নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার সম্পর্কে বলার তেমন কিছুই নেই। সাধারণ একটা ছেলে। অতি সাধারণ একটা মানুষ হয়েই থাকতে চাই..

মো: আব্দুল মোমেন

ভালো লাগে লেখা পড়তে,সামান্য কিছু লিখতে...আমার আমিতে বেশি ভালো থাকি।

মো: আব্দুল মোমেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি বাগান ও একজন ইউএনও

০৩ রা মে, ২০১৮ রাত ৮:১৮


সময়টা খুব বেশিদিন আগের না,কয়েক মাস আগের মাত্র! কয়েকমাসেই যে বদলে যেতে পারে একটি শহর কিংবা বাজারের ঘিঞ্জি পরিবেশের চিত্র সেটির উদাহরণ হতে পারে এই বাগানটি।

চলুন গল্পটা শুরু করি....

কিছুদিন আগে যখন বুকফাঁটা খাঁ খাঁ রোদে চারিদিকে সবকিছু ঝিমিয়ে পড়তে শুরু করেছিল তখন এই বাগানটার বুক চিরে তৃষ্ণার কাতরে ফেটে গিয়েছিল মাটি! বাগানের বুক ফাটা আর্তনাত দেখে চুপ থাকতে পারিনি,বাজারের এর ওর কাছে একটা পাইপ লাইনের জন্য ছুটে বেড়িয়েছি বাগাটাতে একটু পানি দেওয়ার জন্য।

দুর্ভাগ্যবশত বাগানের আশপাশের কোনো মটর লাইনের পাইপ গুলো বাগান পর্যন্ত আসেনি! আমার সেদিন খুব কান্না পেয়েছিল ভিতরে ভিতরে! একটি বাগানের কয়েকটি গাছের জন্যও মানুষ কাঁদতে পারে! সত্যিই কি মায়া! আমি বলে কথা নয়,হয়ত বাগান প্রিয় অনেকের এই অবস্থা হত।

চারিদিকে অনেক মানুষ,মানুষের ভীরে মানুষ চেনা যায়না কিন্তু কিছু কিছু মানু্ষ সমাজ,দেশ,রাষ্ট্র কিংবা মানুষের জন্য কাজ করেন।
বাগানটা করেছিলেন বর্তমানে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিবের দায়িত্বে
কর্মরত সাবেক খানসামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজেবুর রহমান। অনেকের কাছে তিনি মহান,অনেকের কাছে পুত্র,অনেকের কাছে স্যার,অনেকের কাছে বন্ধু আবার অনেকের কাছে অবুঝ লোক বলে পরিচিত ছিলেন খানসামা উপজেলাতে সাবেক এই ইউএনও।

তিনি চেয়েছিলেন গোটা উপজেলাকে সুন্দর একটি বাগান হিসেবে তৈরি করতে,যেখানে থাকবে সবুজ সাদা মনের কিছু মানুষের বসবাস,সবাই গড়ে উঠবে সবুজের মত করে ডগবগিয়ে! তিনি সেটা পেরেছিলেন,চেষ্টাও করেছিলেন। বর্তমানে যিনি আছেন তিনিও হয়ত চেষ্টা করছেন এরকম একটি সুন্দর বাগান তৈরি করে দিতে।তিনিও সফল হবেন এই কামনাই করি!

সরকারি লোকেরা নিয়ম অনুযায়ী বদলি হয় কিন্তু কতজন আছেন যারা বদলে দেবার জন্য কাজ করে যান স্বার্থ ছাড়া? আমাদের দেশে যখন ঘুষ-বাণিজ্য,দুর্নীতিতে অনেক অফিসাররা ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন তখন এরকমও কিছু অফিসারের দেখা মিলবে যারা দেশটাকে নিজের পরিবার,পরিজন মনে করেন।

সাজেবুর রহমান শুধু বাগান প্রিয়ই ছিলেন না বরং তিনি বই পড়ার জন্য গড়ে তুলেছেন বিরাট কয়েকটি লাইব্রেরিও। লাইব্রেরি গুলোতে বরাদ্দ দিয়ে গেলেও বর্তমানে সেই টাকা চেয়ারম্যানদের পকেটে ঘুরপাক খাচ্ছে শুনলাম! তিনি চলে গেছেন খানসামা উপজেলা থেকে,এসব নিয়ে অনেকের ভাবনাটাও কমে গেছে! আমরা ক্ষুদ্র দু'একজন ভেবেই বা লাভ কি?

অনেক মানুষও ফুলে ফেঁপে উঠছে,বাগান গুলোও বাড়ছে নিজ গতিতে! বাগানটিতে আর পানি দিতে হয়নি,সৃষ্টিকর্তা বুকফাঁটা আর্তনাতের ডাক শুনে বৃষ্টি নামিয়েছিলেন সেদিন।

বাগানটিতে ফুল ফুটবে,হাজার হাজার মানুষ দেখবে,কেউ কেউ বলবে বাগানটি সাজেবুর স্যার লাগিয়েছিলেন! আবার বাগানটি মরে গেলে অনেকেই বলবে কাম পায় নাই এখানে বাজারের মধ্যে বাগান লাগাতে গেছেন!!

সাজেবুর স্যার যেখানেই থাকেন,গাছ গুলো বেঁচে থাকবে,আপনিও বেঁচে থাকবেন। বেঁচে থাকবে আমাদের মত বাগানপ্রিয় মানুষ গুলোও।

বিঃদ্রঃ এই বাগানটি দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার পাকেরহাট বাজারে অবস্থিত।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা মে, ২০১৮ রাত ৮:৩৮

শাহিন বিন রফিক বলেছেন:



প্রথমে স্যালুট প্রকৃতি প্রেমিক সাজেবুর স্যারকে।

আমাদের প্রতিটি মানুষের বুঝা উচিত আমাদের স্রষ্টা যে আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছেন তা এই প্রকৃতির মাধ্যমে।
আমাদের খাদ্য, বস্ত্রসহ সবকিছুই প্রকৃতি থেকে পাই তাই আমাদের সবার উচিত বেশি বেশি বাগান করা। যেখানে গাছেরা দুলবে আর মন কাড়বে প্রকৃতি প্রেমিকদের।

২| ০৩ রা মে, ২০১৮ রাত ৮:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: ভেরি গুড।
আহা সবাই যদি তার মতো হতো।

৩| ০৩ রা মে, ২০১৮ রাত ৯:৩৪

অর্থনীতিবিদ বলেছেন: পোস্ট পড়ে মনে হলো ইউএনও সাহেব অনেক সুন্দর মনের মানুষ। বৃক্ষ ও বইয়ের প্রতি তার এই ভালোবাসার তুলনা হয় না।

৪| ০৩ রা মে, ২০১৮ রাত ১০:০২

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: সাজেবুর স্যারদের সংখ্যা এত কম যে চোর চাট্টারা তাদের মূল্যায়ণ করে না...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.