নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগবাড়িতে সুস্বাগতম !!! যখন যা ঘটে, যা ভাবি তা নিয়ে লিখি। লেখার বিষয়বস্তু একান্তই আমার। তাই ব্লগ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার আগে একবার ভাবুন এই লেখা আপনার নিজের মস্তিস্কপ্রসূত নয়।

মিজানুর রহমান মিলন

জয় হোক মানবতার ও মুক্তিকামী মানষের যারা নব্য উপনিবেশবাদের বলির পাঠা হতে চায় না ।

মিজানুর রহমান মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুই বাংলায় নববর্ষ একই দিনে করার দাবী ।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:৩৯

শুভ নববর্ষ ! বাঙ্গালী জাতির বৃহত্তম ও সর্বজনীন উৎসব ’বাংলা বর্ষবরণ ’। যদিও বাঙ্গালী ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তথাপি বাংলাদেশ ও পশ্চিম বাংলাই মুলত বাঙ্গালীদের নিবাস ও আদি নিবাস । বিভিন্ন ঐতিহাসিক কারনে বাংলা হয়েছে দুই বাংলা কিন্তু ভূমি বিভক্ত হলেও হয়েছে কি মনের বিভক্তি ? হয়েছে কি সাংস্কৃতিক বিভক্তি ? হয়তো হয়েছে কিছুটা বিভিন্ন রাজনৈতিক বাস্তবতায় । তবুও তো আমরা সবাই বাঙ্গালী, একই ভাষায় কথা্ বলি । এটা এমন এক সত্তা যা আমরা কখনোই অস্বীকার করতে পারি না । ধর্ম পরিবর্তন করা যায়, নাগরিকত্ত্ব পরিবর্তন করা যায় কিন্তু জাতিতে আমরা বাঙ্গালী এটা পরিবর্তন করব কিভাবে ?



এই বাঙ্গালী পরিচয়টা আমাদের রক্তে মিশে আছে, এই পরিচয়টা আমাদের শরীরের প্রতিটা কোষে বিদ্যমান, এই পরিচয়টা আমাদের শিরা-উপশিরায় প্রবাহমান। এই পরিচয় হল অকৃত্রিম, মানবীয়, আমাদের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য যা আমরা কখনো পরিবর্তন করতে পারব না , তেমনি পারব না অস্বীকার করতে।



বাঙালি সংস্কৃতির সবচেয়ে বড় উৎসব বাংলা বর্ষবরণের তারিখ নিয়ে দুই বাংলার মধ্যে রয়েছে পার্থক্য। বাংলাদেশের বাঙালিরা যেদিন পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন করে খ্রীস্টীয় ক্যালেন্ডারের সেই তারিখটি ১৪ এপ্রিল। আর ভারতের বাঙালিরা কখনো ১৫ এপ্রিল আবার কখনো ১৪ এপ্রিল তারিখে বাংলা বর্ষকে বরণ করে।



জাতিগতদিক দিয়ে এক হওয়ার পরেও কেন এই বিভক্তি ? অন্তত এই সার্বজনীন উৎসবটি একই দিনে হতে বাধা কোথায় ? বা যৌথভাবেও তো পালন করা যায় ? যেমন পারসিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে ফার্সি নওরোজ ( নববর্ষ) একই সঙ্গে পালন করে ইরান, আজার বাইজান, আফগানিস্থান, পাকিস্থান ও তুর্কেমেনিস্থান এবং যৌথভাবেই ।প্রসঙ্গত উল্লেখ করতেই হয়- ইরানি নওরোজ যেমন আন্তর্জাতিকতা রুপ পেয়েছে তেমনি পায়নি আমাদের বাংলা নববর্ষ । ইরানি নওরোজ জাতিসংঘের ইউনেস্কো স্বীকৃতি দিয়েছে । নওরোজে ইরানি নেতাদের ও জনগণের কাছে বার্তা পাঠায় বিভিন্ন দেশের রাস্ট্রপ্রধানসহ বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ ।এমনকি ইরানের শত্রু মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের প্রেসিডেন্টও ইরানিদের নওরোজের শুভেচ্ছা জানান ! সেখানে আমাদের প্রিয় বাংলা নববর্ষের স্থান কোথায় ? এ ব্যর্থতা আমাদের দুই বাংলার নয় কি ?



