নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাবনাহীন ভাবনাগুলো

মাহের ইসলাম

মাহের ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ম্লিটা ( Where Land Speaks to Heaven) - শেষ পর্ব

০৭ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৪:৩১



আগের পর্ব ম্লিটা ( Where Land Speaks to Heaven)

মার্জিত পোশাকে চল্লিশোর্ধ্ব আহমাদকে নিপাট ভদ্রলোক মনে হচ্ছে।
কাচা-পাকা দাড়ি এবং সুন্দর ইংরেজি তাকে আরো আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে।
যেচে এসে গাইড হতে চেয়েছে দেখে কিছুটা ভয় পাচ্ছিলাম।
শেষে আবার টাকা-পয়সা দিতে হয় কিনা?
কত টাকা চেয়ে বসে কে জানে?
কথা প্রসঙ্গে নিজে থেকেই জানালো যে, তার মতো গাইড আরো আছে। সবাই একাধিক ভাষায় দক্ষ। আর, দর্শনার্থীদের সকলের জন্যেই বিনামুল্যে গাইডের ব্যবস্থা করা আছে। এদের কেউ কেউ আবার হিজবুল্লাহ’র প্রাক্তন যোদ্ধা।
শুনেই মনে প্রশ্ন জেগে উঠলো, আহমাদ নিজেও কি তেমনি একজন?
তবে, জিজ্ঞেস করতে পারলাম না। কেমন যেন এক অস্বস্তি অনুভব করলাম।

ছবিঃ প্রবেশের পরেই খোলা স্কয়ার।

গেট পার হয়ে সোজা দক্ষিনে হাটতে হাটতেই কথা শুনছি আহমাদের।
চারপাশে সুন্দর ফুলের বাগান করা একটা পানির ফোয়ারার কাছে এসে থামলাম।
এতক্ষণ খেয়ালই করিনি যে আমরা একটা বড় খোলা পাকা স্কয়ার-এ চলে এসেছি। পুরো স্কয়ারে টাইলস বসানো। ঠিক মাঝখানে ফোয়ারাটি। মূলত জমায়েত হওয়ার একটা সুযোগ এখানে পাওয়া যায়। বিশেষ করে টিকেট কেটে ভিতরে আসতে কারো দেরী হলে, অন্যরা তখন এখানে অপেক্ষা করতে পারে। এখান থেকে বিভিন্ন অংশে যাওয়ার রাস্তা আছে। চাইলে সরাসরি নির্দিষ্ট এলাকায়ও যাওয়া যায়। আবার, দর্শনার্থীদের কোনো দলকে ব্রিফিং-এর জন্যেও এই স্থানটি চমৎকার।
থিম পার্কের বিন্যাস সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত একটা ধারনা পাই আহমাদের কথায়।
ম্লিটাকে একটি প্রাকৃতিক যাদুঘর বলা যেতে পারে। তবে ‘Tourist Landmark of Resistance’ কিংবা ‘Mleeta Resistance Tourist Landmark’ হিসেবেই এটি বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছে। চালু করা হয় ২০১০ সালে, লেবানন থেকে ইসরায়েলীয়দের প্রত্যাহারের দশম বার্ষিকী উপলক্ষে। দক্ষিন লেবাননের এক পাহাড়ি অঞ্চলের চুড়ার অবস্থিত প্রায় ষাট হাজার বর্গ মিটার জায়গা জুড়ে এটি বিস্তৃত। লেবাননে ইসরাইলী দখলদারিত্ব চলাকালীন সময়ে এই পাহাড় চুড়াটি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের কৌশলগত এবং সামরিক বেস হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছিল। তখন এই বেস থেকে কয়েক হাজার সামরিক মিশন পরিচালনা করা হয়েছিল।
মুজাহিদিনদের বিশ্বাস, দেশপ্রেম ও কষ্ট সহিষ্ণুতার স্বীকৃতি এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে তাদের আত্নত্যাগের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা এই যাদুঘরের অন্যতম উদ্দেশ্য। একই সাথে মুজাহিদিনরা যে জায়গাগুলিতে বাস করতো, যে গুহা এবং বন থেকে যুদ্ধ করতো, সেগুলো সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এছাড়া ইসলামিক প্রতিরোধের অনন্য অভিজ্ঞতার স্টাইলের সাথে সাধারণ মানুষকে পরিচিত হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে। ইসরায়েলের পরাজয়ের প্রতীক হিসাবে এখানে ইসরায়েলী ট্যাঙ্ক, জিপ, হেলিকপ্টারের অংশ, বোমা, অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম প্রদর্শন করা হয়।

