নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সূর্যের প্রথম কিরণ

আমি পৃথিবীর ছাত্র।

লেনন রাসেল

"স্বপ্নের মায়াঞ্জন আমার সংগ্রহে কখনোই থাকেনা।"

লেনন রাসেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

জার্মান এমব্যাসির স্টুডেন্ট ভিসা আপডেট ২০১৪ – বাস্তবতা এবং করণীয়

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৪৭

১লা অক্টোবর ২০১৪ থেকে জার্মান এমব্যাসি ঢাকা নতুন ভিসা রেগুলেশন দিয়েছে । এই ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনগুলো হলঃ



১, আগে আইইএলটিএস/টোফেল এর সাথে ভিসা পাওয়ার কোন সম্পর্ক ছিল না। এখন এই প্রফিশিয়েন্সি দেখাতে হবে ভিসা পেতে হলে।



২, আগে জার্মান ভাষায় যারা পড়তে যাবে তাদের জার্মান ভাষায় কোন দক্ষতা দেখাতে হত না, কিন্তু এখন যারা জার্মান ভাষায় পড়তে যাবে তাদের আগে বাংলাদেশ থেকে জার্মান ভাষার ল্যাংগুয়েজ লেভেল বি১ পাশ করে দেখাতে হবে।



৩, আগে ব্লকড একাউন্ট ভিসা ইন্টার্ভিউ এর আগে বাংলাদেশে করলে হত। এখন এই ব্লকড একাউন্ট ভিসা ইন্টার্ভিউ এর আগে জার্মানিতে কোন ব্যাংকে খুলতে হবে।







এই নিয়মের বিপরীতে প্রচুর প্রশ্ন পেয়েছি আমরা। একটি বহুল আলোচিত প্রশ্ন হলঃ কেন শুধু বাংলাদেশের জন্য এই নিয়ম করা হল? আসলে এটা একটা ভ্রান্ত ধারণা। এই নিয়ম অনেক আগে থেকে অনেক দেশেই প্রচলিত আছে/ছিল। যেমন আমাদের পাশের দেশ ভারত, শ্রীলংকা, পাকিস্তান ইত্যাদিতে অনেক আগে থেকেই ভিসা ইন্টার্ভিউ এর আগে ব্লকড টাকা জার্মানিতে পাঠাতে হত বা আইইএলটিএস/টোফেল/জার্মান ল্যাংগুয়েজ এর বাধ্যবাধকতা ছিল। বরং বাংলাদেশ এতদিন কিছুটা অতিরিক্ত সুবিধা পেয়েছে। আরেকটা প্রশ্ন হল, এই নিয়মের ফলে কি ভিসা পাওয়া কঠিন হল? আমরা বলব, না। বরং এর ফলে এজেন্সি/দালালদের দৌড়াত্ম কিছুটা হলেও কমবে এবং যোগ্য শিক্ষার্থীরাই ভিসা পাবে। তবে সবচেয়ে বিতর্কিত প্রশ্ন হল, যারা জার্মান ভাষায় পড়তে চাইছেন তাদেরও আইইএলটিএস/টোফেল লাগবে কিনা? উত্তর করার আগে আসুন আমরা দেখে নেই অন্যান্য দেশে জার্মান এমব্যাসি কী বলছে?



জার্মান এমব্যাসি শ্রীলংকাঃ



Proof of language proficiency (English or German depending on the language used in the study program







জার্মান এমব্যাসি ইন্ডিয়াঃ



Proof of language proficiency in English (TOEFL/IELTS) and/or German (if course is (partially) taught in German), not older than 2 years







তাই বলা যায় জার্মান এমব্যাসি শ্রীলংকা বা ইন্ডিয়ার মতে যারা জার্মান ভাষায় পড়তে যাবেন তাদের আইইএলটিএস/টোফেল স্কোর দেখাতে হবে কিনা তা বাধতামূলক নয় বরং বেশ কিছু ব্যাপারের উপর নির্ভরশীল।



এখন দেখা যাক জার্মান এমব্যাসি ঢাকা কী বলছে? এই লিংকে তা আছে



জার্মান এমব্যাসি ঢাকাতে আছেঃ







এখান থেকে একটি ব্যাপার পরিষ্কার যে, যারা জার্মান ভাষায় পড়তে যাবেন তাদের জার্মান ভাষার ল্যাংগুয়েজ লেভেল বি১ পাশ করার সাথে সাথে আইইএলটিএস/টোফেল লাগবে। এক্ষেত্রে একটা কথা না বললেই নয়। একটি বিশেষ মহল শিক্ষার্থীদের এই ব্যাপারে বিভ্রান্ত করছেন এবং উসকানিমূলক কথাবার্তা বলছেন। বলছেন এটা নাকি জার্মান এমাব্যাসির “প্রিন্টিং মিস্টেক”। কিন্তু জার্মান এমাব্যসি ঢাকা এরকম কোন ঘোষণা এখনও পর্যন্ত দেয় নি। যদি দেয়, তবে অবশ্যই তা অনুসরণ করা যাবে। তাই এটা নিয়ে এধরণের বিভ্রান্তি না ছড়ানোর জন্য সবাইকে অনুরোধ করব এবং নিয়মিত এমাব্যাসি আপডেট অনুসরণ করতে বলব!



