নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাবনাহীন ভাবনাগুলো

মাহের ইসলাম

মাহের ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

সোশ্যাল মিডিয়া : Weapons of Mass Destruction ?

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:০৪



বাংলাদেশের তরুণদের মতে, তথ্যপ্রাপ্তির জন্য সবচেয়ে কার্যকর হলো সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এক্ষেত্রে, ফেসবুক এদেশের তরুণদের প্রায় সকলেরই প্রথম পছন্দ। সরকারী হিসাব মতে, বর্তমানে দেশে ২ কোটি ৩৩ লাখ ফেসবুক ইউজার আছে। (প্রথম আলো, ২০ জুলাই ২০১৭)। অন্য আরেকটি সুত্রের তথ্য মোতাবেক, একজন এভারেজ ফেসবুক ইউজারের গড়ে ১৩০ জন ফেসবুক ফ্রেন্ড আছে। এর মধ্যে কতজন তরুণ আমি জানি না, তবে এর অর্ধেকও যদি তরুণ হয়, তাহলেও প্রায় এক কোটির বেশি বাংলাদেশি ফেসবুককে তথ্যপ্রাপ্তির সবচেয়ে কার্যকর উৎস হিসেবে বিবেচনা করেন। অর্থাৎ, দেশের এক বিশাল জনগোষ্ঠী তথ্যপ্রাপ্তির জন্য ফেসবুকের তথ্যের উপর নির্ভর করছেন।

প্রশ্ন উঠতেই পারে, ফেসবুকের উপর এই নির্ভরশীলতা সবক্ষেত্রেই কী ভাল ? এই প্রশ্নের উত্তর দেয়ার দুঃসাহস করতে চাই না। বরং এ ব্যাপারে অন্যদের কিছু ভাবনা শেয়ার করতে চাই। তবে আমি শুধুমাত্র ফেসবুক নিয়ে নয়, বরং সার্বিক ভাবে সোশ্যাল মিডিয়া নিয়েই বলবো।

১৪-২৪ বছর বয়সী ১৫০০ জনের উপর গবেষণা করে, যুক্তরাজ্যে দেখা গেছে যে, সব সোশ্যাল মিডিয়াই স্বাস্থের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। তন্মধ্যে, ইউ টিউব হল একমাত্র সোশ্যাল মিডিয়া যার সব দিকই ভাল পাওয়া যায়। অন্য আরেক গবেষণায় দেখা গেছে যে, গত ২৫ বছরে তরুণদের হতাশা ও উদ্বেগ প্রায় ৭০% বৃদ্ধি পেয়েছে এবং "সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার উদ্বেগ, হতাশা এবং দরিদ্র ঘুমের হারের সাথে সংযুক্ত।" এরকম বহু গবেষণার ফলাফল প্রায় কাছাকাছি; অর্থাৎ সোশ্যাল মিডিয়া প্রতিনিয়তই আমাদের স্বাস্থের ক্ষতি করছে।

এর পাশাপাশি আরো অনেক ক্ষতিকর দিক বের হয়ে এসেছে। যেমন, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নস্ট, কৃত্তিম বন্ধুত্ব তৈরি, প্রোপাগান্ডা ছড়ানো, সামাজিক অবিশ্বাস তৈরি, সাইবার গুণ্ডামি, সময়ের অপচয়, বাস্তবে একাকীত্ব বাড়িয়ে দেয়া ইত্যাদি উদাহরণ হিসেবে সামনে তুলে ধরা যেতে পারে। তবে এগুলোই সব নয়; বরং এমন উদাহরন আরো অনেক আছে। সত্যি বলতে কি, ভূরি ভূরি উদাহরন দেয়া যাবে।

এ ব্যাপারে আমরা যাই মনে করি না কেন, মার্ক জুকারবার্গ কিন্তু মনে করেন যে, ফেসবুকের খারাপ প্রভাব আছে। তাই, ফেব্রুয়ারী ২০১৭ তে তিনি বলেই ফেলেছেন, “ভালোর প্রভাব বৃদ্ধি করা এবং খারাপ প্রভাব কমানো আমাদের দায়িত্ব।”

তবে সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয়টি হল, এই যে সোশ্যাল মিডিয়ার কারনে একজন মানুষ সমাজের প্রকৃত বাস্তবতার সম্পূর্ণ বাইরে গিয়ে ভিন্ন বাস্তবতায় বাস করে।সেখানে সে যা কিছু সত্যি মনে করে, যা কিছু প্রাণ দিয়ে বিশ্বাস করে, তা প্রকৃতপক্ষে সত্য নয়; বরং অনেক ক্ষেত্রেই সত্যের পুরো বিপরীত। যে ভয়টির কথা গত ২৮ ডিসেম্বরের প্রথম আলোয় বারাক ওবামার সাক্ষাৎকারে ঊজ্জল্ভাবে উঠে এসেছে এভাবে, “ইন্টারনেটের একটা ঝুকি হচ্ছে, মানুষ ভিন্ন ভিন্ন বাস্তবতায় বসবাস করতে পারে। সামাজিক মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য মানুষের পক্ষপাতমূলক ধারনাগুলোকে আরও শক্তিশালী করবে।”

ভালো ও খারাপ দুই ধরনের প্রভাব থাকলেও খারাপ প্রভাব কমানোর দায়িত্ব আমাদের নিজেদেরই। আর ভিন্ন বাস্তবতায় বাস করবো, নাকি প্রকৃত সত্য জানার চেষ্টা করবো – সে দায়িত্ব তো আর অন্য কারো হতে পারে না। অবশ্যই নিজের।

সোশ্যাল মিডিয়ার ভালো দিকটি নিয়ে কথাবার্তা অন্যদিনের জন্যে তোলা থাকল।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মে, ২০২০ রাত ১০:০৮

বিজয় নিশান ৯০ বলেছেন: আমরা প্রকৃত সত্য জানতে চায় না । জানলেও আমাদের ফেভারে না থাকলে গোপন করার চেষ্টা করি । সোশ্যাল মিডিয়া নামে সোশ্যাল কিন্তু আদ্যতে আনসোশ্যাল ।

৩০ শে মে, ২০২০ রাত ১০:৫২

মাহের ইসলাম বলেছেন: ভাই,
আপনি আমার দুই বছর আগের ব্লগ বের করে মন্তব্য করেছেন !!!

অনেক অবাক হয়েছি।
অবশ্যই খুশীও হয়েছি।

ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।

২| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৩২

খায়রুল আহসান বলেছেন: একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরতে যেটুকু প্রচেষ্টা করছেন, তার প্রশংসা করছি। শিরোনামটাও চমকপ্রদ এবং কৌতুহলোদ্দীপক!
পোস্টে ভাল লাগা + +।
আপনি মনে হয় অনেকদিন ধরে ব্লগে অনুপস্থিত আছেন। আপনার পুরনো ও নতুন অনেকগুলো পোস্টে মন্তব্য করেছি। মনে হচ্ছে ব্লগে অনুপস্থিতির কারণেই সেগুলো দেখেন নি, কিংবা উত্তরও দেননি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.