নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগবাড়িতে সুস্বাগতম !!! যখন যা ঘটে, যা ভাবি তা নিয়ে লিখি। লেখার বিষয়বস্তু একান্তই আমার। তাই ব্লগ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার আগে একবার ভাবুন এই লেখা আপনার নিজের মস্তিস্কপ্রসূত নয়।

মিজানুর রহমান মিলন

জয় হোক মানবতার ও মুক্তিকামী মানষের যারা নব্য উপনিবেশবাদের বলির পাঠা হতে চায় না ।

মিজানুর রহমান মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

মার্কিন রেজিম ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে পর্যালোচনা

১১ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৪৯

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট ও রিপাবলিক্যানের বাইরে অন্য কোন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বরাবরই উপেক্ষিত থাকে। বলুন তো ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জো বাইডেন ছাড়া আর কোন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর নাম শুনেছিলেন কি? নাকি কোন মিডিয়া কখনো তাদের নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনা করেছে? এই উত্তরের মাঝেই নিহিত আছে ট্রাম্পের পরিবর্তে জো বাইডেন নির্বাচিত হলে মার্কিন পলিসির কতটুকু পরিবর্তন হবে বা হবে না।

মূলত মার্কিন রেজিম ডেমোক্রেট ও রিপাবলিক্যানের বাইরে আর কোন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে জয়ী দেখতে চায় না। মার্কিন রেজিম চায় এই দুজনের মধ্য থেকে একজনকে বেছে নাও। অন্যদের কেউ কোন খবর রাখে না। তাই তাদের কোন মিডিয়া হাইলাইট করে না, স্টোরি ছাপায় না এবং টিভি বিতর্কেও তাদের ডাকা হয় না। তাই তাদের নিয়ে কারো আগ্রহ থাকে না। মার্কিন জনগণের আগ্রহ থাকে না, আমাদেরও নেই।

আবার এই দুইজনের মধ্য থেকে কে প্রেসিডেন্ট হবেন এটা সরাসরি জনগণের ভোট দ্বারা নির্ধারিত হয় না। নির্ধারণ করে ইলেক্টোরাল কলেজ। আল গোর এবং হিলারি ক্লিনটন পপুলার ভোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে অনেক বেশি পাওয়ার পরেও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পারেননি। ইলেক্টোরাল কলেজ সিস্টেম প্রকৃত গণতন্ত্রের জন্য অন্তরায় স্বীকার করেছেন মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য এই সিস্টেম অবলুপ্ত করার আহবান জানিয়েছেন।

কিন্তু মার্কিন রেজিমের ভিত্তিই হল ইলেক্টোরাল কলেজ। ইলেক্টোরাল কলেজ সিস্টেম যতদিন বলবৎ থাকবে ততদিন আমেরিকায় জনগণের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার সম্ভবনা খুবই কম। এইজন্য সত্যিকারের ডেমোক্রেসির জন্য ইলেক্টোরাল কলেজ সিস্টেম এক মহাত্রুটি। মাত্র ১% লোকের হাতে সম্পদ সীমাবদ্ধ থাকলে ক্ষমতা কতজনের হাতে সহজেই অনুমেয়। আর ক্ষমতার শীর্ষে যেতে একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে কত বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হয় তা কারো অজানা নয়। তাই আমেরিকায় যেভাবে নির্বাচন হয় সেটাকে ডেমোক্রেসি বলে না। বলে অলিগার্কি ও প্লুটোক্রেসির সংমিশ্রণে এক তন্ত্র যার উপর ভিত্তি করে দাড়িয়ে আছে মার্কিন রেজিম। তাই ট্রাম্পের পরাজিত হওয়াতে খুশির যেমন কিছু নেই তেমনি বাইডেনের জেতাতে আশাবাদী হওয়ারও কিছু নেই। দল ও ব্যক্তিভেদে কৌশলের কিছু পরিবর্তন হয় এই যা। বিশ্বরাজনীতির নতুন প্রেক্ষাপটে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী চরিত্র টিকিয়ে রাখতে বাইডেনের কৌশল কেমন হবে তা নিয়ে পরবর্তীতে লেখার ইচ্ছা রইলো।