ছবিঃ প্রদর্শনী হল।

ব্রিফিং শুনতে শুনতেই স্কয়ার এর মধ্য দিয়ে এগিয়ে দক্ষিনপূর্ব কোনায় একটা মাল্টি পারপাস হলে চলে এলাম। আমাদেরকে শুরুতেই একটা ভিডিও দেখানো হবে। আরো কয়েকজন পর্যটক আসার পরে ভিডিও শুরু হলো। হিজবুল্লাহ’র (The Party of God) ইতিহাস এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরোধ আন্দোলনের সাফল্য নিয়েই এই ভিডিও। পুরো ভিডিও জুড়ে ব্যকগ্রাউন্ড মিউজিক হিসেবে দেওয়া হয়েছে কান ফাটানো যুদ্ধের দামামা। মিউজিকের তেজে কয়েকবার আমি নিজেই উত্তেজিতবোধ করছিলাম। হিজবুল্লাহ’র প্রধান হাসান নাস্রুল্লাহ’র বক্তৃতাও আমার কাছে রক্ত গরম করে দেয়ার মতো জ্বালাময়ী মনে হয়েছে। অবশ্য আরবি বুঝি নাই। ইংরেজি সাব টাইটেল আর বলার ধরনেই এমন অনুভুতির জন্ম। প্রায় ১২ মিনিটের সংক্ষিপ্ত ভিডিও শেষ করে বাইরে এসে দেখি আহমাদ অপেক্ষায় রয়েছে।

ছবিঃ রসাতল।

প্রদর্শনী হল থেকে বের হয়ে দৃষ্টি আটকে গেল আপাতঃ দৃষ্টিতে ইতস্তত বিক্ষিপ্ত কিন্তু বাস্তবে সুবিন্যস্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা যুদ্ধের অসংখ্য উপকরণ দিয়ে ঠাসা একটা স্থানে। পার হয়ে আসা স্কয়ারের পুরো পশ্চিমপাশ জুড়ে প্রায় ৩৫০০ বর্গ মিটার এই গোলাকার নিচু স্থানটি আসলে অভিনব এক উন্মুক্ত যাদুঘর। চার পাশে উঁচু দেয়ালের বাইরে রেলিং ঘেরা ফুটপাথ। যেখানে দাঁড়িয়ে সব কিছু দেখা যায়।
কি নেই এখানে?
হরেক রকমের আধুনিক অস্ত্র, বিশাল কামান, বিভিন্ন সাইজের গুলি-গোলা হতে শুরু করে নানা ধরনের সামরিক যানবাহন।
এমনকি ইসরাইলের গর্ব ‘মেরকাভা মার্ক – ৪’ ট্যাঙ্কও রাখা হয়েছে। ট্যাংকটির মূল কামানটাকে এমন নান্দনিকভাবে পেচানো হয়েছে, দেখে মনে হচ্ছে কামান দিয়ে গিঁট বেঁধেছে। এই ‘গিঁট’টাতে চোখ পড়তেই শরীরে কেমন যেন অদ্ভুত এক শিহরণ বয়ে গেল। কারণ, বর্তমান যুগের অন্যতম সেরা ট্যাঙ্ক হিসাবে এঁকে বিবেচনা করা হয়। যাকে ইসরাইলীরা গর্ব করে ডাকে ‘দেবতার রথ’ (God’s Chariot). বলে।

আচমকা, আহমাদের কণ্ঠের উচ্ছ্বাস আমাকে ছুয়ে যায়।
এ যেন অন্য কেউ। গর্বিত কণ্ঠে নিজে থেকেই মতামত ব্যক্ত করে, এই বৃত্তটি টর্নেডোর মতো। একটা তুফান ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে আঘাত করে তাদের কবর রচনা করেছিল। যে কবরের অবস্থান দোযখের তলানিতে। কথার প্রতিটি শব্দে আলাদা ভাবে জোর দেয়া। আত্নবিশ্বাস এবং সাফল্যের ছাপ তার চোখে মুখে।

