নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগবাড়িতে সুস্বাগতম !!! যখন যা ঘটে, যা ভাবি তা নিয়ে লিখি। লেখার বিষয়বস্তু একান্তই আমার। তাই ব্লগ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার আগে একবার ভাবুন এই লেখা আপনার নিজের মস্তিস্কপ্রসূত নয়।

মিজানুর রহমান মিলন

জয় হোক মানবতার ও মুক্তিকামী মানষের যারা নব্য উপনিবেশবাদের বলির পাঠা হতে চায় না ।

মিজানুর রহমান মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাকিস্থান নয় দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতই এখন যুক্তরাস্ট্রের প্রধানতম মিত্র !

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৩৯

প্রবাদ আছে অসির চেয়ে মসি বড়, কিন্তু বাস্তবতা বলে অন্য কথা, অর্থ ও অস্ত্রের চেয়ে শক্তিশালী আর কী হতে পারে? যার হাতে অস্ত্র ও অর্থ সে-ই ক্ষমতাবান। অন্তত আঞ্চলিক রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি উভয়ের ক্ষেত্রে একথাটি ধ্রুব সত্য।গুজরাটে সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ডের জন্য যে নরেন্দ্র মোদিকে যুক্তরাস্ট্র তার দেশের ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, যে যুক্তরাস্ট্র নরেন্দ্র মোদির জন্য যুক্তরাস্ট্র প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল সেই নরেন্দ্র মোদি নাকি এখন যুক্তরাস্ট্র ও বারাক ওবামার বন্ধু ! নরেন্দ্র মোদি নিজেই বলেছেন, বারাক ওবামা আমার বন্ধু । আমরা টেলিফোনের কথা বলি, হাসি ঠাট্টা করি ও কৌতুক করি ! তাই তো জিগরি দোস্তের আগমনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমান বন্দরে নিজেই উপস্থিত হলেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে অভ্যর্থনা জানাতে ! বিমান বন্দরেই দিলেন লাল গালিচা সম্বর্ধনা ! শুধু তাই নয় বন্ধুত্বের প্রগাড়তা ও গাড়তা বোঝাতে রাস্ট্রীয় প্রোটোকল ভঙ্গ করে বারাক ওবামাকে জড়িয়েও ধরলেন তিনি!






স্নায়ু যুদ্ধ চলাকালীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু ভারতকে পরিচালিত করেছিলেন বিশ্ব দুই পরাশক্তি যুক্তরাস্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে যদিও সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে ভারতের সম্পর্ক আগাগোড়াই ঘনিষ্ট ছিল কিন্তু সে সম্পর্ক ভারত রক্ষা করেছিল নিজস্ব স্বাধীনচেতা নীতি বজায় রেখে। এ কারণেই তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিকে দুই পরাশক্তির ছোবল থেকে রক্ষা করতে তৎকালীন ভারত, মিশর, যুগোশ্লাভিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ এরকম কয়েকটি দেশের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছিল ন্যাম, কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় স্নায়ু যুদ্ধের অবসানের পর অর্থাৎ একক পরাশক্তি হিসাবে যুক্তরাস্ট্রের আবির্ভাবের পর ন্যামের কার্যকারিতা আর আগের মত নেই কারণ ন্যামে ভারতের মত শক্তিশালী দেশগুলি ন্যাম নিয়ে তেমন উৎসাহ দেখায়নি লোক দেখানো ন্যামের সাধারণ সম্মেলনে অংশগ্রহন ছাড়া। তারপরেও মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ থেকে ভারত অনেকটা নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখেছিল যা ছিল বিশ্ব রাজনীতির জন্য ইতিবাচক, কিন্তু ভারতের পরমানু অভিলাশ,জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী আসন ও এশিয়ার নেতৃত্ব অন্তত এশিয়া না হলেও আপাতত দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত চায় তার নিরুঙ্কুশ আধিপত্য বিস্তার করতে আর এজন্য ভারতের প্রয়োজন যুক্তরাস্ট্রের কুটনৈতিক সমর্থন তেমনি প্রয়োজন সামরিক সহযোগিতা। এজন্যই শুধু যুক্তরাস্ট্র নয় বর্ণবাদী রাস্ট্র ইসরায়েলের সাথেও ভারতের এখন দহরম-মহরম ! দক্ষিণ এশিয়ায় নিরুঙ্কুশ আধিপত্য বিস্তার করতে ভারত অনেকটাই সফল বলা যায় এক্ষেত্রে চীনকে ছাড়িয়ে গেছে ভারত। শ্রীলঙ্কার সাম্প্রতিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে চীনপন্থী কিন্তু বিপুল জনপ্রিয় মাহিন্দ রাজাপাকসেকে হঠিয়ে তারই দলের অখ্যাত মাইথ্রিপালা সিরিসেনাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতিয়ে আনা ছিল ভারতের একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য! গত বছরের জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল ঘটতে না দেওয়াও ছিল ভারতের আর একটি অন্যতম সাফল্য! দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য রাস্ট্রের কথা নাই বা বললাম। অন্যদিকে উদীয়মান একক পরাশক্তি চীনকে ঠেকানো, এশিয়ায় বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাস্ট্র তার প্রভাব ধরে রাখতে ও বিস্তার ঘটাতে এবং ভারতের বিশাল বাজার করায়ত্ব করতেই যুক্তরাস্ট্রকেও ভারতের বিশেষভাবে প্রয়োজন। এক্ষেত্রে পাকিস্থান কখনই ভারতের বিকল্প হতে পারে না- না জনসংখ্যা, না মেধা, না অর্থনীতি, না কুটনীতি না বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে। যুক্তরাস্ট্র এই সত্যটা অনেক আগেই উপলব্ধি করতে পেরেছে বলেই যুক্তরাস্ট্র চায় ভারত তার হয়ে আপাতত দক্ষিণ এশিয়ায় দণ্ড মুণ্ড কর্তা হোক-ভারতেরও অভিলাশ তাই।