সিরিয়াতে ওবামার মতই অবৈধ দখলদারিত্ব বজায় রেখেছেন ট্রাম্প। ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা তীব্র থেকে তীব্রতর, ইসরায়েলকে স্বরণকালের সর্বাধিক সাহায্য ও সমর্থন করেছেন ট্রাম্প। লিবিয়া, ইয়েমেন, ইরাক, আফগানিস্তানসহ মার্কিন ইন্দোনে বিশ্বের নানা যুদ্ধ কবলিত এলাকায় পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি। অর্থের বিনিময়ে নগ্নভাবে সৌদি আরবকে সমর্থন করেছেন ট্রাম্প। জামাল খাশোগজির হত্যা তার অন্যতম উদাহরণ। ভেনেজুয়েলা ও বলিভিয়ায় সরকার উৎখাতের হেন চেষ্টা নেই যা ট্রাম্প করেননি। কিন্তু অনেকেই বলে থাকেন ট্রাম্পের আমলে নতুন করে কোন যুদ্ধ শুরু হয়নি। তাই ট্রাম্প ভাল মানুষ। বাস্তবতা হল ট্রাম্প ভিন্ন অন্য কেউ এই চার বছরে প্রেসিডেন্ট থাকলে পরিস্থিতি আলাদা কিছু হত না। মার্কিন প্রেসিডেন্টের একক ইচ্ছায় কখনো কোন যুদ্ধ শুরু হয়নি। সবচেয়ে বড় কথা পরিবর্তিত বাস্তবতায় নতুন করে কোন ফ্রন্ট খোলার সামর্থ্য আমেরিকার নেই। যে ফ্রন্টগুলো চলমান আছে সেগুলো সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর কোন ফ্রন্ট খুলতে হলে সেই দেশে আগ্রাসনেরও অনুকূল পরিস্থিতি লাগে।

তবে এতকিছুর পরেও ট্রাম্প নিঃসন্দেহে একজন বর্ণবাদী, মিথ্যাবাদী, অশ্লীলভাষী ও অযোগ্য প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প রাজনীতিক নন, পাকা রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী। রাজনীতিকে পরিমাপ করেছেন ব্যবসা দ্বারা। ট্রাম্পের বড় অযোগ্যতা এখানেই। ট্রাম্পের প্রশংসা যদি করতেই হয় তাহলে বলতে হয় মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের লুটেরা চরিত্র ও খোলস খুলিয়ে ফেলে মার্কিন রাজনৈতিক সিস্টেমকে নগ্নভাবে উপস্থাপন করেছেন ট্রাম্প যা এর আগের সব প্রেসিডেন্টই ভদ্রতার মুখোশ পড়ে শয়তানি করেছেন। ট্রাম্পের এই নগ্নতা পছন্দ করেনি মার্কিন রেজিম। তাই মার্কিন রেজিম চায়নি ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হোক। আসলে জনমত সৃষ্টি হয় না, জনমত সৃষ্টি করা হয়।

এরপরেও ট্রাম্প যে পরিমাণ ভোট পেয়েছেন তা নিঃসন্দেহে বিষ্ময়কর। এর মূল কারণ ট্রাম্প মার্কিন সমাজকে বিভক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। মার্কিন সমাজে র‍্যাডিকালাইজেশনের মাত্রা তিনি বাড়িয়ে দিয়েছেন। চরম্পন্থা ও উগ্রতা এবং জাতীয়তাবাদ এখন সারা বিশ্বেই হু হু করে বাড়ছে।বেড়ে যাচ্ছে ধর্মীয় উন্মাদনা। মার্কিন সমাজের ইভেঞ্জিলিক্যাল, গোড়া খ্রিস্টান সম্প্রদায় এবং বর্ণবাদী শ্বেতাঙ্গরাই ট্রাম্পের মূল সমর্থক। ট্রাম্পের পরাজয়ের খবরে এরাই মূলত অস্ত্র হাতে মহড়া দিচ্ছে। তাই ট্রাম্প জামানা গত হওয়ার পরেও মার্কিন সমাজের এই মেরুকরণের প্রভাব আরো বহুদিন থাকবে এবং আরো দুর্বল হতে থাকবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: এই পোষ্টে মন্তব্য করার মতো বুদ্ধি আমার নাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.