যুদ্ধে জড়ালে একটা দেশ কিরকম রসাতলে যেতে পারে, সেরকম একটা বার্তা ফুটিয়ে তুলতেই এর নামকরন করা হয়েছে ‘রসাতল’ (The Abyss)। জায়গাটুকুর পুরোটাই ইসরাইলীদের কাছ থেকে দখল করা সামরিক সরঞ্জামাদি দিয়ে ভর্তি। পাকানো ফুটপাথ ধরে হেটে নিচে নেমে, বিক্ষিপ্তভাবে ফেলে রাখা গণিমতের এই মালগুলোকে আরো কাছে থেকে দেখার সুযোগ আছে।
আমি এবেসের নিচে নামতে শুরু করলাম।

ছড়ানো ছিটানো সরঞ্জামগুলিকে একদম কাছে থেকে দেখার আশায়।
একটু এগুতেই একটা হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ নজর কেড়ে নিলো।
পাশেই বোর্ডে লেখা কিভাবে ইসরাইলী এই হেলিকপ্টারটিকে মারমীন উপত্যকায় নামানো হয়েছিল।

হঠাৎ শীতল বাতাসের ছোঁয়া এসে লাগতেই খেয়াল হলো যে, সূর্য ঢাকা পড়ে গেছে হালকা মেঘের চাদরে।
যে চাদরের কোনা ছুয়ে আছে আমাদের পাশের পাহাড় চুড়ায়।
অবশ্য প্রায় হাজার মিটারের বেশি উঁচু এই স্থানে এমনিতেই বিকেলে একটু শীত লাগার কথা।

ছবিঃ পাথুরে পথ।

এবেস থেকে বেরিয়ে হাটতে শুরু করলাম এক পাথুরে পথের উপর দিয়ে।
প্রায় ২৫০ মিটার লম্বা এই পথের চারপাশে বন আর ঝোপঝাড়ের মধ্যেই হিজবুল্লাহ’র যুদ্ধের অবস্থান ছিল।
হাটতে হাটতে মনে হচ্ছিল, আমি কোনো জঙ্গলের মধ্যে হাটছি।
যুদ্ধের সেই সময়কে স্মরণ করিয়ে দিতেই এখনো অনেকগুলো পোষ্ট রাখা হয়েছে।
যেখানে ডামি মডেলকে ইউনিফর্ম পরিয়ে অস্ত্র গোলাবারুদ দিয়ে সজ্জিত করা।
হাটতে হাটতেই চোখে পড়ল ট্যাংক বিদ্ধংসী ক্ষেপণাস্ত্র, মাল্টি ব্যারেল রকেট লঞ্চার, মেশিন গান, ড্রোন, অব্জারবেশন পোষ্ট ইত্যাদি। সবগুলো পোষ্টই খুব বাস্তবসম্মতভাবে ক্যামোফ্লেজ নেট, কাটাতারের বেড়া আর বালির বস্তা দিয়ে তৈরি।

ছবিঃ হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের কর্মকাণ্ড।

কয়েকটা অবস্থান এতটাই বাস্তবসম্মত যে, আমার ভয়ই লাগছিল।
আচমকা এক জায়গায় জংগলের ভিতরেই দেখলাম আহত একজনকে শশ্রুসা করা হচ্ছে। সবার পিছন দিক দেখতে পাচ্ছিলাম। তাই, প্রথমে সত্যি কিছু মনে করেছিলাম। ভুলেই গিয়েছিলাম যে, আমি যাদুঘরে এসেছি। কিছুদুর এগুতেই দেখলাম, মাটির ভিতর থেকে একটা মাল্টি ব্যারেল রকেট লাঞ্চার এর অনেকগুলো ব্যারেল তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে। অসাধারণভাবে ক্যামোফ্লেজ করে রাখা। একদম কাছে গেলেই শুধু চোখে পড়ে। যতই সময় যাচ্ছে, ততই দেখছি। আর হিজবুল্লাহর সমর-প্রস্তুতি দেখে বিস্মিত হচ্ছি। বিস্ময়ের ঘোর কাটানোর ফুরসত পাচ্ছি না।

ছবিঃ হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের কর্মকাণ্ড।

পাথুরে পথের মাঝেই পেলাম গুহার প্রবেশ পথ।
ঝোপঝাড় আর পাথরের আড়ালের প্রবেশ পথটি শুধু কাছে এলেই চোখে পড়ে।
হিজবুল্লাহ’র সুড়ঙ্গ সম্পর্কে আগেই পড়েছিলাম। তাই দেখার বেশ কৌতূহল ছিল। ভিতরে প্রায় ২০০ মিটার লম্বা সুড়ঙ্গ ছাড়াও ভূগর্ভস্থ অনেকগুলো কামরা বানানো হয়েছে। পাথর কেটে সব কিছু তৈরিতে প্রায় তিন বছর লেগেছিল। হাজার খানেক যোদ্ধা এর ভিতরে ডিউটি করতো। জেনারেটরের সাহায্যে ভিতরে সর্বত্র ছিল বৈদ্যুতিক বাতি।

