নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগবাড়িতে সুস্বাগতম !!! যখন যা ঘটে, যা ভাবি তা নিয়ে লিখি। লেখার বিষয়বস্তু একান্তই আমার। তাই ব্লগ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার আগে একবার ভাবুন এই লেখা আপনার নিজের মস্তিস্কপ্রসূত নয়।

মিজানুর রহমান মিলন

জয় হোক মানবতার ও মুক্তিকামী মানষের যারা নব্য উপনিবেশবাদের বলির পাঠা হতে চায় না ।

মিজানুর রহমান মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দিলেমা রউসেফের জয়লাভ ও বলিভারিয়ান বিপ্লব ।

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:১৬

একসময়কার মার্ক্সবাদী গেরিলা নেতা দিলেমা রউসেফ দ্বিতীবারের মত ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। রউসেফ পেয়েছেন ৫১.৬০% ভোট ও তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি অ্যাসিও নেভিস পেয়েছেন ৪৮.৪০% ভোট অর্থাৎ ভোটের ব্যবধান হল ৩% যেখানে ২০১০ এ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রউসেফ ১২% ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছিলেন! ২০১০ সালে ব্রাজিলের তৎকালীন বামপন্থী ও জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভার জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে ক্ষমতাসীন হয়েছিলেন দিলেমা রউসেফ।

একসময় ল্যাটিন আমেরিকা ছিল মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীদের আখড়া। সেখানকার সম্পদে জনগণের কোনো ভাগ ছিল না । সর্বপ্রথম কিউবান বিপ্লবের কারণে কিউবা হাত ছাড়া হয় মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের।এরপরও দীর্ঘদিন যাবত শুধুমাত্র কিউবা ছাড়া ল্যাটিন আমেরিকার অন্যান্য দেশগুলি মার্কিন যুক্তরাস্ট্র ও সিআইএ’র সেভ হোম হিসাবে ব্যবহৃত হত। তারপর ক্ষমতার পালাবদল ঘটতে থাকে। শুরু হয় হুগো শ্যাভেজের নেতৃত্বে বলিভারিয়ান বিপ্লব ! সাইমন বলিভারের বিপ্লবী চিন্তাই হচ্ছে ভেনিজুয়েলার বলিভারিয়ান আন্দোলনের ভিত্তি। উনিশ শতকে বলিভার লড়েছেন স্প্যানিশ উপনিবেশ থেকে ভেনিজুয়েলাকে মুক্ত করতে। জয়ী হয়েছেন। এরপর চেয়ে গুয়েভারা ও ফিডেল ক্যাস্ট্রোর নেতৃত্বের পর একবিংশ শতকে বলিভারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন হুগো শাভেজ।প্রতিপক্ষের শুধু নাম ভিন্ন কিন্তু চরিত্র একই। শ্যাভেজের প্রতিপক্ষ হল মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ। শ্যাভেজ যে বিপ্লবের সুচনা করেছিলেন সেই বিপ্লব ক্রমান্বয়ে ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র ল্যাটিন আমেরিকায়। আজকে ল্যাটিন আমেরিকা যুক্তরাস্ট্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে বলা যায় শ্যাভেজের কারনেই । অবশ্য শ্যাভেজের গুরু ফিডেল ক্যাস্ট্রের অবদানও কম নয় । তবে শ্যাভেজ ক্ষমতায় আসার পর পরই তিনি ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রয়াস নেন এবং বলা যায় শ্যাভেজের বলিভারিয়ান বিপ্লবের প্রভাবে আজকে বলিভিয়া, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, নিকারাগুয়া, ইকুয়েডরসহ মোটামুটি সব রাস্ট্রই বামপন্থীদের নিয়ন্ত্রনে। ল্যাটিন আমেরিকার বামপন্থী প্রেসিডেন্টরা মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের সমালোচনায় সবচেয়ে বেশি সোচ্চার !

২০০৩ সালে যুক্তরাস্ট্র যখন ইরাক আক্রমন করে তখন এই শ্যাভেজই ছিলেন সেই হামলার কঠোর সমালোচক। তিনি এজন্য যুক্তরাস্ট্রের তুলোধুনো করতে পিছপা হননি।হুগো শ্যাভেজ যুক্তরাস্ট্রের সমালোচনাকে নতুন রুপে অলংকৃত করেছিলেন। তাইতো তিনি জাতিসংঘে সাধারন পরিষদে ভাষণ দিতে গিয়ে বুশকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ”এখানে ২৪ ঘন্টা আগে এক শয়তান এসেছিল ভাসন দিতে এবং এই লোকটির শরীর থেকে সালফারের গন্ধ বের হচ্ছে।আমি সেই গন্ধ এখনো পাচ্ছি । আমার হাতের এই বইটিও অপবিত্র হয়ে গেছে।”

এই তো গত মাসে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেষনে ভাষণ দিতে যেয়ে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা ফার্নান্দেজ যুক্তরাস্ট্রের বিভিন্নমুখী সমালোচনা করে বলেছিলেন, “Where do ISIS (ISIL) and Al-Qaeda take their guns from? Yesterday’s freedom fighters are today’s terrorists,” She also said, US policies vis-a-vis terrorism.

মার্কিন সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ভুমিকায় ফিডেল ক্যাস্ট্রোর অবদানের কথা নতুন করে বলার মত কিছুই নেই। পিছিয়ে নেই বলিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেসও । তেমনি বিশ্বে ক্যারিশমাটিক লিডার হিসাবে পরিচিতি না পেলেও মার্কিন সমালোচনায় পিছিয়ে নেই নিকারাগুয়ার দানিয়েল ওর্তেগা ও ইকুয়েডরের রাফায়েল কোরেরাও। তবে পুর্বসুরির মত না হলেও পিছিয়ে নেই হুগো শ্যাভেজের উত্তরসুরী নিকোলাস মাদুরো। কয়েক মাস আগে নিকোলাস মাদুরো যুক্তরাস্ট্রের প্রেসিডেন্টকে ‘শয়তানের পীর’ হিসাবে অখ্যায়িত করেছিলেন !

যে ল্যাটিন আমেরিকা একসময় যুক্তরাস্ট্রের নিয়ন্ত্রনে ছিল ও শাসন করত যুক্তরাস্ট্রর বংশবদ দাসরা আজ সেই ল্যাটিন আমেরিকা শুধু যুক্তরাস্ট্র বিমুখ নয় বরং যুক্তরাস্ট্রের সমালোচনায় মুখোর! হুগো শ্যাভেজের নেতৃত্বে বলিভারিয়ান বিপ্লবের কারণে আজকে ল্যাটিন আমেরিকার সম্পদের নিয়ন্ত্রন ল্যাটিন আমেরিকার জনগণের হাতেই । তাই ল্যাটিন আমেরিকার জনগণ ও বামপন্থী সরকার প্রধান/প্রেসিডেন্টগণ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ঋণী হয়ে আছেন প্রয়াত হুগো শ্যাভেজের কাছে যিনি ছিলেন একবিংশ শতাব্দীর বলিভারিয়ান বিপ্লবের মহান নায়ক এবং যিনি শুধু নিজেরে দেশকেই পরিবর্তন করেণনি, পরিবর্তন করেছেন পুরো ল্যাটিন আমেরিকাকে।

মিজানুর রহমান মিলন।
২৮.১০.২০১৪।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.