এই নিয়মের বর্তমান ফলাফলঃ



যথারীতি শিক্ষার্থীদের মাঝে হতাশা এবং আতংক লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সমস্যা হল জার্মান এমব্যাসি মাত্র ১ থেকে ২ মাস আগে এই নিয়মের নোটিশ দিয়েছে। তাই মানিয়ে নেয়ার সময়টুকু পাওয়া যায় নি। আমাদের মতে সর্বনিম্ন ৬ মাস আগে এই নিয়মের ব্যাপারে সবাইকে জানানো হলে এরকম পরিস্থিতি এড়ানো যেত। কারণ তখন পরের সেমিস্টার এর জন্য শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া সম্ভব ছিল। এই মুহূর্তে তাই নতুন পদ্ধতির জন্য হয়ত এক সেমিস্টার জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসা কম পাওয়া যাবে। এর কারণঃ



১, কোন শিক্ষার্থীর ব্যাচেলর্স এর পড়ার মাধ্যম যদি ইংরেজি হয় তবে ইউনিভার্সিটি থেকে সেই হিসেবে “মিডিয়াম অফ ইন্সট্রাকশন” নামে একটি সার্টিফিকেট তোলা যায়। অনেক জার্মান বিশ্ববিদ্যালয় ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ প্রফিশিয়েন্সি হিসেবে আইইএলটিএস/টোফেল এর পরিবর্তে এটা গ্রহণ করে। তাই যেসকল শিক্ষার্থী এটা দিয়ে এপ্লাই করে জার্মান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার পেয়েছেন তাদের হয়ত ধারণাতেই থাকবে না যে আইইএলটিএস/টোফেল লাগবে। ফলে ভিসা রেগুলেশন দেখে তাদের হয়ত ভর্তি এক সেমিস্টার পিছিয়ে দিতে হতে পারে। এই ব্যাপারে সরাসরি জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স-কোঅর্ডিনেটর এর সাথে যোগাযোগ করতে বলব আমরা।



২, সবচেয়ে ঝামেলাতে থাকবে বর্তমানে যারা জার্মান ভাষায় জার্মানিতে পড়তে যেতে চাইছেন। কারণ তাদের জার্মান ভাষায় বি১ পাশ করতে হবে গোয়েথে ইন্সটিটিউট থেকে। এটা বেশ সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। প্রায় ৬ মাস থেকে ১ বছর লাগতে পারে এতে।



৩, কীভাবে জার্মানিতে একাউন্ট খোলা যায় এই ব্যাপারে আমদের একটা বিস্তারিত আর্টিকেল লিখেছেন ফয়সাল জসীমউদ্দিন(সম্প্রতি তিনি ভিসা পেয়েছেন)। সেই আর্টিকেল এর লিংক এখানে



তবে এরচেয়েও বড় চ্যালেঞ্জ এই মুহূর্তে জার্মানিতে ব্লকড একাউন্ট এর জন্য টাকা ট্র্যান্সফার করা। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক এর শক্ত মানি লন্ডারিং এক্ট এর কারণে অনেক ব্যাংক এই ব্যাপারে বিভ্রান্তিতে ভুগছে। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংক এর “ফরেন এক্সচেঞ্জ গাইডলাইন – ভলিউম ১ - চ্যাপ্টার ১১” এর পয়েন্ট ১০(পৃষ্ঠা ৯৬-৯৭) এই ব্যাপারে স্পষ্ট নির্দেশনা দেয় আছে এবং টাকা পাঠানোর জন্য কোন বাধা নেই। সেই ডকুমেন্ট এর লিংক পাবেন এখানে ক্লিক করে







কিন্তু সরকারি/বেসরকারি ব্যাংকগুলো এই ব্যাপারে কিছুটা অপেশাদারী মনোভাব দেখাচ্ছে। তারা বাংলাদেশ ব্যাংক এর কথা বলে নানান টাল-বাহানা করছেন। অনেক ব্যাংক আবার বাংলাদেশ ব্যাংক এর সাথে এই ব্যাপারে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আমরা কোন আপডেট পাই নি যে বাংলাদেশ ব্যাংক উত্তর করেছে। গত উইন্টার সেমিস্টারে আমাদের হাত ধরে প্রায় ১৫০ এর বেশি শিক্ষার্থী জার্মানিতে পড়তে এসেছেন, তাই এই ব্যাপারে আমরা সবসময়ই ভাল ফিডব্যাক পাই বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। আর সেই ফিডব্যাক থেকে অবশ্যই ভাল কিছু পাওয়া যায় নি। ফলে এডমিশন লেটার থাকার পরও অনেকেই শুধু ব্লকড টাকা জার্মানিতে পাঠাতে পারছেন না বলে ভিসা ইন্টার্ভিউতে দাঁড়াতে পারছেন না।



তাহলে এখন করণীয় কী?