কিন্তু ভারতের যুক্তরাস্ট্রমুখী এ ইউটার্ন ভারতের চিরাচরিত সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী দলগুলি নাখোশ ! তারা চায় না ভারত তার ঐতিহ্যবাহী জোট নিরপেক্ষ নীতি থেকে বের হয়ে এসে ইউরোপের দেশগুলির মত যুক্তরাস্ট্রের তল্পিবাহক হয়ে যাক। আসলেই ভারতের বামপন্থী দলগুলির এ আশংকা অমূলক নয়। যুক্তরাস্ট্রের সাথে ভারতের এ অতিরিক্ত মাখামাখি মাখামাখি নি:সন্দেহে দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্য সুখবর নয়।যদিও ভারত আপাতত চীনের সাথে দ্বন্দ্বে যেতে নারাজ কিন্তু সামনের অনাগত দিনগুলিতে চীনের সাথে ভারতের স্নায়ু যুদ্ধ যে সুপ্ত অবস্থায় থাকবে তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।এক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির জন্য ভারসাম্যমূলক পররাস্ট্রনীতি অনুসরণ করা দূরহ হয়ে দাড়াবে। দেশগুলিতে বাড়বে অস্থিতিশীলতা যার শেষ পরিণতিতে ভারতের জন্যই বুমেরাং হতে পারে!

স্নায়ু যুদ্ধকালীন দেশগুলির মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারিত হত অর্থনীতির পাশাপাশি আইডিওলজিক্যাল দিক দিয়েও কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে আইডিওলজি নয় বরং শুধু অর্থনৈতিক খাতকেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। দু’একটি ব্যতিক্রম ঘটনা ছাড়া কোনো দেশেই আর যুদ্ধে জড়াতে চায় না । আফগানিস্থান ও ইরাক যুদ্ধের পর স্বয়ং আমেরিকাও আর কোনো যুদ্ধে জড়াতে ইচ্ছুক নয় । তবে সরাসরি কোনো যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার কোনো সম্ভবনা না থাকলেও নিজ নিজ প্রধান্য ও প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা পূর্ণ মাত্রায় বিদ্যমান থাকবে। সেক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ায় চীন ভারতের ভূ-রাজনৈতিকগত দ্বন্দ্ব থাকবে তবে তা অভিন্ন স্বার্থের ক্ষেত্রে আবার অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিও পোষণ করবে। এক্ষেত্রে যুক্তরাস্ট্র যা চাইবে তা হল ভারতকে দিয়ে তার নিজ প্রভাব ও প্রাধান্য বিস্তার ও বজায় রাখতে যা চীনের দ্বারা হবে না । তবে ভারতও নিশ্চয় নিজ স্বার্থকে সর্বাগ্রে অগ্রাধিকার দিবে। স্বার্থ অভিন্ন হলেই তো তারপরেই না বন্ধুত্ব হয়। তবে এটা অনস্বীকার্য় যে দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাস্ট্রের প্রত্যক্ষ উপস্থিতি চীন ও ভারত কেউ মেনে নিবে না ।

যাইহোক, শুরু করেছিলাম মসির চেয়ে অসি বড় দিয়ে। সাম্প্রদায়িক ও সন্ত্রাসী নরেন্দ্র মোদী এখন যুক্তরাস্ট্র ‍ও বারাক ওবামার বন্ধু নরেন্দ মোদি কারণ আর কিছুই নয় কারণ তিনি এখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী! ১৯৪৭ এ দেশ বিভাগের পর যুক্তরাস্ট্র মিত্র হিসাবে বেচে নিয়েছিল পাকিস্থানকে এজন্যই যুক্তরাস্ট্র আমাদের স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছিল কিন্তু সেই পাকিস্থান যুক্তরাস্ট্রের এখন আর মিত্র নয় বরং যুক্তরাস্ট্রের টয়লেট পেপার ও যুক্তরাস্ট্রের সাহায্য নির্ভরশীল একটি রাস্ট্র ! পাকিস্থান দ্বারা দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাস্ট্রের কোনো স্বার্থ উদ্ধার হবে তা যুক্তরাস্ট্রের কাছে এখন অকল্পনীয় তাই পাকিস্থানের শত প্রতিবাদ সত্তেও যুক্তরাস্ট্র ভারতের সাথে পরমানু চুক্তি স্থগিত করেনি যা শুরু হয়েছিল গত বাজপেয়ী ও বুশ এর আমলে আর এখণ তা পূর্ণতা পেল ওবামা ও নরেন্দ্র মোদির আমলে ।সামনের দিনগুলিতে ভারতকে সামনে রেখেই দক্ষিন এশিয়ার জন্য পররাস্ট্রনীতি নির্ধারণ করবে যুক্তরাস্ট্র । পাকিস্থান নয় দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতই এখন যুক্তরাস্ট্রের প্রধানতম মিত্র !

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:০৫

আজমান আন্দালিব বলেছেন: ভালো বিশ্লেষণ।

২| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:১৬

ইসপাত কঠিন বলেছেন: আর কিছুদিন/বছর/যুগ পরে ভারতও আজকের পাকিস্তানের মত বুঝবে আংকেল স্যামের বন্ধু হওয়ার ঠেলা।

৩| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৫৯

নিয়ামুল ইসলাম বলেছেন: আমেরিকা যার বন্ধু তার কোন শত্রুর দরকার হয়না, পাকিস্থান জলন্ত উধাহরন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.