নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগবাড়িতে সুস্বাগতম !!! যখন যা ঘটে, যা ভাবি তা নিয়ে লিখি। লেখার বিষয়বস্তু একান্তই আমার। তাই ব্লগ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার আগে একবার ভাবুন এই লেখা আপনার নিজের মস্তিস্কপ্রসূত নয়।

মিজানুর রহমান মিলন

জয় হোক মানবতার ও মুক্তিকামী মানষের যারা নব্য উপনিবেশবাদের বলির পাঠা হতে চায় না ।

মিজানুর রহমান মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

পশ্চিমারা কি আসলেই বাক স্বাধীনতায় বিশ্বাসী?

০২ রা নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫৯

শার্লি হেবদোর কার্যালয়ে হামলা বা ফরাসি শিক্ষককে হত্যা। এসব ব্যক্তিগত অপরাধের মধ্যে পড়ে। তাই রাষ্ট্রের দায়িত্ব সেই ব্যক্তিদেরকে বিচারের আওতায় আনা। রাষ্ট্রের কাজ নয় সেটাকে উপলক্ষ্য করে গোটা কমিউনিটিকে দোষারোপ করা বা সহিংসতা উস্কে দেওয়া। এটাও বর্ণবাদ। ইমানুয়েল ম্যাক্রো যদি একজন সাধারিণ ব্যক্তি হতেন তার বক্তব্যে এত হৈ চৈ বা প্রতিবাদ বা প্রতিরোধের কিছু ছিল না। কিন্তু তিনি একটা দেশের প্রেসিডেন্ট। একটা দেশের প্রেসিডেন্ট হয়ে তার কাজ নয় ধর্ম বা জাতি বিদ্বেষ উস্কে দেওয়া। রাষ্ট্রীয়ভাবে নবী মোহাম্মদের (সা) ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া বা সমর্থন করা বা পুরো একটা কমিউনিটির বিরুদ্ধে বিষোদগার উগড়ানো নিতান্তই গর্হিত এবং নিন্দনীয় কাজ। এটা স্রেফ জাতি বা ধর্ম বিদ্বেষ।এটাকে বাক স্বাধীনতা বলা যায় না।

পৃথিবীতে মুসলমানদের সংখ্যা দলমত নির্বিশেষে ১৪০/১৫০ কোটি হবে। এই ১৪০/১৫০ কোটি মানুষই কি উগ্র? এই ১৪০/১৫০ কোটি মানুষই কি সহিংসতার জন্য দায়ী? যদি তাই হত তাহলে পৃথিবীর বাদবাকি মানুষ কিভাবে সুস্থভাবে জীবনযাপন করছে? কিছু মানুষ উগ্র সন্দেহ নাই। বিজিপি এবং শিব সেনার উগ্রতার জন্য কি পুরো হিন্দু কমিউনিটিকে দায়ী করা যায়? ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তিতে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ইসরায়েলিদের বর্বরতার জন্য কি ইহুদি কমিউনিটিকে দোষারোপ করা যায়? ফ্রান্স তার কলোনিগুলোতে নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে; শোষণ করেছে এবং নব্য উপনিবেশবাদের বেড়াজালে সাবেক কলোনিগুলোকে এখনও শোষণ করে যাচ্ছে ফ্রান্স। এইজন্য কি ফ্রান্সের সকল নাগরিককে দোষারোপ করা যায়? নিশ্চিৎভাবেই যায় না।

