নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হুমায়ূন আহমেদের বই যখন পড়ি, তখন আমার লেখার ইচ্ছাটা জেগে উঠে। আপাতত ছোট গল্প দিয়ে না হয় শুরু করলাম..

রব্বানী রবি

রব্বানী রবি

রব্বানী রবি › বিস্তারিত পোস্টঃ

তাকে পাওয়ার গল্পো

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৩৪

কর্ণফুলী নতুন ব্রীজে দাঁড়িয়ে, ওপারে চলে যাওয়ার শেষ প্রস্তুুতি নিচ্ছিলাম।
যাবার আগে, তাকে একটা ফোন দিলাম, মায়াবতী কন্ঠ টি আরেকবার শোনার জন্য।
হ্যালো, তুমি আবার ফোন দিছো কেনো?
না মানে , তোমার কন্ঠটি আরেকবার শোনার জন্য..
মানে?
কয়েকশো ফুট নিচের পানির দিকে তাকিয়ে, বলছিলাম, তাকে, হয়তো আর তোমার কন্ঠ শোনা হবে না.. ভালো থেকো.. ভালোবাসি তোমাকে
কথাটা বলার পরই, একটি বাসের হঠাৎ হর্ণে মোবাইলটা পানিতে পড়ে গেলো, আমি ব্রীজে দাঁড়িয়ে মোবাইলের পড়া দেখছিলাম..
সে, উত্তরে কি বলেছিলো তা আর শোনা হলো না..
রাত তখন ১২ টা, আমি রেলিং এ দাঁড়িয়ে গেলাম, লাফ দিবো, এ মুহুর্তে মনে হলো, আরে, তার উত্তর তো আমার শোনা হলো না..
সে যদি, হ্যাঁ বলে দেয়... !
ইরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলো, আমি কোন একটা বিপদ ঘটাতে যাচ্ছি।
সে বারবার ফোনে ট্রাই করে যাচ্ছে, পাচ্ছে না , বারবার বন্ধ পাচ্ছে, তখন সে খুব ভয় পেয়ে গেলো..
তখন সে ফেসবুকে ডুকে আমার ম্যাসেজ বক্স দেখতে লাগলো..
একটি ছোট ম্যাসেজ দেখে, তার চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগলো..
আমার ম্যাসেজ টি ছিলো " তোমার অবহেলাগুলা আর ভালো লাগছে না, আমার বাঁচতে ইচ্ছে করছে না, কর্ণফুলী ব্রীজ থেকে ঝাপ দিবো, ভাবছি..! ভালো থেকো, ভালোবাসি তোমাকে "
সে তার ছোট ভাইকে নিয়ে, সাথে সাথে বেড়িয়ে পড়লো, বাসা থেকে বার বার মানা করা স্বত্ত্বেও..
সে এক কথাই বলছিলো, বড় বিপদ, বড় বিপদ, আমি এসে সব বলছি..
মেয়ের চোখে পানি দেখে, সবাই হতবাক হয়ে গিয়েছিলো, কি বলবে ভেবে পাচ্ছিলো না
রাত বাড়ার কারণে কোন গাড়ি পাচ্ছিলো না, হঠাৎ একটি সি এন জি পেয়ে গেলো
কিন্তুু সি এন জি ড্রাইবার যাবে না, সি এনজি ড্রাইবারকে কান্না জড়িত গলায় বললো, বিপদের কথা..
সি এন জি মনে হয় সময়ে পিছনে ছুটছে, তার মনে হচ্ছে। তার ভাই বলছে ওনি জোরে চালাচ্ছে, আর জোরে চালাতে বলিস না, পরে এক্সসিডেন্ট না হয়..
এদিকে আমি যখন রেলিং এ দাঁড়িয়ে ভাবছি, ঈশ তার উত্তর শোনা হলো না.. ঠিক তখনি, টহল পুলিশের একজন এতো জোরে পেন্ট ধরে ব্রীজের দিকে টান দিলো যে, ব্রীজের উপর রাস্তায় হুমড়ি খেয়ে পড়লাম..
আমাকে ধরে নিয়ে, কোতোয়ালি থানায় প্রবেশ করালো..
এদিকে ইরা এসে, ব্রীজে খুঁজে বেড়ালো, পেলো না..
তখন তার ছোট ভাই, আমার পড়ে থাকা মানিব্যাগ ব্যাগ দেখতে পেলো। রাস্তায় যখন পুলিশ ফেলে দিলো, তখন মনে হয় মানিব্যাগ পড়ে গেছিলো...
সেটা দেখে, সে মনে করলো এখান থেকেই মনে হয়, আমি সুসাইড করেছি..
আর তার হাউমাউ চিৎকার। এদিকে ইরার ছোট ভাই, এমন কান্ড দেখে বাসায় ফোন করে।
ইরার পাগলামি কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। তার বাসার সবাই আসলে, তারা তৎক্ষনাত, নদীর পাড়ের ট্রলারে ঘুমন্ত একজন মাঝিকে জেগে তুললো। সাররাত ধরে খোঁজাখুঁজি চললো.. পেলো না
সকালে ওসি এসে আমায় বললো, এমন কাজ করতে যাচ্ছিলেন কেনো?
বাঁচতে ইচ্ছে করছিলো না, তাই
পিছনের ঘটনা বলুন
একটা মেয়ে...
থাক আর বলতে হবে না..
মেয়েটার ফোন নাম্বার দিন
আমার কি যে হলো, যা বলছে পুলিস সব বলে দিচ্ছি..
ততক্ষণে, ইরা সব বলে দিয়েছে, কি হয়েছিলো, তার ফ্যামিলি, তাকে ধমকা ধমকি করতে লাগলো, কেনো, ছেলেদের সাথে কথা বলিস, এখন বুঝবি ঠেলা, কেস টেস খেতে হবে, ছেলের পরিবার থেকে
ঠিক তখনি একটা আননোন নাম্বার থেকে কল আসলো, তখন তারা নদীর মাঝখানে, ইরার বাবা ফোন ধরলো, ধরেই বললো, মাঝি তাড়াতাড়ি পাড়ে ভিড়ো, থানায় যেতে হবে
ইরার তখনো কাঁদছে, সে থানায়, ওসি এবং তার পরিবারের সবার সামনে, থাপ্পড় মেরে বসলো...
আর সাথে সাথে, আমার বুকে ঝাপিয়ে পড়লো
সে ঝাপিয়ে পড়া, আজ ও বয়ে বেড়াচ্ছি, এ বুড়ো বয়সে..
কি যে পাগলামি করলাম, এখন ও ভাবছি, পাগলামি না করলে হয়তো ইরাকে কাছে ও পেতাম না..
এখনো আমাদের প্রত্যেক বিবাহবার্ষিকীতে, যে দিনে এমন কান্ড ঘটিয়েছিলাম, সে দিনকে স্মরণ করার জন্য প্রত্যেক বছর এখানে আসি

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:১৩

বিজন রয় বলেছেন: ভাল লেগেছে। +++।
ইরা নামটি মিষ্টি লাগল।

২| ০৫ ই মে, ২০১৬ রাত ১১:৪১

রব্বানী রবি বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.