![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সংযুক্ত সম্পাদক, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি
বর্তমান সমাজে জনমানসে সিনেমার প্রভাব অনস্বীকার্য।
সাম্প্রতিককালে সেন্সর বোর্ড প্রধান পহেলাজ নিহালনির বদান্যতায় 'উড়তা পঞ্জাব' সিনেমা নিয়ে অহেতুক বিতর্ক শুরু হয়েছে।
মোদীজি ক্ষমতায় আসার পরেই বিভিন্ন সম্মানীয় পদে যেসব পেটোয়া লোক বসিয়েছেন নিহালনি তাদের অন্যতম। '
জাঙ্গল বুক' সিনেমাতে হিংস্র জন্তু দেখে বাচ্চারা ভয় পাবে এই 'যুক্তি'তে U/A সার্টিফিকেট দিয়ে তিনি আগেই লোক হাসিয়েছেন।
"মোদীর চামচা" বলে প্রকাশ্যে গর্ব বোধ করা নিহালনি 'উড়তা পঞ্জাব' সিনেমাতে 89 টি সিন বাদ দিতে বলেছিলেন।
ড্রাগের নেশায় বিধ্বস্ত পাঞ্জাব দেখিয়ে রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে এই অজুহাতে সিনেমা থেকে 'পঞ্জাব' শব্দটিও বাদ দিতে বলেছেন।
রোগ গোপন করে তার থেকে মুক্তিলাভ অসম্ভব।
নিজের অসুস্থতা স্বীকার করলে তবেই তার পরবর্তী পদক্ষেপ রূপে নিরাময়ের পথ খোঁজা শুরু হয়।
তাই রাজ্যের ভাবমূর্তি রক্ষার অছিলায় সত্যকে গোপন করলে তাতে ড্রাগ নামক ক্যান্সারের হাত থেকে রেহাই মিলবেনা।
কিন্তু পঞ্জাব প্রীতির রহস্য অন্যত্র লুকিয়ে আছে। রাজ্যটিতে বিধানসভা ভোট আসন্ন।
বিজেপির জোটসঙ্গী অকালি দল সেখানে ক্ষমতাসীন।
তাই ড্রাগ চক্র নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতাকে লুকোতেই নিহালনির এত প্রচেষ্টা।
এ প্রসঙ্গে, একটি ঘটনার কথা মনে পড়ছে যা সত্যজিৎ রায়ের সম্পর্কে কোন একটা ইন্টার্ভিউতে পড়েছিলাম।
'পথের পাঁচালি' হিট করার পর ইন্দিরা গান্ধী একবার তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, "আপনার কি মনে হয়না দেশের দারিদ্রকে তুলে ধরে আপনি দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন?"
সত্যজিৎ বলেছিলেন, "স্বাধীনতার পরেও দেশের দারিদ্র দূর না করায় কি দেশের ভাবমূর্তি এখনো নষ্ট হয়নি?"
শুধু 'পথের পাঁচালি' নয়।
'অশনি সঙ্কেত', 'জনঅরণ্য', 'আতঙ্ক', 'ইন্টার্ভিউ', 'হাটে বাজারে' এসকল সিনেমকেই তথাকথিত দেশভক্তের দৃষ্টিতে দেশের ভাবমূর্তি নষ্টের অভিযোগে দুষ্ট ঘোষণা করা যায়।
কিন্তু সিনেমা যদি প্রকৃতপক্ষে সমাজ জীবনের দর্পণ হয়।
তবে তাতে সমাজের প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠবেই।
সুস্থ সমাজ গড়ে তলার জন্যে সেটাই কাম্য।
অবশ্য এরকম সমাজ সচেতনতা মেরুদণ্ডহীন নিহালনির কাছে আশা করাই দুরাশা।
©somewhere in net ltd.