নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগবাড়িতে সুস্বাগতম !!! যখন যা ঘটে, যা ভাবি তা নিয়ে লিখি। লেখার বিষয়বস্তু একান্তই আমার। তাই ব্লগ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার আগে একবার ভাবুন এই লেখা আপনার নিজের মস্তিস্কপ্রসূত নয়।

মিজানুর রহমান মিলন

জয় হোক মানবতার ও মুক্তিকামী মানষের যারা নব্য উপনিবেশবাদের বলির পাঠা হতে চায় না ।

মিজানুর রহমান মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সৌদির তেল অস্ত্র !

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৫৫

ইরাক, সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ, অস্থিরতা, জঙ্গীবাদ এবং রাশিয়া, ভেনেজুয়েলা ও ইরানের উপর অর্থনৈতিক অবরোধ ইত্যাদি কারণে তেলের দাম এই বছরে আকাশচুম্বী হওয়ার কথা ছিল। এতে নি:সন্দেহে ধ্বস নামত মার্কিন ও ইউরোপীয় অর্থনীতির । বিশ্লেষকদের অভিমত অনুসারে চলমান অস্থিতিশীলতার কারণে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১৫০ ডলার পর্যন্ত উঠতে পারতো। শোচনীয় হয়ে পড়তো পাশ্চাত্যের অর্থনীতি ও উন্নত বিশ্বে সৃষ্টি হতো প্রবল রাজনৈতিক চাপ। ফলে বিশ্বের অনেক রাজনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক সমস্যার দ্রুত সমাধান হত কিন্তু এটা জেনেই সৌদি সরকার বিশ্ববাজারে তেলের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে এবং এর ফলে তেলে দরে ধ্বস নেমেছে। তেলের বর্তমান দাম ব্যারেল প্রতি ৬০ ডলারেরও নিচে নেমে এসেছে যা সত্যিই বিষ্ময়কর !

তেলের মূল্য পানি দরে নিয়ে আসার অন্যতম ভূমিকায় নেমেছে আইএসআইএল। অবশ্য মূলত এই উদ্দেশ্যেই আইএসআইএলকে সৃষ্টি করেছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বিশ্ব ও সৌদি আরব এতে সন্দেহের অবকাশ নেই। গত বছরের মাঝামঝিতে আইএসআইএল এক প্রকার কোনো বাধা ছাড়াই দ্রুত ইরাক ও সিরিয়ার তেল ক্ষেত্রগুলো দখল করে নেয় আর সেই তেল কুপগুলো থেকে তেল উত্তোলন করে তুরস্ক ও ইসরায়েলের মাধ্যমে কালো বাজারে স্বল্পমূল্যে তেল বিক্রি করতে থাকে আইএসআইএল । অন্যদিকে ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেনে সৌদি পলিসি ব্যর্থ হওয়াতে ইরান ও রাশিয়ার উপর প্রচণ্ড ক্ষেপে যায় সৌদি আরব।তাই প্রধানত এই দেশ দুটির উপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি ও রাজনৈতিক প্রতিশোধ হিসাবে এবং মার্কিন ও পশ্চিমা বিশ্বের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে, ল্যাটিন আমেরিকায় ভেনেজুয়েলার প্রভাব ক্ষুণ্ন করে মার্কিন প্রভাব বাড়াতে সৌদি আরব স্বল্প মূল্যে তেলের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে বিশ্ব বাজারে ! সৌদি আরবেরও এতে বিপুল পরিমাণ অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে কিন্তু বিশ্ব তেল বাজারে সৌদি আরবের ভুমিকা বিশ্ব ব্যাংক অথবা ঠিক কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মত । সৌদি আরবের বিপুল পরিমান ক্ষতি হলেও রিজার্ভ ডলার দিয়ে সৌদি আরব আপাতত তা সামলে নিবে কিন্তু নিজের ক্ষতি করে হলেও শত্রুদের শায়েস্তা করতে চায় সৌদি আরব আর এক্ষেত্রে তার প্রধান ও একমাত্র অস্ত্র তেল ! এছাড়া তার সামনে অন্য কোনো পথ খোলা নেই। সৌদি আরবের ভুমিকা ঠিক এরকমই- গল্পে এক ব্যক্তি নিজের একটি চোখ অন্ধ করে হলেও সে তার প্রতিবেশীর দুটি চোখ অন্ধ করতে চায় !

