নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগবাড়িতে সুস্বাগতম !!! যখন যা ঘটে, যা ভাবি তা নিয়ে লিখি। লেখার বিষয়বস্তু একান্তই আমার। তাই ব্লগ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার আগে একবার ভাবুন এই লেখা আপনার নিজের মস্তিস্কপ্রসূত নয়।

মিজানুর রহমান মিলন

জয় হোক মানবতার ও মুক্তিকামী মানষের যারা নব্য উপনিবেশবাদের বলির পাঠা হতে চায় না ।

মিজানুর রহমান মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ,সরকার ব্যবস্থা ও পরমানু কর্মসূচি।

১৩ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৫

আগামী ১৪ জুন ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। পৃথিবীর বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশে সময় অন্তর জাতীয় নির্বাচন হওয়া একটা স্বাভাবিক ব্যাপার সেটা হোক প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বা পার্লামেন্ট নির্বাচন। সেদিক দিয়ে ইরানও ব্যতিক্রম নয় যদিও ইরান পশ্চিমা ধাঁচের গণতান্ত্রিক কোন দেশ নয় । তারপরেও বিশ্বরাজনীতিতে এই দেশের নির্বাচনের গুরুত্ব আছে । কারণ ইরান মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী হাতে গোনা কয়েকটি দেশের একটি অন্যতম রাস্ট্র । তাছাড়া ইরানের নির্বাচন ও সরকার পদ্ধতি পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় একদমই আলাদা ও বলা যায় ব্যতিক্রম ধরনের এক সরকার ব্যবস্থা যা সাধারণত আমাদের মিডিয়াগুলোতে এ সরকার ব্যবস্থা অনালোচিত।



ইরানের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট হল ইরানে সাংবিধানিকভাবে ইসলামি সরকার ব্যবস্থা থাকার পরেও এদেশটি বরাবরই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী যা সাধারণত মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য রাস্ট্রগলি থেকে ভিন্ন । কারণ ঐতিহাসিকভাবেই ইসলামি ভাবাপন্ন সরকারগণ বরাবরই মার্কিন মদতপুষ্ট ও মার্কিনিদের তল্পীবাহক যেমন তুরস্ক, মিশর, লিবিয়া ইত্যাদি । আর ইরানের বর্তমান ধাঁচের সরকার ব্যবস্থা মূলত সৃষ্টি হয়েছে মার্কিন-ইসরায়েলী তাবেদার রেজাশাহ পাহলভীর বিরুদ্ধে বিপ্লব ঘটিয়ে যার ফলে এই সরকার ব্যবস্থায় বরাবরই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী দেশগুলির মধ্যে একটা বিশেষ জায়গা দখল করেছে। এই সুবাদে আজকে ইরানের সাথে ল্যাটিন আমেরিকা ও উত্তর কোরিয়ারমত সমাজতান্ত্রিক দেশগুলির সাথে অত্যন্ত মধুর সম্পর্ক বিদ্যমান ।





ইরানের গণতন্ত্রের মাত্রা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলে । আসলে আমাদের একটা স্বভাব হল আমরা অন্যদের সরকার ব্যবস্থাকে দেখি পশ্চিমা দৃষ্টি ভঙ্গিতে । পশ্চিমা গণতন্ত্রকেই আমরা একমাত্র সেরা হিসেবে মেনে নিয়েছি সেইজন্য আমাদের নিজেদের গণতন্ত্রের অবস্থা যাই থাক অন্যদের দিকে তাকিয়ে নাক কুচকানোতে কোন লজ্জাবোধ করি না । প্রত্যেক দেশের অধিকার আছে নিজ নিজ জাতীয় স্বার্থে সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার । চীনে যেমন আছে কম্যুনিস্ট শাসিত একমাত্র রাজনৈতিক দল।কোন দেশের গণতন্ত্র উত্তম এ নিয়ে আলোচনা করতে গেলে আমার দৃষ্টিতে পৃথিবীর কোন দেশের গণতন্ত্রই উত্তম নয় । সবার ত্রুটি বিচ্যুতি আছে । সেই দিক আলোচনায় না যেয়ে আমি এখানে শুধু ইরানের গণতন্ত্র ও সরকার ব্যবস্থা নিয়ে কিছুটা আলোকপাত করব।

কোন দেশের সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমেই সেই দেশের ইতিহাস ও সেই দেশের সংস্কৃতি ও সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের বিশ্বাসকে আমলে নিতে হবে । পৃথিবীর সবদেশেই একই ধরণের সরকার ব্যবস্থা থাকবে এটা কখনোই আশা করা যায় না আর গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালা হওয়ারও কারো প্রয়োজন নেই যদিও আমেরিকার নেতৃত্বে বিশ্বের কতিপয় দেশ স্বেচ্ছায় গণতন্ত্র রপ্তানি করার দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন । অথচ সেই আমেরিকাতে গণতন্ত্র তো নেই বরং বলা যায় ধনতন্ত্র (Plutocracy) বিদ্যমান ।



ইরানে ১৯৭৯ সালের আগে ক্ষমতায় ছিল রেজা শাহ পাহলভী। বিভিন্ন রাজবংশ ইরান শাসন করেছে প্রায় দু’হাজার বছর । আজকে সৌদি আরব যেমন মার্কিন-ইসরায়েলের দালাল ঠিক তেমনি ইরানের রেজা শাহ পাহলভী ছিল তাই । একটা ছোট্ট উদাহরন দেই । ১৯৭৩ সালে যখন আরব রাস্ট্রগুলি পাশ্চাত্যের বিরুদ্ধে তেল অবরোধ করে সেই সময় পশ্চিমাদের তেল সরবরাহ করেছে একমাত্র রেজা শাহপাহলভীর ইরান। ১৯৫৩ সালে ইরানের জনগণ গণতন্ত্র কায়েম করে ক্ষমতায় আনে জাতীয়তাবাদী নেতা ড: মোসাদ্দেককে। কিন্তু যুক্তরাস্ট্র, ব্রিটেন ও ইসরায়েলের চক্রান্তে মোসাদ্দেককে উৎখাত করে ক্ষমতায় নিয়ে আসা হয় আবার রেজা শাহ পাহলভীকে।