১, আইইএলটিএস/টোফেল এর প্রিপারেশন নিয়ে ভাল একটা স্কোর তোলা। যেমনঃ আইইইএলটিএস ব্যান্ড স্কোর ৬+ বা তার সমমানের স্কোর টোফেলে।



২, জার্মান ভাষায় পড়তে যেতে চাইলে, এখনই জার্মান শেখা শুরু করুণ। কোথায় শিখতে পারেন জার্মান ভাষা এই ব্যাপারে এখানে দেখে নিতে পারেন



৩, ব্লকড টাকা জার্মানিতে পাঠানো নিয়ে যে সংকট চলছে তা সাময়িক। এরকম সংকট আরো একবার হয়েছিল যখন ভিসার জন্য জার্মানিতে বাসার ঠিকানা দেয়া বাধ্যতামূলক করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তা ঠিক হয়েছে। আমাদের অর্গানাইজেশন এর তরফ থেকে আমরা জার্মান এমব্যাসি, বাংলাদেশ ব্যাংক ইত্যাদির সাথে যোগাযোগ করছি। তারা ইতিমধ্যে এই সমস্যার ব্যাপারে অবগত হয়েছেন। তাই সমাধানও সমাগত। শুধু এই মুহূর্তে ধৈর্য্য রাখতে হবে এবং নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে ব্যাংক এবং এমব্যাসির সাথে।



আমাদের মত দেশে এরকম জিনিস নিয়ে আতংকিত হয়ে যায় মানুষ খুব সহজেই। কিন্তু ঠান্ডা মাথায় সব অপশন এবং সম্ভাবনা হিসেব করে পদক্ষেপ নিলে সাফল্য অবশ্যম্ভাবী। ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা সবার জন্য।

---------------------------------

মু. রাশিদুল হাসান



ক্রিয়েটর , বাংলাদেশি স্টুডেন্ট এন্ড এল্যাম্নাই এ্যাসোসিয়েশন ইন জার্মানি

ফেসবুক গ্রুপঃ Bangladeshi Student and Alumni Association in Germany (৩৭০০০+ মেম্বার্স)

ওয়েবসাইটঃ www.GermanProbashe.com

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:১১

লিখেছেন বলেছেন: ওখানে মেয়েরা লেখা পড়া করার পরিবেশ কেমন>

২| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৪১

লেনন রাসেল বলেছেন: অবশ্যই ভাল। আমি বলব আইনকানুন এবং তার প্রয়োগের দিক থেকে জার্মানি অন্যতম সেরা।

৩| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:০৩

সোহানী বলেছেন: চমৎকার ইনফরমেটিভ লিখার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। যারা পড়তে যেতে ইচ্ছুক তাদের জন্য দারুন একটা পোস্ট............

১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৫৪

লেনন রাসেল বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

৪| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৮

সকাল হাসান বলেছেন: জার্মানী যাওয়ার স্বপ্ন আমার বহুকাল থেকেই! কিন্তু যে কঠিন নিয়ম কানুন দেখছি, তাতে জানি না কখনো যাওয়ার সৌভাগ্য হবে কিনা!

পোষ্ট টি প্রিয়তে নিয়ে রাখলাম!
কাজে লাগবে!

ধন্যবাদ আপনাক এই রকম একটি পোষ্ট দেওয়ার জন্য!

১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৫৫

লেনন রাসেল বলেছেন: এত বেশিও কঠিন না। আর আমরাতো আছিই। ধন্যবাদ। :)

৫| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৪৩

সপ্নডানা বলেছেন: । ধন্যবাদ,
ভাল লাগলো।

http://tech-tips99.blogspot.com

১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৫৬

লেনন রাসেল বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

৬| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩১

মিজভী বাপ্পা বলেছেন: ধন্যবাদ +

৭| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ ভোর ৪:০৭

লেনন রাসেল বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

৮| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:০৪

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
এ পোষ্টটি নতুন প্রজন্মের সোনামনিদের উপকারে আসবে।
লেখকের সুভেচ্ছা রইল।

৯| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৫৯

লেনন রাসেল বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.