![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এনিমের ভক্ত, টিভি সিরিজ দেখি, মুভিও দেখি। আর ক্রিকেটের পাগল ভক্ত। ভাল লাগে ঘুরাঘুরি করতেও।
বরাবরের মতই খোমাখাতায় আড্ডা চলিতেছিল। হটাত করিয়া দুলুদা বলিয়া উঠিলেন, “লও, এই ফাঁকে পবিত্রভুমি সিলেট দর্শন করিয়া আসি।“ ক্যাবলা এবং প্যাড়া বেশ কিছুদিন ধরিয়াই কোথাও যাইবার জন্য হা পিত্যেশ করিতেছিল। উহারা খুশি হইয়া বলিয়া উঠিল, “উত্তম প্রস্তাব, চলুন যাওয়া যাক।“ কিন্তু বাদ সাধিল কানাই। উহার নাকি বাড়ি যাইবার জন্য প্রাণ আনচান করিতেছে উহাও আবার কক্সবাজার। গোবরাও নাকি উহার সাথে যাইবার বায়না ধরিয়াছে। ক্যাবলা প্যাড়া চিন্তা করিল, “ খারাপ কি? এ যে রথ দেখা আর কলা বেচা একসাথে; চাই কি দু চারটে কলা গলধকরনও হয়ে যাবে।“ দুলুদাকে রাজি করাইতে বেশি বেগ পাইতে হইল না। বাংলাদেশ রেলওয়ের ঠিকুঞ্জি মানিয়া ২৯ তারিখ দিবাগত রাত ১১.৩০ ঘটিকায় কমলাপুর হইতে রওয়ানা দিল পাঁচ যুবক – দুলুদা, ক্যাবলা, প্যাড়া, কানাই আর গোবরা। সবেধন নিলমণি দুলুদার একখানা মাত্র ছবি উত্তোলনকারী যন্ত্র থাকায় যাত্রার প্রারম্ভেই উহার সামনে নিজেদের চেহারা প্রদর্শনের হুড়োহুড়ি পড়িয়া গেল।
রাত্রি তখন আড়াই ঘটিকার ন্যায়। হটাত করিয়া প্রবল শব্দে বাতাস ছাড়িয়া থামিয়া গেল ট্রেন। সকলেই উৎকণ্ঠিত। অভিজ্ঞ লোক মারফত জানা গেল ইহা নাকি ডাকাতির চেষ্টা। কি হ্য কি হয় – সেই ভাবনায় সকলেই কিঞ্চিত উৎকণ্ঠিত এবং সেই সাথে কিঞ্চিত রোমাঞ্ছিতও। এরই মধ্যে দুলুদা খোমাখাতায় বন্ধুদের জানাইয়া দিলেন, “ ট্রেনে ডাকাত। একলাই লড়ে যাচ্ছি। সব কটা অপদার্থ।“ কিছুক্ষন পর ট্রেন ছাড়িয়া দিল। কিন্তু কিছু বুঝিয়া উঠিবার আগেই দুই মিনিটের মাথায় আবার আগের ঘটনার পুনরাবৃত্তি, এইবার শিকল টানিয়া ট্রেন থামানো হইল। যাত্রীদের আলোচনায় মুটামুটি ট্রেন ডাকাতির উপর একখানা শর্ট কোর্স সমাপ্ত হইয়া গেল যুবকগনের। প্রবল উৎকণ্ঠায় দুলুদা পুনর্বার তাহার অবস্থার বিবরণী খোমাখাতার বন্ধুদের জানাইতেও ভুলিয়া গেলেন। কিন্তু সকলকেই যুগপৎ হতাশা এবং স্বস্তির মধ্যে রাখিয়া এই বেলাও কোন ঘটনা ছাড়াই ঘটনাবহুল রোমাঞ্চ সম্পাত হইল। খবরে প্রকাশ, তার পরের দিনই একই সময় একই জায়গায় ডাকাতের হাতে চার যাত্রী নিহত হয়।
সকাল ৭টা নাগাদ ট্রেন চট্টগ্রাম পৌছাইয়া গেল। দুলুদা এবং কানাই ঢাকা হইতে টিকিট কাটিবার সময় চট্টগ্রাম এর টিকিট না পাইয়া ফেনির টিকিট কাটিয়া গাড়ি ধরিয়াছিল। ভাবিয়াছিল, বঙ্গদেশ, কি আর হইবে? কিন্তু যেইখানে বাঘের ভয়, সেইখানে আঁধার করিয়া রাতও হয়; সাথে ম্যাচ হারিকেন কিছুই থাকে না। অতঃপর টিকিট চেকারের হাতে ধরা এবং কচকচে চারখানা ১০০ টাকার নোট হস্তান্তর করিয়া মুক্তি এবং যুবকগনের একজনকে আরেকজনের গালাগালি করিয়া রাগ প্রশমনের বৃথা চেষ্টা।