এরপরেই ইরানের জনগণ পশ্চিমাদের উপর প্রতিশোধ নেয় ১৯৭৯ সালে আয়াতুল্লাহ খোমেনীর নেতৃত্বে রেজা শাহ পাহলভীকে বিতাড়িত করে এবং সঙ্গে যুক্তরাস্ট্র ও ইসরায়েলকেও বিতাড়ন করে তাদের দেশ থেকে।যুক্তরাস্ট্র যাতে আর দাদাগিরী করতে না পারে সেই জন্য ইরানের ছাত্ররা ১৯৭৯ সালে জিম্মি করে যুক্তরাস্ট্রর দুতাবাসের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের। ৪৪৪ দিন আটক থাকার পর অবশেষ মার্কিনিরা ইরানের সকল দাবী মেনে নিয়ে ইরান ত্যাগ করে । মার্কিনরা আজ পর্যন্ত সেই অপমানের কথা ভূলতে পারেনি !

আয়াতুল্লাহ খোমেনী কর্তৃক রেজা শাহ পাহলভির বিতাড়নের পর খোমেনী গণভোটের মাধ্যমে ইরানকে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ঘোষনা করে এক ব্যতিক্রমধর্মী সরকার ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা করেন।এই সরকার ব্যবস্থায় তিনি ধর্মীয় বিশ্বাস তথা ইসলামি খেলাফত ( ইমামত), গণতন্ত্র , ইরানি সংস্কৃতি ও আধুনিকতাকে সমন্বয় করেন।



ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সরকার ব্যবস্থার ধরণ হচ্ছে ইসলামি উম্মাহ ও নেতৃত্বের মধ্যকার সম্পর্ক ভিত্তিক। এ ব্যবস্থায় দুটি ভিত্তি রয়েছে, জনগণের ভোট এবং ইসলামিক আইন ও ঐশী বিধান।ইসলামী বিধান ও ঐশী আদেশসমূহ বলবৎকরণ,তত্বাবধানের জন্য ও বিপ্লবকে রক্ষার জন্য একজন নেতার প্রয়োজন রয়েছে আর তিনি হলেন রাহবার যিনি একজন ইসলামিক মুজতাহিদ ।ইরানের রাহবারকে বিপ্লবী নেতাও বলা হয়।

আসলে এই রাহবারের ধারণার উত্তপত্তি হল ইসলামিক খেলাফতের ধারণা থেকে । শিয়া মুসলমানদের বিশ্বাস অনুসারে মুসলমানদের নেতা হবেন মোহাম্মদ (স) এর বংশ থেকে জন্ম নেওয়া একজন ইমাম । আর মুসলমানদের শেষ ইমাম হলেন ইমাম মাহদী । তিনি পৃথিবীতে আবির্ভূত না হওয়া পর্যন্ত রাহবারই জাতিকে দিক নির্দেশনা দিবেন।রাহবারের পদমর্যাদাকে ইরানিরা সাংবিধানিক নাম দিয়েছেন বেলায়তে ফকিহ । বেলায়াতে ফকিহ হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যিনি ঐশী আদেশ ও ইসলামি বিধানসমূহের সাথে সরকারী নীতিমালার সমন্বয় সাধন ও তত্বাবধান করবেন।এ ব্যবস্থায় ইরানের বিপ্লবী ও সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর নেতা হলেন রাহবার। তবে রাহবার অনির্বাচিত নন । রাহবারের নির্বাচনের জন্য রয়েছে বিশেষজ্ঞ পরিষদ । এই বিশেষজ্ঞ পরিষদ জনগণের সরাসরি ভোটেই নির্বাচিত এবং রাহবার তা দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হলে ও দায়িত্ব অবহেলা করলে তাকে পদচ্যুত করতে পারেন এই বিশেষজ্ঞ পরিষদ। ইরানের প্রথম রাহবার হলেন আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনী যিনি ইসলামিক ইরানের প্রতিষ্ঠাতা, ১৯৭৯ সালে বিপ্লবের নেতা ও বর্তমান রাহবার হলেন আয়াতুল্লাহ সাইয়েদ আলী খামেনী ।



ইরানের বিচার বিভাগ, শাসন তথা নির্বাহী বিভাগ ও আইন বিভাগ ( পার্লামেন্ট) পরষ্পর থেকে স্বাধীন। বিচার বিভাগের প্রধান পাঁচ বছরের জন্য নিযুক্ত করেন রাহবার । পার্লামেন্ট নির্বাচন প্রতি চার বছর পর হয় ও পার্লামেন্টের প্রার্থীদের মাষ্টার্স পাশ অথবা এর সমমানের ডিগ্রিী থাকা বাধ্যতামূলক। পার্লামেন্টের স্পীকার সরাসরি সংসদ সদস্যগণের ভোটেই নির্বাচিত হন ও শাসন বিভাগের প্রধান প্রেসিডেন্ট সরাসরি জনগণের ভোটে চার বছরের জন্য নির্বাচিত হন কিন্তু পরপর দুবার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করলে তৃতীয়বার প্রার্থী হওয়ার কোন সুযোগ রাখা হয়নি ইরানের সংবিধানে। আবার এই তিন বিভাগের সমন্বয়ের জন্য রয়েছে Expediency Council. আর আছে ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ ( SNSC).



