![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি এই সাইটের সদস্য হতে চাই । আমি খুবই আগ্রহী । আমি লিখতে চাই।
নাফাখুম..... জলপ্রপাত
বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার রেমাক্রি স্থানটি সাঙ্গু নদীর উজানে একটি মারমা বসতী। বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার রেমাক্রি একটি মারমা অধু্যসিত এলাকা। বান্দরবন হতে ৭৯ কিমি. দুরে অবস্থিত থানচি। এটি একটি উপজেলা। সাঙ্গু নদীর পাড়ে অবস্থিত থানচি বাজার। এই সাঙ্গু নদী ধরে রেমাক্রীর দিকে ধীরে ধীরে উপরে উঠতে হয় নৌকা বেঁয়ে। উপরে উঠা বলছি এই কারনে যে আসলেই নদীটা রেমাক্রী হতে থানচির দিকে ধীরে ধীরে ঢালু হয়ে এসেছে আর এই কারনে এখানে এত স্রোত। নদী কিছুদূর পর পর ১-২ ফুট এমন কি কোথাও কোথাও ৪/৫ ফুট পর্যন্ত ঢালু হয়ে নিচে নেমেছে। প্রকৃতি এখানে এত সুন্দর আর নির্মল হতে পারে ভাবাই যায় না। নদীর দুপাশে উচু উচু পাহাড়। সবুজে মোড়ানো প্রতিটি পাহাড় যেন মেঘের কোলে শুয়ে আছে অবলিলায়। কোন কোন পাহাড় এতই উচু যে তার চূড়া ঢেকে আছে মেঘের আস্তরে। অসাধারন সে দৃশ্য। সবুজে ঘেরা সে পাহাড়ে হঠাৎ হঠাৎ দেখা যায় দু একটি উপজাতী বসতঘর। পাহাড়ের ঢালুতে টিন আর বেড়ার ঘর গুলো দেখে মারমা ভাষায় ‘খুম’ মানে হচ্ছে জলপ্রপাত। রেমাক্রি থেকে তিন ঘন্টার হাঁটা পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হয় আশ্চর্য সুন্দর সেই জলপ্রপাতে, যার নাম ’নাফাখুম’। রেমাক্রি খালের পানি প্রবাহ এই নাফাখুমে এসে বাঁক খেয়ে হঠাৎ করেই প্রায় ২৫-৩০ ফুট নিচে পতিত হয়ে প্রকৃতির খেয়ালে সৃষ্টি হয়েছে চমৎকার এক জলপ্রপাত! সূর্যের আলোয় যেখানে নিত্য খেলা করে বর্ণিল রংধনু! আকাশে তরি হয় হাজার রঙের আলোকচ্ছটা। মেঘের আড়ালে যখন সূর্য হাসে আলোর সে হাসির ঝিলিক ছড়িয়ে পড়ে পুরো পাহাড়তলে। খরস্রোত নদীর জল সাই সাই করে ধেয়ে যায় কলকল শব্দে। ভয়ংকর সে নদীর সৌন্দর্য যেন আরো ভয়ংকর। যারা বিদেশের মাটিতে সুন্দরকে খুজে বেড়ান তাদের জন্য নাফাখুম চ্যালেঞ্জ ছাড়া আর কিছুই নয়। এ দেশে এমন সুন্দর থাকতে পারে তা বিশ্বাস করাই মুশকিল। পাহাড়, নদী আর পাথুরে খাল দেখে মনে হবে যেন কোন এক ছবির পাতায় পাতায় হাটছি। অসাধারন সুন্দর, অসহ্য সুন্দর। পানির গমগম করে ঝড়ে পরার শব্দে চারদিক মুখরিত। বর্ষার সময় ঝর্নার আকার বড় হয়। আর শীতের দিনে তা ক্ষীন হয়ে যায়। তবে সেপ্টেম্বর অক্টোবর মাসে নাফাখুমের প্রকৃত সৌন্দর্য দেখা যায়। উপর হতে আছড়ে পড়া পানির আঘাতে ঝর্নার চারিদিকে সৃষ্টি হয় ঘন কুয়াশার। উড়ে যাওয়া