নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগবাড়িতে সুস্বাগতম !!! যখন যা ঘটে, যা ভাবি তা নিয়ে লিখি। লেখার বিষয়বস্তু একান্তই আমার। তাই ব্লগ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার আগে একবার ভাবুন এই লেখা আপনার নিজের মস্তিস্কপ্রসূত নয়।

মিজানুর রহমান মিলন

জয় হোক মানবতার ও মুক্তিকামী মানষের যারা নব্য উপনিবেশবাদের বলির পাঠা হতে চায় না ।

মিজানুর রহমান মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

গাজা যুদ্ধে কে বিজয়ী- হামাস নাকি ইসরাইল?

২৮ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:৪৪

গত ৫০ দিন ধরে চলা ইসরাইল-হামাস যুদ্ধে প্রায় দুই হাজারেরও বেশি প্রাণহানির পর অবশেষে মিসরের রাজধানীতে কায়রোতে দু’ পক্ষ স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে। স্থায়ী যুদ্ধবিরতির খবর শুনে ফিলিস্তিনের গাজাবাসী আনন্দ মিছিল বের করেছে যদিও এ যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। এর আগে ২০১২ সালেও একটানা ৮ দিন ধরে যুদ্ধ চলার পর দু’পক্ষই স্থায়ী যুদ্ধ বিরতিতে পৌছেছিল কিন্তু তা বেশিদিন স্থায়ী থাকেনি-বর্তমান যুদ্ধ তারই প্রমাণ। যুদ্ধবিরতি যে কয়েকদিন বা কয়েক মাসের জন্যই হোক না কেন সেটাই গাজাবাসীর লাভ। তবে ইসরাইলের সাথে এ যুদ্ধে গাজাবাসীর যা অর্জন তা গাজাবাসীর একান্ত নিজের। কারণ একমাত্র ইরান ছাড়া কোনো পরাশক্তি বা স্বগোত্রীয় প্রতিবেশী বা আঞ্চলিক শক্তিদেরও কেউ গাজাবাসীর পাশে ছিল না। ফিলিস্তিনের অন্যতম প্রতিবেশী, স্বগোত্রীয়, স্বজাতি আরবরা তো নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে ইসরাইল তোষণে ব্যস্ত ছিল। বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে যে, মিসর, সৌদিসহ অন্যান্য রাজতান্ত্রিক আরবরা ইসরাইলকে সমর্থন ও যথেষ্ট সাহায্য সহযোগিতা করেছে যাতে হামাসকে ধ্বংস করা যায়।



এখন প্রশ্ন হল- এ যুদ্ধে গাজাবাসীর অর্জন কী? কেনইবা তাদেরকে বিজয়ী বলা হচ্ছে?



আসলে গাজাবাসী বিজয়টা হল- ইসরাইল যে লক্ষ্যে হামলা শুরু করেছিল সেই লক্ষ্য অর্জিত না হওয়াটাই হল বড় বিজয়। তেলআবিবেরর লক্ষ্য ছিল-

১. হামাসকে নির্মূল করা

২. গাজাবাসীর একমাত্র বাঁচার উপায় সুড়ঙ্গগুলো ধ্বংস করে গাজাবাসীকে চুড়ান্ত বিচ্ছিন্নতার দিকে ঠেলে দেয়া। এবং

৩. হামাসের রকেট হামলা বন্ধ করা।



কিন্তু ইসরাইল এ তিনটির একটি লক্ষ্যও অর্জন করতে পারেনি। অন্যদিকে, হামাস যুদ্ধবিরতির সেসব শর্ত দিয়েছিল তার সবগুলোই পূরণ হয়েছে। যুদ্ধবিরতির শর্তগুলোর দিকে তাকালেই তা স্পষ্ট হয়ে যায়।



১. জল, স্থল বা আকাশপথে ইসরাইল গাজা উপত্যকায় কোনোরকম আগ্রাসন চালাবে না।

২. সীমান্তেও কোনোরকম গোলাগুলি চালাবে না ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনি নেতাদের উপর কোনোরকম 'টার্গেটেড কিলিং' বা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড চালাতে পারবে না।

৩. যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার শর্ত হিসাবে গাজা উপত্যকার সবগুলো ক্রসিং খুলে দেবে ইসরাইল। কায়রো চুক্তি অনুযায়ী এরইমধ্যে গাজায় প্রবেশের দু'টি ক্রসিং খুলে দিয়েছে ইসরাইল এবং বাকিগুলো অচিরেই খোলা হবে। সেইসঙ্গে গাজা অভিমুখী লোকজন বা পণ্য আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারবে না তেল আবিব।

