নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগবাড়িতে সুস্বাগতম !!! যখন যা ঘটে, যা ভাবি তা নিয়ে লিখি। লেখার বিষয়বস্তু একান্তই আমার। তাই ব্লগ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার আগে একবার ভাবুন এই লেখা আপনার নিজের মস্তিস্কপ্রসূত নয়।

মিজানুর রহমান মিলন

জয় হোক মানবতার ও মুক্তিকামী মানষের যারা নব্য উপনিবেশবাদের বলির পাঠা হতে চায় না ।

মিজানুর রহমান মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

হামাসের অভাবনীয় উত্থান ও চলমান ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ কি একটি প্রক্সি যুদ্ধ ?

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৭

চলমান ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ তো নয় এমনকি ফিলিস্তিন বনাম ইসরায়েল যুদ্ধও বলা কতটুকু যুক্তি সঙ্গত হবে যেখানে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এই যুদ্ধে ইসরায়েলকে নিরব সমর্থন করতেছেন বরং বলা যায় এই যুদ্ধটা হল মধ্যপ্রাচ্যের একটি প্রক্সি যুদ্ধ ! মনোস্তাত্ত্বিক দিক দিয়ে এই প্রক্সি যুদ্ধটা হচ্ছে মূলত ইরান বনাম আরব যুদ্ধ ! ইসরায়েলের বৃহত্তর ইসরায়েল বাস্তবায়নে বর্তমান প্রধান বাধা হামাস, হিজবুল্লাহ ও ইরান আর অন্যদিকে আরব শাসকেরাও এই তিন পক্ষকে তাদের জানের শত্রু মনে করে। নিউইয়র্ক টাইমস রিপোর্ট করেছে, "Arab leaders, viewing Hamas as worse than Israel, stay silent." সিএনএন এর ফরিদ জাকারিয়া বলেছেন, “এই প্রক্সি যুদ্ধটা মূলত মধ্যপ্রাচ্যকে নিয়ন্ত্রণ কে করবে তার লড়াই ।” মধ্যপ্রাচ্যকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে নি:সন্দেহে দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি ইরান ও সৌদির স্নায়ু যুদ্ধের কথাই চলে আসে-সিরিয়া, ইরাকে, বা্হরাইনে চলছে এই আঞ্চলিক দুই শক্তির লড়াই । এই দেশগুলিতেও চলছে ইরান ও সৌদির প্রক্সি যুদ্ধ ! ফরিদ জাকারিয়া আরো বলেছেন, "The Saudi monarchy is more worried about the prospects of Hamas winning. Egypt, Jordan, Saudi Arabia and the UAE all see the destruction of Hamas as of benefit to their internal security as well as to regional stability." অন্যদিকে ইসরায়েলী প্রেসিডেন্ট শিমোন পেরেজ বলেছেন, “এই প্রথম গাজা যুদ্ধে আমরা সব আরব শাসকদের সমর্থন পেয়েছি।” ইসরায়েল আরবদের স্বার্থে নয় তার নিজ স্বার্থেই যুদ্ধ করতেছে তবে আরব শাসক ও ইসরায়েলের স্বার্থ একই বিন্দুতে মিলিত হওয়ায় আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে বন্ধুত্ব হতে কোনো বাধা নেই কারণ বর্তমান প্রেক্ষাপটে ও মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতির আলোকে আরব ও ইসরায়েল একমাত্র ইরানকেই তাদের কমন শত্রু মনে করে তাই আরব শাসকেরা মনে করতেছে ইসরায়েল তাদের হয়ে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেছে ! অন্যদিকে ইরানের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করতেছে হামাস কথাটা ঠিক নয় বরং এভাবে বললে শতভাগ সঠিক হবে যে চলমান যুদ্ধ ইরান ও হামাসকে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে আরো কাছাকাছি নিয়ে এসেছে।এক্ষেত্রে হামাসকে ইরানের যতটা না প্রয়োজন তারচেয়ে হামাসের অনেক বেশি প্রয়োজন । এর আগে হামাস ইসরায়েল আরো অনেক যুদ্ধ হয়েছে কিন্তু বর্তমানের যুদ্ধের মত এত দীর্ঘ মেয়াদী ও নিরীহ ও বেসামরিক গাজাবাসী নিহত যার মধ্যে অধিকাংশই নারী, শিশু ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি এত হয়নি ! কিন্তু এবারে ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার মূল কারণ হল আরব শাসকেরা চায় না যুদ্ধ বন্ধ হোক বরং আরব শাসকেরা চায় ইসরায়েলের দ্বারা হামাসের পতন ও ধ্বংস অথবা নিদেনপক্ষে আরবরা এমন একটি যুদ্ধ বিরতি চায় যে যুদ্ধ বিরতিতে ইসরায়েলের জয় নিশ্চিত ও হামাস অত্যন্ত দুর্বল ও অক্ষম হবে ।আর এটা করতে যেয়ে পুরো গাজাবাসীকে ইসরায়েল নিশ্চিহ্ন করলেও আরব শাসকদের কিছু যায় আসে না । দেখুন, কয়েকদিন আগে মিসর কর্তৃক যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবনা । মিসরের সেই প্রস্তাব আত্মসমর্পণের নামান্তর বলে প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস আর একমাত্র কাতার ছাড়া উপসাগরীয় সব আরব দেশই জোড়ালো কন্ঠে সমর্থন করেছে ।