ছবিঃ ভূগর্ভস্থ অফিস।

সুড়ঙ্গের যত ভিতরে যাচ্ছি, বিস্ময়ের পারদের মাত্রা ততই বাড়ছে।
যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিকে উপলব্ধি করার সুবিধার্থে ভূগর্ভস্থ রুমগুলোতে ইউনিফর্ম পরিহিত ডামি রাখা হয়েছে।
একটা কমান্ড পোস্ট দেখলাম। দেয়ালে অনেক ম্যাপ। টেবিলের উপরে এক ম্যাপ ঘিরে চার পাশে অনেক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। এক রুমে একজনকে দেখলাম, কোরান পড়ছে। অস্তাগার, নামাজের রুম, অফিস, কম্যুনিকেশন রুম, রান্না ঘর, মেডিক্যাল সেন্টার, এমনকি একটা কয়েদি খানাও আছে দেখলাম। প্রায় ৩০ জন একত্রে থাকার মতো একটা ব্যরাকের মতো বড় রুমও আছে।

ছবিঃ ভূগর্ভস্থ রুমে কোরান পাঠরত হিজবুল্লাহ যোদ্ধা।

সুড়ঙ্গের প্রায় পুরোটা এবং অনেকগুলো রুমের ছাদে মেটাল প্লেট দেয়া।
আর, সুড়ঙ্গের দেয়ালের অনেকাংশে মেটাল শিট দিয়ে ঢাকা।
এত কিছু এই পাথর কেটে করলো কিভাবে?
ভাবতেই আমার কাছে অসম্ভব মনে হচ্ছে। আর, এরা এটা বানিয়ে, বছরের পর বছর যুদ্ধ চালিয়ে গেছে।
এমনভাবে পাহাড় কেটে বানানো যে, আকাশ থেকে বোমা মেরেও কিছু করা যাবে কিনা সন্দেহ।
ঝোপ ঝাড়ের আড়ালের প্রবেশ পথ, শত্রুপক্ষের জন্যে সহজে খুঁজে বের করাও সম্ভব হবে না। এমনকি ড্রোন দিয়েও এই অবস্থান বের করা কঠিন।

টানেল থেকে বের হয়ে ছবি তুললাম।
যে ছবিতে টানেলের মুখ দেখা যাবে। কিন্তু একজন কল্পনাও করতে পারবে না, এর ভিতরে কি অসম্ভব কাজকারবার করা হয়েছে।
এখান থেকেই দুপাশে মানুষ সমান উঁচু পাথরের মধ্য দিয়ে হেটে চলার রাস্তা। প্রায় ১০০ মিটারের মতো। ঠিক সুড়ঙ্গ নয়, তবে দুপাশের পাথর কেটে একজন মানুষ চলার মতো চওড়া করা হয়েছে। উপরে গাছপালা ছাড়াও, ক্যামোফ্লেজ নেট দেয়া। তাই আকাশ থেকে এই রাস্তা দেখা যাবে না। শেষ মাথায় লুক আউট পয়েন্ট। অনেক নিচে গ্রাম। এই জায়গাটি ম্লিটা’র সর্বদক্ষিন-পশ্চিম কোনায় অবস্থিত।
এখান থেকেই নিচের পুরো উপত্যকা দেখা যায়। যে উপত্যকায় ছিল ইসরাইলি বাহিনী।
যুদ্ধের সময় এখানে হিজবুল্লাহ’র অবজারভেশন পোস্ট ছিল।
টানেল থেকে পাথুরে পথ দিয়ে এখানে এসে নিচের উপত্যকায় নজর রাখতো।
এখন একটা কংক্রিটের প্লাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে দর্শনার্থীদের জন্যে। রেলিং ঘেঁষে দু’টো বিশাল পতাকা উড়ছে। একটা লেবাননের জাতীয় পতাকা। অন্যটি হিজবুল্লাহ’র পার্টি পতাকা।