এখানে বলে রাখা ভাল ইসলামের নামে যে উগ্রতা ও সহিংসতা চলছে তার জন্য পুরো মুসলমান সমাজ নয় বরং পেট্রোডলার প্রভাবিত একটা অংশ এইজন্য দায়ী। এই নিয়ে অনেক আগেই লিখেছিলাম। সেই র‍্যাডিক্যাল ইসলামের জন্মদাতা ও পৃষ্ঠপোষক কিন্তু খোদ পশ্চিমারাই। আল কায়েদা, আইএসসহ সমস্ত জঙ্গীদলের পৃষ্ঠপোষক কারা ছিল এই নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নাই। আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া,লিবিয়াসহ বিভিন্ন মুসলমান প্রদান দেশগুলোতে তো আগে কোন জঙ্গী দল বা উপদল ছিল না। এরা কোথা থেকে আসলো, কিভাবে উৎপত্তি হল এবং কেন এদের সৃষ্টি হল এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজা জরুরী। এক সাক্ষাৎকারে এর আংশিক উত্তর দিয়েছিলেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। তিনি বলেছেন সমাজতন্ত্রকে উৎখাত করতে র‍্যাডিক্যাল ইসলামের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে এবং ছড়িয়ে দিয়েছে পশ্চিমারাই। অন্যের ঘরে আগুন লাগিয়ে ভাবছিলেন সেই আগুন আপনাদের স্পর্শ করবে না। তা কি করে হয়? কিন্তু সেটাকে রোধ করার পরিবর্তে সেই ঘৃণা ও বিদ্বেষ উস্কে দিয়ে সেই আগুনে ঘি ঢালছেন। আমরা যা কল্পনা করিনি এখন তাই হচ্ছে। মানুষকে পুড়ে মারার দৃশ্যও এখন দেখতে হচ্ছে।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট কি আসলেই বাক স্বাধীনতায় বিশ্বাসী? যদি তাই হয় তাহলে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান তাকে মানসিক চিকিৎসা নিতে বলায় তিনি তুর্কি রাষ্ট্রদুতকে ডেকে প্রতিবাদ করলেন কেন? এরদোগানের কি বাক স্বাধীনতা নেই?

পশ্চিমা বিশ্ব কি আসলেই বাক স্বাধীনতায় বিশ্বাসী?

'ফ্রিডম অফ স্পিচ' পশ্চিমাদের একটা বহুল প্রচলিত স্লোগান। এই স্লোগানটা শুধুমাত্র তারা ব্যবহার করে তাদের সাম্রাজ্যবাদ নীতির বিরোধী দেশগুলোতে। আর বাদবাকি দেশগুলোতে কি নিষ্ঠুর রাজতন্ত্র কি নিষ্ঠুর স্বৈরতন্ত্র এই নিয়ে তাদের কোন বালাই নেই। এসব দেশগুলোতে রাষ্ট্রীয় বর্বর নীতির প্রতিবাদ করায় কাউকে গলা কেটে হত্যা করলো বা কাউকে জীবিত অবস্থায় করাত দিয়ে কেটে টুকরো টুকরো করলো তথাকথিত বাক স্বাধীনতায় বিশ্বাসী সেই পশ্চিমা রাজনীতিকদের এই নিয়ে কোন মাথা ব্যথা নেই।

পশ্চিমাদের পক্ষে গেলে সেটা হয় 'ফ্রিডম অফ স্পিচ' আর বিপক্ষে গেলে? আপনাদের কি জানা আছে পশ্চিমা বিশ্বে হলোকস্ট নিয়ে প্রশ্ন তোলা ট্যাবু? হলোকস্টের সত্যাসত্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এরকম অনেক লেখক, সাহিত্যিককে তারা জেলে পুড়েছেন, জরিমানা করেছেন। কেন? ইসরায়েলের বর্ণবাদী নীতির সমালোচনা করলে পশ্চিমা মিডিয়া তাকে এন্টি সেমেটিক হিসাবে তুলে ধরে। রে রে করে তেড়ে আসে।তার বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালায়। কেন?


ফেসবুক বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কি যা খুশি তাই লেখা যায়? তাদের কিছু নিয়ম নীতি আছে সেগুলো অনুসরণ করেই পোস্ট দিতে হয়। তাদের নীতির সাথে সাংঘর্ষিক হলে তারা সতর্কবার্তা পাঠায়, পোস্ট ডিলিট করে দেয় এবং প্রয়োজনে আইডিও ব্লক বা ডিলিট করে দেয়। কেন?

শুধু তাই তারাও রাজতৈনিক মত প্রকাশ করার কারণে অনেকের পোস্ট বা আইডি ডিলিট করে দিয়েছে, ব্লক করে দিয়েছে এরকম নজিরও অনেক আছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করে টুইট করায় ইন্সটাগ্রাম ইরানের সর্বোচ্চ নেতার আইডি ব্লক করে দিয়েছে। ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার প্রায়শই রাশিয়া, ইরান, সিরিয়াসহ বিভিন্ন মার্কিন এবং পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর আইডি ব্লক বা ডিলিট করে দেয়।