জলকনা বাষ্পের সাথে ভেসে ভেসে শরীরে এসে পড়ে। রোমাঞ্চকর সে অনুভূতি। একে বাংলার নায়াগ্রা বললে ভূল বলা হবে না। দুপাশের সবুজ পাহাড়ী বন আর পাথুরে ভুমি নাফাখুম ঝর্নাকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা, করেছে আরো আকর্ষনীয়। পাথরের ফাকে ফাকে ছোপ ছোপ সবুজ ঘাসের থোকা সৌন্দর্যের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুন।
ভাবাই যায় না। নদীর দুপাশে উচু উচু পাহাড়। সবুজে মোড়ানো প্রতিটি পাহাড় যেন মেঘের কোলে শুয়ে আছে অবলিলায়। কোন কোন পাহাড় এতই উচু যে তার চূড়া ঢেকে আছে মেঘের আস্তরে। অসাধারন সে দৃশ্য। সবুজে ঘেরা সে পাহাড়ে হঠাৎ হঠাৎ দেখা যায় দু একটি উপজাতী বসতঘর। পাহাড়ের ঢালুতে টিন আর বেড়ার ঘর গুলো দেখে মনে হবে যেন সাজিয়ে গুছিয়ে রাখা কোন বিদেশী পর্যটন কেন্দ্র। কড়া সবুজের মাঝে মাটি রং এর ঘর গুলো যেন ক্যানভাসে আঁকা কোন ছবি। বিমূর্ত সে ছবি, অপার তার সৌন্দর্য। চারদিক সুনসান, নিরব, নিশব্দ কেবলই পানির হুমহুম শব্দ আর পাখির কিচির মিচির।
মারমা ভাষায় 'খুম' মানে হচ্ছে জলপ্রপাত। রেমাক্রি থেকে তিন ঘন্টার হাঁটা পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হয় আশ্চর্য সুন্দর সেই জলপ্রপাতে, যার নাম 'নাফাখুম'। রেমাক্রি খালের পানি প্রবাহ এই নাফাখুমে এসে বাঁক খেয়ে হঠাৎ করেই নেমে গেছে প্রায় ২৫-৩০ ফুট....প্রকৃতির খেয়ালে সৃষ্টি হয়েছে চমৎকার এক জলপ্রপাত! সূর্যের আলোয় যেখানে নিত্য খেলা করে বর্ণিল রংধনু! ভরা বর্ষায় রেমাক্রি খালের জলপ্রবাহ নিতান্ত কম নয়... প্রায় যেন উজানের সাঙ্গু নদীর মতই। পানি প্রবাহের ভলিউমের দিক থেকে সম্ভবতঃ নাফাখুম-ই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জলপ্রপাত। পানির গমগম করে ঝড়ে পড়ার শব্দে চারদিক মুখরিত। বর্ষার সময় ঝর্নার আকার বড় থাকে আর শীত মৌসুমে তা ক্ষীন হয়ে যা। সেপ্টেম্বর অক্টোবর মাসে নাফাখুমের প্রকৃত সৌন্দর্য দেখা যায়। একে বাংলার নায়াগ্রা বললে ভূল বলা হবে বা। পাহাড়, নদী আর পাথুরে খাল দেখে মনে হবে যেন কোন হলিউডের সিনেমার ভেতরে আছি। দুপাশের সবুজ পাহাড়ী বন আর পাথুরে ভুমি নাফাখুম ঝর্নাকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা, করেছে আরো আকর্ষনীয়। আমাদের দেশে এমন সুন্দর জায়গা আছে তা বিশ্বাস করাই মুশকিল।
