![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গণ-বিনিয়োগে প্রতিবন্ধকতা # (‘কয়লা-বিদ্যুৎ’ প্রযুক্তি)
================================
(কোনোখানে কোনো ধরণের ভিক্ষা বা চাঁদা তুলে নয়, কিম্বা চড়াসুদে কোনো বৈদেশিক ঋণ সহযোগিতার মাধ্যমেও নয়, বরং নিজেদের অর্থব্যয়েই সম্ভব। যাদের অর্থ বিনিয়োগে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে, তারা এদেশের জনসাধারণ, তারা বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে তোলা মূল্য থেকে একটা লভ্যাংশ পেতে থাকবে, এমন একটা ব্যবস্থাই প্রত্যাশিত।)
ভিক্ষা, দান বা অনুদানের দীর্ঘস্থায়ী কুফল ইতোমধ্যেই প্রমাণিত। ত্রাণ বা করুণায় প্রাপ্ত অর্থ কেবল বাজার-ব্যবস্থাকেই ভারসাম্যহীন করে না, সার্বজনীন উন্নয়নকেও চরমভাবে বাধাগ্রস্থ করে। অযোগ্যরা বিশাল বেহিসেবি প্রতিপত্তির সাময়িক দখলদারি পায় এবং লেজে-গোবরে একাকার হয়ে অযোগ্যরা অনিয়ন্ত্রিত প্রাচূর্যের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়। কর্মদক্ষরা অবমূল্যায়িত হয় এবং অসচ্ছলতাকে মেনে নিলে যোগ্যরা কোণঠাসা হয়ে পড়ে, আর, মেনে নিতে না-পারলে যোগ্যরা অবৈধ উপার্জনের দিকে প্রলুব্ধ হয়ে ছোটে। এমনও দেখা গেছে, কেউ কেউ আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়েছে, ঘৃণ্য চৌর্যবৃত্তি ছেড়ে দিয়ে তার চে’ও ঘৃণ্যতর পেশা, ভিক্ষাবৃত্তিকে তারা বেছে নিয়েছে; প্রকাশ্যেই তারা নিকৃষ্টতম অভিজাত-ভিখারিগুলোর সহযোগী হয়েছে।
এদেশে উন্নয়নের নামে, স্মরণকাল থেকে আজ পর্যন্ত, যত ভিক্ষা বা চাঁদা, দান বা অনুদান রূপে এসেছে, সবই মুষ্টিমেয় কয়েকটা অভিজাত-ভিখারি নরাধমের ঝুলিতে ঢুকেছে, আর, ফলাফলে ঝুলির আকৃতির সাথে সাথে ঝুলির মুখটাও যেমন বড় হয়েছে, তেমনি অবৈধ অপরিকল্পিত অনিয়ন্ত্রিতভাবে নির্মীয়মাণ বহুতল ভবনের নিত্যবর্ধনশীল ভারে ভারাক্রান্ত ক্যাপিট্যাল সিটি ঢাকাকে, যেকোনো সময়ে ভূগর্ভস্থ হওয়ার সম্ভাবনার দশায় পৌঁছিয়ে দিয়েছে। ভিক্ষারূপে পাওয়া কোনো অর্থ কখনোই এদেশের উন্নয়নে কাজে লাগেনি, উপরন্তু, ভিক্ষালব্ধ সকল সম্পদ অভিজাত-ভিখারিগুলোর ঝুলিতে ঢুকানোর আয়োজনের জন্যেও যে বিশাল পরিমাণের ব্যয় হয়েছে, সেই ব্যয়টাও রাষ্ট্রের ধনভাণ্ডার থেকেই করা হয়েছে।
কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রযুক্তি চালু হ’লে পরে, ঐ বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে অবশ্যই মূল্য আদায় করা হবে, যা’ কেবল বিদ্যুৎ উৎপাদন কারখানার নির্মাণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়কেই মিটিয়ে দেবে না, রাষ্ট্রের জন্যে সামষ্টিক লাভও ততদিন পর্যন্ত পাওয়া যাবে, যতদিন জ্বালানি কয়লার সরবরাহ থাকবে এবং ঐ প্রযুক্তিটাকে টিকিয়ে রাখা যাবে। চলমান কারখানার অর্জন থেকে কিছুটা লভ্যাংশ যদি দেশীয় বিনিয়োগকারীরাও অংশীদার হিসেবে পেতে থাকে তো, --অন্যায় কিছু দেখি না।
সাধারণ খেটে-খাওয়া কর্মজীবীরা তাদের উপার্জন থেকে কিছু বিনিয়োগ ক’রে লাভবান হবে, অসচ্ছলতা থেকে জনগণ কিছুটা হ’লেও সচ্ছলতার দিকে যাবে, কোনো ত্রাণখোর ভিক্ষাজীবী তা’ সহজে মেনে নিতে চাইবে না, যেমনটা দেখা গেছে পদ্মাসেতু নির্মানে প্রস্তাবিত শেয়ার না-ছাড়াতে। সমস্ত শেয়ার, চড়ামূল্যে হ’লেও, অভিজাত-ভিখারিরা নিজেদের দখলেই নিতে চাইবে, নইলে, ‘কয়লা-বিদ্যুৎ’ উৎপাদনের উদ্যোগকে তারা এবং তাদের ক্রীতদাসেরা যেকোনো ভাবে বিলম্বিত করার চেষ্টা চালাবে, এ ব্যাপারে আমরা প্রায় শতভাগ নিশ্চিত।
‘কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রযুক্তি’ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে শেয়ার ছাড়ার বন্দোবস্ত করতে চাইলে, দায়িত্বপ্রাপ্তদের অবৈধ ব্যক্তিক বা দলীয় লাভের লোভ বর্জন করতে হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত মুষ্টিমেয় কয়েকজন আমরা লোভের বশে আগের মতো চাইলে আমাদের গোঁয়ার্তুমি চালিয়ে যেতে পারি, তবে কোনো অমান্যকারী গোঁয়ারকেও কীভাবে লোভ বর্জন করাতে হয়, জনগণের তা’ জানা আছে। কেউ তার লোভটাকে স্বেচ্ছায় বর্জন করতে না-চাইলে, রাষ্ট্রের মালিক বা অভিভাবক সাধারণ জনগণ, কিভাবে কী করতে হবে তা’ জনসাধারণ ভালোভাবেই জানে। জনসাধারণ এখানে কখনোই হুজুগেও নয়, দুর্বলও নয়, বরং সভ্য ভদ্র, এবং চূড়ান্তভাবে পাওনা উসুল করার জন্যে তারা ক্ষমাহীনতা দেখানোর আগে যথেষ্ট ধৈর্য ধারণ করে। পাওনাদারের প্রাপ্য মিটিয়ে না-দিয়ে কেউ পালিয়ে বাঁচতে পারে না।
সমন্বিত জনসাধারণের বেশিরভাগের যা’ চাওয়া, সেটাই সকলের চাওয়া হিসেবে সম্মানিত হয় গণতন্ত্রে। সবখানেই বড় অংশটির চাওয়াটা গ্রহণযোগ্য হিসেবে প্রাধান্য পাওয়াটাই প্রকৃতির অনন্য অভিন্ন বিধান।
গণরোষের চিরাগত পরিণতি, ঐতিহাসিক সাক্ষীরূপী কিছু নীরব ধ্বংসাবশেষ। আত্মমর্যাদাবোধ যাদের মধ্যে জাগ্রত, কখনোই তাদেরকে ঘৃণিত ধ্বংসাবশেষের উপাদান বানানো সম্ভব নয়। দায়িত্বপ্রাপ্তদের অবৈধ ব্যক্তিক বা দলীয় লাভের লোভ বর্জন করার জন্যে, বিবেচকের আত্মসম্মানসূচক সদিচ্ছাটুকুই যথেষ্ট।
গণকরণিক : আখতার২৩৯
©somewhere in net ltd.