![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এমএবি সুজন। এমএসএস (পাস) ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার গ্রাফিক্স ডিজাইন। তথ্য সংগ্রহ ও রচনা: ক্রাইম পেট্রোল (এটিএন বাংলা), ক্রাইম ফিকশন (জিটিভি), সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টারস সোসাইটি (ঢাকা মহানগর উত্তর)
২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস
এবার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চাই
ঢাকা বিমানবন্দর মুক্তিযোদ্ধা জামে মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত।
এমএবি সুজনঃ বিমানবন্দর থানা কমান্ডের উদ্যোগে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশে এই প্রথম মুক্তিযোদ্ধা জামে মসজিদ নির্মিত হয়েছে। মসজিদের সার্বিক উন্নয়ন ও চলমান নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে তড়িৎ গতিতে।
বিমানবন্দর থানা কমান্ড, মুক্তিযোদ্ধা জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটি ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন সোসাইটির সভাপতি যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার লিজেন্ড বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোঃ আব্দুর রহমান সরকার এর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে চলমান বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ড ও কর্মসূচি ইতিমধ্যে দেশব্যপি বেশ প্রশংসিত হয়েছে।
ঢাকা বিমানবন্দর মুক্তিযোদ্ধা থানা কমান্ড ও মুক্তিযোদ্ধা জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি, মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার ও বিশিষ্ট সমাজ সেবক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুর রহমান সরকার এর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত শোক রেলি, সমাবেশ ও বিশেষ আলোচনায় অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধা গুণিজনেরা।আব্দুর রহমান সরকার ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ইতিহাসের ঘৃণ্যতম হত্যাযজ্ঞ চালায়। বাঙালির জীবনে এমন নৃশংস কালরাত আর আসেনি। ঘুমিয়ে থাকা নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ট্যাংক, কামান, মেশিনগান নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল হানাদার বাহিনী। নিরীহ, নিরপরাধ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। বাঙালির ন্যায্য অধিকার ও মর্যাদার প্রতি আঘাত করা হয়েছিল এই রাতে। তৎকালীন ইপিআর সদর দপ্তর, রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা শহরে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। মুক্তিযুদ্ধের ৯টি মাসে বাংলাদেশজুড়ে পরিকল্পিত গণহত্যা চালিয়েছে ওই পাকিস্তানি বাহিনী।
আভিধানিক অর্থে কোনো দেশ, জাতি, গোষ্ঠী বা ভিন্ন মতাদর্শীদের খুন ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করাই হলো গণহত্যা। ১৯৪৮ সালের ৯ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত সিদ্ধান্ত ২৬০(৩)-এ গণহত্যা বলতে বোঝানো হয়েছে এমন কর্মকাণ্ড, যার মাধ্যমে একটি জাতি বা ধর্মীয় সম্প্রদায় বা নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে নিশ্চিহ্ন করার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে বা হচ্ছে।
বাঙালি জাতি নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য দীর্ঘ দুই যুগ লড়াই করেছে। স্বাধিকার অর্জনের সেই চেষ্টা নস্যাৎ করতেই ২৫ মার্চ রাতে শুরু হয় গণহত্যা। একটি জাতিকে চিরতরে নিস্তব্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা ছিল তাদের। বাঙালি জাতির প্রতি পাকিস্তানিদের ঘৃণা ও প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এই হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে। যদিও প্রতিরোধ করতে দেরি করেনি বাঙালি। অনভ্যস্ত হাতেই তুলে নিয়েছিল অস্ত্র। সম্মুখসমরে জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে। শুধু পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নয়, বাঙালিকে লড়তে হয়েছিল হানাদার বাহিনীর এদেশীয় সহযোগী আলবদর, আলশামস, রাজাকারদের বিরুদ্ধেও। স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালের হত্যাযজ্ঞ অস্বীকার করে এসেছে পাকিস্তানিরা। অতিসম্প্রতি পাকিস্তান থেকে ‘ক্রিয়েশন অব বাংলাদেশ : মিথস এক্সপ্লোডেড’ নামে প্রকাশিত একটি বইয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ নিয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে। ২৫ মার্চ ক্যালেন্ডারের পাতার একটি তারিখই শুধু নয়, বাঙালি জাতির কাছে নিজের অস্তিত্বের মতোই মূল্যবান এই তারিখটি। বিশ্বের বিবেকবান সব মানুষের কাছেই এই তারিখটি আলাদা বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। লিখিত সামরিক আদেশে সাধারণ মানুষ হত্যা বা গণহত্যার ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে দ্বিতীয়টি নেই।
প্রত্যেক জাতির জীবনে বিশেষ বিশেষ কিছু দিন থাকে, যে দিনগুলো সেই জাতিকে আলাদাভাবে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচয় করিয়ে দেয়। ২৫ মার্চ আমাদের জাতির জীবনে সে রকম একটি দিন। এবার প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। ২৫ মার্চের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও আমাদের আদায় করতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে গণহত্যার ঘটনা তুলে ধরতে হবে। বাংলাদেশ বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আইনগত সব দিক ভালোভাবে দেখে আমাদের অগ্রসর হতে হবে। গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে এত দিন যারা কাজ করেছে, তাদের সঙ্গে নিয়েই আদায় করতে হবে বাংলাদেশে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
গণহত্যা দিবসে মুক্তিযোদ্ধা থানা কমান্ড ও সন্তান কমান্ডের নানা কর্মসূচি পালন।
গণহত্যা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য আজ শনিবার ২৫ মার্চ ২০১৭ সকাল পৌনে ৭টায় বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট সকল কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৭টায় সমাবেশ ও শোক রেলি, ১০টায় গণহত্যা দিবসের আলোচনা, বেলা ২টায় অসহায় ভবঘুরে ও ছিন্নমূল পথশিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ এবং বাদ আছর মুক্তিযোদ্ধা জামে মসজিদে ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া দিনব্যপি নিজস্ব ডাক্তার দ্বারা সর্বসাধারণকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ব্যবস্থাপত্র দেয়া হয়।
©somewhere in net ltd.