পন্জিকার ত্রুটিগত কারনে দুই বাংলায় একই দিনে নববর্ষ হওয়াতে বাধার সৃষ্টি হয়েছে। চন্দ্রসন হিজরিকে সৌর গণনার হিসেবে এনে মুঘল সম্রাট আকবরের আমলে বাংলা সনের উদ্ভব ঘটে।কিন্তু এই সন গণনার দিন থেকে ইংরেজী ক্যালেন্ডারের সাথে বিভিন্ন অমিল দেখা দেয়। তাই ১৯৫২ সালে বিশ্ববিখ্যাত জ্যোতিঃপদার্থবিদ ড. মেঘনাদ সাহা ভারতে প্রচলিত প্রাচীন জ্যোতির্বিদ্যাভিত্তিক বিভিন্ন বর্ষপঞ্জির আমূল সংস্কার প্রস্তাব করেন। এ প্রস্তাবের ভিত্তি ছিল আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞান। তাঁর প্রস্তাব অনুসারে বৈশাখ-ভাদ্র এ পাঁচ মাস হবে ৩১ দিন করে এবং পরবর্তী আশ্বিন-ফাল্গুন ছয় মাস হবে ৩০ দিন করে। সে হিসাবে চৈত্র মাস হবে ৩০ দিন এবং অধিবর্ষে বা লিপইয়ারে চৈত্র মাস হবে ৩১ দিনে। তাঁর এ প্রস্তাব অনুসারে প্রতিবছর ১৪ এপ্রিল বাংলা বর্ষবরণ হওয়ার কথা।



অন্যদিকে ভারতের সনাতনপন্থী পঞ্জিকাকাররা তাঁর প্রস্তাব গ্রহণ করেননি। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান বাংলা একাডেমীর উদ্যোগে ১৯৬৩ সালে বাংলা পঞ্জিকা সংস্কারের জন্য ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়। কমিটি বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহার সুপারিশ সামনে রেখে বাংলা ক্যালেন্ডার সংস্কার করে। বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ওই সংস্কার প্রস্তাব কার্যকর করে। সে অনুযায়ী বৈশাখ থেকে ভাদ্র প্রতি মাস ৩১ দিনে এবং আশ্বিন থেকে চৈত্র পর্যন্ত সাত মাস ৩০ দিনে গণনা করা হচ্ছে। লিপইয়ারের ফাল্গুন মাস ৩১ দিনে গণনা করা হচ্ছে। ফলে প্রতিবছর ৩০ চৈত্র বা ১৩ এপ্রিল চৈত্রসংক্রান্তি এবং ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ বর্ষবরণ উৎসব হচ্ছে। ভারতীয় বাঙালিরা এ গণনা অনুসরণ না করে সনাতনী পঞ্জিকা মেনে চলায় দুই দেশের বাঙালিদের মধ্যে একই উৎসব পালন হচ্ছে ভিন্ন দিনে।



আমরা বাংলাদেশের বাঙ্গালীরা যেমন বাংলা পন্জিকা সংস্কার করেছি বা বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহার সংস্কার প্রস্তাব গ্রহন করেছি তেমন সংস্কার করা হয়নি বা করেননি ওপারের বাঙ্গালীরা । সমস্যাটা মূলত এখানেই ।সম্ভবত তারা সংস্কার করেনি এজন্য যে এতে তাদের ধর্মের বিভিন্ন উৎসব, পূজা-পার্বণের ব্যাপারটাও জড়িত।



খ্রিস্টীয় ক্যালেন্ডার প্রচলিত হওয়ার পর ব্রিটেনে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেতে ১৭০ বছর সময় লেগেছিল। সো আমরা আশা করতে পারি একদিন তারাও সংস্কার করবেন বাংলা পন্জিকা । সেদিন পালিত হবে বাঙ্গালীর সার্বজনীন উৎসব বাংলা বর্ষবরণ একই দিনে ! সেদিনটা হয়তো বেশি দুরে নয়।