ওপেক সৌদি আরবকে তেল উত্তোলন কমানোর বারবার অনুরোধ করা সত্তেও তা আমলে নিচ্ছে না সৌদি আরব কিন্তু কিন্তু সৌদি আরবের এই তেল অস্ত্র বেশিদিন কার্যকরী হবে না কারণ প্রধানত তিনটি-১. তেলের দাম ৫০ ডলারের নিচে নেমে আসলেও ইরান ও রাশিয়ার অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে এমনটি হওয়ার নয় বা তারা সৌদির কাছে স্যারেন্ডার করবে এমনটি হওয়ারও সম্ভবনা নেই অর্থাৎ সৌদি যা আশা করছে তা হওয়ার কোনো সম্ভবনা নেই ২. সৌদি আরবের এতে নিজেরও বিপুল পরিমান ক্ষতি হচ্ছে। এই ক্ষতি সৌদি কতদিন বা কত মাস সামাল দিতে পারবে তা দেখার বিষয় কারণ সৌদির অর্থনীতি শতভাগ তেল নির্ভর যা সৌদির শত্রু ইরান ও রাশিয়ার অর্থনীতি সৌদির মত ওরকম তেল নির্ভর নয় ।৩. অন্যান্য তেল উৎপাদক দেশগুলিও তো বিপুল পরিমান ক্ষতির শিকার হচ্ছে। তারা কতদিন মার্কিন ও সৌদি চাপ মুখ বুঝে সহ্য করে তা অবশ্যই পর্যবেক্ষণের বিষয়। আগামী কিছুদিনের মধ্যে ওপেক বৈঠকে বসতে যাচ্ছে। নিশ্চয় সৌদি আরব তার পাশে অন্য কোনো তেল উৎপাদক দেশ পাওয়ার সম্ভবনা নেই তবে এটাও সত্যি সৌদিকে বাদ দিয়ে ওপেক তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম নয়।

যাইহোক, সৌদি আরবের এ ভূমিকায় তেল উৎপাদক দেশগুলি বিপুল ক্ষতির সম্মুখিন হলেও তেল আমদানিকারক দেশগুলির সরকার আছে ফুরফুরে মেজাজে ! তবে তেলের দাম এত কমার পরেও আমাদের মত তেল আমদানিকারক দেশগুলির জনগণের জীবন যাত্রার মান যে বেড়েছে এমনটি নয়। লাভ হল শাসক গোষ্ঠীর, লাভ হল পুজিবাদীদের, বেনিয়াদের লাভ হল আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্বের অর্থনীতির। পশ্চিমা বিশ্বের অর্থনীতিকে আর একবার ধ্বসের কিনারা থেকে থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসল সৌদি আরব, কিন্তু সৌদি আরব কি এর সুফল ঘরে তুলতে পারবে ? মোটেই না । মাকিন ও পশ্চিমাদের সমর্থনে সৌদি রাজতন্ত্রের গদি রক্ষা করা ছাড়া সৌদি আরবের আলাদা কোনো সুফল নেই। তবে তেলের দাম আরো লাগামহীনভাবে ক্রমান্বয়ে কমতে থাকলে সৌদি রাজতন্ত্রের গদিও উল্টে যাবে কারণ সৌদি রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে জনগণের ধুমায়িত চাপ প্রশমন করতে জনগণকে নিয়মিত ঘুষ দিতে সৌদি আরবকে ব্যয় করতে হয় বিপুল পরিমান অর্থ !

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:০৬

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক বলেছেন: এই সৌদি আরব তো দেখা যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইসরাইলের চেয়েও মুসলমানদের জন্য বেশি ক্ষতিকর!!! X(( বিশ্ব মানবতার কথা না হয় বাদই দিলাম আপাতত...

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:০৫

মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: চরম সত্য কথা বলেছেন ভাই । ধন্যবাদ।

২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৪৮

সাদাকালোরঙিন বলেছেন: একদম ঠিক কথা। সৌদি আরব একরকম যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষিতা রাষ্ট্র। মুসলমানদের ঐক্যের সবচেয়ে বড় অন্তরায় এই সৌদি আরব।

৩| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:০৩

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: তেল নিয়ে সৌদির এই তেলবাজি বেশী দিন ধরে রাখতে পারবে না। করাজতন্ত্র টিকিয়ে রাখার যে কৌশল তারা অবলম্বন করেছে, সেটাই একদিন তাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারে। খাল কেটে কুমির আনছে সৌদি। নিজের পায়ে যেন কুড়াল মারছে। মধ্য প্রাচ্যে মার্কিনীদের যে রাজত্ব, তা মূলত সৌদি এবং কুয়েতের কারণে। ইসলামী দেশগুলোতে দ্বন্দ্ব, গৃহযুদ্ধ যা লেগেছে আছে এগুলোর পিছনে সৌদি এবং কুয়েত প্রতক্ষ্যভাবে না হলেও পরোক্ষভাবে দায়ী। তাদের কারণেই ওআইসি কার্যত অকেজো হয়ে রয়েছে। যার কারণে সেখানে মার্কিন আধিপত্য ক্রমেই বেড়ে চলেছে।

৪| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:২০

আমি অথবা অন্য কেউ বলেছেন: ++

৫| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:১৭

মহান অতন্দ্র বলেছেন: চমৎকার লেখা ।

৬| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:৪১

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: বাস্তবতার জন্য ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। অন্ধ হলেই প্রলয় বন্ধ হয় না।।
লেখাটি ভাল লাগলো।।

৭| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৭

যুবায়ের বলেছেন: চমৎকার একটি লেখা।
অনেক কিছু জানলাম।

৮| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৫১

নিয়ামুল ইসলাম বলেছেন: পুরো মনের কথাই বললেন ভাই। ধিক এই সব ইহুদিদের দালাল বাদশাদের প্রতি। X(( X((

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.