নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিশ্চুপ কাব্যিক

নিশ্চুপ কাব্যিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

খুব বেশী বড় হয়েগেছি

১০ ই মে, ২০১৫ রাত ১১:২৭

ইদানিং নাকি খুববেশী বড় হয়েগেছি। শেষ কবে আম্মুর হাতের মার খেয়েছি মনে পড়ে না। শুধু আম্মু কেন? শিক্ষকদের হাতে কবে মার ক্ষেয়েছি সেটাও রিতিমত ঐতিহাসিকদের গভেশনার বিষয় হয়ে গেছে।
.
পড়ালেখায় যে আমি খুব বেশী মেধহীন ছিলাম তা না। তাই পড়ালেখার জন্য মাইর খাওয়াটা ছিল স্বপ্নের বিষয়।তবু যে একেবারে খাইনি তাও কিন্তু না। তবে পড়লেখার চাইতে দশ্যিগিরির জন্যই মার খেতাম বেশী। ক্লাস থ্রী, ফাইভ, ছিক্স ও সেভেনে পুরো বছরে পড়ার জন্য মার খেয়েছিলাম যথাক্রমে তিন, পাঁচ, দুই ও আট বেত। এই পরিসংখ্যাননের উৎস আমার নিজের হাতে লিখা ডায়েরী। আর এইট, নাইন, টেনের পরিসংখ্যান এর থেকে সংখ্যায় বেশী হবে তাতে সন্দেহ নেই। এ জন্যই বোধয় এ সংখ্যাটা ড়ায়েরীতে সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা বোধ করিনি।
.
যাইহোক এইট, নাইন, টেনে মার খাওয়ার যথেষ্ট কারনও ছিল। এইটে এসে আমি আরবি ব্যাকরনে কাঁচা হয়ে গিয়েছিলাম। ইসলামের ইতিহাসে যদিও বরাবরই ভাল ছিলাম তবু বিষয় শিক্ষকের দূর্ততার কারনে প্রায় মার খেতে হত। ইংরেজিতে কাঁচা ছিলাম বরাবরই তবু কখনো মার খেতে হয়নি। অথচ এই ইংরেজীর জন্যই এসএসসিতে A+টা মিস হল। আর গত দুবছরের পড়ালেখার ইতিহাস আর মায়ের কোলে আদর খাওয়ার ইতিহাস সমান।
.
ছোটবেলা থেকেই আমি ছিলাম বাড়ি ছাড়া। তাই আম্মুর মারের থেকে আদরটাই বেশী প্রাপ্য ছিল। যখন নানুর বাড়িতে থেকে হাফেজী মাদ্রাসায় পড়তাম তখন পনের দিন পর একদিনের জন্য বাড়ি আসা হত। আর সে দিনটাই ছিল আমার। শুধু আমাকে উদ্দেশ্য করেই মুরগী জবাই দেয়া হত, এক কেজী দুধেরর পুরোটাই ছিল আমার! সেদিন আর কোন ভাগটাগ হবেনা, ঘরে যে আমি ছাড়াও আরো সদস্য আছে সেদিন আম্মু সেটা ভুলে যেতেন।
.
একবার মনে আছে বাড়ীতে এসে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় পড়ে দুপুরে খেতে আসিনি, বিকেলে যখন বাড়িতে আসলাম আম্মু রিতীমত অগ্নীমূর্তি ধারন করলেন! আর কাছে যেতেই নারিকেলের পাতার ঢাল (গুধি) নিয়ে বোঁ দৌড়। আর কে পায় আমারে? পরে এক বন্ধুর বাড়ীতে বিকেলের এবং রাত্রের খাবার খেয়ে ঐ বন্ধুর ঘরে বন্ধুর সাথেই ঘুমালাম। সকালে ঘুম থেকে উঠেত আমি টাষ্কিত। ঘুমালাম বন্ধুর সাথে বন্ধুর বিচানায় আর উঠে দেখি আমার ঘরে আমার বিচানায়। পরে জানলাম রাত্রে আম্মুই আমাকে মুভ করেছে বাট আমি ছাড়া সবাই জানে।
.
এখন নাকি বড় হয়ে গেছি। তাই আম্মু আর শাসায়না। আম্মুর ভাষায় শাসানোর প্রয়োজন নেই। কারন আমিতো এখন আর রোদে রোদে হাঁটিনা, বৃষ্টিতে বিঝে গায়ে কাদা করি না, মাদ্রাসায় মারের ভয়ে বাড়ির পেছনের পাতাবনে লুকোই না, খেলায় মজে খাবার কথা ভুলে বসিনা, এখন আমি বড় হয়েছি বটে।স্বাধীন হয়েছি খুব।
.
তবু আজ সুখ খূজে পাই না। মায়ের সে চেচানো কন্ঠ শুনি না, পরশমাখা হাতের মার খাইনা, রোদপোড়া ক্লান্ত দেহে মায়ের আচলের পরশ পাইনা। আজ বড় সাদ জাগে মায়ের হাতে মার খেতে, চেচানো কন্ঠে বকা শুনতে, ক্লান্ত দেহে মা ঐ আচলের পরশ পেতে। পৃথিবীর যত সুখ মায়ের আচলে এ কথাটা আজ ভালোভাবেই বুঝি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.