যাইহোক, ইরানের প্রেসিডেন্ট পদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । সর্বোচ্চ এই পদটি জনগণের সরাসরি ভোটেই নির্বাচিত হয় । রাহবার সাধারণত প্রেসিডেন্ট বা সরকারের কোন কার্যকলাপে হস্তক্ষেপ করেন না যদিও রাহবারের ফতোয়া( Decree ) প্রেসিডেন্টকেও পালন করতে হয়। যেমন ইরানের রাহবার ফতোয়া দিয়েছেন যে কোন ধরণের পারমানবিক বোমা , মজুদ ও প্রয়োগ ইসলামে পুরোপুরি নিষিদ্ধ । এ সংক্রান্ত ফতোয়াগুলি শুধুমাত্রই রাহবারই দিতে পারেন।



এছাড়াও আমাদের নির্বাচন কমিশনের মত ইরানের রয়েছে শক্তিশালী গার্ডিয়ান কাউন্সিল যাকে বলা হয় অভিভাবক পরিষদ। এই অভিভাবক পরিষদ ইরানের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীসহ সকল প্রার্থীর যোগ্যতা বিবেচনা করেন ও যাচাই বাছাই করেন। অভিভাবক পরিষদ ইরানের পার্লামেন্টে পাশ করা আইনগুলো পর্যালোচনা করে ও পার্লামেন্টে পাশ করা বিলে ভোটে ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন।প্রেসিডেন্টকে পদচ্যুত করতে হলে পার্লামেন্টে তা অনুমোদন অত:পর গার্ডিয়ান কাউন্সিলের অনুমোদন ও সবশেষে রাহবার যদি তা অনুমোদন করেন তাহলেই প্রেসিডেন্টের ইমপিচমেন্ট সম্ভব।



এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইরানে ৬৮৬ জন প্রাথী নিবন্ধন করেছিল । এর মধ্যে গার্ডিয়ান কাউন্সিল মাত্র ৮ জনকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দিয়েছে তার মধ্যে অবশ্য দুজন ইতিমধ্যে তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছেন।।প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের ক্ষেত্রে অবশ্য গার্ডিয়ান কাউন্সিল প্রাথীদের রাস্ট্র, ইসলামিক, বিপ্লবের প্রতি আনুগত্যসহ প্রাথীদের প্রশাসন চালনার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বিবেচনা করেন।



ইরানের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের অন্যতম দিক হল তাদের সবাই পিএইচডি ডিগ্রীধারী ও সহজ সরল জীপন যাপনে অভ্যস্থ। পশ্চিমা মিডিয়া গুলোতেও ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে প্রতিবেদন প্রকাশ করতেছে যদিও তাদের উদ্দেশ্য ইরানে কিভাবে আর একটা গন্ডোগোল বাধানো যায়।



ইরানের নির্বাচনগুলিতে টাকার খেলা নেই বললেই চলে। সেখানে একজন গরীব ব্যক্তিও প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থী হতে পারেন ও তার নির্বাচনী কার্যক্রম চালাতে পারেন। আহমাদিনেজাদ তার অন্যতম উদাহরণ । প্রার্থীদের রাস্ট্রীয় প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করতে কোন অর্থ ব্যয় করতে হয়না ।



প্রেসিডেন্ট প্রার্থীগণ সংস্কারপন্থী ও কট্টরপন্থী নামে দুই গ্রুপে বিভক্ত যদিও ইরান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আছে। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীও প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। সংস্কার পন্থী প্রাথী মোহাম্মদ রেজা আরেফ অন্য সংস্কারপন্থী প্রার্থী হাসান রোহানীর সমর্থনে তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছেন । অন্যদিকে কট্টরপন্থী হাদ্দাদ আদেল অন্য কট্টরপন্থী প্রার্থীদের সমর্থনে তার নিজ প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছেন।তবে সম্ভবত ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এবার দ্বিতীয় দফায় গড়াবে কারণ কোন প্রার্থী ৫০% এর বেশি ভোট না পেলে প্রথম দুইজনের মধ্যে আবার দ্বিতীয় দফা নির্বাচন হবে।আমার ব্যক্তিগত ধারণা কট্টরপন্থী কিন্তু মডারেট তেহরান মেয়র বাকের কালিবাফ ও সংস্কারপন্থী হাসান রোহানীর মধ্যে হয়তো দ্বিতীয় দফা নির্বাচন গড়াবে । তবে অনেক বিশ্লেষক আল্ট্রা কট্টরপন্থী সাইদ জালিলির কথাও বলেছেন।



যাইহোক পশ্চিমারা গণতন্ত্র আর উদারতন্ত্র বলে কিছুতে বিশ্বাস করে বলে আমার জানা নেই । যদি তাই হত তাহলে ইরান নয় তাদের মাথা ব্যাথা বেশি হত সৌদি ও রাজা বাদশাহ শাসিত কতিপয় আরব দেশগুলি নিয়ে । ইরানে যা গণতন্ত্র ও উদারতন্ত্র আছে সৌদিতে তার ১% ও নেই অথচ সেই সৌদি ওহাবী শাসক গোষ্ঠী নিয়ে কোন নেগেটিভ রিপোর্ট এই গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালাদের কাছে কোনদিন পেলাম না ! কারণ সৌদি যাই হোক পশ্চিমাদের পা চাটা দালাল । এই পশ্চিমা দেশগুলিই রাজা বাদশাহ শাসিত আরব দেশগুলিতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি করতেছে দেদারছে !



