান্তই ঠেকায় প’ড়ে বাধ্য হয়েই নিত্য স্বল্পক্ষণস্থায়ী লোকেদের ভিড়ে এবং ভারেই আজকের ঢাকা ভারাক্রান্ত। যানজটে যে-পরিমাণে জ্বালানি তেল গ্যাস পোড়ে, তিন মিনিটের পথে তিনঘণ্টার জ্বালানি পোড়ানোতে যে মাত্রায় বায়ুদূষণ ঘটে, তাতে যদি রমনা পার্ক বা সোহ্রাওয়ার্দি উদ্যান আজও ধ্বংস না-হয়, আমরা সরল গাণিতিকভাবেই ভেবে নিতে পারি, সেই তুলনায় ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র রামপালের বায়ুদূষণে বর্তমানের হরিণ-বাঘ-কাঠ-চোর বনদস্যুদের আধিপত্য কিছুটা যদি কমে, তা’ হয়তোবা কমতেও পারে, তবে বিশাল সুন্দরবন তার বিশালত্ব নিয়েই সুরক্ষিত থেকে যাবে।
(বন্য জন্তুর চামড়া পাচারের সাথে যারা জড়িত, যারা সস্তায় চোরাই কাঠ কিনে নিয়ে চোরদেরকে লালন করছে নিজেদের বিশাল লাভের অবৈধ বাণিজ্যের স্বার্থে, সুন্দরবনে জনসাধারণের চলাফেরাকে তারা সহজে মেনে নিতে পারে না শুধু এজন্যেই যে, বনদস্যুরা না-থাকলে তাদের দলীয় অবৈধ কারবার থেমে যাবে।)
আমরা তো মনে করি, বিশাল সুন্দরবনের স্থানে স্থানে সুপরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হলে ক্যাপিট্যাল সিটি ঢাকা অনেকাংশে দূষণমুক্ত হয়ে মানুষের বাসযোগ্য হবে।
আমাদের যেমন সমুদ্রসীমা আছে যেখানে প্রতিদিন পরিষ্কার লবণাক্ত পানির জোয়ার আসে আর ভাটার টানে ময়লা আবর্জনাগুলো চলে যায় গভীর সমুদ্রে, তেমনি আছে আমাদের এমন অনেক শিল্প কারখানা যেগুলোর রাসায়ানিক বর্জগুলোর পরিশোধন কেবল সমুদ্রেই সম্ভব।
গার্মেন্টস, চামড়া, অষুধ, জৈব-অজৈব-এসিড-ক্ষার-এ্যালডেহাইড ইত্যাদির কারখানা থেকে বেরিয়ে আসা ফসলি ভূমি নষ্টকারী জীবন ধ্বংসকারী রাসায়ানিক উদ্গিরণে ঢাকার আবদ্ধ জলাশয়গুলো এখন দুর্গন্ধময়।
(ইউরেনিয়াম আমাদের খনিজ সম্পদ নয়। বিশাল মরুভূমির মতো কোনো জনশূন্য ভূখণ্ড আমাদের নেই, যদি থাকতো তবুও কাঁচামালের জন্যে পরনির্ভরতা আমাদের কাম্য নয়। পরমানু বিদ্যুৎ প্রকল্প নিঃসন্দেহে চরম ঝুঁকিপূর্ণ। এটাকে আমরা কোনোভাবেই সমর্থন জানাতে পারি না।)
মুষ্টিমেয় কিছু অস্থায়ী অপরিণামদর্শীর অবৈধ অনুমোদনে গড়ে ওঠা অপরিকল্পিত কারখানাগুলো ঢাকাকে যেভাবে বসবাসের অযোগ্য করে ফেলেছে, ওগুলোকে না-সরানো পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি ভোগান্তি থেকে এদেশবাসীর মুক্তি নেই।
সুন্দরবনকে অক্ষত রেখেই সুন্দরবনের এক তৃতীয়াংশে যেমন সুপরিকল্পিতভাবে শিল্প-কারখানাগুলো গড়ে তোলা যেতে পারে, তেমনি জনস্বার্থেই এদেশের বিভিন্ন অধিদপ্তর, সচিবালয় এবং মন্ত্রণালয়গুলোকে ক্যাপিট্যাল সিটি ঢাকাতে গুটিয়ে না-রেখে বিভিন্ন জেলাতে স্থাপন করা যেতে পারে এবং এতে কোনো ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণ করার প্রয়োজন হবে না। যত খাস জমি অবৈধ দখলদারদের দখলে আছে, সেগুলোকে চিহ্নিত করার জন্যে রাষ্ট্রের বেতনজীবী কর্মী (সিভিল সার্ভেন্ট)-দের দায়বদ্ধতা-ই যথেষ্ট।
গণকরণিক : আখতার২৩৯
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:০৩
ম্যাংগো পিপল বলেছেন: পাগলামীরও একটা সিমা আছে !!
দেশে কি যায়গার এতই অভাব পরছে যে সুন্দরবনে তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র বানাতে হবে ? আর কোন যায়গা চোখে পরে না ?