আমার দেশে এত সুন্দর একটা জলপ্রপাত....অথচ আমরা খুব কম জন-ই এই জলপ্রপাতটা সম্মন্ধে জানি! এখানে নদীগুলোর গভীরতা একেবারেই কম। কোথাও কোথাও পানির তলার পাথর দেখা যায়। কোথাও বা নদীর মাঝেই উচু হয়ে আছে পাথর। কিন্তু গভীরতা কম হলে কি হবে মারাত্মক স্রোত। একটু উনিশ বিশ হলেই সর্বনাশ। যেখানে নদী ঢালু হয়ে গেছে সেখানে প্রচন্ড স্রোত। গমগম করে নেমে যাচ্ছে পানির ঢল। এমন জায়গায় নৌকা প্রায় চলতেই পারে না। তাই নেমে হেটে যেতে হয়। যাত্রা পথে এমন ভাবে বেশ কয়েকবারই নেমে নেমে হেটে যেতে হয়। শীতকালে নদীতে পানি কম থাকে বলে এই উঠা নামার পরিমানটা অনেকবেশী থাকে। এই পথে যেতে যেতে আপনাকে পারি দিতে হবে তিন্দু ও বড় পাথর। তিন্দুতে একটি বিজিবি ক্যাম্প আছে। অসাধারন সুন্দর একটি স্থান তিন্দু। অনেকে নাফাখুম যাবার পথে থানচি না থেকে তিন্দুতে এসে রাত্রিযাপন করে। এখানে থাকার জন্য কিছু ঘর ভাড়া পাওয়া যায়।
তিন্দু হতে একটু সামনে এগিয়ে গেলেই বড় পাথর। স্থানীয়রা একে রাজা পাথরও বলে থাকে এবং তারা বিশ্বাস করে যে এই রাজা পাথরকে সম্মান দেখাতে হয়, নতুবা দুর্ঘটনা ঘটে। এ কারনে এখানে এসে নিশ্চিত নেমে হেটে যেতে হয়। আসলে একটি বিশাল আকারের পাথর। পাশে আরো অনেকগুলো ছোট বড় পাথর নদীর ঠিক মাঝে পড়ে আছে। ধারনা করা হয় বহু বছর আগে ভুমিকম্পের কারনে পাশের পাহাড় হতে এই বিশাল আকারের পাথরের টুকরো গুলো নদীর মাঝে এসে পড়েছে। আর এ কারনে নদীর মুখ খুব ছোট হয়ে গেছে যার ফলে এখানে প্রবল স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে।
নাফাখুমের পড়ন্ত জলের ধারার নীচে গিয়ে বসার সুযোগ রয়েছে। আমার-আপনার জন্য বিষয়টা বেশ রিস্কি হলেও পাহাড়ীরা জলপ্রপাতের পিছনে বসে অনায়াসে মাছ শিকার করে। এক ধরনের উড়ুক্কু মাছ (স্থানীয় ভাষায় মাছটির নাম নাতিং মাছ) উজান ঠেলে এসে নাফাখুমে বাধাপ্রাপ্ত হয়, লাফ দিয়ে এই প্রপাত-টা আর ক্রস করতে পারেনা....গিয়ে পড়ে জলপ্রপাতের ভিতরে ছোট্ট একটা গুহায়। অনায়াসে সেখান থেকে মাছ সংগ্রহ করে স্থানীয় পাহাড়ীরা। পাঁচ-ছয় ফুট উপর থেকে কয়েকটি ধাপে পানি পড়ছে এই জলপ্রপাতে। এ'টি অনেক চওড়া। এই জলপ্রপাতটিও আপনাকে মুগ্ধ করবে নিঃসন্দেহে। তিন্দু থেকে রেমাক্রি যাবার পথেই চোখে পড়বে এই রেমাক্রিখুম।
রেমাক্রিখুম
রেমাক্রী বাজারটা খুবই ছোট। বাজারের মাঝখানে বিশাল একটা উঠান আর চারদিকে দোকান। এগুলো তাদের ঘরও বটে। পেছনে থাকার ব্যবস্থা আর সামনে দোকান। বাজারের পাশে একটা রেষ্টহাউজ আছে। আর তার পাশেই বিজিবি ক্যাম্প। রেমাক্রী বাজার হতে নদীর কুল ধরে প্রায় ২/৩ ঘন্টা হাটতে হয় নাফাখুম যেতে। নদীর পাড়টা সমতল কিন্তু পাথুরে এবং বালুকাময়। কিন্তু এর কোন কিছুই আর চোখে পড়বে না। দুচোখ কেবল চারিপাশের সুন্দর দেখতে দেখতে বিহ্বল হয়ে যাবে। এখানে জনবসতী একেবারেই কম। মাঝে মাঝে দু একজন উপজাতীদেরকে মাছ ধরতে দেখা যায়। এই পথে যেতে ৩ বার বুক সমান গভীর নদী পার হতে হয়। দেখতে শান্ত পানি হলে কি হবে? ভয়ংকর স্রোত সে পানিতে। পা স্থির রাখা যায় না। জায়গামত পা ফেলতে না পারলে ভেসে যেতে হবে।
বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে এই যাত্রা পথের প্রতি মুহুর্তে। নদীর পাড় কখনো উচু নিচু পথ, পাহাড়ের কিনারা বেয়ে সামনে এগোনো, কখনো আবার টারজানের মত লতা ধরে ঝুলে ঝুলে নদী পার হওয়া, রিতিমত রোমাঞ্চরক ভ্রমন। পথে যেতে যেতে কমপক্ষে ১০/১২ টা ছোট খাটো ঝর্না চোখে পরবে যার পানি গিয়ে রেমাক্রী খালে পতিত হয়েছে। দীর্ঘ পথ হেটে ক্লান্ত শরীর বা পা সে পানিতে ভেজানোর সাথে সাথে সব ক্লান্তি দুর হয়ে যাবে নিমিষেই। এ যেন এক প্রাকৃতিক জল থেরাপি। নদীর কিনারা ধরে ধরে যখন হাটু পানি বা কোমর পানি দিয়ে এগিয়ে যাবার সময় মনে হবে যেন আমাজন নদী পারি দিচ্ছি কিংবা আনাকোন্ডা সিনেমার দৃশ্যে অভিনয় করছি, এই বুঝি আনাকোন্ডা এসে খপ করে ধরে ফেল্লো। দারুন সব অনুভুতি। আপনি পুলকিত না হয়ে পারবেন না।
ইতিহাস
মারমা ভাষায় খুম শব্দের অর্থ হচ্ছে ঝর্না বা জলপ্রপাত কিবাং জলপতন। এখানে মূলত খুম বলতে ঝর্নাকেই বোঝায়। রেমাক্রী নদী এখানে এসে হঠাৎ উপর হতে নিচে পতিত হয়ে একটি খুম বা ঝর্নার সৃষ্টি করেছে। এই নদীতে এক প্রকার মাছ পাওয়া যায় যার নাম নাফা মাছ। এরা স্রোতের বিপরীত দিকে চলার চেষ্টা করে। ঝর্নার এখানে নাফা মাছগুলো স্রোতের বিপরীত দিতে লাফ দিয়ে ঝর্না পার হতে চায়। আর এই সুযোগে উপজাতীয়রা সে মাছগুলোকে সহজেই জাল বা কাপড় দিয়ে ধরে। এই থেকেই এই ঝর্নার নাম হয়েছে নাফাখুম।
যেভাবে যেতে হবে যাতায়াতঃ
বান্দরবান শহর থেকে থানচি উপজেলা সদরের দূরত্ব ৮২ কিঃমিঃ। রিজার্ভ চাঁদের গাড়ীতে বান্দরবান থেকে থানচি যেতে সময় লাগবে ৩ ঘন্টা, ভাড়া নেবে ৪ হাজার টাকা। থানচি থেকে রেমাক্রি নৌকায় যাওয়া-আসা, ভাড়া চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। বর্ষায় ইঞ্জিনবোটে থানচি থেকে তিন্দু যেতে সময় লাগবে আড়াই ঘন্টা। তিন্দু থেকে রেমাক্রি যেতে লাগবে আরও আড়াই ঘন্টা। এই পাঁচ ঘন্টার নৌ-পথে আপনি উজান ঠেলে উপরের দিকে উঠতে থাকবেন। শীতের সময় ইঞ্জিন বোট চলার মত নদীতে যথেষ্ট গভীরতা থাকেনা। তখন ঠ্যালা নৌকাই একমাত্র বাহন। বর্ষা মৌসুমে তিন দিনের জন্য ইঞ্জিনবোটের ভাড়া পড়বে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। আর শীত মৌসুমে ঠ্যালা-নৌকার ভাড়া পড়বে প্রতি দিনের জন্য ১০০০ টাকা।