ভগ্ন হৃদয় যুবকগন পেটের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি করা ছুচোগুলোকে ঠান্ডা করিতে নিকটেই একখানা হোটেলে গিয়া বসিল। সস্তায় হইয়া যাবে – এই আশা বুকে নিয়া পরোটা আর ডালভাজির অর্ডার দিলেন দিলুদা। খাবার মাঝখানেই বিল চলিয়া আসিল। ৯ খানা পরোটা আর ৫ খানা ডালভাজির বিল সাকুল্লে ১৯৪ টাকা দেখিয়া সকলের গলার পরোটা গলায়ই আটকাইয়া রহিল।
অতঃপর আর কি? চট্টগ্রাম হইতে বাসে করিয়া কক্সবাজার রওয়ানা দিল সকলে। আধো ঘুম আধো জাগরনে দুপুর ২টা নাগাদ কানাই এর বাসায় পৌছাইয়া গেল সকলে।
কানাই মানুষ ভাল, হৃদয় বিশাল; তার পৈতৃক সম্পত্তির পরিমাণও নেহাতই কম নহে। কক্সবাজার সিটিতে উহাদের নিজস্ব বাড়ি। তবে কানাইয়ের পিতামাতার আতিথেয়তা এবং আন্তরিকতার বর্ণনা দিবার চেষ্টা কিঞ্চিত বিপদ আছে। একমাত্র যারা সকাল বিকাল ঘর দখল করিয়া একের পর এক খাবার সাঁটিয়াছে উহারা ছাড়া বাকিদের এই বর্ণনা শুনাইয়া ঈর্ষায় আমার এই গল্পের পাঠক কমাইয়া ক্ষতি ছাড়া লাভ নাই; এম্নিতেই পাঠক সংখ্যা ইতিমধ্যে মেলা কমিয়া যাওয়ার কথা। তার চেয়ে বরং সে বর্ণনা থাক। আমাদের আপাতত শুধু এইটুকুই জানিলে চলিবে যে কানাইয়ের বাড়িতে ৪ টা মানুষ রাজার হালে খাওয়া দাওয়া করিয়াছে, ঘুমাইয়াছে এবং আনন্দ করিয়াছে।
এলাকায় কানাইয়ের বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থী নেহায়েতই কম হওয়ায় এবং উহা দেশের অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠ হওয়ায় এলাকায় ভাল ছাত্র হিসেবে কানাইয়ের ব্যাপক সুনাম রহিয়াছে। সেই ধারাবাহিকতায় আসিবার পথেই একখানা কোচিং সেন্টারের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের উপদেশ প্রদান অনুষ্ঠানের আমন্ত্রন পাইয়া বসিল কানাই। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর উক্ত অনুস্থানে উপস্থিত হইয়া কানাই এবং ক্যাবলা দুইখানা বক্তৃতাও দিয়া বসিল। তবে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা উহাদের অহেতুক বকবকানির চেয়ে কিছুক্ষণ পর শুরু হওয়া ইংরেজি স্যার এর ক্লাসের প্রতিই বেশি আগ্রহী ছিল বলিয়াই কারো কারো মনে হইতে পারে, উহাকে খুব একটা গুরুত্ব না দেওয়াটাই বাঞ্ছনীয় ।
দেশ ও জাতিকে মূল্যবান পরামর্শ প্রদান করিয়া বিকেলে যুবকগন গেল লাবণী পয়েন্টে। সেইখানে সকলে পা এবং ক্যাবলা পা ও প্যান্ট যুগপৎ ভিজাইয়া ( সমুদ্রের পানিতে; অন্য কিছু মনে করিবার কোন অবকাশ নাই এইখানে
) সমুদ্রপাড়ে চা খাইয়া হাটিয়া হাটিয়া বাড়ি ফিরিল। চা খাইতে খাইতে যুবকগনের কথোপকথনের চুম্বক অংশঃ
ক্যাবলাঃ "বিপিএল দেখতিছিস?"
