নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অপ্রিয়বক্তা।

অন্তর্জাল পরিব্রাজক

অসাধারণ নই, সাধারণ এক মানুষ।

অন্তর্জাল পরিব্রাজক › বিস্তারিত পোস্টঃ

কেন এই অবস্থা? কি এমন হলো?

০৭ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ৯:৫৩




বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে তো কতো কথাই শুনি। আমরা নাকি বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল, সামনের দিনে আরেক সিঙ্গাপুর, নাহয় মালয়েশিয়ার মতো হতে চলেছি। দেশের জিডিপি বেড়েছে, মাথাপিছু আয়ও নাকি বেড়েছে, বেড়েছে আমাদের রিজার্ভের পরিমাণ, ওদিকে নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু হয়েছে, এদিকে মেট্রো রেল হচ্ছে, চিটাগাঙ্গে কর্ণফুলীর তলদেশ দিয়ে নাকি দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল হচ্ছে, ব্রিজ – কালভার্ট থেকে শুরু করে কতো কিছু কতো উন্নয়ন হচ্ছে এসব খবর অহরহ দেখতে হয়।
দেখে মনে হয় সব তো ভালোই চলছিলো। কিন্তু তারপরও হঠাৎ কি হল ?
না, আসলে ভালো চলছিলো না সবকিছু। বছরের পর বছর ধরে ভায়াবহ দুর্নীতি এবং অর্থনৈতিক খাতে লুটপাট, শেয়ার বাজার আর ব্যাংক খাতে কেলেঙ্কারি, অর্থ পাচার আর তার সাথে জড়িত নানা ক্ষমতাশালীদের রাজনৈতিক দুর্বৃত্তপনা আর ইতরামি ভুলে যাওয়া যায় না, ইগনোর করা যায়না।

এতো এতো যে দুর্নীতি আর লুটপাট হচ্ছে দেশে এর একটা বড় প্রভাব আছে সরকারের ওপর। যেমন সরকারের আয় কমে গেছে। রিজার্ভ বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু উচ্চভিলাষী বাজেট এর ঘাটতি পূরণ তো করতে হবে। ডলারের দাম বেড়েছে। রপ্তানি আয় বাড়লেও আমদানি ব্যয় আরও বেশী বেড়ে গেছে। এখন সরকারের হাতে এতো টাকা নেই যে উচ্চভিলাষী বাজেট এর ভার পূরণ করতে পারবে। এমন অবস্থায় ঋণ দরকার। ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেটে ঘাটতি পড়ে যাচ্ছে ২ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকার বেশী। সরকার আশা করছে বিদেশী উৎস থেকে ৯৮ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। বাকি রয়ে যাচ্ছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা যার মধ্যে দেশের মধ্যে বিদ্যমান ব্যাংকগুলো থেকে নেয়া হবে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। তাহলে বাকি টাকা আসবে কোথা থেকে? হ্যাঁ, আর এই বাকি টাকাগুলোই নেয়া হবে দেশের এই জ্বালানি তেলের দামের বর্ধিতাংশ থেকে। এজন্যই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো !! সরকার এখন আই এম এফ এর ঋণ নিতে তাদের দ্বারস্থ হয়েছে। কারণ, তাকে তো সঙ্কট সামাল দিতে হবে। এখন আই এম এফ তো আর এতো সহজে ঋণ দেবে না। তাদের ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে কিছু নীতি আছে। তাদের মধ্যে একটা হচ্ছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি আর কৃষি খাতে সরকারী ভর্তুকি বাদ দিতে হবে।
এদিকে আবার শুরু হয়েছে পুরনো সেই উপদ্রব। বিদ্যুতের ঘাটতি। চাহিদা অনুযায়ী এখন আর বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না সরকার। সুতরাং লোডশেডিং করতে হচ্ছে।