৪. এর আগে গাজা উপকূলের তিন মাইলের মধ্যে মাছ ধরতে পারতেন ফিলিস্তিনি জেলেরা। কায়রো চুক্তিতে তার ব্যাপ্তি বাড়িয়ে ছয় মাইল করা হয়েছে।

৫. বিনিময়ে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা শুধুমাত্র ইসরাইলে রকেট বা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা না চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।



তাই তো University of British Columbia এর সহযোগী অধ্যাপক Sunera Thobani বলেছেন, "Whatever the outcome of this battle however, Israel has already lost the war. Despite its occupation and blockade of Gaza, Israel has remained unable to isolate or marginalize – let alone destroy – the Palestinian resistance that is now represented by Hamas."



২০০৬ সালে লেবানননের হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধেও ইসরাইল পরাজিত হয়েছিল এবং জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় সে যুদ্ধেও কোনোমতে মুখরক্ষা করে সরে পড়েছিল তেল আবিব। তারপর আর এক মুহূর্তের জন্যও লেবাননে আগ্রাসনের কথা কল্পনাও করেনি ইসরাইল।



হামাসের সবচেয়ে বড় অর্জন হল- গাজার অবরোধ ভাঙা আর হামাস নেতাদের যাতে ইসরাইল টার্গেট করতে না পারে তা বন্ধ করা যেখানে ইসরাইল চেয়েছিল হামাসকে নির্মূল করতে। গাজাবাসীর অবরোধ ভাঙার জন্য জাতিসংঘ, বিশ্ববাসী, তাদের স্বগোত্রীয় আরবরা কিইবা করতে পেরেছে? ২০০৭ সাল থেকে নিষ্ঠুর ও অমানবিক অবরোধ ভাঙার জন্য গাজাবাসীর জন্য কোনো দেশ এগিয়ে আসেনি, কোনো বিশ্ব পরাশক্তি এগিয়ে আসেনি। এই অবরোধ ভাঙার বিনিময় হিসেবে গাজাবাসীকে দিতে হল দুই হাজারেরও বেশি প্রাণ।



তবে, হামাস-হিজবুল্লাহ প্রমাণ করে দিয়েছে ইসরাইল আর অজেয় নয়। এর আগের যুদ্ধগুলোতে এমনকি আরব ইসরাইল যুদ্ধেও ইসরাইলী ভূ-খণ্ড নিরাপদ থাকলেও এবার কিন্তু নিরাপদ ছিল না। প্রায় ১৫০ এর বেশি প্রাণ হারিয়েছে ইসরাইলী সেনা! আর ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে অনেক ইসরাইলী নাগরিক। যুদ্ধের আগে নেতানিয়াহুর জনপ্রিয়তা ছিল প্রায় ৮২ শতাংশে যুদ্ধে ব্যর্থতার কারণে তা এখন নেমে এসেছে ৩৫ শতাংশে! ইসরাইলের লজ্জাজনক পরাজয় ও নেতানিয়াহুর জনপ্রিয়তায় ধস দেখে অনেকেই বলছেন, ইসরাইলের ধ্বংস অনিবার্য। এর আগে আমেরিকার সাবেক দুর্দান্ত ও প্রতাপশালী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার ভবিষ্যদ্বানী করেছেন ”ইসরাইল আর মাত্র ১০ বছর বাঁচবে।” জানি না তিনি কোন যুক্তি ও হিসাব করে এ কথা বলেছেন তবে আমার মনে হল-ফিলিস্তিনি প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলি যদি আরো শক্তিশালী হয় যেমনটি ইরান বলেছে যে শুধু গাজা নয় আমরা পশ্চিম তীরকেও অস্ত্র সজ্জিত করব -যদি ইরান সত্যি তা করতে পারে তাহলে শুধু গাজাবাসী নয় পশ্চিম তীরও ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যোগ দেয় তখন ইসরাইল ভেতর থেকে হয়ত ভেঙে পড়বে-তারা যেখান থেকে এসেছিল সেখানেই তারা ফিরে যাবে।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:৪৭

জেন রসি বলেছেন: মানুষ পরাজিত।

৩১ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১:০৬

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: সহমত তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে শান্তির জন্য যুদ্ধের কোনো বিকল্প নেই !

২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:০৬

বাংলার হাসান বলেছেন: সহমত

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.