প্যাড়াঃ "হ; বাড়িত গিয়া দেখলাম। চ্যানেল নাইনের ক্যামেরাম্যান মনে হয় চেইঞ্জ করসে। আগে একটা ছেলে মানুষও দেহাইত না; এহন চিয়ারলিডারদেরও ভাল কইরা দেহায় না। খেলা দেইখা মজা নাই।“
দুলুদাঃ "এই ক্যামেরাম্যানডা তাইলে মনে হয় মাদ্রাসা লাইনের।“
!!!!!
( চলবে )
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১১
মোঃ আসিফুল হক বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ পাঠ করিবার জন্য। ছবিগুলোকে বিদায় করিয়া দিলুম।
উহাদের কথোপকথন অধিকভাবে ব্যাক্ত করিবার উপদেশ মাথায় রহিল।
"মহান হবু গণকযন্ত্র প্রকৌশলী" - আপনি কি আমার পূর্বপরিচিত কেউ?
২| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:২৩
ফ্রাস্ট্রেটেড বলেছেন: অহন আবার রিপিট ঘটায় ফালাইসেন...
ফেবু লিঙ্ক তো দেয়াই আছে... একটা গোয়েন্দাগিরি কর্তে গেসলাম - এই বাহিনী ফরেইনার কিনা ??? (কলকাতা আর কি !!)
যাউকগা, ভাল থাহেন।
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:১২
মোঃ আসিফুল হক বলেছেন: বুঝলাম।
৩| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:১৯
নিঃসঙ্গ পৃথিবী বলেছেন: পইড়া ক্যাবলা চরিত্ররে তো রিয়েল বক্কু মনে হইতাস, আর দুলুদা কি সবসময় এমনিই ছ্যাঁচড়ামি করেন নাকি?
যাই হোক, ভাল্লাগসে... সিরিজটা চালায়া যান
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:২৩
মোঃ আসিফুল হক বলেছেন: ক্যাবলা চরিত্রটারে পইরা যতটা বক্কু মনে হইতাসে বাস্তবে ততটা বক্কু সে না; বাস্তবে সে বেশ ভাল রকম কুল ক্যারেক্টার; কাহিনীর প্রয়োজনে উনার চরিত্রটারে এট্টু ডাউন খাওয়া দিতে হইসে আর কি !!!! আর দুলুদা বাস্তবে এইরকমই করেন।
৪| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৪
বিজয়ী সৈনিক বলেছেন: ভালো লখেছেন। অনেক সুন্দর হয়েছে। বিভিন্ন চরিত্রের মাঝে আমার দুলুদা কে বেশ ভালো লেগেছে । বাস্তবে তিনি কেমন কে জানে তবে তাকে আমার যথেষ্ট কুল গাই এ মনে হচ্ছে। পরবর্তী লেখার অপেক্ষায় রইলাম/
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৪৬
মোঃ আসিফুল হক বলেছেন: দুলুদাকে উল গাই মনে হওয়ার বিভ্রম হতেই পারে; গল্পে তাকে আলাদা জায়গা দেওয়ার চেষ্টা করেছি; তবে এ ব্যাপারে বিভ্রান্ত হবার কোন অবকাশ নেই। বাস্তবিক তিনি কি করেন তা তার সাথে পরিচয় হলেই বুঝতে পারবেন। কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০২
ফ্রাস্ট্রেটেড বলেছেন: মাইরি বলছি দাদা, বেশ লাগিলো।
তবে, দাদা, এই সুনিপুণ সাধুভাষাভাষীগণকে দিয়া ঐরূপ কথোপকথন করাইলে পুরো ভ্রমণকাহিনীটা আরেকটু রসাত্নক হইতো বলিয়া একখানা বোধ হইতেছে।
আর অপ্রাসঙ্গিক ছবিগুলি না দিলেও বোধকরি কিঞ্চিত উত্তম হইতো।
যাহাই হউক, ইহা চলুক... ইহার জন্য স্থবিরতা নহে। বাকিগুলিও পাঠের ইচ্ছা ব্যক্ত করিয়া হ্যাঁ মহান হবু গণকযন্ত্র প্রকৌশলী, আজিকে বিদায় নিলুম।