![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনেকেই ‘ghost writer বা ভূত লেখক’ এর কথা শুনেছেন। কেউ কেউ দেখেও থাকবেন। যে সকল লেখক অন্যের জন্য লিখে দেন তারা সেই লেখক। এঁরা অনেক কষ্টে থাকেন। কোথাও লেখা প্রকাশ পায় না। কেউ জিজ্ঞেস করেন না। অনেক আশা-প্রত্যাশার মৃত্যু নিজের বুকে ধারন করেন। মন-সাধ-আহলাদ কফিনে বেঁধে দৃষ্টি ভেজান।
নিজের লেখা অন্যের নামে যখন প্রকাশিত হয়, কেমন লাগে? উপলব্ধি? এমন অনুভূতির কথা বলি। তখন একটি দৈনিকে কাজ করি। অনেক কবি-সাহিত্যিক-লেখক-নিবন্ধ প্রদায়ক আসেন। চা-সিগারেট চলে। সরস আড্ডা। এসবের ফাঁকে সম্পাদকীয় লিখি। অন্যের লেখা সম্পাদনা করি। পরিচয় হলো, এক প্রেস-মালিকের সঙ্গে। শহরের নামিদামি প্রেস। তাঁর একটি প্রতিবন্ধী উন্নয়নের সংস্থা আছে। তিনি পরিচালক।
একদিন চেপে ধরলেন, তাঁর জন্য একটি বক্তৃতা লিখে দিতে হবে। অনুরোধে ঢেঁকি গেলা। না বলতে পারি না। সৌজন্যতার খাতিরে লিখে দিলাম। তারপর এক সন্ধেয় যথারীতি শহরের অডিটোরিয়ামে আলোচনা অনুষ্ঠান। দর্শকের সারিতে ভিআইপি সিটে বসে আছি। পরিচালক উঠলেন। ভাষণ পড়লেন। পরের লাইনে কী আছে সব মনে পড়ছে আমার। অদ্ভুত-কিম্ভুত উপলব্ধি। এই হলো ভূত লেখক। দেশের বড় বড় রাজনীতিক যে সকল ভাষণ পড়েন, সে-সবের বেশিরভাগ ভূতগণ লেখেন। বিশ্বাস হয় না। চোখ-কান খোলা রাখুন। বুঝতে পারবেন।
তারপর অন্য এক ঘটনা। বিকল্প পেশা হিসেবে বিভিন্ন এনজিওর জন্য প্রকল্প প্রস্তাবনা, ব্রুশিয়র, প্রোফাইল, প্রতিবেদন, পলিসি ম্যানুয়াল লিখে দিই। দুটো পয়সা পাই। এক পরিচালক, যিনি আবার বেসরকারি কলেজের শিক্ষক; কাজ দিলেন। একটি শিরোনাম। তার উপর প্রবন্ধ লিখে দিতে হবে। অগ্রিম টাকা পেলাম। লেখা হলো। সম্পাদনা হলো। রেফারেন্স নির্ঘন্ট সব হলো। তিনি গোস্ত-ভাত খাওয়ান। কমলা-আপেল-মিষ্টি। কত কি! পরে জানলাম, এটি তার এমফিল থিসিসের কাজ। কোনোদিন আর যাই না। অনেকদিন পর রাতে হাজির। এবার একটি প্রবন্ধ লিখে দিতে হবে।আগের তুলনায় আরও সহজ বিষয়। অভাবগ্রস্ত মানুষ কী করি! বললাম, -
‘ভাই পারব না। উইনরক-এর জন্য পিপি লিখছি।’
তিনি বেশ তাগাদা দিলেন। অনেক সম্মানীর লোভ। কিন্ত টলে ওঠা সম্ভব নয়। তারপর দেড়-দুই বছর চলে গেল। একদিন মোবাইল বেজে ওঠে।
‘কী ভাই আসেন না যে...আসবেন। আমার পিএইডি হয়ে গেছে।’
কৌতূহল বড় নাছোরবান্দা। গেলাম। দেখি, পাঁচ-ছয় শত পাতার বিশাল স্ক্রিপ্ট। সুন্দর করে বাইন্ডিং। তার এনজিও-র একজন সিনিয়র কর্মকর্তা পাশে বসে আছেন। তিনি এগিয়ে দিলেন সেই বই। জিজ্ঞেস করি, -
‘কে করে দিল?’
‘আ রে ভাই আপনার মতো কত মানুষ আছে। রংপুরের এক প্রফেসর করে দিল। তিনিও পিএইচ ডি।’
কথা মুখে এসেছে, কত খরচ হলো? বললাম না। এ দেশে অনেককিছু হয়। টাকা থাকলে কত কি! গাঁজাখোরও কবি-সাহিত্যিক হতে পারেন। টাকা না থাকলে লেখার জন্য নিবেদিত মানুষ ভূত লেখক হোন।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৫
মাহবুব আলী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা
২| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৮
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি কাজ করে যান।
সফলতা পাবেনই।
মনে রাখবেন- দেরী হোক যায়নি সময়।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৭
মাহবুব আলী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:১৩
আমিন রবিন বলেছেন: আপনার কষ্ট কিছুটা হলেও বুঝতে পারছি। আপনিতো তাও লিখে কিছু টাকা পাচ্ছেন, আমিতো শুরুতে বেশির ভাগ কাজ শেষে ...