নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগবাড়িতে সুস্বাগতম !!! যখন যা ঘটে, যা ভাবি তা নিয়ে লিখি। লেখার বিষয়বস্তু একান্তই আমার। তাই ব্লগ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার আগে একবার ভাবুন এই লেখা আপনার নিজের মস্তিস্কপ্রসূত নয়।

মিজানুর রহমান মিলন

জয় হোক মানবতার ও মুক্তিকামী মানষের যারা নব্য উপনিবেশবাদের বলির পাঠা হতে চায় না ।

মিজানুর রহমান মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

কিউবায় মার্কিন নীতির পরাজয় এবং ওবামার লেগাসি

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:১২

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামার দীর্ঘ প্রায় আট বছরের শাসনামলে ( যদিও এখনও এক বছরেরও কম সময় বাকি) পররাস্ট্রনীতিতে দুটি বড় লেগাসি হল ইরানের সাথে বিশ্ব আলোচিত-সমালোচিত পরমানু চুক্তি করা এবং অন্যটি হল অর্ধ শতাব্দিরও বেশি সময় ধরে বিচ্ছিন্নতা ও বৈরিতার অবসান ঘটিয়ে কিউবার সাথে পুনরায় কুটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন!

১৯৫৯ সালে কিউবায় কমিউনিস্ট বিপ্লবের পর প্রথম মার্কিন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বারাক ওবামা কিউবা সফর করেন প্রায় দুই সপ্তাহ আগে। কিউবার সাথে সম্পর্ক উষ্ণ করার ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ওবামা কিন্তু কিউবার উপরে আমেরিকার আরোপিত কঠোর নিষেধাজ্ঞা অবসানের কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি ওবামা । কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিডেল ক্যাস্ট্রো এখনও ক্ষমতাসীন থাকলে আমেরিকার সাথে কিউবার কুটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন হত কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায় যদিও ফিডেল ক্যাস্ট্রো দৃশ্যত ক্ষমতাহীন হলেও পর্দার আড়ালে এখনও ক্ষমতাবান রয়ে গেছেন।ওবামা কিউবায় রাস্ট্রীয় সফর করলেও বিপ্লবী নেতা ফিডেল ক্যাস্ট্রো ওবামার সাথে সাক্ষাৎ করেননি এবং পরবর্তীতে এক নিবন্ধে কিউবায় যুক্তরাস্ট্রের দীর্ঘ আগ্রাসনের ইতিহাস তুলে ধরে যুক্তরাস্ট্রের নীতির সমালোচনা করে বলেছেন, কিউবার জন্য যুক্তরাস্ট্রের উপহারের কোনো প্রয়োজন নেই !

কিউবাকে বাগে আনার চেষ্টা যুক্তরাস্ট্র সেই ৫৬ বছর ধরেই করছে। কিউবা-ই হল ল্যাটিন আমেরিকায় মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রামের সুতিকাগার এবং শক্ত ঘাটি। কিউবার হাত ধরেই ভেনেজুয়েলা, বলিভিয়া, নিকারাগুয়া, ইকুয়েডর, আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলে বামপন্থীদের উত্থান ঘটে ! তাই কিউবার বর্তমান শাসন ব্যবস্থা বহাল রেখে বেয়াড়া ও অবাধ্য রাস্ট্র কিউবার সাথে যুক্তরাস্ট্রের দীর্ঘ ৫৬ বছরের স্নায়ু যুদ্ধের অবসান বারাক ওবামার জন্য লেগাসি হলেও যুক্তরাস্ট্রের জন্য নিশ্চিত পরাজয় ! যুক্তরাস্ট্র দীর্ঘ এই ৫৬ বছরে কিউবাকে নাস্তানুবাদ করতে, এক ঘরে করতে ও বিপ্লবী শাসনযন্ত্র উৎখাত করতে হেন কাজ নেই যা করেনি ! দীর্ঘ ৫৬ বছর ধরে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল কিউবার জনগণের উপর ! কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিডেল ক্যাস্ট্রোকে ৬০০ এরও অধিক বার হত্যা চেষ্টা করেছে! কিউবার বিপ্লব ও শাসনযন্ত্রকে যুক্তরাস্ট্রের স্বীকৃতি শুধু কিউবা নয় পুরো ল্যাটিন আমেরিকাসহ সারা বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ও নিপীড়িত জনতার বিজয় ! এই স্বীকৃতির মাধ্যমে যুক্তরা্স্ট্র যে ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছে ও কিউবার বিপ্লবী জনতার কাছে মার্কিনিদের পরাজয় এবং অবশেষে দেরীতে হলেও সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকার নত শিকার তা সারা বিশ্বের কাছে উন্মোচিত হয়েছে ! উন্মোচিত হয়েছে যুক্তরাস্ট্র এখন আর বাঘ নয় তবে কাগুজে বাঘ! আর মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের অন্যায় আগ্রাসন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে কিউবা সারা বিশ্বের জনগণের কাছে একটি অনুসরণীয় মডেল হয়ে থাকল।


