![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রেললাইনে গিয়ে দেখি বন্ধু রবি মন খারাপ করে বসে আছে। মনে হচ্ছে কি যেনো হারিয়ে ফেলেছে জীবন থেকে।
আমি পাশে গিয়ে বললাম, একটা সিগারেট দে। অন্য কোনদিন হলে, জোর করে নিতে হতো। আজ না চাইতেই দিয়ে দিলো !
বুঝলাম তার আজ মনটা খারাপ হয়ে আছে।
আমি সবসময় ভনিতা করেই কথা শুরু করতাম এটা ওটা নিয়ে। আজ সরাসরি বললাম, কিরে কি হলো? পার্টনার এর সাথে ঝগড়া হইছে?
সে বললো, আচ্ছা, তোর চিন্তা গুলা এমন কেন? পার্টনার ছাড়া মানুষের মন খারাপ হয় না !
আমি কি বলবো, খুঁজে পেলাম না কথা। তাই চুপ মেরে গেলাম
সে কিছুক্ষণ পর বললো, আমার লাইফের স্মৃতির পট হারিয়ে গেলো আজ । রিলের ক্যামেরার সব তুলা ছবি, হারিয়ে গেলো আজ, ভুলের কারণে,, যেখানে ছিলো হাজার হাজার দুষ্টমির ছবি, বাংলার আঁনাচে কানাচে ঘুরাঘুরির ছবি
কথাগুলার বলার পর, তার চোখ ছলছল করে উঠলো, জলে ভেজায়।
সে আবার বললেই লাগলো, মা আজ ভুলে ঘর ঝাড়ার সময়, ছবির এলভাম ফেলে দিছে.. আমি বললাম, সেখানে মনে হয় আমার ও কিছু ছবি আছে ! যেগুলা আমাকে ওয়াস করে দেওয়ার কথা?
সে বললো, হে, কিন্তুু, এখন তো সব শেষ হয়ে গেছে..
এটা শুনে মনটাই খারাপ হয়ে গেলো !
তারপর বন্ধুর থেকে বিদায় নিয়ে চলে এলাম।
মন খারাপ নিয়ে টিউশনে গেলাম। ফেরার পথে, লাইফের সবচেয়ে চমৎকার ঘটনাটি ঘটলো..
আমি আমার বন্ধুর এলাকার সামনে দিয়ে যাচ্ছি, তখন একটা টোকাই মন দিয়ে, কিছু একটা দেখছে,, যেটা দেখছে সেটা হচ্ছে একটা ছবির এলবাম,, সে দেখছে আর কাঁদছে
আমি কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলাম, আর ভাবলাম এতে কাঁদার কি আছে !
আমি বিষ্ময় নিয়ে সেখান থেকে চলে এলাম।
পরদিন বিকালে, আমি আর বন্ধু রবি, রেললাইনে আড্ডা দিচ্ছি, এমন সময় সেই টোকাই ছেলেটি, সেখান দিয়ে যাচ্ছে..
মজা করার জন্য, তাকে ডাকলাম
এই পিচ্ছি এদিকে আয়
আমারে ডাহেন কেন? তোর নাম কি?
জমির
কই যাস? কাহজ কুঁড়াইতাম
এখানে একটু বোস, তোর সাথে কথা বলি
কেন? আমার কাম আছে, যাই
তোরে দশ টাকা দিবো, বস টাকার কথা শুনে সে বসলো
আমি জিজ্ঞাস করলাম, তুই কালকে ইদ্রিশ পাড়ায়, কাগজ না কুঁড়াই ছবি দেখছিলি কেনো?
আম্নে দেখছেন?
হে সেজন্য ই তো জিজ্ঞেস করলাম
আসলে, আমার মা -বাপ নাই। মইরা গেছে। কাগজ কুঁড়াইতাম যাই, ময়লার ভিতরে ছবি গুলান পাই, তহন, ছবিগুলাত, মা বাপের লগে একখান ছবি দেহি
হেইডা দেহি, আমার মা বাপের কথা মনে পড়ে গেলো। আর ছবিগুলান ও আমি রাহি দিছি, আমার ব্যাগের ভিতরে
আমি বললাম, দেখা না আমাদের
তখন, সো পোটলা খুলে ছবি গুলো বের করলো এবং প্রথম ছবিটা দেখেই রবির মুখ উজ্জল হয়ে উঠলো। আর চিৎকার করতে লাগলো, পাইছি, পাইছি.. আমি বললাম, কি?
হারিয়ে যাওয়া সব ছবি
কোথায়?
এগুলা সব
আমি রবির কথার আগামাথা কিছুই বুঝলাম, সে টোকাই টা ও..
তারপর রবি বুঝিয়ে দিলো, এটা হচ্ছে আমার মা -বাবার ছবি, আর পিচ্ছিটা আমি। এ ছবিটা প্রায় ১৫ বছর আগে তুলা..
পরে ছবিসব গুলা দেখে, নিশ্চিত হলাম এটা রবির হারিয়ে যাওয়া ছবির এলবাম, কারণ, রবির সাথে বান্দরবনে তোলা আমার ও একটা ছবি ছিলো.. টোকাই ছেলেটার আনন্দ আরো বেশি, রবির উচ্ছাস দেখে..
পরে ছেলেটাকে খুশি করার জন্য, ১০০ টাকার একটা নোট দিলাম.. সে খুশি হয়ে সালাম দিয়ে চলে গেলো
পরে অবশ্য, পুরা ১০০ পাকাই কৌশলে বন্ধু থেকে উদ্ধার করি..
২| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০১
রব্বানী রবি বলেছেন: একদিন এলাকায় হাঁটছিলাম। ডাস্টবিনে একটা ছোট্ট টোকাই পুরনো ছবি পেয়ে দেখছিলো। সেটা থেকে, এ গল্প লেখা..
৩| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৩২
আরাফআহনাফ বলেছেন: ভালো।
শুভ কামনা রইল।
৪| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৭
রব্বানী রবি বলেছেন: ধন্যবাদ @আরাফ
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৫৭
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: গল্প নাকি বাস্তব জীবনের ঘটনা?