নাফাখুম যাবার জন্য একটিই পথ আপনার জন্য খোলা আছ। প্রথমেই আপনাকে যে কোন স্থান হতে গিয়ে পৌছতে হবে বান্দরবন। বান্দরবন হতে যেতে হবে থানচি। ২ ভাবে যেতে পারেন থানচি। বান্দরবন হতে চান্দের গাড়ী অথবা জীপ গাড়ী ভাড়া করে যেতে পারেন থানচি কিংবা বান্দরবন হতে সরাসরি পাবলিক বাসে করেও যেতে পারেন। পাবলিক বাসের ভাড়া কম কিন্তু বিরক্তকর ভ্রমন উপরন্তু আশে পাশের দৃশ্যাবলী খুব একটা উপভোগ করা যায় না। কিন্তু চান্দেরগাড়ী বা জীপ ভাড়া করে গেলে সে সমস্যা আর থাকবে না। তবে চান্দের গাড়ীর একটি সমস্যা আছে। বর্তমানে (সাময়িক সময়ের জন্য) বান্দরবন-থানচি রুটে ভরতপাড়া স্থানে রাস্তা ভাঙ্গা। বিজিবি কোন প্রকার গাড়ী চলাচল করতে দেয় না এই পথে। তাই আপনাকে চান্দেরগাড়ী ত্যাগ করে ওপার গিয়ে পাবলিক বাসে করে যেতে হবে থানচি। ভরতপাড়া হতে থানচির দুরত্ব ২৪ কিমি.। তবে পাবলিক বাসে গেলে এই সমস্যা নেই। কেননা টিকেটাধিকার বলে আপনি ওপাড়ে গিয় অন্যে একটি বাস প্রস্তুত পাবেন।
১. বান্দরবন থানচি
থানচি বান্দরবনের সর্বদক্ষিণের উপজেলা। বান্দরবান শহর থেকে থানচির দূরত্ব ৮২ কিঃমিঃ। শঙ্খ (স্থানীয় ভাষায় সাঙ্গু) নদীর পাড়ে অবস্থিত থানচি বাজার।
রিজার্ভ চাঁদের গাড়ীতে বান্দরবান থেকে থানচি যেতে সময় লাগবে প্রায় ৪ ঘন্টা, ভাড়া নেবে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা । পথে চিম্বুক আর নীলগিরিতে নেমে কিছু ছবি তোলার ইচ্ছে থাকলে সময় কিছুটা বেশী লেগে যেতে পারে।
থানচি হতে প্রথমে আপনাকে যেতে হবে রেমাক্রী। যাবার জন্য একমাত্র উপায় সাঙ্গু নদী হয়ে নৌকা দিয়ে যাওয়া। এখানে ইঞ্জিন চালিত নৌকা ভাড়া পাওয়া যায় যা আপনাকে সরাসরি রেমাক্রী নিয়ে যাবে ও নিয়ে আসবে। সে ক্ষেত্রে আপনাকে থানচি ঘাটে নৌকাচালক সমিতি হতে নৌকা ভাড়া নিতে হবে। শুধু তাই নয় সাথে নিতে হবে
গাইড। এটি বাধ্যতামূলক। এখানকার বিজিবি ক্যাম্পে গাইডদের একটি তালিকা আছে। সেখান হতে একজন গাইড নিতে হবে। সাথে কাগজে আপনাদের সব টুরিষ্টদের নাম, ঠিকানা, পিতার নাম, ফোন নাম্বার, মাঝির নাম ইত্যাদি জমা দিয়ে নাফাখুম যাবার অনুমতি নিতে হবে।
রেমাক্রী হতে নাফাখুম পর্যন্ত আর কোন বাহন আপনি পাবেন না। ওই পথটা আপনাকে হেটে যেতে হবে। এখানে পূর্বের গাইডকে রেখে আবার নতুন গাইড নিতে হবে। পূর্বের গাইড ও নৌকা মাঝি আপনার জন্য অপেক্ষা করবে এখানে। এখানেও আপনাকে নতুন করে কাগজে নাম ঠিকানা জমা দিয়ে স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্প হতে অনুমতি নিতে হবে। চাইলে রেমাক্রীতে রাত্রি যাপন করা যায়। তবে দিনে দিনেই নাফাখুম দেখে আবার থানচি ফিরে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে ভোর ৬ টায় থানচি হতে রওয়ানা হতে হবে। রেমাক্রী রাত্রিযাপন করে পরের দিন ভোরে নাফাখুমের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়াই উত্তম। তাতে পরিশ্রমটা অনেক কম হয়। দিনে দিনে ফিরে আসাটা রিতিমত কষ্টকর ও চ্যালেঞ্জিং।