ইরান নিয়ে তাদের মাথা ব্যাথার মুল কারণ ইরানের পরমানু কর্মসূচি, ইরানের বৈজ্ঞানিক উন্নতি ও ইরানের স্বাধীনচেতা পররাস্ট্রনীতি । পশ্চিমাদের শত অবরোধ ইরান থোরাই কেয়ার করে যেভাবে উন্নতি করতেছে অন্যকোন উন্নয়নশীল দেশে ঐ রকম একটা অবরোধ আরোপ করলে ঐ দেশের মেরুদ্ন্ড এতদিনে ভেঙ্গে গুড়ো হয়ে যেত !যদি মনে করেন ইরানের তেল সম্পদ আছে সেটা তো সাদ্দামেরও ছিল । তাছাড়া পশ্চিমারা ইরানের এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে নিষ্ঠুর অবরোধ আরোপ করেনি । তারপরেও মহাকাশ,পরমানুসহ মহাকাশে স্যাটেলাইট ও বানর পাঠানো, সামরিকসহ বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইরানের বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি ঈর্ষনীয় ! ইরানের প্রতি যুক্তরাস্ট্র ও তাদের মিত্র ইউ (EU) শত শত অবরোধ আরোপ করেও ইরানকে দমাতে পারেনি । পারেনি সাদ্দা্মকেও লেলিয়ে দিয়েও। আসলে একটা বিপ্লবী জাতিকে দমানো সম্ভব নয় যদি তারা দৃড় পদে দাড়িয়ে থাকে তা আবার যদি হয় ইরানের মত কোন ঐশ্বর্যশীল ও উচু সভ্যতার অধিকারী দেশ।



যাইহোক, লিখতে শুরু করলে অনেক কথা এসে যায়। বাড়ে কলেবর। পশ্চিমাদের অভিযোগ ইরান পরমানু বোমা বানাচ্ছে যদিও এর স্বপক্ষে তারা বছরের পর বছর ধরে অনুসন্ধান চালিয়েও একটা প্রমানও হাজির করতে পারেনি তারপরেও ধরে নিলাম ইরান বোমা বানাচ্ছে । যুক্তরাস্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন, ভারত, পাকিস্থান ও জারজ ইসরায়েলের যদি পারমানবিক অস্ত্র থাকতে পারে ইরানের কেন থাকতে পারবে না ? বা ইরান কেন বানাতে পারবে না ?



ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যে বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে তা হল অর্থনীতি, পরমানু কর্মসূচি ও আমেরিকা - ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক। তবে ইরানে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীগণের মধ্যে একধরণের প্রতিযোগীতা লক্ষ করা যায় যে কে কতটা আমেরিকা ও ইসরায়েল বিরোধী।ইসরায়েল বিরোধী বাস্তবসম্মত হলেও আমেরিকার সাথে সম্পর্ক বিষয়ে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীগণ অত্যন্ত সতর্কতার সাথে মন্তব্য করতেছে তবে কোন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীই নিজ জাতীয় স্বার্থ জলান্জলী দিয়ে আমেরিকার সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের বিরোধী। পরমানু কর্মসূচি নিয়ে পাশ্চাত্যের সাথে ইরানের বিরোধ কারো অজানা নয় আর এজন্য ইরানকে মোকাবেলা করতে হচ্ছে পাশ্চাত্যের ও জাতিসংঘের আরোপ করা কঠিন অর্থনৈতিক অবরোধ। তবে কোন প্রার্থী এপর্যন্ত পরমানু কর্মসূচি বন্ধ করার কথা বলেননি । নতুন প্রেসিডেন্ট কিভাবে পাশ্চাত্যের চাপিয়ে দেওয়া অবরোধ মোকাবেলা করে পরমানু কর্মসূচি চালিয়ে যায় তা দেখার বিষয়।

মন্তব্য ২৫ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৩০

মামুন,চৌ:হাট বলেছেন: এত সুন্দর তথ্যবহুল পোষ্ট কোন মন্তব্য নেই!!!!! পোষ্টে হাজারটা +

১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ১২:৪৬

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ ভ্রাতা ।

২| ১৩ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:২৯

নষ্ট ছেলে বলেছেন: তথ্যবহুল পোস্ট+++++++++
তবে ইরানের সাথে ল্যাটিন আমেরিকা ও উত্তর কোরিয়ার সাথে মনে হয় আদর্শগত কোন মিল নাই। শত্রুর শত্রু আমার বন্ধ, এই থিওরিতে তাদের মিল আছে বলা যায়।

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা নয়, তাদের তাবেদার বানানোই হচ্ছে আমেরিকার আসল উদ্দেশ্য, এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ সৌদি আরব, আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত।

আরেকটা কথা, এত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার পরও এই বছর তেহরান পৃথিবীর সবচেয়ে কম ব্যয়বহুল নগরী হয়েছে। টোকিও হচ্ছে সবচেয়ে বেশি ব্যয়বহুল নগরী।

১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:১৪

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ ভ্রাতা । হা ঠিক বলেছেন সমাজতান্ত্রিক দেশগুলির সাথে ইরানের আদর্শগত মিল নেই তবে শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু এই নীতিতে তারা পরষ্পর বন্ধু ।

৩| ১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ১২:০৯

যুবায়ের বলেছেন: চমৎকার তথ্যসমৃদ্ধ একটি পোষ্ট...
ভালোলাগা দিলাম++

১৪ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৮

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।

৪| ১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ১২:২০

যুবায়ের বলেছেন: অসাধারন বিশ্লেষন করেছেন ভাই।
পোষ্ট প্রিয়তে নিলাম...

১৪ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:১৫

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ ভ্রাতা

৫| ১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ১২:৩৭

সোলায়মান আশরাফ বলেছেন: ইরান সম্পর্কে আপনার গবেষণা ও বিশ্লেষণধর্মী লেখাটি পড়ে ভাল লাগল। আপনি যেহেতু ইরান সম্পর্কে ভাল ধারণা রাখেন তাই একটা বিষয় জানতে ইচ্ছে করছে আর তা হলো- ইরান আর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য কি? কোন দেশের নির্বাচনকে আপনার কাছে বেশি গণতন্ত্রী বলে মনে হয়?

