নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগবাড়িতে সুস্বাগতম !!! যখন যা ঘটে, যা ভাবি তা নিয়ে লিখি। লেখার বিষয়বস্তু একান্তই আমার। তাই ব্লগ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার আগে একবার ভাবুন এই লেখা আপনার নিজের মস্তিস্কপ্রসূত নয়।

মিজানুর রহমান মিলন

জয় হোক মানবতার ও মুক্তিকামী মানষের যারা নব্য উপনিবেশবাদের বলির পাঠা হতে চায় না ।

মিজানুর রহমান মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতের লোকসভা নির্বাচন ও মোদিতন্ত্রের প্রবেশ ।

২৩ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৩:৩১

গ্লোব্লাইজেশনের এই যুগে বিশ্বের যে কোনো রাস্ট্রের নির্বাচন নিয়ে বিচিত্র সংবাদ আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় যেমন স্থান পায় তেমনি সেই দেশের প্রতিবেশী ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দেশগুলিতেও কম উত্তেজনা, শংকা ও হৈ-হুল্লোড় হয় না ! আর ভারতের মত একটি অঞ্চলিক শক্তিধর দেশের নির্বাচন নিয়ে তার প্রতিবেশী রাস্ট্রগুলিতে বিশেষ করে বাংলাদেশে উত্তেজনা, তীক্ষ্ণ দৃষ্টি থাকবে তা স্বভাবিক। ভারতের শক্তিশালী শাসনতান্ত্রিক কাঠামো ও জাতীয় স্বার্থে ফরেইন পলিসি নির্ধারিত হওয়ায় আমাদের বগল বাজিয়ে যেমন লাভ নেই তেমনি হতাশ হলেও লাভ বা ক্ষতি নেই ! ভারতের সরকার কে হবেন তা নির্ধারিত করার দায়িত্ব যেহেতু ভারতের জনগণের সেহেতু আমাদের বগল না বাজিয়ে বা হতাশ না হয়ে আমাদের জাতীয় স্বার্থে ফরেইন পলিসি নির্ধারিত হওয়া দরকার এতে মোদী আসুক আর নদী আসুক কোনো সমস্যা নেই ! ভারতের লোকসভা নির্বাচন নিয়ে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলির ভূমিকায় মনে হয়েছে বাংলাদেশের সরকারে কে থাকবে তা নির্ধারিত হয় দিল্লীতে ! মনোমোহন জি দয়া করে হাসিনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছেন সো কংগ্রেসের বিদায়ে বিএনপি মহাখুশি ! বিএনপির উৎফুল্লতা দেখে মনে হল এবার মোদি জি খালেদাকে বাংলার মসনদে বসিয়ে দিয়ে ছাড়বেন ! বাংলাদেশের দেউলিয়াত্ব রাজনীতির এ আর এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ !



বাংলাদেশের চেয়ে ভারতের গণতন্ত্র নি:সন্দেহে তুলনামুলক প্রকৃষ্টমানের কিন্তু তা পুরোপুরি সহিহ নয়। বাংলাদেশে কারা ক্ষমতায় আসবে আর কারা যাবে তা যদি বাংলাদেশ ভূ-খন্ডের বাইরে নিধারিত হয় তাহলে ভারতের ক্ষমতায় কারা আসবে তা নির্ধারিত হয় ভারতের মিডিয়া ও কর্পোরেট সমাজ দ্বারা ! মোদি এবার প্রধানমন্ত্রী হবেন এটা ভারতীয় জনগণের দাবি ছিল না। এই দাবিটা ছিল মিডিয়া ও কর্পোরেট সমাজের! মিডিয়া চা বিক্রেতা মোদিকে ’প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি’ বানিয়ে দিল। মিডিয়া এবার ভারতের দীর্ঘদিনের প্রচলিত গণতন্ত্রকে ফোকাস করেনি বরং মিডিয়া ফোকাস করেছে মোদিকে-আব কি বার ! মোদি সরকার ! অন্যদিকে বিজেপি কর্তৃক নির্বাচনের আগেই মোদিকে প্রধানমন্ত্রীত্বের মনোনয়ন ভারতের গণতন্ত্র নয় মোদিতন্ত্রের যুগে প্রবেশ ! তাই এবার মোদি তন্ত্রের কারণে ভারতের গণতন্ত্রের ভবিতব্য নিয়ে সচেতন ও সেক্যুলার মহল চিন্তিত! ভারতের কর্পোরেট ক্লাসও এবার কংগ্রেসের পক্ষে ছিল না । কর্পোরেট ক্লাস হল গুজরাটি, মাওয়ারি ও পার্সি। এরাই মূলত ভারতের এলিট শ্রেণী। এই এলিট শ্রেনী দেশের শিল্পায়নের পক্ষে কিন্তু ভারতীয় ভূমিপুত্ররা জমি ছাড়তে নারাজ, আর এজন্য লাভজনক খনি শিল্প ঠিক ঠাক চালানো যাচ্ছিল না । গত কংগ্রেস সরকারের আমলে দেখিছি সারা ভারতে কৃষকদের জমি রক্ষার আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছিল । এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিল মাওবাদীরা। এরফলে বহু পুজিপতি দেশ ছেড়ে চলে গেছে, অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্ট ট্রাইবাল অঞ্চলে খনি খনন নিষধ করেছে, ফলে কয়লা নেই, তাই বিদ্যুৎ নেই, তাই শিল্প নেই, নেই খনি রপ্তানি, নেই বিদেশী মুদ্রা, অতএব মোদির মত উগ্র নেতাকে পিএম বানানো হোক যাতে সে ট্রাইবালদের রেড ইন্ডিয়ানদের মত মেরে ভারতকে সুপার পাওয়ার বানায় ! পশ্চিমবঙ্গের মমতা কিন্তু কৃষকদের পক্ষ নিয়ে আজ পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী পদে উন্নীত হয়েছেন ! বাংলার কৃষক আন্দোলন ইচ্ছেমত কৃষি জমি নিয়ে শিল্প করা গোটা ভারত জুড়ে বন্ধ করে দিয়েছে, বাংলার কুষককে ভাঙতে আনা হচ্ছে হিন্দু মুসলিম দ্বন্দ্ব। উদ্দেশ্য কৃষকদের দুর্বল করে পুজিপতিদের হাতে জমি তুলে দাও ! যাইহোক, এদিকে ভারতীয় মিডিয়া ফোকাস করেছে ভারতীয় অর্থনীতির বেহাল দশাকে।২০১১-১৪ এরমধ্যে জিডিপির গ্রোথ রেট ৮% থেকে ৫% নেমে এ নেমে এসেছে! তাই মিডিয়া প্রভাবিত হয়ে ভারতীয় ভোটাররা গুজরাট হত্যাকান্ডে মোদির জড়িত থাকা ও মোদির উগ্রপন্থাকে আমলে নেননি বরং তারা মিডিয়া প্রভাবিত হয়ে গুজরাটে মোদি যে উন্নয়নের ধারা সৃষ্টি করেছেন ও অর্থনীতিকে যে সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছেন মোদির সেই কৃতিত্ব পুরো ভারতবাসীর জন্য প্রযোজ্য হতে পারে বলে অধিকাংশ ভারতীয় ভোটার মনে করেছেন ! মোদির প্রধানমন্ত্রী হওয়া আর জার্মানিতে হিটলারের ফুয়েরার হওয়া একই সূত্রে গাঁথা ! মোদি ভারতের ক্ষমতায় আসছেন অবিভক্ত ভারতীয় সমাজকে বিভক্ত করে-বাঙ্গালী ও অবাঙ্গালী ইস্যু তিনি ইতিমধ্যেই তুলেছেন। বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংশ দখল করার হুমকি ইতিমধ্যেই বিজেপির শীর্ষ পর্যায় থেকে বার কায়েক দেওয়া হয়েছে। তিনি তার নির্বাচনী প্রচারণা কালে এই বিভক্তির বীজগুলি বপন করেছেন ! তার ক্ষমতায় থাকাকালীন সেগুলো ধীরে ধীরে মহিরহুতে পরিণত হতে পারে ! আরো শক্তভাবে মাথাচাড়া দিবে হিন্দুত্ববাদ যা প্রকারন্তে ইসলামী মৌলবাদিদের সাহস ও জেহাদি জোস বাড়িয়ে দিবে ! ভারতের ভুমিপুত্র, কৃষক, দলিত ও সংখ্যালঘুদের প্রতি স্বভাবতই বৈষম্য বাড়বে ও এতে ভারতে ছড়িয়ে পড়বে অস্থিরতা ও দাঙ্গা এরপর তা প্রতিবেশী দেশগুলিতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে ! তখন হিন্দৃত্ববাদের দোহাই দিয়ে মোদি বাধ্য হবেন তার কম শক্তিশালী প্রতিবেশী রাস্ট্রে হস্তক্ষেপ করতে ! এতে মোদির জনপ্রিয়তা আরো যেমন বাড়বে তেমনি পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় সমানুপাতিক হারে বাড়বে অস্থিরতা ! লক্ষণীয় যে, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার ধর্মভিত্তিক রাজনীতিক দল, মৌলবাদী ও তাদের সমর্থকেরা মোদির জয়ে শঙ্কিত নয় বরং আশান্বিত হয়েছেন যা সত্যিই উদ্বেগজনক ! কারণ তাদের বৈধতার জন্য উগ্র হিন্দুত্ববাদী মোদিকেই দরকার !



মোদি প্রধানমন্ত্রী হয়ে ভারতের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য পরিবারতন্ত্রে পদাঘাত করেছেন! মোদির আরো সফলতা হলো বিজেপির ভূমিধ্বস বিজয় বিজেপি নয় বরং পুরোটাই মোদির কৃতিত্ব ! শুধু পশ্চিমবঙ্গে মমতা ও তামিল নাড়ুর জয় ললিতা বাদে মোদি সবাইকে হোয়াইট ওয়াশ করেছেন ! মোদির প্রচারণায় হিন্দুত্ববাদ প্রভাব ফেলেছে বটেই কিন্তু তার চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে কংগ্রেসের ব্যর্থতা ও সুশাসনের অভাব, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উধ্বগতি।কর্মসংস্থানের কথা বলে তিনি তরুণদের সহজেই কাছে টানতে পেরেছেন ! ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারগণ এবার বিজেপি বা কংগ্রেসকে ভোট দেননি বরং তারা ভোট দিয়েছেন মোদিকে -নির্বাচনী ফলাফলই তার প্রমান।যাইহোক,মোদির শপথ অনুষ্ঠানে দক্ষিণ এশিয়ার রাস্ট্রপ্রধানদের দাওয়াত প্রদান নি:সন্দেহে একটি কুটনৈতিক পদক্ষেপ । আমরা আশা করব-সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে উগ্রপন্থা নয় প্রধানমন্ত্রী মোদি কুটনৈতিকভাবেই প্রতিবেশী রাস্ট্রের সাথে সকল দ্বিপাক্ষিক সমস্যার সমাধানের প্রতি জোর দিবেন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.