রেমাক্রী বাজার হতে ২ ঘন্টা (খুব ভাল ভাবে হাটলে) হতে ৩ ঘন্টা (আয়েশ করে হাটলে) সময় লাগে নাফাখুম যেতে।
কোথায় থাকবেন
থানচিতে থাকার জন্য একটি সরকারী রেষ্টহাউজ আছে। তাছাড়া এখানকার নৌকা ঘাটে কয়েকটি থাকার ঘর আছে। এসব ঘরে থাকার জন্য কোন পয়সা দিতে হয় না। ৩ বেলা খেলে থাকা ফ্রি। পর্যটন মৌসুমে এসব থাকার জায়গাগুলো বুক হয়ে গেলে আপনি স্থানীয় চেয়াম্যান এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। তিনি আপনাদের একটা না একটা ব্যবস্থা করে দেবেন।
কেউ যদি তিন্দু থাকতে চান তবে সেখানেও কিছূ উপজাতী ঘর ভাড়া পাবেন থাকার জন্য। রেমাক্রীতে বাজারে একটি রেষ্ট হাউজ আছে। এটা ভাড়া নিতে পারেন। তাছাড়া উপজাতীয়দের দোকানে/ঘরে খেলে থাকা ফ্রি।
অনুমিত খরচ
• বান্দরবন-ভরতপাড়া চান্দের গাড়ীঃ ৩০০০ টাকা
• বান্দরবন-থানচি পাবলিক বাস ভাড়াঃ ১৯০ টাকা
• ভরতপাড়া – থানচি পাবলিক বাস ভাড়াঃ ৭৫ টাকা
• থানচি – রেমাক্রী নৌকা ভাড়াঃ ৪৫০০
• রেমাক্রীতে নৌকার অতিরিক্ত প্রতিরাতঃ ১৫০০ টাকা
থাকাঃ
• থাকার জন্য যেতে হবে তিন্দু, রেমাক্রি। মারমাদের বাঁশ-কাঠের বাড়ীতে অনায়াসে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা হয়ে যাবে আপনাদের। মারমাদের প্রায় প্রতিটি বাড়ীতেই খুব অল্প টাকায় এমন থাকা-খাওয়ার সুবিধে রয়েছে। তিনবেলা খাওয়ার খরচ পরবে জনপ্রতি ২০০ টাকা, থানচি রেষ্ট হাউজঃ ৬০ টাকা প্রতিজন
• রেমাক্রী রেষ্ট হাউজঃ ৬০ টাকা প্রতিজন
আর থাকা ফ্রি। তবে যে বাড়ীতে ফ্রি থাকবেন। খেতে হবে তাঁর দাওয়ায় বসেই।
• থানচি বাজারঃ প্রতি বেলা আনুমানিক খাবার খরচ ৯০-১০০ টাকা
• রেমাক্রী বাজরঃ প্রতি বেলা আনুমানিক খাবার খরচ ৯০-১০০ টাকা
গাইড
• থানচি হতে রেমাক্রীঃ ৫০০ টাকা
• রেমাক্রী হতে নাফাখুমঃ ৬০০ টাকা
• থানচি বাজারঃ প্রতি বেলা আনুমানিক খাবার খরচ ৯০-১০০ টাকা
• রেমাক্রী বাজরঃ প্রতি বেলা আনুমানিক খাবার খরচ ৯০-১০০ টাকা
• আর্মি বা বিডিআর-এর রেফারেন্স থাকলে তিন্দু ও রেমাক্রিতে বিডিআর-এর আতিথেয়তা পেতে কষ্ট হবেনা.... আর বিডিআর-এর আতিথেয়তা পেলে থাকা-খাওয়ার সম্ভাব্য সর্বোত্তম ব্যবস্থা-টা সহজেই মিলে যাবে। সাথে উপরি পাবেন নিশ্চিন্ত নিরাপত্তা...যদিও নিরাপত্তা জনিত কোন অসুবিধা আমার চোখে পড়েনি।
©somewhere in net ltd.