সেই সব জাতির অগ্রযাত্রা কেউ রোধ করতে পারে না যারা জাতি হিসাবে আত্ম অভিমানী, যাদের আছে উচ্চ জাত্যাভিমানবোধ, যারা অনুকরণ ও অনুসরণ করেনা বিজাতীয় কোন সংস্কৃতিকে, যাদের আছে ধরে রাখা ও ধারণ করার ক্ষমতা পূর্ব পুরুষের বিরত্ব গাথা ।



বাঙ্গালীয়ানা জেগে উঠুক, ফিরে আসুক হারানো ঐতিহ্য, মুছে যাক সকল বিজাতীয় সংস্কৃতি। শুধু একদিনের বাঙ্গালী নয় বরং বাঙ্গালী হব হাজার বছরের, বাঙ্গালী হব আমৃত্যু এই কামনা করে সকলকে আবারো নববর্ষের শুভেচ্ছা !

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:৪৮

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


শুভ হোক নববর্ষ !!

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:৫১

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: শুভ নববর্ষ । ধন্যবাদ দাদা । তবে দাবীটার একটু দয়া করে মনোযোগ দিন।

২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:৫৫

শোয়েব আদনান বলেছেন: আমার দাবীটা আবার একটু ভিন্ন। আমি চাই দুই বাংলা আবার এক হয়ে যাক। এতেই সব সমস্যার সমাধান নিহিত। দাদা-দিদিরা চাইলে কিন্তু ব্যাপারটা খুবই সহজ। ১৬ কোটি বাঙ্গালী এক পায়ে দাড়াইয়া সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত.....

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:১৬

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা । আপনার দাবীটা ভিন্ন নয় অন্তত আমার কাছে । ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে কতশত বার বাংলা ভাগ হয়েছে আবার সময়ের পরিক্রমায় একও হতে সময় নেয়নি কিন্তু ৪৭ এ যে ভাগ হল সেই ভাগটা টিকে গেল ! তবে এ আশা করতে পারি দুই বাংলা আবার এক হবে, আবার গ্রেটার স্বাধীন বাংলা হবে। হয়তো আজ নয়তো কাল । হবেই হবে । ইতিহাস কখনো স্থবির হয় না । ইতিহাস গতিশীল ।

তবে এটা বেশিরভাগই নির্ভর করতেছে ওপারের দাদা-দিদিদের উপর।

৩| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৯:২২

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: আপনার প্রত্যাশার সাথে আমিও একমত।

Click This Link

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:১৪

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা ।

৪| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২০

ঢাকাবাসী বলেছেন: উত্তম প্রস্তাব তবে ছাড়টা কে দিবে পুর্ব না পশ্চিম সেই প্রশ্ন রয়েই গেল্ মনে হয়। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর ভাবনার জন্য।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:২১

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা । বাংলা সন সংস্কারের সুপারিশটা করেছিলেন বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহা । এর মুল কারণ হল বাংলা সন মুলত হিজরী সনের অনুকরণ করেই করা হয়েছে কিন্তু এই সন গণনার দিন থেকে ইংরেজী ক্যালেন্ডারের সাথে বিভিন্ন অমিল দেখা দেয়। তাই ১৯৫২ সালে বিশ্ববিখ্যাত জ্যোতিঃপদার্থবিদ ড. মেঘনাদ সাহা ভারতে প্রচলিত প্রাচীন জ্যোতির্বিদ্যাভিত্তিক বিভিন্ন বর্ষপঞ্জির আমূল সংস্কার প্রস্তাব করেন। এ প্রস্তাবের ভিত্তি ছিল আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞান।

আমরা মেঘনাদ সাহার প্রস্তাব গ্রহন করেছি কিন্তু ওরা করেনি । তবে আশা করি একদিন তারা সংস্কার প্রস্তাব গ্রহণ করবে।

৫| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:৪২

বাংলার হাসান বলেছেন: চমৎকার পোষ্ট।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:৪৪

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা ।

৬| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৬

ঘুড্ডির পাইলট বলেছেন: কিছু সমস্যা আছে আবার কিচূ সুবিধাও আছে ।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:৪৫

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা । তবে সমস্যাগুলো একটু বললে বিষয়টা পরিষ্কার হত ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.