নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগবাড়িতে সুস্বাগতম !!! যখন যা ঘটে, যা ভাবি তা নিয়ে লিখি। লেখার বিষয়বস্তু একান্তই আমার। তাই ব্লগ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার আগে একবার ভাবুন এই লেখা আপনার নিজের মস্তিস্কপ্রসূত নয়।

মিজানুর রহমান মিলন

জয় হোক মানবতার ও মুক্তিকামী মানষের যারা নব্য উপনিবেশবাদের বলির পাঠা হতে চায় না ।

মিজানুর রহমান মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্বের প্রথম মানবাধিকার সনদ : সাইরাস সিলিন্ডার

১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:২৪



সাইরাস সিলিন্ডার : সামনের দিক।

আপনারা অনেকেই সাইরাস সিলিন্ডারের নাম বোধ হয় শুনেছেন । এই সাইরাস সিল্ডিারই হল পৃথিবীর প্রথম মানবাধিকার সনদ। পার্সিয়ান ( ইরান) সম্রাট সাইরাস দ্য গ্রেট ৫৩৯ খৃষ্টপূর্বাব্দে ব্যাবিলন দখলের পর এটা তৈরী করেন।এতে সম্রাট সাইরাসের প্রশংসা, পরাজিত ব্যবিলন রাজা নাবনিডুসের নিন্দা ও নীপিড়ক হিসাবে বর্ণনা এবং এতে পার্সিয়ান সাম্রাজ্য জুড়ে উপাসনার স্বাধীনতা এবং নির্বাসিত লোকজন দেশে ফিরে আসার অনুমতি ও ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত আদেশ উৎকীর্ণ রয়েছে। এটি পোড়া মাটির তৈরি একটি সিলিন্ডার যা আকাডিয়ান কিউনিফর্ম হরফে লেখা এবং সম্রাট সাইরাসের নামে নামাঙ্কিত।



ইরাকের ব্যবিলন নাম শহরে এক খননকার্যে ১৮৭৯ সালে সিলিন্ডারটি উদ্ধার করেন ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক ও কূটনীতিক হরমুজদ রাসাম ।



সিলিন্ডারটি দুই হাজার ছয়শত বছরের পুরোনো ও দেখতে এটি ঠিক পিপার মত।পিপা আকৃতির সিলিন্ডারটি ব্যাবিলনের ভিত্তিস্তম্ভে ব্যবহার করা হয়েছিল।এর আকার হল ২২.৫ সেন্টিমিটার x ১০ সেন্টিমিটার । এটি রয়েছে ৫২ নং রুম, ব্রিটিশ মিউজিয়াম, লন্ডনে।





পিছনের দিক।



সিলিন্ডারটির কিছু অংশ ভেঙ্গে গেছে তারপরেও ৪৫ লাইনের টেক্সট পাওয়া গেছে। দলিলের শুরুর দিকে কিছুটা ভেঙ্গে গেছে। এই ৪৫ টি লাইনকে ছয়ভাগে ভাগ করা হয়েছে।



১-১৯ লাইনে ব্যবিলিয়নের পূর্বের রাজা নাবনিডুসের নীপিড়নমূলক শাসন ব্যবস্থা, জনগণের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ ও জনগণের প্রতি বল প্রয়োগর বর্ণনা । ২০-২২ লাইনে সাইরাসের প্রশংসা, রাজবংশ ও তার শান্তিপূর্ণ ব্যবিলনের প্রবেশের বর্ণনা।শুরুটা এরকম-"I am Cyrus, king of the world, great king, powerful king..........। ২২-৩৪ লাইনে ব্যবিলিয়নে সাইরাসের নীতি ও কর্মপদ্ধতি।৩৪ -৩৫ লাইনে ব্যবিলিয়নের দেবতা মারদুকের প্রতি সাইরাস ও তার পূত্রের জন্য প্রার্থনা ।৩৬-৩৭ লাইনে শান্তিপূর্ণ জীপন যাপনের জন্য সাইরাসের প্রতি জনগণের সমর্থন ও জনগণকে ঈশ্বরের প্রার্থনা করতে উৎসাহিত করা।৩৮-৪৫ ব্যবিলিয়নে সাইরাসের নির্মাণ কার্যের বর্ণনা।



বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ও ধর্ম বিশ্বাসী মানুষের মধ্যে সহিষ্ণুতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার প্রতীক সাইরাস সিলিন্ডারের একটি কপি বা প্রতিকৃতি নিউ ইয়র্কের জাতিসংঘ ভবনে প্রদর্শিত হচ্ছে।



সাইরাসের জীবনীর ওপর ভিত্তি করে গ্রিক চিন্তাবিদ জেনোফন লিখেছেন সাইরোপিডিয়া। জোনোফন লিখেছেন সাইরাস কীভাবে সহিষ্ণুতার ওপর ভিত্তি করে একটি বৈচিত্র্যময় সমাজ শাসন করতেন। বইটি (গ্রিক ও লাতিন ভাষায়) ইউরোপে ১৭৬৭ সালে প্রকাশিত হয়। একটি কপি স্থান পেয়েছে ওয়াশিংটন ডিসির বিশেষ প্রত্নপ্রদর্শনীতে। আরেকটি কপি ছিল সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট টমাস জেফারসনের সংগ্রহে, যা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের লাইব্রেরি অব কংগ্রেসে সংরক্ষিত রয়েছে।