ছবিঃ অব্শজারভেশন পোষ্ট হতে নিচের উপত্যকার দৃশ্য।

ছবি তুলতে তুলতেই বুঝলাম, অন্ধকার হয়ে এসেছে।
বাতাসের ঠান্ডার তীব্রতা এখন আগের চেয়ে বেশি।
তবে এটা হয়েছে, মেঘের সারি এই পাহাড় চুড়াকে ঘিরে ফেলেছে বলে।
মেঘের ফাঁক দিয়েই উপত্যকায় বাড়িঘর এবং ইসরাইলী বাহিনীর অবস্থান কোথায় ছিল সেটা দেখিয়ে দিল আহমাদ। আলো কমে এলেও চারপাশের পাহাড় আর প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্যের টান বেড়েছে। হালকা ঠাণ্ডা বাতাসের প্রশান্তি, হাতের কাছেই সবুজ পাহাড়ের চুড়ায় ছুয়ে যাওয়া সাদা মেঘের অসাধারণ দৃশ্য আর অনেক নিচে দিগন্ত বিস্তৃত খোলা উপত্যকা মিলিয়ে নিজেকে পৃথিবী থেকে দূরে, কিন্তু স্বর্গের কাছকাছি কোথাও মনে হচ্ছে। মন চাইছে, আরো কিছুটা সময় এখানে থাকি। কিন্তু জানি, সেটা সম্ভব নয়। তাই, ঝটপট আরো কয়েকটি ছবি তুললাম। পরে আহমাদ নিজেই এগিয়ে এসে আমার আর আব্দুল্লাহর ছবি তুলে দিল।

প্লাটফর্মে থাকতেই চোখাচোখি হল এক দম্পত্তির সাথে।
তরুণ এই দম্পত্তি আমাদের সাথে শুরুতে ভিডিও দেখেছে।
এর পরে আমরা একত্রেই সব দেখছিলাম। তবে তাঁরা সুড়ঙ্গে ঢুকেনি। এখন পাথরের ঝোপঝাড়ের ভিতরের আরেক রাস্তা দিয়ে বেরিয়ে এসেছে। তাদের দলেরই এক তরুণ আমাদের সাথে সুড়ঙ্গে ছিল। সে এগিয়ে গিয়ে দম্পত্তিকে কি কি বলল। শুনতে পেলাম না। কিন্তু দেখলাম, তারা তিনজনেই পাথুরে রাস্তা দিয়ে সুড়ঙ্গের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

আমরা ফিরতে শুরু করলাম।
পথ শেষ হয়েছে, ‘লিবারেশন স্কয়ার’-এ গিয়ে।
একটা খোলা স্কয়ার। তবে প্রথমটার মতো বড় না। চার পাশে ফুলের বাগান। পুরো বাগানই অনেক বৈচিত্রময় দেখতে। সবগুলো ফুলই খুব সুন্দর। কেন যেন অনুভব করলাম, এখানকার প্রতিটা ফুল গাছ অত্যন্ত যত্নের সাথে বেছে নেয়া হয়েছে। এক পাশে কয়েকটি পাথুরে সিড়ি। সর্বশেষটা ঠেকেছে একটা দেয়ালে। যেটা প্রতিরোধ যুদ্ধের শহীদদের সম্মানে তৈরি করা হয়েছে। দেয়ালে, হাসান নাস্রুল্লাহ’র একটা বক্তব্য আরবী এবং ইংরেজিতে লেখা।
এখানে আহমাদকে একটু বিষন্ন মনে হলো।
দেয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে, জানালো, এখানকার যোদ্ধাদের বেশীরভাগই আশে পাশের গ্রামের। এখানকার প্রতিটা ঘরেই কেউ না কেউ শহীদ হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে। এমন কোন পরিবার নেই, যেখানে কেউ শাহাদত বরন করেনি।

আরো কিছুদুর এগিয়ে যেতেই পথের কাছাকাছি কয়েকটা ড্রোন দেখলাম।
পাশেই এগুলো কিভাবে দখলে আনা হয়েছিল, সেই ইতিহাস লেখা ডিসপ্লে বোর্ড বসানো। অবশ্য, এমন বোর্ড পুরো ম্লিটা জুড়েই দেখেছি। সব জায়গায়, সুন্দর করে আরবি এবং ইংরেজিতে লিখে রেখেছে। কয়েক জায়গায় আবার হিব্রু দিয়েও লেখা রয়েছে।

সুন্দর পরিষ্কার পায়ে চলা পথ দিয়ে ফিরছি।
হাটতে হাটতেই শুরুর স্কয়ারে উঠে পড়লাম। স্কয়ার থেকে উত্তর দিকে মেইন গেটের দিকে এগুতে গিয়ে ডানে বড় একটা চওড়া সিড়ি ক্রমাগত উপরে উঠে যেতে দেখলাম। সিড়ির দুপাশে দু’টা কংক্রিটের উঁচু স্তম্ভের মতো।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে, ম্লিটা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই, আমরা ঐদিকে আর গেলাম না।

