![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সমালোচনা একটি অপরিহার্য অংশ, কিন্তু এনসিপি (ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি) যেভাবে তাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলছে, তা ক্রমশ 'ন্যাশনাল ক্যাচাল পার্টি'-র দিকে ধাবিত হচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে। তাদের কার্যকলাপ ও বক্তব্যের ধরণ দেখে অনেকে তাদের সিপি গ্যাং-এর সাথে তুলনা করছেন। লক্ষণীয়ভাবে, তারা দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে শুধু জামায়াত ছাড়া সব দলের সিনিয়র রাজনীতিবিদদের নিয়ে উস্কানিমূলক মন্তব্য করছে। এই প্রবণতা, যা বাংলাদেশের রাজনীতিতে আগে খুব একটা দেখা যায়নি, উদ্বেগজনক।
এনসিপির নিজস্ব রাজনৈতিক প্রজ্ঞার অভাব স্পষ্ট। তারা তাদের তথ্যের জন্য মূলত বিশিষ্ট ইউটিউবার পিন-য়াস-এর মতো ব্যক্তিদের ওপর নির্ভর করে, যা তাদের বক্তব্যের মৌলিকত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। গোপালগঞ্জের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই তারা এবার কক্সবাজারের চকরিয়াতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এনসিপির নেতা নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী ওরফে ডার্বি নাসির স্থানীয় বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। ডার্বি নাসিরকে এখন টকশোতে আর দেখা যায় না, কারণ তিনি সমানে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, এমনকি জামায়াতকেও "দিল্লীর এক্সটেনশন" বলে আখ্যায়িত করছেন। নাসিরসহ এনসিপির আরো কয়েকজন নেতার মুখের ভাষা শালীনতার মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
এনসিপি গণসংযোগের জন্য পদযাত্রা করছে, যা একটি রাজনৈতিক দলের স্বাভাবিক কার্যক্রম। তবে যে এলাকায় যাচ্ছে, সেখানকার স্থানীয় নেতাদের সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য করা তাদের অপরিণামদর্শীতা প্রমাণ করে। মিটফোর্ডের ঘটনায় দেখা গেছে, এনসিপি এবং 'গুপ্ত বাহিনী' বিএনপির নেতাদের নামে এমন সব কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছে, যা কখনো আওয়ামী লীগকেও বলতে শোনা যায়নি। কক্সবাজারে গিয়ে ডার্বি নাসির মন্তব্য করেছেন যে, ভারতের শিলং থেকে নাকি একজন "গডফাদার" এলাকা দখল করে চাঁদাবাজি করছে এবং সে "পিআর বোঝে না"। তিনি এলাকাবাসীকে সেই গডফাদারকে রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মূলত বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদকেই উদ্দেশ্য করে ডার্বি নাসির এমন মন্তব্য করেছেন, যা স্বভাবতই স্থানীয় লোকজন ও বিএনপি সমর্থকদের ক্ষুব্ধ করেছে।
সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে এনসিপি দীর্ঘদিন ধরেই জল ঘোলা করার চেষ্টা করছে। উনাকে আগামিতে বিএনপির মহাসচিব হওয়ার দৌড়ে অন্যতম শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে দেখা হচ্ছে। এনসিপির তাসনুভা জেবিন এক সপ্তাহ আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করেন যে, সালাহউদ্দিন আহমেদ নাকি ভারতে গুম হননি, বরং "দিল্লীর দাসত্ব" কিভাবে করা যায়, তার প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিলেন। এনসিপি এই তথ্য পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বীর্যে জন্ম না হওয়ায় দুঃখপ্রাপ্ত ইউটিউবার ইলিয়াস থেকে ধার করেছে । সনাতনি মওলানা পিনাকী ইলিয়াসের এই বয়ানকে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। অথচ সালাহউদ্দিন সাহেব নিজেই গুম কমিশনে এ সংক্রান্ত অভিযোগ জমা দিয়েছিলেন। মজার বিষয় হলো, পিনা-য়াস এবং এনসিপি তাদের 'লুচ্চা গুরু' ফরহাদ মজহারের গুম নিয়ে প্রশ্ন তোলে না, বরং নীরব থাকে। মনে হয় অর্চনার কাহিনী তারাও জানে। ফরহাদ মজহার এখনো গুম কমিশনে অভিযোগ দেননি, আর এনসিপি এ বিষয়ে কোনো কথা বলে না - গুরু বলে কথা !