গত ২০১১ সালে সিরিয়াতে বিদ্রোহ ও আইএসআইএল, আল কায়েদা জঙ্গীদের অনুপ্রবেশের ফলে সিরিয়াতে যে যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি হয় সেই যুদ্ধে ইরান নেয় প্রেসিডেন্ট আসাদের পক্ষ ও হামাস তার দীর্ঘদিনের মিত্র প্রেসিডেন্ট আসাদকে পরিত্যাগ করে পক্ষ নেয় বিদ্রোহীদের ! সেই থেকে ইরান-হামাসের স্নায়ু দ্বন্দ্ব ! হামাস তখন মিসর, তুরস্ক ও কাতারমুখী হয়েছিল। মিসরের মুরসির পতন হামাসের জন্য ছিল এক বিরাট আঘাত ও অন্যদিকে তুরস্ক ও কাতার মৌখিক সমর্থন ছাড়া গাজাবাসী ও হামাসের জন্য তেমন কিছুই করেনি। তবে এরদোগান মাঝে মাঝে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফাকা বুলি ও ফাকা গুলি ছুড়েন ! অবশ্য পশ্চিমাদের মিত্র হয়ে হামাসকে অস্ত্র সাহায্য করার ক্ষমতা এই দুই দেশের কারো নেই একমাত্র ইরান ছাড়া । এজন্য হামাসের ইরানমূখী হওয়া ছাড়া আপাতত দ্বিতীয় কোনো পথ নেই তবে চলমান গাজা যুদ্ধ ইরান, তুর্কি ও কাতারকেও কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। অন্তত ফিলিস্তিন ইস্যুতে হয়তো নিকট ভবিষ্যতে সৌদি আরব, জর্ডান, মিসর, আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে একটা জোট গঠন হতে পারে তবে এজন্য আরো অপেক্ষা করতে হবে। তাই হামাস চলমান যুদ্ধকে দেখছে তার বিচ্ছিন্নতা কাটিয়ে ওঠার চরম সুযোগ হিসাবে। নি:সন্দেহ চলমান যুদ্ধ ইরান ও হামাসকে আবারো অতি কাছা্কাছি নিয়ে এসেছে ! এক্ষেত্রে ইরানের লাভ হলো-এই যুদ্ধে আরব শাসকদের মুখোশ যেমন খুলে গেছে তেমনি এর পাশাপাশি আইএসআইএল, আল কায়েদাসহ সকল জঙ্গী গ্রুপেরও মুখোশ খুলে গেছে ও অন্যদিকে ইরানের পজিটিভ ভূমিকার কারণে বিশেষ করে মুসলিম বিশ্বে ইরানের ভাবমূর্তি আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক উজ্বল হয়েছে । এই কারণে গাজা ইস্যুতে ইরানি নেতাগণ ও তাদের মিডিয়া যেমন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সরব তেমনি আরব মিডিয়া নিরব ! এখন এটা স্পষ্ট হয়েছে যে সৌদি ও অন্যান্য আরব শাসক এবং ইসরায়েলের আশা হামাসের ধ্বংস দূরাশাই হয়ে থাকল বরং উল্টোটাই ঘটতেছে। অন্যদিকে মাহমুদ আব্বাস হামাসের সাথে একটি ঐক্য সরকার গঠন করে হামাসকে সাবঅর্ডিনেট ও ইসরায়েলের প্রতি কম বৈরিভাবাপন্ন করে রাখতে চেয়েছিল কিন্তু চলমান যুদ্ধ সবকিছুই পাল্টে দিয়েছে ! শুধু গাজা নয় মাহমুদ আব্বাসের পশ্চিম তীরেও এখন হামাসের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ! আর যুদ্ধ বিরতির শর্ত হিসাবে হামাসের অন্যতম দাবি গাজার উপর ইসরায়েলী ও মিসরীয় অবরোধ প্রত্যাহার হলে নি:সন্দেহ ফিলিস্তিনিদের পরবর্তী ভাগ্য নির্ধারণ হবে এই হামাসের দ্বারাই ! ইসরায়েলকেও নিশ্চিৎভাবে এই হামাসের সাথেই আলোচনায় বসতে হবে। কারণ ইসরায়েলের মত সন্ত্রাসী একটি রাস্ট্রে যে কিনা গণহত্যা, নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতায় নাজিদেরকেও হার মানিয়েছে তাদের জন্য উগ্র ও আপোষহীন হামাসের বিকল্প নেই !

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ইসরায়েলের মত সন্ত্রাসী একটি রাস্ট্রে যে কিনা গণহত্যা, নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতায় নাজিদেরকেও হার মানিয়েছে তাদের জন্য উগ্র ও আপোষহীন হামাসের বিকল্প নেই !

দারুন বিশ্লেষন।!

এই যুদ্ধে আরব শাসকদের মুখোশ যেমন খুলে গেছে তেমনি এর পাশাপাশি আইএসআইএল, আল কায়েদাসহ সকল জঙ্গী গ্রুপেরও মুখোশ খুলে গেছে ...

++++

০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:৩৪

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।

২| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ রাত ৩:১৫

বাংলাদেশী দালাল বলেছেন:
দারুণ পোস্ট।

৩| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:২৫

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: তথ্যবহুল ও শ্রমসাধ্য পোস্ট। প্রক্সি ওয়ার প্রকারান্তরে সৌদি শাসকদের জন্য আত্মহত্যার শামীল হবে।
ধন্যবাদ, ভাই মিজানুর রহমান।

৪| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৬

জামান শেখ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইজান।

৫| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৫৫

নাওেয়দ বলেছেন: ইসরায়েল কিভাবে দুনিয়া কন্ট্রোল করছে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.