তবে, আহমাদ জানালো, সিড়িগুলো উপরে উঠতে উঠতে টাইলস বসানো প্রায় ২০০০ বর্গ মিটারের এক খোলা জায়গায় পৌঁছেছে। যার মাঝখানে একটা ক্রিস্টালের প্রাচীর আছে। ঐ প্রাচিরে প্রতিরোধ আন্দোলনের শহীদদের প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধাঞ্জলি খোদাই করা। এই ক্রিস্টালের ম্যুরাল এবং শহীদদের প্রতি উৎসর্গ করা শব্দগুলোকে স্থানীয়রা শাহাদাত এবং ত্যাগের প্রতীক বলে গণ্য করে।

সিঁড়ির বিভিন্ন ধাপে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অল্প কিছু লোক বসে আছে।
দেখে মনে হচ্ছে, কারো অপেক্ষায় কিংবা বিশ্রামের জন্যে বসেছে।
একেবারে শেষ মাথায় একদল তরুণীকে ছবি তুলতে দেখলাম।
কারো পরনে জিন্স, শার্ট। আবার কেউ কেউ হিজাব পড়া। কারো সারা শরীর ঢেকে আছে বোরখায়। কয়েকজনের আবার নিকাব দিয়ে মুখ পর্যন্ত ঢাকা। লেবাননে তরুণীদের পোষাকের ভিন্নতার মাত্রা আমাকে প্রথম দিনে থেকেই বিস্মিত করেছে। আজও তার ব্যতিক্রম হলো না।

আরেকটু এগিয়ে গেটের কাছাকাছি হাতের ডানে স্যুভেনির শপ।
আমাকে গিফট শপের কাছে রেখেই আহমাদ বিদায় চাইলো। তার আন্তরিকতা আমাকে সত্যিই মুগ্ধ করেছে।
এখন, ধন্যবাদ দিতে গিয়েও তার বিনয়ের কাছে হার মানতে হলো।

বিদায়ের মুহূর্তে, সরাসরি জানতে চাইলাম, হিজবুল্লাহ’র কোন যোদ্ধার সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ আছে কিনা?
স্মিত হাঁসি ঠোঁট ছাড়িয়ে সংক্রমিত হলো কাঁচা পাকা দাঁড়িতে।
কোন উত্তর না দিয়ে, বিদায়ের ভঙ্গীতে হাত নেড়ে এগিয়ে গেল সামনের দিকে।

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৪:৫৭

রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: ভালো লাগলো ।

০৭ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৫:১০

মাহের ইসলাম বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আপনার ভালো লেগেছে জেনে, খুশী হলাম।

শুভ কামনা রইল।

২| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৫:২৬

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: পরিশ্রমী পোস্ট +

পড়বো ইনশাআল্লাহ

০৭ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৪

মাহের ইসলাম বলেছেন: ইনশাআল্লাহ।

অগ্রিম ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
শুভ কামনা রইল, ভালো থাকবেন।

৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১২

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: দেখি সময় নিয়ে একবার পড়তে হবে।

০৭ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২১

মাহের ইসলাম বলেছেন: আপনার আগ্রহের জন্যে ধন্যবাদ।

ভালো থাকবেন, শুভ কামনা রইল।

৪| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:১৭

অন্তরা রহমান বলেছেন: অসাধারণ। দারুন লাগলো। অনেক সময় ও যত্ন নিয়ে লেখা মনোমুগ্ধকর পোস্ট।

০৭ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:২৫

মাহের ইসলাম বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ।
অনুপ্রাণিতবোধ করছি।

ভালো থাকবেন, শুভ কামনা রইল।

৫| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: চমৎকার একটী পোষ্ট।
অনেক পরিশ্রম করেছেন।

০৭ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:৩৮

মাহের ইসলাম বলেছেন: আপনাকে দেখে ভালো লাগলো।
অনুপ্রেরণার জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ।

শুভ কামনা রইল। ভালো থাকবেন।

৬| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:৩৯

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আবারো পড়লাম।
আপনার লেখার হাত চমৎকার।

০৭ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:৪২

মাহের ইসলাম বলেছেন: আপনাকে দেখে খুশী হলাম। ভালো লাগছে।
অনুপ্রাণিত করার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