এনসিপির নেতা বন্দর মাসুদ এখন অভিযোগ করছেন যে, বিএনপি তাদের সমাবেশ করতে দিচ্ছে না এবং তাদের পাড়ায় ঢুকলে ঠেংখোঁড়া" করে দেয়ার হুমকি দিতেসে । সে এমনকি বিএনপির পরিণতি আওয়ামী লীগের মতো হবে বলেও হুশিয়ারি দিয়েছে । গোপালগঞ্জের ঘটনার পর এই ঘটনায় তিনি "এ অবস্থায় কিসের নির্বাচন" এমন মন্তব্য করা কেবল বাকি রেখেছেন। আসলে দেশের মানুষ মোটামুটি বুঝে ফেলেছে যে, তারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে এমন কাজ করছে। দেশের প্রতিটি জেলার স্থানীয় নেতাদের নামে কুৎসা রটিয়ে তারা গায়ে পড়ে ঝগড়া করবে, আর জনতা ধাওয়া দিলে বলবে দেশের পরিস্থিতি খারাপ এবং জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার মতো "লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড" তৈরি হয়নি।
বিশিষ্ট সমালোচক বদরুদ্দিন উমর এনসিপি সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন যে, এনসিপির বক্তব্যে শ্রমিক, কৃষক, দিনমজুর ও জাতিকে স্বপ্ন দেখাবে এমন কিছু নেই। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে, তারা ইসলামিক রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে জোট বেঁধেছে যাতে ধর্মকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যেতে পারে। গোপালগঞ্জে এনসিপির যাওয়ার পেছনের কারণ সারজিস আলমের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়। নিষিদ্ধ দলটি যখন তাদের ওপর আক্রমণ করে, তখন সারজিস সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ট্যাটাস দেন, "দেশবাসী গোপালগঞ্জ আসুন। মুজিববাদের কবর দিয়ে জীবিত ফিরবো না হলে ফিরবো না।" এনসিপি মূলত পরীক্ষা করতে চেয়েছিল যে, জনতা তাদের এই আহবানে সাড়া দেয় কিনা। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ এতটা "পাগল" হয়নি যে তাদের এই বক্তব্যে সাড়া দেবে। পদযাত্রায় তাদের যে জনপ্রিয়তা দেখা যাচ্ছে, তা নিয়েও অনেকে সন্দেহ করছেন, কারণ অভিযোগ আছে যে, এনসিপির সমাবেশে অন্য রাজনৈতিক দলের লোক সরবরাহ করা হয়।
রাজনীতিতে শিষ্টাচার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একে অপরের কট্টর বিরোধী মতবাদ ধারণ করেও রাজনীতিবিদরা এক টেবিলে খাবার খান, যা মানুষ দেখে এবং প্রশংসা করে। এনসিপি যে সংস্কৃতি তৈরি করতে চাইছে, বাংলাদেশের জনগণ এমন ভাবধারার মানুষকে "ইচড়ে পাকা" ভাবে। দাদা, নানা, বাপ ও চাচার বয়সী লোকের সাথে বেয়াদবি বা কটুক্তি করে কথা বলা বাংলাদেশের মানুষ পছন্দ করে না। কিন্তু এনসিপির নেতারা সবাই জেন-জি প্রজন্ম থেকে উঠে এসেছে। তাদের মাঝে গালাগালি বা কটুক্তি করা একটি স্বাভাবিক বিষয়। স্কুল-কলেজের গ্রুপগুলোতে অভিভাবকরা হরদম অভিযোগ করেন যে, তাদের ছেলে বা মেয়েকে কারা যেন মা-বাবা তুলে গালি দিয়েছে। বাংলাদেশের সেরা স্কুলগুলোতেও এসব অভিযোগ অহরহ দেখা যায়, যা সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ায় জেন-জির ঘাটতির ইঙ্গিত দেয়।
এনসিপির উচিত সবার সহযোগিতা নিয়ে রাজনীতি করা। সবার সাথে ঝামেলা করতে গেলে টিকে থাকা কঠিন হবে। মুখের লাগাম টেনে ধরা এবং সিনিয়র রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে শেখা উচিত কিভাবে অন্যের সমালোচনা করতে হয়। এনসিপির মাঠের জনপ্রিয়তা প্রয়োজন। তারা কতদিন সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে রাজনীতি করবে ? প্রতিপক্ষের এলাকায় গিয়ে সমাবেশ করার মতো 'গ্রাউন্ড পপুলারিটি' লাগবে, তখন এমনিতেই সবাই সমীহ করতে বাধ্য হবে।
১৯ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১১:৪৭
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: এরা নিজেরাই নিজেদের পথ কঠিন করে তুলছে।
২| ১৯ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১১:৪৫
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: পিআর একবার অন্তত হোক।
১৯ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১১:৪৯
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনার সাথে একমত । কেবল যোগ করতে চায় ১০ শতাংশ ভোট না পেলে সংসদে সিট পাবে না।
৩| ২০ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ৯:০১
জুল ভার্ন বলেছেন: এঞ্জিও সরকারের ইন্ধনে এরা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে।
৪| ২০ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ১১:৫২
ধুলো মেঘ বলেছেন: এরা এদের পথ কঠিন করেছে সত্যি - কিন্তু এর দরকার আছে। আপনি যদি সত্যিই চোর হয়ে থাকেন, তাহলেই কেবল কেউ চোর বললে আপনার গায়ে লাগে। নিজে চোর না হলে তো আর লাগবেনা।
এন্সিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় প্রমাণ হয় যে সালাউদ্দিন এন্ড গং আসলেই কাল্প্রিট।
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১১:৪৪
অপু তানভীর বলেছেন: কথা বার্তা লাইন ঠিক না করলে এদের কপালে আসলে আরো খাবারি আছে। পথে ঘাটে মাইর খাবে আরো! কোন জায়গায় গিয়ে কোন কথা বলতে হবে এরা এখনও শেখে নি।
এরা এখনও বুঝতে পারছে না যে ২৪ এর বৈবিআ আর ২৫ এর এনসিপি এক না।