![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
'ধন্যবাদ' - বলল বুড়ো। তারপর নিজের সৌজন্য বোধে নিজেই অবাক হয় ।
'ভদ্রতা বোধ আমারও আছে। তবে এটা যেমন আমার কোনো দর্বলতা নয় তেমনি আমার অহংবোধের সাথে আপোষ করেও নয়' মনে মনে ভাবে সে। তার পর বলে, 'স্রোত দেখে মনে হচ্ছে আগামি কালটা ভালই কাটবে' ।
'কাল কোথায় যাচ্ছ?' জানতে চায় বালকটি।
'অনেক গভীরে চলে যাবো । যেখান থেকে ফিরতি বাতাসে চলে আসা যাবে। ভোরের আলো ফোটার আগেই আমি বের হয়ে যেতে চাচ্ছি।'
'আমার নৌকার মালিককেও গভীর সমুদ্রে তোমার কাছাকাছি নিয়ে যেতে চেষ্টা করবো। তারপর তুমি যদি সত্যিই বড় একটা মাছ বড়শিতে গেঁথে ফেলতে পারো তবে আমরা তোমাকে সাহায্য করতে পারবো।' একটানা বলে যায় বালকটি।
'তোর মহাজন অতো গভীরে যাবার লোক না।'
'তা ঠিক। তবে আমি তাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে ঠিকই গভীরে নিয়ে যাবো। দূরে কোনো পাখি দেখিয়ে বলবো ঐখানে মাছ আছে অথবা মিছেমিছি কোনো ডলফিনের লোভ দেখাবো তাকে', বলল বালকটি।
'তার চোখের অবস্থা কি এতই খারাপ?'
'আরে ওই লোক তো প্রায় অন্ধ।'
'অদ্ভূত! অথচ সে কখনো কচ্ছপ শিকার করেত যায় নি। কচ্ছপ শিকারীদের চোখ নষ্ট হয়ে যায়'- বলল বুড়ো সান্তিয়াগো।
'কিন্তু তুমিতো চার বছর কচ্ছপ শিকার করেছ। কই তোমার চোখ তো ঠিকই আছে' -বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করে বালকটি।
'আমি এক বিস্ময়কর বুড়ো।'
'কিন্তু বড়সড় একটা মাছ শিকারের মত যথেষ্ট শক্তি এখনও তোমার শরীরে আছে।'
'আমিও তাই মনে করি। তাছাড়া মাছ ধরার অনেক কায়দা কানুন আছে।'
'চল, মালপত্র সব বাড়ি রেখে আসি। তারপর আমি আবার ঝাঁকি জাল নিয়ে সারডিন পোনা ধরতে যাবো', বলল বালকটি।
তারা নৌকা থেকে মালপত্র নামিয়ে আনলো। মাস্তুলটি কাঁধে নিলো বুড়ো। বালকটি উঠিয়ে নিল কাঠের বাকসোটি। বাকসোর ভিতরে আছে বঁড়শির জন্য শক্তভাবে পাকানো বাদামি রশি, কোঁচ আর হাতলসহ টেটা। টোঁপের বাকসো আর মুগুরটা রইল নৌকার পাটাতনের নিচে। বড় আর বেয়াড়া মাছ ধরা পরলে মুগুরটি দিয়ে পিটিয়ে তাকে বাগে আনা হয়।
বুড়ো জানে তার নৌকা থেকে কেউ চুরি করবে না। তারপরও পালটি আর মোটা রশিগুলো বাড়ি নিয়ে যাওয়াই ভালো মনে করে সে। কারণ কুয়াশায় এগুলোর ক্ষতি হতে পারে। আর কোঁচ কিংবা টেটা নৌকাতে রেখে চোরকে প্রলুব্ধ করার কোনো মানে হয় না। যদিও সে জানে যে, স্থানীয় কেউ তার নৌকা থেকে চুরি করবে না।
হাঁটতে হাঁটতে তারা বুড়োর কুটিরে পৌঁছে গেল। তারপর খোলা দরজা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করল। বুড়ো পাল সমেত মাস্তুলটি ঘরের বেড়ার সাথে হেলান দিয়ে রাখল আর বালকটি বাকসো আর অন্যান্য মলপত্র তার পাশেই রেখে দিল। মাস্তুলটি প্রায় তার কুটিরের সমানই লম্বা। কুটিরটি স্থানীয়ভাবে গোয়ানো নামে পরিচিত রয়েল পাম গাছের কচি বাকল দিয়ে তৈরী। বুড়োর কুটিরে একটি বিছানা, একটি মেজ, একটি চেয়ার আর ঘরের নোংরা মেঝের একদিকে কাঠ-কয়লা দিয়ে রান্নার জায়গা। গোয়ানোয় বোনা দেয়ালে টানানো রয়েছে পূণ্যাত্মা যীশু আর কুমারী মাতার একটি করে ছবি। এগুলো তার স্ত্রীর স্মৃতি। এক সময় তার স্ত্রীর একটি ছবিও দেয়ালে টানানো ছিল। ছবিটি দেখলে তার একাকীত্ব আরও তীব্র হয়ে উঠে। নিঃসঙ্গতা প্রকট হয়ে উঠে। বুড়ো তাই ছবিটি নামিয়ে রেখেছে। তাকের উপর নিজের ভাল একটা শার্ট দিয়ে বুড়ো সেটি ঢেকে রেখেছ।
'ঘরে খাবার মত কী আছে?' জিজ্ঞেস করে বালকটি।
'এক থালা খিচুরি আর মাছ আছে। খাবে নাকি?'