১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ২:২৩

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ইরানের গণতন্ত্রের সাথে আমেরিকার গণতন্ত্রের পার্থক্য অনেক । আমেরিকার গণতন্ত্রকে Democracy বলা যায় না বরং এটাকে বলা যায় Plutocracy . আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী থাকে মাত্র দুইজন । এইদুইজনের মধ্য থেকে ভালজনকে বাছাই করা কখনোই সমভবপর হয় না কারণ এই দুই দলের দুই প্রাথী তারাই হয় যাদের প্রচুর অর্থকড়ি ও লবিং আছে আরো দরকার তাদের ইহুদী লবীর সমর্থন।তবে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীও দাড়াতে পারে যেমন ছিলেন র‌্যালপ নাদের কিন্তু আমেরিকার পুজিবাদী, ইহুদী নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া সেই স্বতন্ত্র প্রাথীকে কখনোই মিডিয়ায় উপস্থাপন করেনা । তাছাড়া প্রেসিডেন্ট প্রাথীদের জাতীয় বিতর্কে স্বতন্ত্র প্রার্থীর অংশগ্রহনের অনুমতি দেওয়া হয় না । আর অন্যদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট প্রাধী থাকে কয়েকজন যেমন এবারের নির্বাচনে ছিলেন ৮ জন যদিও বর্তমানে আছেন ৬ জন। নি:সন্দেহে ৭/৮ জনের মধ্য থেকে ভাল একজনকে বাছাই করা অনেক সহজ তাছাড়া ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অর্থকড়ির তেমন প্রয়োজন হয় না।আহমাদিনেজাদের প্রেসিডেন্ট হওয়া তার উৎকৃষ্ট প্রমান। প্রেসিডেন্ট প্রার্থীগণ বিনামূল্যে সরকারী মিডিয়া ব্যবহারের সমান সুযোগ পায়। ইরানে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের সম্পত্তি নয় সেখানে বিবেচনা করা হয় তার যোগ্যতা ও দেশ, ইসলামের প্রতি আনুগত্য ।

৬| ১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:৩৫

হিরক রাজা বলেছেন: এমন লেখা সামুতে সচরাচর আসে না। কর্তৃপক্ষের উচিত পোষ্টটাকে নির্বাচিত পাতায় স্থান দেয়া।

১৪ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:৪২

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।

৭| ১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:৫৩

একজন ঘূণপোকা বলেছেন: ++++++++

১৪ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৪

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।

৮| ১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ৩:৪২

ঘুড্ডির পাইলট বলেছেন: আহমেদনিজাদ কে খুব মিস করবো ।

১৪ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৬

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই আমিও মিস করব।

৯| ১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ৩:৪৩

খেয়া ঘাট বলেছেন: অনেক চমৎকার করে সহজ ভাষায় দারুন একটা বিশ্লেষনমূলক পোস্ট।
+++++

১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:১৮

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।

১০| ১৪ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৬

যুবায়ের বলেছেন: লেখাটা অনেক সময় নিয়ে পড়লাম...
আসলে সত্যিকার গনতন্ত্র ইরান একটি মডেল হতে পারে।

১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:৩২

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: আপনাকে আবারো ধন্যবাদ ভাই ।

১১| ১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ৮:০৪

আশমএরশাদ বলেছেন: প্রথমেই ধন্যবাদ ইরানের নির্বাচন ব্যবস্থ্যা নিয়ে আমাদের জানানোর জন্য।
আপনার লিখার প্রক্ষিত থেকেই কয়েকটা প্রশ্ন মাথায় ঊকিঁ দিল:

১। সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা বিপ্লবের পর থেকেই দেখলাম যতদিন বেঁচে ছিলেন তত দিনই- আয়াতুল্লাহ খোমেনী। এখন যিনি আছেন তিনি কি খোমেনীর আত্মীয় বা সন্তান? আপনি বলেছেন তিনিও অনির্বাচিত নন -- কিন্তু তাহার নির্বাচন পদ্ধতিটা কি?

২।আপনি আমেরিকার ইলেকশনকে তুডাই কেয়ার করার একটা চেষ্টা চালিয়েছেন পোস্টে এবং মন্তব্যে। আপনি নিশ্চয় জানেন সেখানে দলীয় মনোনয়নেও বিরাট ভোটযুদ্ধ হয়। আপনি আরো বলেছেন সেখানে টাকা ওয়ালাদের রাজত্ব। কিন্তু মাল্টি কালচালার এবং কেনিয়ার মত একটা দেশের নিগ্রো যে দেশে প্রেসিডেন্ট হতে পারে আপনি নিশ্চয় তাদের নির্বাচন ব্যবস্থাকে খারাপ বলতে পারেন না। পক্ষান্তরে আপনি ইরানে দেখুন ৬৮৬ জনকে কিন্তু নির্বচান করতে দেয়া হয়নি। আপনি বলেছেন দুই জনের মধ্যে তুলনামুলক ভালো কাউকে বাঁচাই করা যায় না। আপনার কথার সুত্র ধরেই বলি তাহলে ৬০০ জনের মধ্য থেকে বাঁচাই করা গেলে নিশ্চয় আরো ভালো কোয়ালিটি লোক পাওয়া যেত? যত বেশী প্রার্থী তত বেশী ভালো নির্বাচন এমন কি?

৩। "এই সরকার ব্যবস্থায় তিনি ধর্মীয় বিশ্বাস তথা ইসলামি খেলাফত ( ইমামত), গণতন্ত্র , ইরানি সংস্কৃতি ও আধুনিকতাকে সমন্বয় করেন।" --- এই বিষয়টা কি ইসলাম সম্মত? অথবা প্রকৃত ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা কি সুদুর পরাহত? কেন সমন্বয় করতে হলো?