তবে ইতিহাসে এসেছে, তৎকালীন সময়ে ব্যাবিলনে ‘বোখতুন নাস্‌র’ নামে একজন পরাক্রান্ত ও শক্তিশালী বাদশাহ ছিলেন। তিনি যখন দেখলেন ইহুদি জাতি অবাধ্যতা করছে তখন তাদের উপর হামলা করলেন। তার বাহিনীর হামলায় বহু সংখ্যক ইহুদি নিহত এবং জীবিত বহু লোক বন্দি হয়। এরপর বোখতুন নাসর বাইতুল মোকাদ্দাসে প্রবেশ করে এ শহরটিকে ধ্বংস করে দেন। যতদিন বোখতুন নাসর জীবিত ছিলেন ততদিন বনী ইসরাইল জাতি ব্যাবিলনে তার বন্দিত্বে অপমানিত জীবন-যাপন করেছে। এরপর ইরানের পরাক্রমশালী রাজা সাইরাস ব্যাবিলন জয় করে ইহুদি জাতিকে মুক্ত করে দেন। সাইরাসের অনুমতি নিয়ে বনী ইসরাইল জাতি নিজেদের ভূমিতে ফিরে গিয়ে আবার নতুন করে ঘর-বাড়ি তৈরি করে বসবাস করতে থাকে। অনেক ঐতিহাসিক এই সাইরাসকে জুলকারনাইন হিসাবে অ্যাখ্যায়িত করেছেন।





কিউনিফর্ম স্ক্রিপ্ট এ সাইরাস সিলিন্ডার ।



এমনকি ইরানিরা নিজেই অর্থাৎ ইরানের জাতীয় জাদুঘর ২০১০-২০১১ সালে ব্রিটিশ মিউজিয়াম থেকে তাদের তৈরি মহামূল্যবান ও প্রাচীনতম মানবাধিকার সনদটি ভাড়া নিয়ে তাদের নিজ দেশে প্রদর্শন করে । সেখানে প্রায় দশ লক্ষ লোক এই প্রাচীনতম মানবাধিকার সনদটি পরিদর্শন করেন। শুধু তাই নয় মার্কিন যুক্তরাস্ট্রও তাদের দেশে এটা প্রদর্শনের জন্য বিট্রিশ মিউজিয়াম থেকে ভাড়া নিয়েছে। সেই সূত্রে বর্তমানে এটি যুক্তরাস্ট্রে রয়েছে এবং এটা বর্তমানে যুক্তরাস্ট্রে প্রদর্শিত হচ্ছে। প্রদর্শনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে রয়েছে ওয়াশিংটন ডিসি’র স্মিথসোনিয়ানস্ আর্থার এম স্যাকলার গ্যালারি হিউস্টনের মিউজিয়াম অব সাইন আর্র্টস, নিউইয়র্কের মেট্রোপলিটন মিউজিয়িাম অব আর্ট, সানফ্রানসিস্কোর এশিয়ান আর্ট মিউজিয়াম এবং লস এঞ্জেলেসের জি.পল জেট্টি মিউজিয়াম। ৮ মাস ব্যাপী এই সফর ২০১৩ সালের অক্টোবরে সমাপ্ত হবে।



ব্রিটিশ মিউজিয়াম ইন লন্ডন সাইরাস সিলিন্ডার ।



সাইরাস সিলিন্ডার এবং এতে উৎকীর্ণ বৈচিত্র্য ও বিশ্বজনীন মানবাধিকারের প্রতি এর বার্তা বর্তমানে আমাদের সকলের জন্য সময়োপযোগী। এগুলো স্থান ও কাল অতিক্রম করে অনন্য উপায়ে বক্তব্য তুলে ধরতে সক্ষম।













মন্তব্য ১৯ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ১২:০০

রি হোসাইন বলেছেন: ভালো ও গুরুত্ব পূর্ণ তথ্যবহুল পোষ্ট। ধ্ন্যবাদ লেখক কে

১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ১২:১৭

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ রি হোসাইন ভাই ।

২| ১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:৪১

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

সম্পূর্ণ অন্যরকম একটি পোস্ট। এমন ধরনের পোস্ট নিয়ে আশা করি আপনাকে আরও পাব। +++++++++++

১৫ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৫

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই । ইনশাআল্লাহ সামনে আরো পাবেন।

৩| ১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:৫০

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: দারুণ পোস্টে প্লাস।

১৫ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:১১

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।

৪| ১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ৩:৩৮

খেয়া ঘাট বলেছেন: আগে জানা ছিলোনা। আপনার পোস্ট পড়ে জানলাম।
+++++

১৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ১২:১৭

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।

৫| ১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ৩:৩৮

গান পাগল মন বলেছেন: ারুন পোষ্ট

১৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ৮:০৮

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।

৬| ১৫ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৯:১৯

আরজু পনি বলেছেন:

জানতাম না অনেক কিছুই।
ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্যে।।

১৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ৮:১৬

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।

৭| ১৫ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩০

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম।


+++++++

১৮ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:২২

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।

৮| ১৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ৮:১৯

তুষার আহাসান বলেছেন: নতুন কিছু জানা হল।
ধন্যবাদ।

১৮ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৪২

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই । ভাল থাকবেন ।

৯| ১৭ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৮

বাংলার হাসান বলেছেন: ভালো ও গুরুত্ব পূর্ণ তথ্যবহুল পোষ্ট।

১৮ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৫২

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই । ভাল থাকবেন ।

১০| ১৭ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৬

ঘুড্ডির পাইলট বলেছেন: আগে পড়ছি আরও কিছু নতুন তথ্য জানতে পারলাম ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.