শুভ কামনা রইল। ভালো থাকবেন।

৭| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১০:৩১

আনমোনা বলেছেন: সেই কবে প্রথম পর্ব পড়েছিলাম। দ্বিতীয় পর্ব আজ।
ভালো লাগলো।

০৭ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১০:৫২

মাহের ইসলাম বলেছেন: দোষটা আমারই।
দ্বিতীয় পর্বে তথ্যগত দিকের ভার বেশি থাকায় লিখতে আলসেমি ধরেছিল।

ভালো লেগেছে, জেনে খুশী হলাম। অনুপ্রাণিতবোধ করছি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।

শুভ কামনা রইল। ভালো থাকবেন।

৮| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১:১৮

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: দেখলাম। পড়লাম। ভালো লেগেছে।

০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৮:৫০

মাহের ইসলাম বলেছেন: আপনার কথা শুনে আমারও ভালো লাগচ্ছে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।

ভালো থাকবেন।

৯| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১:৪৬

ওমেরা বলেছেন: অনেক তথ্য জানা হল, লিখাও ভালো হয়েছে , ছবি গুলোও ভালো লাগল ।

০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৮:৫১

মাহের ইসলাম বলেছেন: সকাল সকাল আপনার এমন কথা শুনে আমারও ভালো লাগল।

অসংখ্য ধন্যবাদ।

শুভ কামনা রইল, ভালো থাকবেন।

১০| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:৩৬

অজ্ঞ বালক বলেছেন: একটা সময় মধ্যপ্রাচ্য নিয়া ব্যপক পড়াশোনা ছিল আগ্রহটা জন্মাইছিল মাসুদ রানা পইড়া। ইন্তিফাদা নিয়া অনেক নাটাঘাটা করসি আর বুঝছি একজন ভালো নেতার অভাবে সমাধানটা হইতাসে না। সেই নেতা আসা পর্যন্ত এমন ভজঘট হইয়া থাকবো সব কিছু।

০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৩:৩০

মাহের ইসলাম বলেছেন: মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।

মধ্যপ্রাচ্য আমাকেও টানে।
মূল কারণ, ধর্ম এবং ধর্মের সাথে সংশ্লিষ্ট ইতিহাস।

ভালো নেতা এলেই কি সমাধান হবে?
শুভ কামনা রইল।

১১| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০৯

জুন বলেছেন: ভালোলাগলো লেখাটি মাহের ইসলাম ।

০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:৫৭

মাহের ইসলাম বলেছেন: আপনার ভালো লেগেছে শুনে আমারও ভালো লাগলো।
অনুপ্রাণিত হলাম।

অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা রইল।

১২| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৪:২৪

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় মাহের ভাই,

যেহেতু পোস্টটি বেশ বড় কাজেই সেদিন পড়ে কমেন্ট করার মত সময় ছিল না সে কথা আপনাকে আগেই জানিয়েছি।
আপনার এই পোস্টটি আমার অসম্ভব ভালো লেগেছে। অসম্ভব প্রাণবন্ত বা গতিশীল লাগলো পোস্টটি। আগাগোড়া এমন ভাবে বর্ণনা করেছেন যেন বাস্তবে মনে হল আমি প্রত্যক্ষদর্শী আর আপনি আমার গাইডের ভূমিকা পালন করেছেন।
পোস্টে ভালোলাগা।++++ এবং পঞ্চম লাইক।
এমন পোস্টে পোস্ট সংক্রান্ত দু'একটি কথা বলতেই হয়:-
১-গাইড আহমদের যেচে এসে গাইড করার উদ্দেশ্যটা ঠিক পরিস্কার হলো না। যদিও ওনার দেখানো পথে ম্লিটার বিশ্বব্যাপী সুনাম অর্জনের ইতিহাস জানতে পারলাম। জানতে পারলাম মুজাহিদদের আত্মত্যাগ ও গরিমার কথা। সেই সঙ্গে ইসরাইলের পরাজয়ের এক নিদারুন ইতিহাসও।
২-ব্রিফিং শুনে বড় হলঘরে আপনারা যখন হিজবুল্লাদের বীরত্বপূর্ণ ইতিহাসের উপর নির্মিত ভিডিও শুনছিলেন তখন ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের বর্ণনার প্রসঙ্গটি কেন যেন আমাকে ছোটবেলাকার রেডিওতে মায়ের প্রিয় সান্ধ্যকালীন বাংলাদেশ রেডিওর দুর্বার অনুষ্ঠানের ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের কথা মনে করিয়ে দিল। যৌক্তিক বা অযৌক্তিক এই প্রশ্ন অমূলক; নেহাত শৈশবের সেই দিনের অনুভূতির পরিচয় করলাম।
৩-'দেবতা রথে'র ও 'রসাতলে'র পরিণতি ও আপনার বর্ণনা শুনে মনে হল বাস্তবে যেন আমি প্রত্যক্ষদর্শী আর আপনি গাইডের ভূমিকা পালন করছেন।