৪। "কোন ধরণের পারমানবিক বোমা , মজুদ ও প্রয়োগ ইসলামে পুরোপুরি নিষিদ্ধ । "-- তথাপিও ইরান কেন সেটা মজুদ করবে? সেটা কি ইসলাম সম্মত? এমনকি যুক্তরাস্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন, ভারতে করলেও কি কোন ইসলামী দেশ সেটা করতে পারে? যেখানে ইসলামই অনুমোদন করে না

৫। শিয়ারা কি প্রকৃত ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে? শিয়া মুসলমানদের বিশ্বাস অনুসারে মুসলমানদের নেতা হবেন মোহাম্মদ (স) এর বংশ থেকে জন্ম নেওয়া একজন ইমাম। এটাকে কি প্রকৃত ইসলাম অনুমোদন করে।

৬। পরিশেষে একটা দুঃখ বোধ-- আমারা বাংলাদেশীরা কিন্তু আমাদের বিপ্লবের চেতনাকে ধরে রাখতে পারিনি। এখানে গার্ডিয়ান কাউন্সিল নাই তাই নিজামী মোজাহীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়ে। দেশ স্বাধীনের মাত্র ৩০ বছরের মাথায় স্বাধীনতা বিরোধীদের এমন উত্থান অন্যদেশের জন্য কল্পনাতীত। সে তুলানায় আমরা অনেক বেশী গনতান্ত্রিক। আমাদের এখানে স্বাধীনতা বিরোধীরাও নির্বাচন করতে পারে।

১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:৩১

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: প্রথমেই আপনাকে ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য । আপনরা প্রশ্নগুলোর উত্তর পর্যায়ক্রমে দিচ্ছি ।

১। প্রথম কথা হল ইরানে গণতন্ত্র ও ইমামত এই দুইটাকে সংমিশ্রণ করা হয়েছে। মুসলমানদের শাসন করবে খলিফা কিন্তু মুসলমানদের মধ্যে যেহেতু বর্তমানে খলিফা নেই তাই খলিফার অনুপস্থিতিতে একজন নেতার প্রয়োজন।তিনি হলেন রাহবার। দেখুন , ইরানের শাসন ব্যবস্থাকে ঠিক পশ্চিমা গণতন্ত্র বলা যাবে না এই কথাটা প্রথমেই বলে নিয়েছি সেটা মনে হয় পড়েননি বা পড়লেও এড়িয়ে গেছেন যদিও আমরা গণতন্ত্র বলতে পশ্চিমা গণতন্ত্রই বুঝি । কারণে ইসলামে একজন সাধারণ মুসলমানের ভোট বা সাধারণ ব্যক্তির ভোট আর ইসলামিক বিশেষজ্ঞের ভোট এক নয়। সেই দিক দিয়ে তাই রাহবার সরাসরি জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হন না কিন্তু তিনি ইসলামিক বিশেষজ্ঞ পরিষদের দ্বারা নির্বাচিত। ইরানে সেই বিশেষজ্ঞ পরিষদ ৮২ জন সদস্য দ্বারা গঠিত। তবে বিশেষজ্ঞ পরিষদের সদস্যগণ সবাই জনগণের সরাসরি ভোটেই নির্বাচিত । এই বিষয়টা আমার আর্টিকেলেই আছে।এখানে যেহেতু রাহবার খলিফার ( ইমাম) প্রতিনিধিত্ব করতেছেন তাই তিনি একবার নির্বাচিত হলে তাকে আর দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হওয়ার প্রয়োজন নেই । ইসলামে আবু বকর, উমর, উসমান (রা) এরা কতবার করে নির্বাচিত হয়েছে একটু জানাবেন কি ?

হ্যাঁ, তবে রাহবার যদি শারীরীকভাবে অযোগ্য হন ও কোন কারণে তার নৈতিক পদস্খলন ঘটে সেজন্য বিশেষজ্ঞ পরিষদের ক্ষমতা আছে তাকে পদচ্যুত করার আর সেটাই স্বাভাবিক।এখানে তাই এনিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই । যদি প্রশ্ন তুলেন তাহলে সেটাকে আর ইসলামি শাসন ব্যবস্থা বলা যাবে না বলতে হবে Western Democracy.

আর খামেনী খোমেনীর কোন আত্মীয় নন তবে তিনি ইসলামী বিপ্লবের সহযোগী ।
২। আমেরিকার নির্বাচন নিয়ে মন্তব্যটা হল আমার লেখার প্রসঙ্গক্রমে । সব রাস্ট্রেরই সরকার ব্যবস্থার দুর্বলতা আছে । আর যেহেতু আমেরিকা ভেনেজুয়েলা বা ইরানের মত দেশগুলির নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা করে তাই আমেরিকার উচিৎ নিজের নির্বাচন পদ্ধতির ত্রটিও দেখা । আপনার জানা আছে কিনা আমি জানি না আমেরিকায় তৃতীয় ক্যান্ডিডেট ছিলেন কিন্তু তার নাম আপনি কি শুনেছিলেন ? বা ওবামা রমনির মত তার নাম আমরা সবাই জানি না কেন ? কারণ পুজিবাদী ও ইহুদী লবির নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া তাকে জনসম্মুখে নিয়ে আসেনি এমনকি প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর জাতীয় টেলিভিশন বিতর্কেও তাকে ডা্কা হয় না । সেই দিক দিয়ে ইরানের নির্বাচন অনেক এগিয়ে । সেখানে সব প্রার্থীকেই ইরানের সরকারী মিডিয়া সমান সুযোগ দিচ্ছে ।