আসলে মত প্রকাশের স্বাধীনতা মানে অন্যকে অপমান বা অবমাননা করা নয়। সুস্থ বিতর্ক অবশ্যই গ্রহনযোগ্য। যার কোন ছবিই নাই তাঁর আবার ব্যঙ্গচিত্র কিসের? এভাবে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ নিচু মানসিকতার কাজ। কিন্তু যারা এটা করে বা করেছে তাদের আলাদা অসৎ উদ্দেশ্য আছে। সভ্যতার সংঘাত সৃষ্টির পায়তারা। কারণ তারা মুসলমানদের অনুভূতি সম্পর্কে সম্যক অবগত। আর সভ্যতার সংঘাত যখন রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তি উস্কে দেন এবং সমর্থন করেন তখন নিশ্চিৎভাবেই সেটা রেসিজম। ধর্মের নামে উগ্রতা ও সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের যেমন প্রতিরোধ করতে হবে তেমনি এইসব রেসিস্টদেরও প্রতিরোধ করতে হবে। দুইটাই পরিত্যাজ্য। তবেই মঙ্গল।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩১

নিরীক্ষক৩২৭ বলেছেন: ধোঁয়া তুলসী পাতা তো কেউই না। আমাদের দেশে ওয়াজে হুজুররা হিন্দুদের নিয়ে যা বলে, তার প্রতিবাদে হিন্দুরা যদি র‍্যান্ডম মুসলিমদের একেক জায়গায় হত্যা করত তাহলে হিন্দু কমিউনিটির অবস্থা চিন্তা করতে পারতেছেন?
ওদের চিন্তা-বুদ্ধি অন্তত আমাদের থেকে উন্নত বলেই মুসলিমরা এখন পর্যন্ত ওইখানে থাকতে পারতেছে। আমাদের মত হলে স্লোগান দিতে দিতে বাড়িঘর পুড়ায় দিত মনে হয়।

২| ০২ রা নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: ভণ্ড যতো ভড়ং করে দেখিয়ে বেড়ায় জায়নামায,
চায় না খোদায়-লোকের তারা প্রশংসা চায় ধাপ্পাবাজ!
দিব্যি আছে মুখোশ পরে সাধু-ফকির-ধার্মিকের,
ভিতরে সব কাফের ওরা, বাইরে মুসলমানের সাজ।

-----কাজী নজরুল ইসলাম।

৩| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৪৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



বাক স্বাধীনতা শুধু পশ্চিমে আছে, আর কোথায়ও নেই।

৪| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৫৮

নেওয়াজ আলি বলেছেন: ঠিক বলেছেন মত প্রকাশের স্বাধীনতা মানে অন্যকে অপমান করা নয়

৫| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:৫০

রাশিয়া বলেছেন: @নিরীক্ষক৩২৭ , এর আগে ব্লগার রাজীব নুর এবং এ আর কে এই বক্তব্যের স্বপক্ষে অন্তত তিনটি ইউটিউব ভিডিওর লিঙ্ক দিতে বলেছিলাম, তারা দুজনেই ব্যর্থ হয়েছেন এবং পরেরজন আমাকে অকারণ ত্যানাবাজির অভিযোগ করেছেন। এবার আপনার পালা। আমাদের দেশে ওয়াজে হুজুররা হিন্দুদের নিয়ে যা বলে, তার অন্তত তিনটা ইউটউব ভিডিওর লিঙ্ক দেখান। যদি না পারেন, তাহলে প্রশ্ন থাকবে, আমাদের দেশে ওয়াজে হুজুরেরা হিন্দু ধর্মাবলম্বী বা তাদের দেবতাদের গালাগালি করে - এই গুজব আপনারা কোত্থেকে শুনেন? আমাকে একটু অবহিত করবেন কি?

৬| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:১৪

নিরীক্ষক৩২৭ বলেছেন: @রাশিয়া
আপনার এই ব্যাপারে অভিজ্ঞতা যদি ইন্টারনেটেই সীমাবদ্ধ থাকে তাহলে আর কিছু বলার নাই, নিজে রেগুলার এলাকার সব ওয়াজ অ্যাটেন্ড করেন?

৭| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: রাশিয়া আপনি ভালো করেই জানেন, হুজুরেরা ওয়াজে কি কি বলে। তাদের জ্ঞান কতটুকু তাও আপনি ভালৈ জানেন। অযথা কেন প্যাচাচ্ছেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.