০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৪৩

মাহের ইসলাম বলেছেন: আপনাকে দেখে খুশী হয়েছি।
অসংখ্য ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানবেন।
আপনার মন্তব্য পড়ে না বুঝে উপায় নেই, আপনি কতটা মনোযোগি পাঠক।

আপনার কথার প্রেক্ষিতে, যতটুকু জানি এবং বুঝেছি, তাই বলছি।

১। ম্লিটার নিজস্ব গাইড আছে। যারা ইংরেজি, ফ্রেঞ্চ, আরবি, জার্মান ইত্যাদি ভাষায় পারদর্শী। কতৃপক্ষই গাইডদের রেখেছে। ট্যুরিস্ট এলে গাইডরা নিজেরাই তাদেরকে একম্পানি করে। ট্যুরিস্টদের সহায়তা করাই উদ্দেশ্য। তবে, নিরাপত্তার ব্যাপারটি উড়িয়ে দেয়া যায় না। ট্যুরিস্টের ছদ্মবেশে কেউ এসে নাশকতা মূলক কিছু করে যেতেই পারে। হিজবুল্লাহ এবং ইসরাইলের পরিস্থিতি বিবেচনায় সেটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।

২। ভালো উদাহরণ দিয়েছেন। ব্যাপারটা সেরকমই। শুধু মিউজিকই নয়, কিছু কিছু ক্ষেত্রে বোমা বিস্ফোরণ বাঁ প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ দিয়ে পুরো বিষয়টাকে উত্তেজনাপূর্ণ এবং রোম হর্ষক করার চেষ্টা করা হয়েছে।

৩। পোষ্টের সাইজ বেশি বড় হয়ে যাচ্ছে, মনে করে বেশি কিছু বলার সুযোগ পাইনি। তবে দেবতার রথ কিন্তু আসলেই ভয়ংকর স্বনামধন্য।

১৩| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৩

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন:
প্রিয় মাহের ভাই,

প্রথম মন্তব্যটির কলেবর বৃদ্ধি পাওয়াতে মাঝপথে ব্রেক করে আবার এলাম ।
টানেলের বর্ণনাটি খুব ভালো লেগেছে। আপনার ভাষায় স্বর্গের কাছাকাছি কোন স্থানে যেন পৌঁছে গেছি। পাঠক হিসেবেও আমারও ঠিক সেটাই মনে হল।
আর শেষ তাহলে লিবারেশন স্কয়ার!!
এবার শুরু হলো ফিরে আসার পালা।

ইচ্ছা সত্ত্বেও দেখা হলো না কৃষ্টাল ম্যুরাল বা শাহাদাতের। হিজবুল্লাহদের ত্যাগের প্রতীক।

বেলা কমে আসছে ;ক্রমশঃ অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে; পারদ ক্রমশ নিম্নগামী। কাজেই প্রত্যাবর্তন ছাড়া উপায় নাই।
তবে শেষ বেলায় আপনার সাথে আমরাও কাঁচা পাকা দাঁড়ির অমায়িক হিজবুল্লাহ যোদ্ধার পরিচয় পেয়ে আনন্দিত হলাম। স্যালুট আহমদকে।

সুন্দর পোস্টের জন্য আবারো ধন্যবাদ জানাই আপনাকে।
অফুরান শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানবেন।

০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৪৬

মাহের ইসলাম বলেছেন: আমরা খুব কম সময় নিয়ে গিয়েছিলাম।
অবশ্য রাস্তা চিনি না এবং এই জায়গার নামও বৈরুতের অনেকে শুনেনি। আমাকে রীতিমতো গুগলের সাহায্য নিতে হয়েছে। সাঈদা শহরে, একটা ফাউ চক্কর খেতে হয়েছিল।
সব মিলিয়ে আরো দেরী হয়েছে।

হয়ত সময় থাকলে, সব কিছু আরো ভালো ভাবে দেখতে পেতাম।

আপনাকে আবারও অনেক অনেক ধন্যবাদ।
শুভ কামনা রইল। ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.