কেনিয়ার একজন নিগ্রো নির্বাচিত হওয়াটা বড় কিছু নয় । কৃষ্ণাঙ্গ পররাস্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েল ই কিন্তু ইরাক যুদ্ধের পক্ষে সাফাই গেয়ে সিনেটে বক্তব্য দিয়ে তা অনুমোদন করে নিয়েছিল । তাই ওবামা কেনিয় বংশদ্ভূত ও কৃষ্ণাঙ্গ এটা বিবেচ্য নয় বিবেচ্য হল তিনি ইহুদী লবি ও মার্কিন পুজিবাদীদের স্বার্থ কতটুকু রক্ষা করতে পারবেন । আর ওবামা কতটুকু স্বার্থ তাদের রক্ষা করতেছেন তাতো আমরা দেখতেই পাচ্ছি।


তুলনাটা করা হয়েছে আমেরিকার ২ জনের সাথে ইরানের ৮ জনের । এগুলো যদি ধরতে না পারেন তাহলে বলার কিছু নেই । আর আবেদন করলেই কি তাকে সুযোগ দিতে হবে ? তিনি বিপ্লবের প্রতি অনুগত কিনা, ইসলামের প্রতি অনুগত কিনা, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা, যোগ্যতা আছে কিনা এগুলো কি বিচ্যে বিষয় নয় ? তাছাড়া প্রত্যেক দেশের কিছু নির্দিষ্ট আইন কানুন আছে সেগুলো তাদের মেনে চলতে হয় । তো ইরান ৬৮৬ জনের মধ্য থেকে যোগ্যতা সম্পন্ন ৮ জনকে সুযোগ দিয়েছে এটাতে দোষের কিছু নেই। তুলনাটা হল যেখানে আমেরিকার জনগণ দুজন থেকে একজনকে বাছাই করার সুযোগ পায় সেখানে ইরানে ৮ জন ।


৩।ইসলাম সম্মত কেন নয় ? আপনার এরকম কেন মনে হল ? এটা যদি জানা থাকে রাহবারের ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের চেয়েও বেশি ও প্রেসিডেন্টকেও রাহবারের ডিক্রি মানতে হয় সেখানে সমস্যাটা কিসের । রাহবারের কাজ কি সেটা আর্টিকেলেই বলা আছে । তিনি ইসলামিক ও ঐশী বিধানের দেখভাল করবেন। এখন ধরুন, ইরানে কোন নির্বাচন করা হল না। কোন প্রেসিডেন্টও নেই । এবং রাহবারেই সরকার পরিচালনা করছেন সেটা কি ভাল হত ? কারণ বর্তমান যুগে সেটাকে স্বৈরশাসক ছাড়া আর কিছু বলে না । প্রেসিডেন্ট যাতে স্বৈরশাসক হতে না পারেন সেই দিকটা রাহবার দেখবেন।এখানে রাহবার ক্ষমতা থাকার পরেও প্রয়োগ করছেন না যতক্ষন না সরকারের কোন কার্য ইসলাম বিরোধী ও দেশ বিরোধী না হয় ।

প্রকৃত ইসলামী ব্যবস্থা কি সুদুরপরাহত ? না, সুদুর পরাহত নয় । একমাত্র ইরানেই ইসলামিক শাসব্যবস্থা বিদ্যমান । সেখানে চলছে প্রকৃত ইসলামিক শাসন । যদি মুসলমানরা কখনো খিলাফত কায়েম করতে পারে তাহলে তাদেরকে নিশ্চিৎ ইরানি মডেলকেই অনুসরণ করতে হবে। কারণ এক ব্যক্তি যুগের পর যুগে শাসন করে যাবেন সেটা আর এখন জনগণ মানবেন না । তাই জনগণকেই সুযোগ দিতে হবে তাদের সরকার পরিচালনার । সুযোগ দিতে হবে তাদের নেতা নির্বাচনের তবে সেই নেতা যাতে ইসলামিক মতাদর্শের হয় সেজন্য দরকার হবে ইরানের গার্ডিয়ান কাউন্সিলের মত কোন প্রতিষ্ঠিানের ও খলিফার ভূমিকা হবে শুধুই বর্তমান ইরানের রাহবারের মতই ।



৪। ইরান কবে কখন বলেছে তারা পারমানবিক বোমা বানাবে বা মজুত করবে ? একটু রেফারেন্স দিবেন । আপনার কমেন্ট পড়ে মনে হল এখানে জানতে আসেননি বরং এসেছেন ইরান বিরোধী ভূমিকা পালন করতে । ভাল কথা কিন্তু ন্যায় ও সত্যের পক্ষেই কথা বলাই বাঞ্চনীয় ।

আমেরিকা যেহেতু অভিযোগ করতেছে ইরান পারমানবিক অস্ত্র বানাচ্ছে তাহলে প্রশ্ন হল যেখানে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, ভারত, উত্তর কোরিয়া, পাকিস্থান, ইসরায়েল, রাশিয়ার আছে সেখানে ইরান বানতে পারবে না কেন ? আসলে ইরান বানালে দোষ কি এটুকু পড়েই আপনার বুক কেঁপে উঠেছে । কারণ ইরান বাদে মধ্যপ্রচ্যের আরব দেশগুলি যেখানে একটা সুচও বানাতে পারে না সেখানে ইরান পারমানিবক অস্ত্র বানাবে !! তাহলে সৌদি ওহাবীর দিন শেষ ! তাই নয় কি ? কিন্তু জেনে রাখুন, ইরানের পারমানবিক অস্ত্রের প্রয়োজন নেই । ইরান ডে বিপ্লব সাধিত করেছে সেটা ধরে রাখতে পারলে সেটা পারমানবিক অসেত্রর চেয়েও বেশি শক্তিশালী।

৫। আপনার এই প্রশ্নটা এখানে অপ্রাসঙ্গিক । আমার আর্টিকেলের এটা কোন বিষয়বস্তু নয়।তাই এর উত্তর দিলাম না যা বলেছি শুধু তাদের বিশ্বাসের কথাই বলেছি। তাদের বিশ্বাসকে তারা বাস্তবায়ন করিয়ে দেখিয়েছে । পারলে আপনি আপনার বিশ্বাস বাস্তবায়ন করুন। আপনার এই প্রশ্নতেই আপনার লেজ বের হয়ে পড়েছে আপনি কোন মতাদর্শ লালন করেন যদিও সেটা আপনার ব্যক্তিগত ব্যপার । তবে চোখ কান খোলা রেখে চারদিকে দেখুন । সত্য অনুধাবন করার চেষ্টা করুন ।

৬। Invalid Comment . Sorry to say.