কিন্তু কিউবার মডেল মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী রাস্ট্রগুলির জন্য অনুসরণীয় মডেল হলেও একই সঙ্গে আমাদের দুশ্চিন্তার বিষয় যে, যুক্তরাস্ট্র কৌশল পরিবর্তন করলেও তার নীতির কোনো পরিবর্তন করে না।প্রশ্ন থেকে যায়- যুক্তরাস্ট্র তার ব্যর্থ কৌশল পরিবর্তন করে দৃশ্যত নরম ও মডারেট পন্থা অনুসরণ করে কিউবায় সরাসরি উপস্থিত হয়ে কিউবার বিপ্লবী সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা অব্যহত রাখবে কি না এবং একই সঙ্গে প্রশ্ন, উপস্থিত যুক্তরাস্ট্রকে কিউবার সরকার কতটুকু প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবে ? সেটা সময় বলে দিবে কিন্তু আমরা লিবিয়ার ইতিহাস ভুলে যায়নি। গাদ্দাফি তাঁর দীর্ঘদিনের লালিত মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী অবস্থান ২০০৭ সালে পরিত্যাগের ঘোষণা দিয়ে যেই না যুক্তরাস্ট্র ও ব্রিটেনের সাথে পুনরায় সম্পর্ক স্থাপন করে সেই একই সাথে যুক্তরাস্ট্র ও ব্রিটেন গাদ্দাফি উৎখাতের ছক নবায়ন করে যার পরিণতি পায় ২০১১ সালে গাদ্দাফিকে হত্যার মাধ্যমে! অন্যদিকে ওবামার কিউবার সফরের স্বল্প সময় আগে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো অভিযোগ করেছিলেন যুক্তরাস্ট্র ভেনেজুয়েলায় সহিংসতা উস্কে দিয়ে সরকার পরিবর্তনের চেষ্টা করছে। কিউবার শাসক ও জনগণ নিশ্চয় যুক্তরাস্ট্রের আচরণ ও আগ্রাসনকে ভুলে যায়নি। ভুলে যায়নি কিউবায় ওবামার সফরের পর বিপ্লবী নেতা ফিডেলের কন্ঠে তারই প্রতিধ্বনি শুনতে পাই।কিউবার বিপ্লব দীর্ঘজীবি হোক এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক এই হোক আমাদের প্রত্যাশা ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:২৪

সোজোন বাদিয়া বলেছেন: মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী নীতি পরিবর্তিত হয়েছে এমন মনে করার নিশ্চয়ই কোনো কারন ঘটেনি। কিউবার ব্যাপারে কৌশল বদলেছে মাত্র। তবে কিউবার রাষ্ট্র ব্যবস্থা নিয়েও তো আশাবাদের কিছু দেখি না। একনায়কত্বে এবং একদলীয় শাসনে জনগণের মুক্তি আসতে পারে না - এই সত্যটা কি প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বর্তমান চীন পর্যন্ত এতগুলো তথাকথিত বিপ্লবী দেশ দেখেও কি বোঝা গেল না?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.