'না, আমি বাড়ি গিয়েই খাবো। আচ্ছা আমি কি আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে যাবো?'
'তার দরকার নেই। একটু পরে আমিই জ্বালিয়ে নিবো। না হয় ঠান্ডা খিচুরিই খেয়ে নিবো। '
'আমি কি ঝাঁকি জালটা নিতে পারি?'
'নিশ্চয়!'
ঘরে কোনো ঝাঁকি জাল নেই। জালটা বিক্রি করে দেয়ার কথা বালকের ভাল করেই মনে আছে। তারপরও তারা এধরনের কাল্পনিক কথোপকথন নিয়মিতই করে থাকে। বালকটি এটাও জানে যে ঘরে কোনো থালা ভর্তি খিচুরীও নেই। সবই কাল্পনিক।
'পঁচাশি একটি শুভ সংখ্যা। কাল যদি হাজার পাউন্ডের একটি মাছ ধরতে পারি তো তোর কেমন লাগবে রে?'
'আমি এখন ঝাঁকি জালটি নিয়ে সারডিন পোনা ধরতে যাবো। তুমি কি দরজার সামনে রোদে গিয়ে বসবে নাকি?'
'হ্যাঁ, আমার কাছে গতকালের পত্রিকা আছে। দেখি বেসবলের কী খবরাখবর আছে।'
গতকালের পত্রিকার ব্যাপারটিও কাল্পনিক কি না ভাবছিল বালকটি। এরই মধ্যে বুড়ো বিছানার নিচে থেকে পত্রিকা বের করতে করতে ব্যাখ্যা করে, 'পেরিকো এটা আমাকে দিয়েছে। বারে বসে।'
চলবে........................
০৩ রা জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:৪৮
হামিদ আহসান বলেছেন: হা হা হা তা আর বলতে...................
ধন্যবাদ আপনাকে।
২| ০৩ রা জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৩
ডি মুন বলেছেন: ঘরে কোনো ঝাঁকি জাল নেই। জালটা বিক্রি করে দেয়ার কথা বালকের ভাল করেই মনে আছে। তারপরও তারা এধরনের কাল্পনিক কথোপকথন নিয়মিতই করে থাকে। বালকটি এটাও জানে যে ঘরে কোনো থালা ভর্তি খিচুরীও নেই। সবই কাল্পনিক।
অনুবাদে ভালোলাগা রইলো।
লিখে চলুন নিরন্তর। রমজানের শুভেচ্ছা রইলো।
০৩ রা জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৫
হামিদ আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে.....................
রমজানের শুভেচ্ছা ........................
৩| ০৩ রা জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:০৫
রাবেয়া রব্বানি বলেছেন: প্রিয়তে রাখলাম। পড়তে হবে
০৪ ঠা জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:৪৩
হামিদ আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ রাবেয়া রব্বানি............................
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:৩৬
কোবিদ বলেছেন:
ধন্যবাদ হামিদ ভাই,
এখানে সবাই লেখক,
পাঠকের সংখ্যা কম
আর মন্তব্যকারীদের
সংখ্য নগন্য।