দেশের পলিটিক্যাল সিস্টেম পুরোটাই এখন হয়ে গেছে ফ্যাসিবাদী। কোনও কার্যকর গণতন্ত্র নেই। কোনও শক্তিশালী বিরোধী দল নেই। রাজনৈতিক ভারসাম্য যে বজায় থাকবে তার জন্য কোনও জবাবদিহিতা নেই। যদি থাকতো এসব তাহলে সরকার তার যা খুশি তাই করার আগে দশবার ভাবতো। কারণ তার তখন একটা পাল্টা প্রতিক্রিয়া বা রিপারকেশনের একটা ভয় থাকতো। এখন যে অবস্থা তাতে কোনও সরকার তার খেয়াল খুশি মতো এরকম কোনও পদক্ষেপ নিতে বা বাস্তবায়ন করতে দ্বিতীয়বার ভাববে না। কারণ তার ন্যুনতম কোনও ভয় নেই।
অন্যদিকে যা খবর পাচ্ছি তাতে করে দেখা যায় যে দেশের বৈদেশিক ঋণ শোধ করা পুরোদমে শুরু হবে ২০২৪ সাল থেকে। তখন আসবে আরও বড় চাপ। এখনই দেশের অর্থনীতির এই অবস্থা তখন সামনের দিনের ঐ ধাক্কায় তার প্রতিক্রিয়ায় দেশের অর্থনীতির কি হাল হতে পারে সেটা আর বিস্তারিত ব্যাখ্যার কিছু নেই।

ও হ্যাঁ, আরেকটি সুখবর দেই। গ্যাস কিন্তু ফুরিয়ে আসছে আমাদের। ২০৩০ এর মধ্যেই গ্যাস এর মজুদ সম্পূর্ণ শেষ হয়ে আসবে। এখন যেসব গ্যাস ক্ষেত্র আবিস্কার হচ্ছে এগুলোর রিজার্ভ খুব উল্লেখযোগ্য নয়। আর আমাদের দেশের যতো বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে তার প্রায় ৮০% ই হচ্ছে গ্যাসবিদ্যুৎ। নতুন যে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো তৈরি হচ্ছে সেগুলো (পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ) এই বিশাল চাহিদা পূরণ করতে পারবে কিনা সেটা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করা খুব কঠিন।



বাংলাদেশ আগামী দিনের এশিয়ার টাইগার, একদিন বাংলাদেশ মালয়েশিয়া হবে, সিঙ্গাপুর হবে এসব ছেলেভুলানো ছড়া যদি বিশ্বাস করতে চান তাহলে নিজ দায়িত্বে করবেন!!






মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১০:২২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বাড়তে দেন!
তবে বেশী বাড়া ভালো না,
ঝড়ে পরে যাবে!

০৮ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ৮:০৬

অন্তর্জাল পরিব্রাজক বলেছেন: আমি বাড়তে দেয়ার কেউ নই, ভাই। এরা যা সিস্টেম বানাইসে তাতে এরা নিজেরাই বাড়তেসে আর দেখা যাক শেষ পর্যন্ত সত্যিই ঝড় উঠে কি না !!

২| ০৮ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ৩:৪১

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য আমলাকামলাদের গাড়িবাড়ি কেনার জন্য লোন টোনসহ প্রচুর সুযোগ সুবিধা দিয়েছে। আলমাকামলারা গাড়ি কিনেছে, দেশের বাইরে বাড়ি করেছে। ফলে রিজার্ভের বারোটা বেজেছে।

০৮ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ৮:০৮

অন্তর্জাল পরিব্রাজক বলেছেন: লাগামছাড়া লুটপাট চলেছে এদের আর তার মুল্য চোকাতে হচ্ছে আমাদের ।

৩| ০৮ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:২৬

অনন্য দায়িত্বশীল আমি বলেছেন: সিংগাপুরের মানুষ চ্যাপ্টা হয়ে যাচ্ছে।

০৮ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ৮:১০

অন্তর্জাল পরিব্রাজক বলেছেন: নকল সিঙ্গাপুর তো তাই!! ঘুমিয়ে বিশাল বিশাল স্বপ্ন দেখছিল, এখন ঘুম ভেঙ্গে দেখে তার দশা এখন ....

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.