১২| ১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ১২:৩৮

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: আবার বলছি আপনার সবগুলো প্রশ্নের উত্তর আমার আর্টিকেলেই ছিল । আর্টিকেলটা ভাল করে পড়লে এই প্রশ্নগুলো করতেন না ।

১৩| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৪ ভোর ৫:৩৯

আল মাসুদ কথন বলেছেন: প্রশ্ন: এটা শুনে মনে হতে পারে কিছুই বুঝি নাই। তারপরও বলি, এরকম কি হতে পারে ধরুন সংস্কারপন্থী থেকে সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্য হল কিন্তু গার্ডিয়ান কাউন্সিল থেকে মনোনীত হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হল কোন স্বতন্ত্র প্রার্থী? মানে আমি প্রেসিডেন্ট ও সংসদ সদস্যদের মধ্যে সম্পর্ক এবং এ সম্পর্কিত বিষয়ে আরও পরিস্কার হতে চাচ্ছি। আর আমার প্রশ্নের উত্তর যদি হা হয়, তাহলে এতে দেশে কোন নির্দিশ্ট দলীয় আদর্শ বাস্তবায়নে সমস্যা হবার কথা নয় কি?
আর উপরে যে ভদ্রলোক না বুঝেই কথা বললেন তাকে ভাল উত্তর দিয়েছেন।
আপনার অন্য পোস্টগুলোও পড়ছি। আপত্তি না থাকলে আপনার ইমেইল আইডিটা আমাকে দিন। ব্যক্তিগতভাবে কথা বলতে আগ্রহী।
ধন্যবাদ।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ ভোর ৬:৪২

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ও সরি, প্রথমেই দু:খ প্রকাশ করছি। মাফ করবেন। অদেখা মন্তব্যগুলো অনেকদিন চেক করা হয়নি। আজকে করতে যেয়ে আপনার কমেন্টটা পেলাম।

যে কোনো আধুনিক দেশের শুধু রাজতন্ত্র বাদে সরকারের তিনটিই বিভাগ থাকে। নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ ও আইন বিভাগ। ইরানের এই তিনটিই অংশ পরষ্পর থেকে স্বাধীন ! যেমন বিচার বিভাগের প্রধান মানে প্রধান বিচারপতি পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগ দেন রাহবার আর আইন বিভাগের প্রধান মানে স্পীকার সংসদ সদস্যদের ভোট দ্বারাই নির্বাচিত হন। তবে ইরানের মজলিশ মানে সংসদে যে কোনো আইন পাশ হলে তা গার্ডিয়ানর কাউন্সিল থেকে অনুমোদিত হতে হবে। ব্যাপারটা এরকম অনেকটা আমেরিকার সিনেটের মত। যেমন আমেরিকার কংগ্রেসে পাশকৃত সকল আইন সিনেট কর্তৃক অনুমোদন নিতে হয়।

আর নির্বাহী বিভাগের প্রধান প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্ট সরাসরি জনগণের ভোটেই নির্বাচিত হয় সেটা তো জানেন।তবে প্রেসিডেন্টের কোনো ক্ষমতা নেই আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের উপর। এমনকি প্রেসিডেন্ট তার কেবিনেটও গঠন করতে পারেন না সংসদ সদস্যদের ভোট ছাড়া । প্রেসিডেন্ট শুধুমাত্র কাকে মন্ত্রী করবেন তা চুজ করতে পারেন এবং তার মনোনীত নাম সংসদে উত্থাপন করতে হয়। সংসদ সেই ব্যক্তির যোগ্যতা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা পর্যালোচনা করে ভোটাভুটির আয়োজন করে। এবং সেই ব্যক্তিকেও সংসদে উপস্থিত হয়ে তার মেয়াদকালীন কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন ও সংসদ সদস্যের বিভন্ন প্রশ্নের জবাব দিতে হয়। যাইহোক এরপর আস্থা ভোটে যদি তিনি উত্তীর্ণ হন তাহলেই তিনি মন্ত্রী হতে পারবেন। এখানে প্রেসিডেন্টের করার কিছুই থাকে না । এমনকি প্রেসিডেন্টেকেও সংসদ সদস্যদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতে হয়। এখানে সংসদ সদস্যরা প্রেসিডেন্টের কাছে মোটেই দায়বদ্ধ নয় বরং প্রেসিডেন্টই সংসদের কাছে দায়বদ্ধ।


”তাহলে এতে দেশে কোন নির্দিশ্ট দলীয় আদর্শ বাস্তবায়নে সমস্যা হবার কথা নয় কি? ”

ইরানের শাসন ব্যবস্থা অত্যন্ত জটিল ও প্রচার বিমুখ। বাইরের বিশ্বের মানুষ ইরানের শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে খুবই কম জনে। ইরানের শাসন ব্যবস্থা গঠিত হয়েছে ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের আলোকে। সেহেতু বিপ্লবী আদর্শ ছাড়া কারো কোনো দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের সুযোগ আছে বলে মনে করি না ।

আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমার সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে আপাতত ফেসবুকে যোগাযোগ করতে পারেন।

আমার ফেসবুক লিংক।

https://www.facebook.com/mizanur.r.milon

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.